ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
ভাত, রুটি, ডাল কিংবা সবজির সঙ্গে আলু না হলে অনেকেরই খাওয়া যেন অসম্পূর্ণ মনে হয়। ছোট-বড় সবার কাছেই আলুর গ্রহণযোগ্যতা এতটাই বেশি যে অনেক দেশে এটিকে “সেকেন্ড ব্রেড” বা দ্বিতীয় রুটি বলা হয়ে থাকে। শুধু সুস্বাদুই নয়, আলুর ভেতর লুকিয়ে আছে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ, যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। তবে অনেকে আলুকে কেবল মোটা হওয়ার কারণ হিসেবে দোষারোপ করেন। আসলে আলু সেদ্ধ বা ভাপানো অবস্থায় খেলে এর উপকারিতা অনেক, বরং ভাজার ফলে এর ক্ষতি বাড়ে। আলুর পুষ্টিগুণ নিয়ে সারা পৃথিবীতে গবেষণা হয়েছে, এবং বিদেশি বিজ্ঞানীরাও এ নিয়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।
প্রথমেই আলুর ক্যালোরির কথা বলা যাক। এক কাপ সেদ্ধ আলুতে প্রায় ১৩০ ক্যালোরি থাকে, যা তুলনামূলকভাবে কম। এতে কোনো ফ্যাট বা কোলেস্টেরল নেই। আলুর প্রধান উপাদান হলো কার্বোহাইড্রেট, যা শরীরকে শক্তি জোগায়। তাই শ্রমজীবী মানুষ থেকে শুরু করে ক্রীড়াবিদরা শক্তির উৎস হিসেবে আলুর দিকে ঝুঁকেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির পুষ্টিবিদ প্রফেসর লিন্ডা কে. স্লাভিন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আলু হলো প্রাকৃতিক শক্তির এক অসাধারণ উৎস। এতে যে পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট ও ভিটামিন আছে, তা দৈনন্দিন কাজের জন্য যথেষ্ট জ্বালানি সরবরাহ করে।” তাঁর মতে, আলুতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং সঠিকভাবে খেলে এটি খুব উপকারী।
আলুর আরেকটি বড় গুণ হলো এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। আমরা সাধারণত ভিটামিন সি-এর জন্য লেবু বা কমলার কথা ভাবি, কিন্তু আলুও এই ভিটামিনের একটি ভালো উৎস। ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বককে সুস্থ রাখে। ব্রিটেনের কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. সাইমন হোয়াইটহেড বলেন, “আলু হচ্ছে ইউরোপীয়দের জন্য ঐতিহাসিকভাবে অন্যতম প্রধান ভিটামিন সি-এর উৎস। আঠারো শতকে যখন ইউরোপে স্কার্ভি রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন আলু খাওয়ার মাধ্যমে অনেক মানুষ রোগ থেকে বাঁচতে পেরেছিল।”
শুধু ভিটামিন সি নয়, আলুতে আছে ভিটামিন বি৬, যা আমাদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য খুব জরুরি। ভিটামিন বি৬ নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সাহায্য করে, যা আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্রমকে সচল রাখে। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষক ড. জেনিফার অ্যাশটন বলেছেন, “আলুতে থাকা ভিটামিন বি৬ মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি আমাদের স্ট্রেস কমাতে এবং ঘুমের মান উন্নত করতে সহায়তা করে।”
আলুর খোসাতেও রয়েছে প্রচুর পুষ্টি। এতে ফাইবার বা আঁশ থাকে, যা হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তাই অনেক গবেষকই বলেন, আলু খাওয়ার সময় খোসাসহ খাওয়াই ভালো, তবে অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া জরুরি। আমেরিকান ডায়েটেটিক অ্যাসোসিয়েশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আলুর খোসা ফাইবারের অন্যতম সহজলভ্য উৎস। এটি হজম প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।”
