
ডয়েচে ভেলে

গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশের নারীরা গৌরবময় ভূমিকা রেখেছেন৷ তারা রাজপথে লড়াই করেছেন৷ মিছিলের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেনও অনেকে৷ কিন্তু সেই নারীরা যে বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা এখন হতাশায় পরিণত হয়েছে৷
অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই শহিদ হিসাবে যে ৮৪৪ জনের নাম গেজেটভুক্ত করেছে তাদের মধ্যে ১০ জন নারী৷ আর ওই ১০ জনের মধ্যে চারজনের বয়স ১৮ বছরের নিচে৷
জুলাই অভ্যুত্থানে যেসব নারী সামনে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তারা এখন নতুন যুদ্ধের মুখোমুখি হচ্ছেন৷ তাদের ঘরে আটকে রাখতে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী দিন দিন শক্তিশালী হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ তাদের৷
তারা বলছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা, অবমাননা বেড়েই চলেছে৷ ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে নারীই উল্টো আসামি হচ্ছেন৷ নারীর অবমাননাকারীদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হচ্ছে৷

জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের প্রাণ ছিলেন নারীরা। ছবি: উমামা ফাতেমার ফেসবুক থেকে
জুলাই যোদ্ধা নারীরা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন৷ তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলা হচ্ছে৷ জুলাই নারী যোদ্ধাদের অভিযোগ, ক্ষমতায় টিকে থাকতে তাদের সহযোদ্ধারা এখন অশুভ শক্তি, উগ্রবাদীদের সঙ্গে আপোস করছে৷
সরকারে জুলাই আন্দোলনের তিন তরুণ জায়গা পেলেও আন্দোলনে অংশ নেয়া তরুণীদের কোনো জায়গা হয়নি৷ ১১টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে একটিতেই নারীরা আছেন৷ আরো দু-একটি কমিশনে এক-দুইজন নারী থাকলে নেতৃত্ব পুরুষদের দখলে৷ আর জাতীয় ঐকমত্য কশিমনে একজন মাত্র নারী সদস্য৷
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলেন ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী তিলোত্তমা ইতি৷ তিনি গত বছরের স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘'১৬ জুলাই ইডেন কলেজ থেকে সবচেয়ে বড় মিছিলটি বের করেছিলাম আমরা৷ তারপর পুলিশের হামলা, ছাত্রলীগের হামলা কোনো কিছুই পরোয়া করিনি৷ আমাদের এই আন্দোলনের ফলে স্বৈরাচারের পতন হয়৷ আর এখন সেই আমিই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হয়রানির শিকার হচ্ছি৷’
তিনি বলেন, ‘জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাসের প্রতিবাদে আমি একটি পোস্ট দিয়েছিলাম ফেসবুকে৷ তারপর থেকেই একটি গোষ্ঠী আমাকে হেয় করছে৷ আমি কোনো পোস্ট দিলেই দল বেঁধে অনেক খারাপ মন্তব্য করছে৷ তারা চায় আমি যাতে আমার মতামত প্রকাশ না করি৷ তারা আমার চরিত্র হননে নেমেছে৷ এই পরিস্থিতির শিকার আরও অনেকে৷ আমরা যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম সেটা তো দূর হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না৷ উল্টো নারীরা আরও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন৷ একটি গোষ্ঠী তাদের মতো করে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে৷’’

জুলাই-আগস্টে প্রথমে কোটাবিরোধী ও পরে সরকার পতনের আন্দোলনে রাজপথে অগ্রণী ছিলেন নারী শিক্ষার্থীরাই। ছবি: নুসরাত তাবাসসুমে ফেসবুক থেকে
