ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় পালা করে নিজের গ্রাম পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুর আর ঘাটশিলায় বসবাস করতেন। ১৯৫৪ সালের ১ নভেম্বর ঘাটশিলার বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর আগে বিভূতিভূষণ তিন দিন অসুস্থ ছিলেন। তাঁর ছেলে তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিভূতি সংসার’ বই থেকে জানা যায়, লেখকের কার্ডিয়াটাক হয়েছিল।
বিভূতির মৃত্যু নিয়েও নানা মন্তব্য আছে—বাঁকা-সোজা দুই ধরনেরই। বিভূতির অন্যতম জীবনীকার কিশলয় ঠাকুরের ‘পথের কবি’ বইয়ে জানা যায়, চাঁদনী রাতে দুই বন্ধুকে নিয়ে পাহাড়ি জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে জোসনা উপভোগ করছিলেন বিভূতিভূষণ। ফেরার পথে দুই বন্ধুর চেয়ে খানিকটা পিছিয়ে পড়েন তিনি।
এর কিছুক্ষণ পর বন্ধুদ্বয় একটা আর্তচিৎকার শুনে থমকে যান। দৌড়ে গিয়ে দেখেন বিভূতি জঙ্গলের এক জায়গায় পড়ে আছেন। তবে অচেতন নয়, সচেতন। শুধু বলছিলেন, ‘এ আমি কী দেখলাম!...’
পরে দুই বন্ধু জানতে পারেন, বিভূতি এক শবযাত্রী দলকে থামিয়েছিলেন। শবের মুখ থেকে কাপড় সরিয়ে তিনি ভয় পেয়ে যান। কারণ সেটা নাকি তার নিজেরই লাশ ছিল।
বাস্তুবে এটা অসম্ভব। তবে বিভূতি হ্যালুসিনেট করেছিলেন হয়তো—অন্যের লাশের মুখে নিজের অবয়ব দেখেছিলেন! প্রচণ্ড ভয় পেয়ে হার্ট অ্যাটাক করা অসম্ভব নয়।
‘বিভূতির সংসার’-এ বিভূতির নিজের লাশ দেখে ভয় পাওয়ার ব্যাপারটা অবশ্য উহ্য রেখেছেন তারাদাস। তবে যেভাবেই হোক, হার্ট অ্যাটাক করার পরও বিভূতিভূষণ তিন দিন জীবিত ছিলেন। বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল তার।
বাড়িতে কেন?
কারণ বিভূতির ১৩ বছররে ছোট ভাই নুটবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ছিলেন পাস করা ডাক্তার। তিনি ঘাটশিলাতেই প্র্যাকটিস করতেন। নামযশও ছিল। ভাইকে বাঁচানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন তিনি। বিভূতির স্ত্রী রমা মুখোপাধ্যায়ের বরাত দিয়ে সে কথাই তারাদাস জানিয়েছেন ‘বিভূতির সংসার’-এ। কারণ পিতৃবিয়োগের স্মৃতি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে স্মরণ রাখার বয়স তিন বছর বয়সী তারাদাসের তখনো হয়নি।
ভাইয়ের মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েন নুটবিহারী। ছোটবেলায় তারও পিতৃবিয়োগ হয়েছিল, তখন থেকে অগ্রজ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় পিতার দায়িত্ব মাথায় তুলে নিয়েছিলেন। নিজে খেয়ে না খেয়ে ছোট ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছেন। দুই ভাই আসলে ছিলেন হরিহর আত্মা! সেটা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অক্ষুণ্ণ ছিল। সেই ভাইয়ের এমন অকালমৃত্যুতে নুটবিহারীর মুষড়ে পড়া অস্বাভাবিক নয়।
নুটু এ শোক হয়তো সয়ে যেতেন একসময়। কিন্তু সামলে নেওয়ার সময় পাননি; আসলে দেননি প্রতিবেশীরা। বিভূতির মৃত্যুর পর চারপাশ থেকে সমালোচনা আছড়ে পড়ে।
‘নুটু নাকি ভাইয়ের চিকিৎসায় অবহেলা করেছেন!’ ‘যে ভাই তাকে পিতার মতো মানুষ করেছেন, সেই ভাইকে বিনা চিকিৎসায় চলে যেতে হলো?’ ‘কেন বিভূতিকে কলকতা বা টাটানগরে নেওয়া হলো না?’ ‘কেন? ছিঃ ছিঃ…’
বিভূতিভূষণের মতো নুটবিহারীও আবেগপ্রবণ ছিলেন, প্রতিবেশীদের সমালোচনা তাকে তীরের মতো বিদ্ধ করছিল। একসময় ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় তার। ভায়ের শেষকৃত্য করে আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। কার্বলিক এসিড খেয়ে আত্মহত্যা করেন!
