বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন।
প্রচলিত একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতির তুলনায় পিআর পদ্ধতি ভিন্নভাবে কাজ করে। এখানে জনগণ সরাসরি কোনো ব্যক্তিকে ভোট না দিয়ে একটি দল বা তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের ভোট দেয়।
১৫ জুলাই থেকে সরকারের প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাবি ও অন্যান্য ক্যাম্পাসে বিক্ষোভকারীদের উপর হামলা চালায়।
এই পদ্ধতির কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে। সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো—এতে অনেক সময় জোট সরকার গঠনে দীর্ঘ সময় লাগে।
সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলমকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বুধবার (১৮ জুন) রাতে তাকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।
স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন ওঠে— শেখ হাসিনার সরকারের পতনের প্রায় তিন বছর আগে অবসরে যাওয়া সাবেক রাষ্ট্রপতির থাইল্যান্ড যাওয়া নিয়ে এত বিক্ষোভ, প্রতিবাদ কেন, কী উদ্দেশ্যে? এবং তারপর কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাই বা নেওয়া হয়েছিল কেন?
শুধু তাই নয়, আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনা ঘিরেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশকিছু দল ও সংগঠন। পরে আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করে সরকার।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে বিগত ১০ মাস লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকা নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মুখ খুলেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়ালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রথম সাবেক এই সেতুমন্ত্রী উত্তাল জুলাইয়ের সেই সংকাটাপন্ন সময় নিয়ে কথা বলেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। কিন্তু এরপর জাতীয় বা রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে ওঠার বদলে বিভাজন বেড়ে যাওয়া এবং সুশাসনের অভাবে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশায় ফাটল ধরেছে। এ প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় ইসলামি শক্তির উত্
সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ১২ মে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় এই প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়। এই আইন ও প্রজ্ঞাপন অনুসারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ (এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী
ডিবির মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ধানমন্ডির স্টার কাবারের পেছনের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মমতাজকে।
এর আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. জাহেদ ইকবাল বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, আইনটিতে সবশেষ যে পরিবর্তন অন্তর্বর্তী সরকার এনেছে তাতে এ আইনের আওতায় নিষিদ্ধ করার পর দলটির পক্ষে যায় এমন কোন প্রচার প্রচারণাও করা যাবে না।
গত শনিবার (১০ মে) রাতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনের চাপে সরকার জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকে বসে এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব ধরনের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব ধরনের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা-১৮(১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে দলটির ওপর।
আওয়ামী লীগের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সন্ত্রাস দমন আইনে। এই সিদ্ধান্তের পর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামির বিচারের বিষয়টিও নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
এই সংশোধনীর ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণহত্যায় জড়িত অভিযোগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কিংবা এর কোনো সহযোগী সংগঠনের বিচার করা যাবে। পাশাপাশি এই বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সব ধরনের কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্তও নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।