তিনি আরও বলেন, ‘গত মার্চে শাহবাগে আমরা যারা ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন করেছি৷ তারা সবাই তার আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও ছিলাম৷ কিন্তু ওই আন্দোলনের কারণে আমাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়৷ একজন নারীকে তো ব্যাপক ট্রল করে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করা হয়৷ তার পরিবারকে নানাভাবে চাপে ফেলা হয়৷’
এই ঘটনার প্রত্যক্ষ শিকার আদ্রিতা রায়৷ তিনি জুলাই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন৷ তিনি তখন উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী৷ এখন তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন৷
আদ্রিতা বলেন, ‘মার্চে ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের হামলার শিকার হই৷ মামলা হয় আমাদের বিরুদ্ধে৷ আমি তিন নাম্বার আসামি৷ শুধু তাই নয় আমার ছবি দিয়ে, আমার পরিবারের সদস্যদের ছবি দিয়ে নানা অপপ্রচার করা হয়, বডি শেমিং করা হয়৷ ছবি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়৷ তখন আমি বাইরে বের হতে পারতাম না৷ মাস্ক পরে বের হতে হতো৷ বাইরে কোথাও যেতে হলে মা সাথে যেতেন৷ আমি আর আমার পরিবার নিরপত্তাহীনতার মধ্যে পড়ে যাই৷ জুলাই আন্দোলনের পর ওটা ছিলো আমার জন্য সবচেয়ে খারাপ সময়৷’
তিনি আরও বলেন, ‘আসলে আমরা একটা বৈষম্যহীন সমাজের জন্য মাঠে নেমেছিলাম৷ কিন্তু সেটা এখন ফিকে হয়ে গেছে৷ অন্তর্বর্তী সরকার তেমন কিছুই করছে না৷ হেফাজত সমাবেশ ডেকে নারী কমিশনের সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালি দিল, নারীদের অপমান করল, কিন্তু সরকার কোনো ব্যবস্থা নিল না৷ আর যাদের সাথে একসঙ্গে আন্দোলন করেছি তারা নতুন দল গঠন করল এনসিপি৷ সেই দলের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ হেফাজতের ওই সমাবেশে গিয়ে বক্তৃতা দিলেন৷ ফলে তাদের ওপরও আশা করার কিছু নাই৷’

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শুরুটা ছিল সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে। শুরু থেকেই এ আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন নারী শিক্ষার্থীরা। ছবি: উমামা ফাতেমার ফেসবুক থেকে
গত ২৮ মে বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এলাকায় নারীকে লাথি মারা আকাশ চৌধুরী আটক হলেও জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়৷ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস ও মুক্তির প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আন্দোলনকারী এক নারীকে লাথি মারেন ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগরের ওয়ার্ড পর্যায়ের এই নেতা৷ সমালোচনার পর অবশ্য তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে৷
গত মার্চ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক নারীকে তার পোশাক নিয়ে হেনস্তা করার পর ভুক্তভোগী নারী শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে ওই মামলায় আটকের পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলেও তৌহিদী জনতা থানা ঘেরাও করে৷ থানা থেকে আদালতে পাঠানোর পর তিনি জামিন পান৷ মুক্তির পর তাকে পাগড়ি, ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়। পরে ওই নারী মামলা প্রত্যাহারেও বাধ্য হন৷ এরপর গত ২৬ জুন ধর্ষণের শিকার নারীকে মারধর ও বিবস্ত্র করে ভিডিও করা এবং তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে কুমিল্লায়৷
গত মে মাসে ঢাকার লালমাটিয়ায় একটি চায়ের দোকানে দুই তরুণী ধূমপান করায় কথাকাটির পর তাদের মবের মুখে পড়তে হয়৷ পরে পুলিশ তাদের থানা হেফাজতে নিয়ে যায়৷ এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘পাবলিক প্লেসে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য অপরাধ৷ কেউ যেন ওপেন প্লেসে ধূমপান না করেন৷’