যে ট্র্যাজেডির সঙ্গে সারা জীবন লড়েছেন বিভূতিভূষণ, মা-বাবার, ছোট ছোট ভাইবোনের, পিসির, অকালমৃত্যু দেখেছেন—লিখেছেন অসংখ্য ট্র্যাজিক গল্প-উপন্যাস—নিজের মৃত্যুর সময় তো বটেই, মৃত্যুর পরও সেই ট্র্যাজেডি তার পিছু ছাড়েনি।
সূত্র : বিভূতির সংসার/তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যা; পথের কবি/কিশলয় ঠাকুর
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় পালা করে নিজের গ্রাম পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুর আর ঘাটশিলায় বসবাস করতেন। ১৯৫৪ সালের ১ নভেম্বর ঘাটশিলার বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর আগে বিভূতিভূষণ তিন দিন অসুস্থ ছিলেন। তাঁর ছেলে তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিভূতি সংসার’ বই থেকে জানা যায়, লেখকের কার্ডিয়াটাক হয়েছিল।
বিভূতির মৃত্যু নিয়েও নানা মন্তব্য আছে—বাঁকা-সোজা দুই ধরনেরই। বিভূতির অন্যতম জীবনীকার কিশলয় ঠাকুরের ‘পথের কবি’ বইয়ে জানা যায়, চাঁদনী রাতে দুই বন্ধুকে নিয়ে পাহাড়ি জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে জোসনা উপভোগ করছিলেন বিভূতিভূষণ। ফেরার পথে দুই বন্ধুর চেয়ে খানিকটা পিছিয়ে পড়েন তিনি।
এর কিছুক্ষণ পর বন্ধুদ্বয় একটা আর্তচিৎকার শুনে থমকে যান। দৌড়ে গিয়ে দেখেন বিভূতি জঙ্গলের এক জায়গায় পড়ে আছেন। তবে অচেতন নয়, সচেতন। শুধু বলছিলেন, ‘এ আমি কী দেখলাম!...’
পরে দুই বন্ধু জানতে পারেন, বিভূতি এক শবযাত্রী দলকে থামিয়েছিলেন। শবের মুখ থেকে কাপড় সরিয়ে তিনি ভয় পেয়ে যান। কারণ সেটা নাকি তার নিজেরই লাশ ছিল।
বাস্তুবে এটা অসম্ভব। তবে বিভূতি হ্যালুসিনেট করেছিলেন হয়তো—অন্যের লাশের মুখে নিজের অবয়ব দেখেছিলেন! প্রচণ্ড ভয় পেয়ে হার্ট অ্যাটাক করা অসম্ভব নয়।
‘বিভূতির সংসার’-এ বিভূতির নিজের লাশ দেখে ভয় পাওয়ার ব্যাপারটা অবশ্য উহ্য রেখেছেন তারাদাস। তবে যেভাবেই হোক, হার্ট অ্যাটাক করার পরও বিভূতিভূষণ তিন দিন জীবিত ছিলেন। বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল তার।
বাড়িতে কেন?
