তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন এখনো একটি পক্ষের হয়ে কাজ করছে। এখানে আগে থেকে যাদের শিক্ষক আছে, কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে, তারাই হয়তো নিয়ন্ত্রণ করছে এবং একেকটা অংশে কাজ করছে। এ জন্য এখানে মাল্টি-টাইপের অভিযোগ শোনা যাচ্ছে।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের জয়ের ব্যাপারে বিএনপি আশাবাদী। ছাত্রসমাজ সচেতন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এরই মধ্যে এই নির্বাচনের আলোচিত প্রার্থীদের প্রায় সবাই নানা অভিযোগের কথা তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে এসেছে প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ। এসব অভিযোগ ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও এসেছে। ঢাবি কর্তৃপক্ষ আবার ব্যালটে কারচুপির অভিযোগের কথা বলেছে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে।
সহকারী প্রক্টর একে এম নুরে আলম বলেন, দুজন প্রার্থীর নামে টিক দেওয়া ব্যালট পেয়েছেন বলে এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছিল। তাকে পরে আরেকটি ব্যালট পেপার দেওয়া হয়েছে।
উমামা সাংবাদিকদের বলেন, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আমরা কিন্তু বারবার সতর্ক করেছি, যেন তারা সতর্কতার সঙ্গে এই পদক্ষেপগুলো নেন।
ভোটাররা বলছেন, কোন পদে কাকে ভোট দেবেন সেটি আগে থেকেই ঠিক করা থাকলে ভোট দিতে খুব একটা বেগ পেতে হচ্ছে না, সময়ও লাগছে কম। সেটি ৬ মিনিটের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব হচ্ছে। বুথে গিয়ে প্রার্থী নির্ধারণ করে ভোট দিতে সময় লাগছে একটু বেশি। তবে সেটিও ৮ মিনিটের বেশি নয় বলেই জানাচ্ছেন ভোটাররা।
উবায়দুর রহমান হাসিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি হল সংসদ নির্বাচনে অমর একুশে হলের এজিএস প্রার্থী। ধারণা করা হচ্ছে, তীব্র গরমে তিনি অচেতন হয়ে পড়েছেন।
আবিদুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে অসংখ্য প্রোপাগান্ডার শিকার করা হয়েছে। আমাদের নিয়ে যদি কেউ নোংরামি করে, তার সঙ্গে নোংরামি করে প্রতিবাদ জানাতে চাই না। আমরা সত্য ও সৌন্দর্য দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে চাই।
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে আচরণবিধি লঙ্ঘনে ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েমে তোলা অভিযোগ অস্বীকার করলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। বলেছেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আগে যারা যুক্ত ছিল, তারাই এসব মিথ্যা অভিযোগ করছে।
শামীম লিখেছেন, ব্যালট বক্স খুলে এলইডি স্ক্রিনে এবং সারা দেশকে দেখিয়ে ভোট গ্রহণ শুরু করতে হবে। এবং ৮১০টি বুথেই সেটি দেখাতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে দরদভরা কণ্ঠে এক তরুণ ছাত্রনেতা বলেন, ‘শুধু একটাই কথা, প্লিজ কেউ কাউকে ছেড়ে যান না। আমার মা-বাবা, ভাই-বোন যারা আছেন, এই যুদ্ধের ময়দানেও আমাদের সঙ্গেই থাকেন। আমরা এই লড়াইয়ে জিতব, কোনো সন্দেহ নাই। আজকেই আমরা জিতব। তবে কেউ ভয় পাবেন না।’
ডাকসু নির্বাচনের এই ভিপি প্রার্থীর অভিযোগ, আমাদের ভূতত্ত্ব ভোটকেন্দ্রের (কবি সুফিয়া কামাল হল) এজেন্টকে পাঠানো হয়েছে ইউল্যাবে (শামসুন্নাহার হল), ইউল্যাবের এজেন্টকে দেওয়া হয়েছে উদয়নে, টিচার্স ক্লাবের (কুয়েত-মৈত্রী, বঙ্গমাতা) এজেন্টকে দেওয়া হয়েছে উদয়নে, আর উদয়নের এজেন্টকে পাঠানো হয়েছে কার্জন হলে।
ঢাবি শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা আলোচিত এই ভোটে তিনটি বিষয়কে ‘ফ্যাক্টর’ বিবেচনা করছেন— নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভোট, জগন্নাথ হলের ভোট এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোট। শিক্ষার্থী ও ভোটাররা বলছেন, এই তিন ভোটব্যাংকের মধ্যে যেকোনো একটিই এই নির্বাচনের ফল যেকোনো প্রার্থীর অনুকূলে এনে দিতে সক্ষম।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ডাকসু নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো রয়েছে। আমরা নির্বাচন সামনে রেখে কোনো ধরনের শঙ্কা দেখছি না। এই নির্বাচন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।