নারী বিষয়ক সংস্কার কশিন প্রতিবেদন দেওয়ার পর ওই কমিশনই বাতিলের দাবি জানায় হেফাজতে ইসলামসহ কিছু ইসলামী দল৷ কমিশন প্রধান শিরীন হক রীতিমত হুমকির মুখে পড়েন৷ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের তালিকায় নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোনো প্রস্তাব আলোচনার জন্য রাখেনি৷
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন - এই ছয় মাসে ৪৪১ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, যা গড়ে প্রতিদিন দুইজনেরও বেশি৷ ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২২ জনকে৷ ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন ৫ জন নারী৷ ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছেন ১৬২ জন৷ ধর্ষণের ঘটনায় ৩৫৮টি মামলা হলেও ৭৮টি ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি৷ একই সময়ে যৌন হয়ারানির শিকার হয়েছেন ১৬৪ জন নারী৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী অর্ণি আনজুম বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হলের শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করাদের একজন৷ ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন৷ তার মধ্যেও এখন হতাশা কাজ করছে৷
তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলণের সময় আমরা নারীরাই সামনে ছিলাম৷ আসলে নারীদের আন্দোলনের সময় সামনে দেয়া হয়৷ আসলে আমাদের ঢাল হিসাবে সামনে দেয়া হয়েছে৷ অনেক নারী আন্দোলনে ছিলেন একটি বৈষম্যহীন সমাজের আকাঙ্ক্ষায় আর নারীরা যখন নেমে আসে তখন স্বৈরাচার টিকতে পারে না৷ কিন্তু দেখা গেল স্বৈরাচারের পতনের পরও নারীদের বিভিন্ন জায়গায় টোকেন হিসাবে রাখা হয়েছে৷ সবখানেই ব্যাটাগিরি দেখানো হয়েছে৷ তরুণদের যে দল হলো সেখানেও নারীদের টোকেন হিসাবে রাখা হয়েছে৷ আসলে কিছুই বদলায়নি৷ নারীরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে৷ তাদের ঘরের মধ্যে ঢোকানোর জন্য অপশক্তি আরও সক্রিয় হচ্ছে৷ নারীর এখন পোশাকে দোষ, চলনে দোষ, বলনে দোষ৷ শাহবাগে যখন আমরা নারীর নিরাপত্তা চাইলাম তখন আর্মি , পুলিশ নিরাপত্তা দিল না৷ যৌক্তিক আন্দোলনে তারা সাড়া দেয় না৷ কিন্তু গোপালগঞ্জে গিয়ে ইন্টেরিমের পুলিশ, আর্মি ঠিকই গুলি করলো৷’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নাফিজা জান্নাত বলেন, ‘আমরা এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি৷ বিপুলভাবে নারীরা জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল৷ আমরা পরিবর্তন চাইছি৷ কিন্তু রাষ্ট্রের চরিত্র বদলায়নি৷ একই আছে৷ ফলে বৈষম্য আগের জায়গায়ই আছে৷'
জুলাই আন্দোনে অংশ নেয়া নারীদের কেউ কেউ নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগ দিয়েছেন৷ তাদের একজন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন মনে করেন, নারীরা এখানো নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন৷ নানা ধরনের ট্রলের শিকার হচ্ছেন৷
'আমাদের দলের নারীরাও নানা ধরনের ট্রলের শিকার হচ্ছেন৷ আমাদের একজনের ছবি বিকৃত করে তো নানাভাবে অপপ্রচার হচ্ছে৷ এখানে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন দরকার৷ এনসিপি সেটা চেষ্টা করছে৷ আমরা চাই নারীদের জন্য সংসদের আসনগুলোতে সরাসরি নির্বাচন হোক,' যোগ করেন তিনি।