কারণ বিভূতির ১৩ বছররে ছোট ভাই নুটবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ছিলেন পাস করা ডাক্তার। তিনি ঘাটশিলাতেই প্র্যাকটিস করতেন। নামযশও ছিল। ভাইকে বাঁচানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন তিনি। বিভূতির স্ত্রী রমা মুখোপাধ্যায়ের বরাত দিয়ে সে কথাই তারাদাস জানিয়েছেন ‘বিভূতির সংসার’-এ। কারণ পিতৃবিয়োগের স্মৃতি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে স্মরণ রাখার বয়স তিন বছর বয়সী তারাদাসের তখনো হয়নি।
ভাইয়ের মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েন নুটবিহারী। ছোটবেলায় তারও পিতৃবিয়োগ হয়েছিল, তখন থেকে অগ্রজ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় পিতার দায়িত্ব মাথায় তুলে নিয়েছিলেন। নিজে খেয়ে না খেয়ে ছোট ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছেন। দুই ভাই আসলে ছিলেন হরিহর আত্মা! সেটা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অক্ষুণ্ণ ছিল। সেই ভাইয়ের এমন অকালমৃত্যুতে নুটবিহারীর মুষড়ে পড়া অস্বাভাবিক নয়।
নুটু এ শোক হয়তো সয়ে যেতেন একসময়। কিন্তু সামলে নেওয়ার সময় পাননি; আসলে দেননি প্রতিবেশীরা। বিভূতির মৃত্যুর পর চারপাশ থেকে সমালোচনা আছড়ে পড়ে।
‘নুটু নাকি ভাইয়ের চিকিৎসায় অবহেলা করেছেন!’ ‘যে ভাই তাকে পিতার মতো মানুষ করেছেন, সেই ভাইকে বিনা চিকিৎসায় চলে যেতে হলো?’ ‘কেন বিভূতিকে কলকতা বা টাটানগরে নেওয়া হলো না?’ ‘কেন? ছিঃ ছিঃ…’
বিভূতিভূষণের মতো নুটবিহারীও আবেগপ্রবণ ছিলেন, প্রতিবেশীদের সমালোচনা তাকে তীরের মতো বিদ্ধ করছিল। একসময় ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় তার। ভায়ের শেষকৃত্য করে আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। কার্বলিক এসিড খেয়ে আত্মহত্যা করেন!
যে ট্র্যাজেডির সঙ্গে সারা জীবন লড়েছেন বিভূতিভূষণ, মা-বাবার, ছোট ছোট ভাইবোনের, পিসির, অকালমৃত্যু দেখেছেন—লিখেছেন অসংখ্য ট্র্যাজিক গল্প-উপন্যাস—নিজের মৃত্যুর সময় তো বটেই, মৃত্যুর পরও সেই ট্র্যাজেডি তার পিছু ছাড়েনি।
সূত্র : বিভূতির সংসার/তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যা; পথের কবি/কিশলয় ঠাকুর
ভিডিও বার্তায় হানিয়া বলেছিলেন, তিনি বাংলাদেশে আসছেন একটি ছোট্ট সারপ্রাইজ নিয়ে। সেই ‘সারপ্রাইজ’ ঠিক কী, তা হয়তো করপোরেট ইভেন্টের সীমায় আটকে থাকবে। কিন্তু ভক্তদের কাছে সবচেয়ে বড় চমক তো তিনি নিজেই— ঢাকায় এসে, এই শহরের মাটিতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের প্রতি সমর্থন জানানো।
২২ দিন আগেকবি রেজাউদ্দিন স্টালিনকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
২৩ দিন আগেঅনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও গবেষক রেহনুমা আহমেদ, সংগীতশিল্পী কফিল আহমেদ, বিশ্বসূফি সংস্থার সদস্য হাসান শাহ সুরেশ্বরী দীপু নূরী, সায়ান, অরূপ রাহী, কাজী কৃষ্ণকলি ইসলাম, সহজিয়া ব্যান্ডের রাজুসহ বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মীরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সমগীতের সভাপ্রধ
২৪ দিন আগেপ্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান তাদের বৃহস্পতিবার প্রথম পাতা সাজিয়েছে ট্রাম্পের সফর নিয়েই। সেখানে মূল সংবাদের পাশেই স্থান পেয়েছে ব্রিটিশ ‘পোয়েট লরিয়েট’ তথা রাষ্ট্রীয়ভাবে নিযুক্ত কবি ক্যারল অ্যান ডাফির কবিতা STATE/BANQUET। বিশ্বব্যবস্থা যে রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তারই এক মূর্ত
২৪ দিন আগে