এবার খনিজ উপাদানের দিকে নজর দেওয়া যাক। আলুতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনসহ নানা খনিজ থাকে। বিশেষ করে পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের (এনআইএইচ) গবেষক ড. মাইকেল গ্রিনবার্গ এক বক্তৃতায় বলেন, “যেসব মানুষ প্রতিদিন নিয়মিত আলু খান, তাঁদের মধ্যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়। কারণ আলুর পটাশিয়াম সোডিয়ামের ক্ষতিকর প্রভাবকে ব্যালান্স করতে সাহায্য করে।” এ ছাড়া আলুতে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে, যা শরীরে অক্সিজেন বহনে সহায়তা করে।
তবে আলুর সব গুণ একমাত্র নির্ভর করে এটি কীভাবে খাওয়া হচ্ছে তার ওপর। সেদ্ধ, ভাপানো বা হালকা বেক করা আলু শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু তেলেভাজা আলু যেমন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা চিপস খেলে শরীরের জন্য ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। কারণ ভাজার সময় এতে প্রচুর তেল ও ক্যালোরি যুক্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা ইউনিভার্সিটির পুষ্টিবিদ ড. র্যাচেল থমাস বলেন, “আলু নিজে কখনোই খারাপ নয়, বরং রান্নার ধরনই এটিকে স্বাস্থ্যকর বা অস্বাস্থ্যকর করে তোলে। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা ডিপ-ফ্রাইড আলুতে যে ক্যালোরি যোগ হয়, তা অতিরিক্ত ওজন এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।”
আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে বেশি, অর্থাৎ এটি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আলু সীমিত পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে একই সঙ্গে বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি আলু সেদ্ধ করে ঠান্ডা করা হয়, তাহলে এতে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ তৈরি হয়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে দেয় না। জার্মানির পুষ্টি বিজ্ঞানী ড. হ্যান্স মিলার বলেন, “ঠান্ডা সেদ্ধ আলুতে যে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ তৈরি হয়, তা অন্ত্রের জন্য উপকারী এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখতে পারে।”
বিশ্বজুড়ে আলুর ব্যবহারও বৈচিত্র্যময়। দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বতমালা থেকে এর উৎপত্তি, সেখানকার মানুষ বহু আগে থেকেই আলুকে প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে আলু চাষ হয় এবং কোটি কোটি মানুষ এটিকে প্রতিদিনের খাবারের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেন। জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও) আলুকে “গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি” বা বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তার একটি প্রধান উপাদান বলে আখ্যা দিয়েছে। তাঁদের মতে, আলু তুলনামূলকভাবে কম জমিতে বেশি উৎপাদন হয় এবং এটি দ্রুত মানুষের শক্তি ও পুষ্টি জোগাতে সক্ষম।
আলুর আরেকটি বিশেষ দিক হলো এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। বিশেষ করে রঙিন আলু যেমন লাল বা বেগুনি আলুতে অ্যান্থোসায়ানিন নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের কোষকে সুরক্ষা দেয় এবং বার্ধক্য বিলম্বিত করে। আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের গবেষক ড. এমিলি কার্টার বলেন, “রঙিন আলুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কেবল শরীরকে সুস্থ রাখে না, বরং দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন ক্যানসার বা হৃদরোগ প্রতিরোধেও সহায়তা করতে পারে।”