একই দলের আরেকজন যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনুভা জাবীন বলেন, ‘নারীকে দমিয়ে রাখতেই তাকে নিয়ে ট্রল করা হয়৷ নানা ধরনের অপবাদ দেয়া হয়, অপপ্রচার করা হয়৷ এটা করা হলে তার পরিবার তাকে আটকে দেয়৷ জুলাই আন্দোলনের অনেক নারী তাই হেনস্তার শিকার৷'
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে যেভাবে মেয়েরা অংশ নিয়েছে সেভাবে তারা মর্যাদা পায়নি৷ এতগুলো সংস্কার কশিশন হলো তার মাত্র একটির চেয়ারম্যান নারী৷ আবার তারা (আন্দোলকারী তরুণরা) যে দল গঠন করেছে সেখানেও নারীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে, প্রতিকার পাচ্ছে না৷ নারীবিদ্বেষী মনোভাব সব সময়ই ছিল, কিন্তু এখন সেটা আরও উগ্রভাবে প্রকাশ পাচ্ছে৷ আর তারা যে দল গঠন করেছে সেই দলের মেয়েরাও এখন বলছে নারীর প্রতি বৈষম্যের কথা, নারীর প্রতি নানা আনাকাঙ্খিত আচরণের কথা৷'
মানবাধিকার কর্মী নূর খানের পর্যবেক্ষণ হলো জুলাই আন্দোনে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল বহুমাত্রিক৷ সবখান থেকে নারীরা এক যোগে হাতে হাত মিলিয়ে রাস্তায় নেমেছিলো৷ কিন্তু সেই অবস্থান এখন আর দেখছেন না তিনি৷ নারীদের অংশগ্রহণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আগের মতই কম৷ উল্টো এখন নারীবিরোধী একটি অপশক্তির আস্ফালন দেখছেন তিনি৷

গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশের নারীরা গৌরবময় ভূমিকা রেখেছেন৷ তারা রাজপথে লড়াই করেছেন৷ মিছিলের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেনও অনেকে৷ কিন্তু সেই নারীরা যে বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা এখন হতাশায় পরিণত হয়েছে৷
অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই শহিদ হিসাবে যে ৮৪৪ জনের নাম গেজেটভুক্ত করেছে তাদের মধ্যে ১০ জন নারী৷ আর ওই ১০ জনের মধ্যে চারজনের বয়স ১৮ বছরের নিচে৷
জুলাই অভ্যুত্থানে যেসব নারী সামনে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তারা এখন নতুন যুদ্ধের মুখোমুখি হচ্ছেন৷ তাদের ঘরে আটকে রাখতে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী দিন দিন শক্তিশালী হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ তাদের৷
তারা বলছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা, অবমাননা বেড়েই চলেছে৷ ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে নারীই উল্টো আসামি হচ্ছেন৷ নারীর অবমাননাকারীদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হচ্ছে৷

জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের প্রাণ ছিলেন নারীরা। ছবি: উমামা ফাতেমার ফেসবুক থেকে
জুলাই যোদ্ধা নারীরা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন৷ তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলা হচ্ছে৷ জুলাই নারী যোদ্ধাদের অভিযোগ, ক্ষমতায় টিকে থাকতে তাদের সহযোদ্ধারা এখন অশুভ শক্তি, উগ্রবাদীদের সঙ্গে আপোস করছে৷
সরকারে জুলাই আন্দোলনের তিন তরুণ জায়গা পেলেও আন্দোলনে অংশ নেয়া তরুণীদের কোনো জায়গা হয়নি৷ ১১টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে একটিতেই নারীরা আছেন৷ আরো দু-একটি কমিশনে এক-দুইজন নারী থাকলে নেতৃত্ব পুরুষদের দখলে৷ আর জাতীয় ঐকমত্য কশিমনে একজন মাত্র নারী সদস্য৷
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলেন ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী তিলোত্তমা ইতি৷ তিনি গত বছরের স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘'১৬ জুলাই ইডেন কলেজ থেকে সবচেয়ে বড় মিছিলটি বের করেছিলাম আমরা৷ তারপর পুলিশের হামলা, ছাত্রলীগের হামলা কোনো কিছুই পরোয়া করিনি৷ আমাদের এই আন্দোলনের ফলে স্বৈরাচারের পতন হয়৷ আর এখন সেই আমিই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হয়রানির শিকার হচ্ছি৷’
