বিচিত্র

ভারতবর্ষে নিষিদ্ধ ছিল বিস্কুট! কিন্তু কেন?

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
ভারতবর্ষে নিষিদ্ধ ছিল বিস্কুট।

আজকের দিনে চায়ের সঙ্গে বিস্কুট না হলে যেন আড্ডাটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ঘরে-বাইরে, অফিসে-আড্ডায়, রাস্তাঘাটে—চা আর বিস্কুটের যুগলবন্দি সর্বত্রই। কিন্তু একসময় এমন দিন ছিল, যখন ভারতবর্ষে বিস্কুট খাওয়া ছিল কার্যত ‘নিষিদ্ধ’। ভাবা যায়?

চলুন, সময়ের পাতায় একটু পেছনে ফিরে তাকাই।

বিস্কুটের জন্ম কিন্তু ইউরোপে নয়, আরও প্রাচীন সভ্যতায়। প্রাচীন রোম, গ্রিস আর মিশরে নাবিকদের জন্য তৈরি হতো শুকনো, শক্ত রুটির মতো একধরনের খাবার—দুই ধাপে বেক করা হতো, যাতে তা বহুদিন ভালো থাকে। এই বিস্কুটে চিনি ছিল না, স্বাদও ছিল বেশ সাদামাটা।

এরপর সপ্তম শতাব্দীতে পারস্যে দেখা গেল প্রথম মিষ্টি বিস্কুট—ময়দা, ডিম, মাখন আর মধুর সংমিশ্রণে তৈরি। সেখান থেকে ইউরোপে বিস্কুটের বিস্তার, বিশেষত ব্রিটেনে তা হয়ে ওঠে দারুণ জনপ্রিয়।

ব্রিটিশদের হাত ধরে বিস্কুট আসে ভারতবর্ষে। প্রথম দিকে এটি ছিল শুধুই সাহেবদের বা উচ্চবিত্তদের জন্য বিলাসবহুল খাদ্য। হান্টলি অ্যান্ড পামারসের মতো ব্রিটিশ কোম্পানিগুলি টিনে প্যাক করে বিস্কুট পাঠাতো ভারতে। সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল এই খাবার।

কেন ছিল নিষিদ্ধ?

বিস্কুট খাওয়া ছিল নিষিদ্ধ—এই তথ্য শুনে অনেকেই আজ অবাক হবেন। কিন্তু তখনকার সামাজিক কাঠামো ছিল একেবারেই আলাদা। উচ্চবর্ণের হিন্দু সমাজে খাদ্যাভ্যাসে ছিল কঠোরতা। যদি কোনো খাদ্য ‘অপবিত্র’ কারো হাতে তৈরি হয়, তাহলে সেটি খাওয়া যেত না। আর ব্রিটিশ শ্রমিকদের দ্বারা তৈরি বিস্কুট তখন সেই অপবিত্র তালিকাতেই পড়ে। এদিকে নিম্নবর্ণের হিন্দুদের ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল অন্য। বিস্কুট তখনও ছিল ব্যয়সাপেক্ষ, তাঁদের সাধ্যের বাইরে।

এই বিভাজন কাটিয়ে ওঠার জন্য এগিয়ে এলেন লালা রাধামোহন। ১৮৯৮ সালে তিনি দিল্লিতে প্রতিষ্ঠা করলেন ‘হিন্দু বিস্কুট কোম্পানি’। তাঁদের বিজ্ঞাপনে জোর দিয়ে বলা হতো—এই বিস্কুট শুধুমাত্র উচ্চবর্ণের হিন্দুদের দ্বারা প্রস্তুত। ধীরে ধীরে হিন্দু সমাজে বিস্কুটের প্রতি ভ্রান্ত ধারণা কাটে, বিস্কুট গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।

ব্রিটিশদের হাত ধরে শুধু বিস্কুট নয়, ভারতীয়দের জীবনে ঢুকে পড়ে চায়ের সংস্কৃতিও। কলকাতা, মাদ্রাজ, বম্বের মতো শহরে ক্যাফে সংস্কৃতি গড়ে ওঠে, যেখানে চা-বিস্কুটের যুগলবন্দি হয়ে ওঠে জনপ্রিয়।

একসময় যে বিস্কুট ছিল ‘বিলাসিতা’, ‘নিষিদ্ধ’—তা আজ বাংলার আড্ডায় চায়ের পরম বন্ধু। সময় বদলেছে, সমাজ বদলেছে, আর বিস্কুট হয়ে উঠেছে সবার প্রিয় এক খাবার।

ad
ad

মাঠের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

বাংলাদেশ মাতালেন পাকিস্তানের হানিয়া

ভিডিও বার্তায় হানিয়া বলেছিলেন, তিনি বাংলাদেশে আসছেন একটি ছোট্ট সারপ্রাইজ নিয়ে। সেই ‘সারপ্রাইজ’ ঠিক কী, তা হয়তো করপোরেট ইভেন্টের সীমায় আটকে থাকবে। কিন্তু ভক্তদের কাছে সবচেয়ে বড় চমক তো তিনি নিজেই— ঢাকায় এসে, এই শহরের মাটিতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের প্রতি সমর্থন জানানো।

২২ দিন আগে

শিল্পকলার নতুন মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন

কবি রেজাউদ্দিন স্টালিনকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

২২ দিন আগে

সমগীতের নতুন গান ‘ধর্ম যার যার’, ভিডিও উৎসব

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও গবেষক রেহনুমা আহমেদ, সংগীতশিল্পী কফিল আহমেদ, বিশ্বসূফি সংস্থার সদস্য হাসান শাহ সুরেশ্বরী দীপু নূরী, সায়ান, অরূপ রাহী, কাজী কৃষ্ণকলি ইসলাম, সহজিয়া ব্যান্ডের রাজুসহ বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মীরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সমগীতের সভাপ্রধ

২৪ দিন আগে

ক্যারল অ্যান ডাফির কবিতা— রাষ্ট্র/ভোজ

প্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান তাদের বৃহস্পতিবার প্রথম পাতা সাজিয়েছে ট্রাম্পের সফর নিয়েই। সেখানে মূল সংবাদের পাশেই স্থান পেয়েছে ব্রিটিশ ‘পোয়েট লরিয়েট’ তথা রাষ্ট্রীয়ভাবে নিযুক্ত কবি ক্যারল অ্যান ডাফির কবিতা STATE/BANQUET। বিশ্বব্যবস্থা যে রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তারই এক মূর্ত

২৪ দিন আগে