খাগড়াছড়ির গুইমারায় সহিংসতার ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার।
মো. আব্দুল মোত্তাকিম বলেন, ‘দ্রুত পদক্ষেপের কারণে কেউ বড় ধরনের নাশকতার সুযোগ পায়নি। সেনাবাহিনী, অন্যান্য বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনের চেষ্টায় পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
এদিকে ধর্ষণ ঘটনার প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতার অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ চলছে। তবে বেলা ১২টা থেকে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে অবরোধ শিথিল করেছে সংগঠনটি। ফলে দূরপাল্লার গাড়ি ছেড়ে গেছে।
নিরাপত্তার কারণে যানবাহন ও মানুষের চলাচল সীমিত রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে, বেশিরভাগ দোকানপাটও বন্ধ। শহরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার রয়েছে।
স্কুলছাত্রী ধর্ষণ-পরবর্তী বিচার দাবিতে বিক্ষোভ থেকে সৃষ্ট সংঘর্ষের জেরে খাগড়াছড়িতে প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা এখনো বলবৎ রয়েছে। এর মধ্যেই ‘জুম্ম ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া সড়ক অবরোধ আজ সোমবার থেকে তিন পার্বত্য জেলায় বিস্তৃত হয়েছে। ফলস্বরূপ, খাগড়াছড়ির প্রধান সড়কসহ জনগুরুত্বপূ
মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে খাগড়াছড়িতে তৃতীয় দিনের অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। সেনাবাহিনীর ১১ সদস্য, তিন পুলিশ সদস্য ও এক সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৫ জন।
চমেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সহকারী রেজিস্ট্রার লিটন কুমার পালিত জানান, আহতদের মধ্যে আবুল বশর খানের শরীরের প্রায় ৮৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। অন্যদের শরীরের ১৫ থেকে ৩৫ শতাংশ পুড়েছে।
খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় শনিবার দুপুর ২টা থেকে এ আদেশ জারি করেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। একই কারণে গুইমারা উপজেলায়ও ১৪৪ ধারা জারি করেছেন
শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কঙ্কালটির লৈঙ্গিক পরিচয় বা নাম-ঠিকানা কোনো তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয় বিস্তারিত অনুসন্ধানের জন্য সিআইডি ও পিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান।
এ সময় পাহাড়ের নারী নিপীড়নসহ খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে ধর্ষনের প্রতিবাদ এবং ধর্ষকদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আগামীকাল শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছে জুম্ম ছাত্র-জনতা।
হোমনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার ধর্ম অবমাননার কারণে জনতার মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিক্ষুব্ধ জনতা মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে।
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে যাওয়ার পথে পর্যটকবাহী একটি গাড়ি খাদে পড়ে রিংকি নামের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১২ জন।
এদিকে খেলা বন্ধ ঘোষণার পর দর্শক ও ফাইনালের দুই দলের সমর্থকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কক্সবাজার সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিনসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। স্টেডিয়ামের মূল ভবন, গ্যালারিসহ সবকিছু ভাঙচুর করা হয়েছে।
গোপাল ঘাটিয়া এলাকায় দ্বিতীয় অভিযানে সশস্ত্র অবস্থায় একজনকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, ১৯৯ রাউন্ড ২২ ক্যালিবারের গুলি, দুটি পাসপোর্ট, ১৩টি মোবাইল ফোন, রাইফেলের বাটসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, ইতোমধ্যে পৌরসভা বন্যাকবলিত এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা করা হচ্ছে এবং দ্রুত ত্রাণ বিতরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে। সেখানে এখনো দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে সংঘর্ষে হতাহতের কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।