তিনি বলেন, ‘জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাসের প্রতিবাদে আমি একটি পোস্ট দিয়েছিলাম ফেসবুকে৷ তারপর থেকেই একটি গোষ্ঠী আমাকে হেয় করছে৷ আমি কোনো পোস্ট দিলেই দল বেঁধে অনেক খারাপ মন্তব্য করছে৷ তারা চায় আমি যাতে আমার মতামত প্রকাশ না করি৷ তারা আমার চরিত্র হননে নেমেছে৷ এই পরিস্থিতির শিকার আরও অনেকে৷ আমরা যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম সেটা তো দূর হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না৷ উল্টো নারীরা আরও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন৷ একটি গোষ্ঠী তাদের মতো করে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে৷’’

জুলাই-আগস্টে প্রথমে কোটাবিরোধী ও পরে সরকার পতনের আন্দোলনে রাজপথে অগ্রণী ছিলেন নারী শিক্ষার্থীরাই। ছবি: নুসরাত তাবাসসুমে ফেসবুক থেকে
তিনি আরও বলেন, ‘গত মার্চে শাহবাগে আমরা যারা ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন করেছি৷ তারা সবাই তার আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও ছিলাম৷ কিন্তু ওই আন্দোলনের কারণে আমাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়৷ একজন নারীকে তো ব্যাপক ট্রল করে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করা হয়৷ তার পরিবারকে নানাভাবে চাপে ফেলা হয়৷’
এই ঘটনার প্রত্যক্ষ শিকার আদ্রিতা রায়৷ তিনি জুলাই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন৷ তিনি তখন উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী৷ এখন তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন৷
আদ্রিতা বলেন, ‘মার্চে ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের হামলার শিকার হই৷ মামলা হয় আমাদের বিরুদ্ধে৷ আমি তিন নাম্বার আসামি৷ শুধু তাই নয় আমার ছবি দিয়ে, আমার পরিবারের সদস্যদের ছবি দিয়ে নানা অপপ্রচার করা হয়, বডি শেমিং করা হয়৷ ছবি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়৷ তখন আমি বাইরে বের হতে পারতাম না৷ মাস্ক পরে বের হতে হতো৷ বাইরে কোথাও যেতে হলে মা সাথে যেতেন৷ আমি আর আমার পরিবার নিরপত্তাহীনতার মধ্যে পড়ে যাই৷ জুলাই আন্দোলনের পর ওটা ছিলো আমার জন্য সবচেয়ে খারাপ সময়৷’
তিনি আরও বলেন, ‘আসলে আমরা একটা বৈষম্যহীন সমাজের জন্য মাঠে নেমেছিলাম৷ কিন্তু সেটা এখন ফিকে হয়ে গেছে৷ অন্তর্বর্তী সরকার তেমন কিছুই করছে না৷ হেফাজত সমাবেশ ডেকে নারী কমিশনের সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালি দিল, নারীদের অপমান করল, কিন্তু সরকার কোনো ব্যবস্থা নিল না৷ আর যাদের সাথে একসঙ্গে আন্দোলন করেছি তারা নতুন দল গঠন করল এনসিপি৷ সেই দলের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ হেফাজতের ওই সমাবেশে গিয়ে বক্তৃতা দিলেন৷ ফলে তাদের ওপরও আশা করার কিছু নাই৷’

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শুরুটা ছিল সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে। শুরু থেকেই এ আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন নারী শিক্ষার্থীরা। ছবি: উমামা ফাতেমার ফেসবুক থেকে
