ফোনে হাসিনার নির্দেশ

'যেখানেই আন্দোলনকারীদের পাবে, গুলি করবে'

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১১: ৩৭

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন।

ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করে জানা যায়, জুলাই অভ্যুত্থানে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমতি শেখ হাসিনা নিজেই দিয়েছিলেন।

বিবিসি আইয়ের যাচাই করা ওই রেকর্ডিং অনুসারে, শেখ হাসিনা নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার’ করার অনুমতি দেন।

নির্দেশনায় শেখ হাসিনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেন, 'যেখানেই তাদের (আন্দোলনকারী) পাবেন, গুলি করবেন।’

অজ্ঞাতনামা একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিওটি প্রমাণ করে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের গুলি করতে সরাসরি অনুমতি দেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

ফাঁস হওয়া অডিওটি সম্পর্কে জানেন, এমন একটি সূত্র বিবিসিকে জানায়, গত ১৮ জুলাই নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে শেখ হাসিনা ওই ফোনালাপ করেন।

চলতি বছরের মার্চের শুরুতে ফোনালাপের অডিওটি ফাঁস হয়। বিক্ষোভের পর থেকে শেখ হাসিনার কলের অসংখ্য ক্লিপ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে, যার অনেকগুলোই যাচাই করা হয়নি।

গত ১৮ জুলাইয়ের ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।

বিবিসি আলাদাভাবে ইয়ারশটের অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এ রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেছে। তারা এটিতে এডিট বা কোনো রকম পরিবর্তন করার কোনো প্রমাণ পায়নি। অডিওটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে, এমন সম্ভাবনাও খুবই কম বলে জানিয়েছেন তারা।

মানবাধিকার বা পরিবেশ রক্ষার ইস্যুতে অডিও-সংক্রান্ত তদন্তের কাজ করে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট। তারা বলছে, ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংটি সম্ভবত এমন একটি ঘরে ধারণ করা হয়েছিল, যেখানে ফোনকলটি স্পিকারে বাজানো হয়েছিল। কারণ, এতে স্বতন্ত্র টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি ও ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু শব্দ ছিল।

ইয়ারশটের বিশেষজ্ঞরা শেখ হাসিনার বক্তব্যে ছন্দ, স্বর ও শ্বাসের শব্দ বিশ্লেষণ করেছেন এবং ধারাবাহিক নয়েজের স্তরও শনাক্ত করেছেন। অডিওতে কৃত্রিম কোনো পরিবর্তন আনার প্রমাণ তারা খুঁজে পায়নি।

ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান জানান, রেকর্ডিংগুলো জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ভূমিকা প্রমাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো স্পষ্ট ও সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

টবি ক্যাডম্যান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন, যেখানে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।

এরই মধ্যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০৩ জনকে অভিযুক্ত করেছেন, যার মধ্যে ৭৩ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

ভিন্নমত দমন নয়, তা প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে: মির্জা ফখরুল

মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর জোর দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তর্ক আছে, বিতর্ক আছে। মতের অমিল আছে। আমরা বিশ্বাস করি যে আমার কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে। একই সঙ্গে তোমারও কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে। ভিন্নমত দমন নয়, তা প্রকাশের সুযোগ করে দিতে হবে।’

১ দিন আগে

সব হারানো চুন্নুর আক্ষেপ!

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১ (ক) ধারার মতো আর কোন রাজনৈতিক দলে ধারা নেই। তাই আমি বললাম এই ধারা পরিবর্তন করা দরকার। এই ধারায় তাকেও (জিএম কাদের) দুই দফায় জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

১ দিন আগে

সংস্কার-বিচার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলতে হবে: ফয়জুল করীম

তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফয়জুল করীম বলেন, ‘৫৩ বছর যারা দেশ শাসন করেছে, তারা দেশকে রক্ষা করতে পারেনি। শুধু নেতা বা দল পরিবর্তন করে দেশে শান্তি আসতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত নীতি ও আদর্শ পরিবর্তন না আসে। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে দেশের মানুষ মুক্তি পাবে। আসুন, দেশ থেকে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্

১ দিন আগে

প্রশাসনিক স্থবিরতায় ‘মব কালচার’ বৃদ্ধি পাচ্ছে: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই ‘মব কালচার’-এর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবৈধ কালো টাকা এবং গোপন অপতৎপরতার প্রভাবে ‘মব কালচার’ এর নামে সমাজে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চলছে।

১ দিন আগে