গত ২৮ মে বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এলাকায় নারীকে লাথি মারা আকাশ চৌধুরী আটক হলেও জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়৷ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস ও মুক্তির প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আন্দোলনকারী এক নারীকে লাথি মারেন ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম মহানগরের ওয়ার্ড পর্যায়ের এই নেতা৷ সমালোচনার পর অবশ্য তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে৷
গত মার্চ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক নারীকে তার পোশাক নিয়ে হেনস্তা করার পর ভুক্তভোগী নারী শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে ওই মামলায় আটকের পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলেও তৌহিদী জনতা থানা ঘেরাও করে৷ থানা থেকে আদালতে পাঠানোর পর তিনি জামিন পান৷ মুক্তির পর তাকে পাগড়ি, ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়। পরে ওই নারী মামলা প্রত্যাহারেও বাধ্য হন৷ এরপর গত ২৬ জুন ধর্ষণের শিকার নারীকে মারধর ও বিবস্ত্র করে ভিডিও করা এবং তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে কুমিল্লায়৷
গত মে মাসে ঢাকার লালমাটিয়ায় একটি চায়ের দোকানে দুই তরুণী ধূমপান করায় কথাকাটির পর তাদের মবের মুখে পড়তে হয়৷ পরে পুলিশ তাদের থানা হেফাজতে নিয়ে যায়৷ এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘পাবলিক প্লেসে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য অপরাধ৷ কেউ যেন ওপেন প্লেসে ধূমপান না করেন৷’
নারী বিষয়ক সংস্কার কশিন প্রতিবেদন দেওয়ার পর ওই কমিশনই বাতিলের দাবি জানায় হেফাজতে ইসলামসহ কিছু ইসলামী দল৷ কমিশন প্রধান শিরীন হক রীতিমত হুমকির মুখে পড়েন৷ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের তালিকায় নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোনো প্রস্তাব আলোচনার জন্য রাখেনি৷
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন - এই ছয় মাসে ৪৪১ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, যা গড়ে প্রতিদিন দুইজনেরও বেশি৷ ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২২ জনকে৷ ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন ৫ জন নারী৷ ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছেন ১৬২ জন৷ ধর্ষণের ঘটনায় ৩৫৮টি মামলা হলেও ৭৮টি ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি৷ একই সময়ে যৌন হয়ারানির শিকার হয়েছেন ১৬৪ জন নারী৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী অর্ণি আনজুম বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হলের শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করাদের একজন৷ ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন৷ তার মধ্যেও এখন হতাশা কাজ করছে৷
তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলণের সময় আমরা নারীরাই সামনে ছিলাম৷ আসলে নারীদের আন্দোলনের সময় সামনে দেয়া হয়৷ আসলে আমাদের ঢাল হিসাবে সামনে দেয়া হয়েছে৷ অনেক নারী আন্দোলনে ছিলেন একটি বৈষম্যহীন সমাজের আকাঙ্ক্ষায় আর নারীরা যখন নেমে আসে তখন স্বৈরাচার টিকতে পারে না৷ কিন্তু দেখা গেল স্বৈরাচারের পতনের পরও নারীদের বিভিন্ন জায়গায় টোকেন হিসাবে রাখা হয়েছে৷ সবখানেই ব্যাটাগিরি দেখানো হয়েছে৷ তরুণদের যে দল হলো সেখানেও নারীদের টোকেন হিসাবে রাখা হয়েছে৷ আসলে কিছুই বদলায়নি৷ নারীরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে৷ তাদের ঘরের মধ্যে ঢোকানোর জন্য অপশক্তি আরও সক্রিয় হচ্ছে৷ নারীর এখন পোশাকে দোষ, চলনে দোষ, বলনে দোষ৷ শাহবাগে যখন আমরা নারীর নিরাপত্তা চাইলাম তখন আর্মি , পুলিশ নিরাপত্তা দিল না৷ যৌক্তিক আন্দোলনে তারা সাড়া দেয় না৷ কিন্তু গোপালগঞ্জে গিয়ে ইন্টেরিমের পুলিশ, আর্মি ঠিকই গুলি করলো৷’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নাফিজা জান্নাত বলেন, ‘আমরা এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি৷ বিপুলভাবে নারীরা জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল৷ আমরা পরিবর্তন চাইছি৷ কিন্তু রাষ্ট্রের চরিত্র বদলায়নি৷ একই আছে৷ ফলে বৈষম্য আগের জায়গায়ই আছে৷'
জুলাই আন্দোনে অংশ নেয়া নারীদের কেউ কেউ নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগ দিয়েছেন৷ তাদের একজন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন মনে করেন, নারীরা এখানো নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন৷ নানা ধরনের ট্রলের শিকার হচ্ছেন৷
'আমাদের দলের নারীরাও নানা ধরনের ট্রলের শিকার হচ্ছেন৷ আমাদের একজনের ছবি বিকৃত করে তো নানাভাবে অপপ্রচার হচ্ছে৷ এখানে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন দরকার৷ এনসিপি সেটা চেষ্টা করছে৷ আমরা চাই নারীদের জন্য সংসদের আসনগুলোতে সরাসরি নির্বাচন হোক,' যোগ করেন তিনি।
একই দলের আরেকজন যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনুভা জাবীন বলেন, ‘নারীকে দমিয়ে রাখতেই তাকে নিয়ে ট্রল করা হয়৷ নানা ধরনের অপবাদ দেয়া হয়, অপপ্রচার করা হয়৷ এটা করা হলে তার পরিবার তাকে আটকে দেয়৷ জুলাই আন্দোলনের অনেক নারী তাই হেনস্তার শিকার৷'
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে যেভাবে মেয়েরা অংশ নিয়েছে সেভাবে তারা মর্যাদা পায়নি৷ এতগুলো সংস্কার কশিশন হলো তার মাত্র একটির চেয়ারম্যান নারী৷ আবার তারা (আন্দোলকারী তরুণরা) যে দল গঠন করেছে সেখানেও নারীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে, প্রতিকার পাচ্ছে না৷ নারীবিদ্বেষী মনোভাব সব সময়ই ছিল, কিন্তু এখন সেটা আরও উগ্রভাবে প্রকাশ পাচ্ছে৷ আর তারা যে দল গঠন করেছে সেই দলের মেয়েরাও এখন বলছে নারীর প্রতি বৈষম্যের কথা, নারীর প্রতি নানা আনাকাঙ্খিত আচরণের কথা৷'
মানবাধিকার কর্মী নূর খানের পর্যবেক্ষণ হলো জুলাই আন্দোনে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল বহুমাত্রিক৷ সবখান থেকে নারীরা এক যোগে হাতে হাত মিলিয়ে রাস্তায় নেমেছিলো৷ কিন্তু সেই অবস্থান এখন আর দেখছেন না তিনি৷ নারীদের অংশগ্রহণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আগের মতই কম৷ উল্টো এখন নারীবিরোধী একটি অপশক্তির আস্ফালন দেখছেন তিনি৷

গ্রেপ্তার হয়েছেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও অভিনেতা আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে স্ত্রী রিয়া মনির দায়ের করা মামলায় হাতিরঝিল থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬ দিন আগে
সন্তানের মা-বাবা মা হলেন বলিউডের জনপ্রিয় তারকাশিল্পী ক্যাটরিনা কাইফ ও ভিকি কৌশল। শুক্রবার সকালে পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন ক্যাটরিনা। আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যৌথ এক বিবৃতিতে খবরটি জানিয়েছেন এ দুই তারকা।
১৪ দিন আগে
মধু মূলত একটি উচ্চ ঔষধিগুণ সম্পন্ন ভেষজ তরল। এটি চিনির চেয়ে অনেক মিষ্টি। মধুতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ, যা যকৃতে গ্রাইকোজেনের রিজার্ভ গড়ে তোলে। রাতে ঘুমানোর আগে মধু খেলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ভালো থাকে। এটি মানবদেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় বলে নিয়মিত মধু পানে রোগ-বালাই কমে। ঠান্ডায় মধ
১৪ দিন আগে