সব মিলিয়ে বলা যায়, আলু শুধু সুস্বাদুই নয়, বরং এর পুষ্টিগুণও অনেক। এতে কার্বোহাইড্রেট থেকে শুরু করে ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার সবই আছে, যা আমাদের শরীরকে শক্তি যোগায় এবং সুস্থ রাখে। তবে খাওয়ার ধরন ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করছে আলু আসলে কতটা উপকারী হবে। সেদ্ধ বা ভাপানো আলু আমাদের শরীরের জন্য আশীর্বাদ, কিন্তু ভাজা আলু অতিরিক্ত খেলে সেটি অভিশাপে পরিণত হতে পারে। বিজ্ঞানীদের ভাষায়, আলু একাধারে শক্তি, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের উৎস, যদি আমরা তা সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারি।
ভাত, রুটি, ডাল কিংবা সবজির সঙ্গে আলু না হলে অনেকেরই খাওয়া যেন অসম্পূর্ণ মনে হয়। ছোট-বড় সবার কাছেই আলুর গ্রহণযোগ্যতা এতটাই বেশি যে অনেক দেশে এটিকে “সেকেন্ড ব্রেড” বা দ্বিতীয় রুটি বলা হয়ে থাকে। শুধু সুস্বাদুই নয়, আলুর ভেতর লুকিয়ে আছে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ, যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। তবে অনেকে আলুকে কেবল মোটা হওয়ার কারণ হিসেবে দোষারোপ করেন। আসলে আলু সেদ্ধ বা ভাপানো অবস্থায় খেলে এর উপকারিতা অনেক, বরং ভাজার ফলে এর ক্ষতি বাড়ে। আলুর পুষ্টিগুণ নিয়ে সারা পৃথিবীতে গবেষণা হয়েছে, এবং বিদেশি বিজ্ঞানীরাও এ নিয়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।
প্রথমেই আলুর ক্যালোরির কথা বলা যাক। এক কাপ সেদ্ধ আলুতে প্রায় ১৩০ ক্যালোরি থাকে, যা তুলনামূলকভাবে কম। এতে কোনো ফ্যাট বা কোলেস্টেরল নেই। আলুর প্রধান উপাদান হলো কার্বোহাইড্রেট, যা শরীরকে শক্তি জোগায়। তাই শ্রমজীবী মানুষ থেকে শুরু করে ক্রীড়াবিদরা শক্তির উৎস হিসেবে আলুর দিকে ঝুঁকেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটির পুষ্টিবিদ প্রফেসর লিন্ডা কে. স্লাভিন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আলু হলো প্রাকৃতিক শক্তির এক অসাধারণ উৎস। এতে যে পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট ও ভিটামিন আছে, তা দৈনন্দিন কাজের জন্য যথেষ্ট জ্বালানি সরবরাহ করে।” তাঁর মতে, আলুতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং সঠিকভাবে খেলে এটি খুব উপকারী।
আলুর আরেকটি বড় গুণ হলো এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। আমরা সাধারণত ভিটামিন সি-এর জন্য লেবু বা কমলার কথা ভাবি, কিন্তু আলুও এই ভিটামিনের একটি ভালো উৎস। ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বককে সুস্থ রাখে। ব্রিটেনের কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. সাইমন হোয়াইটহেড বলেন, “আলু হচ্ছে ইউরোপীয়দের জন্য ঐতিহাসিকভাবে অন্যতম প্রধান ভিটামিন সি-এর উৎস। আঠারো শতকে যখন ইউরোপে স্কার্ভি রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন আলু খাওয়ার মাধ্যমে অনেক মানুষ রোগ থেকে বাঁচতে পেরেছিল।”
শুধু ভিটামিন সি নয়, আলুতে আছে ভিটামিন বি৬, যা আমাদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য খুব জরুরি। ভিটামিন বি৬ নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সাহায্য করে, যা আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্রমকে সচল রাখে। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষক ড. জেনিফার অ্যাশটন বলেছেন, “আলুতে থাকা ভিটামিন বি৬ মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি আমাদের স্ট্রেস কমাতে এবং ঘুমের মান উন্নত করতে সহায়তা করে।”
আলুর খোসাতেও রয়েছে প্রচুর পুষ্টি। এতে ফাইবার বা আঁশ থাকে, যা হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তাই অনেক গবেষকই বলেন, আলু খাওয়ার সময় খোসাসহ খাওয়াই ভালো, তবে অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া জরুরি। আমেরিকান ডায়েটেটিক অ্যাসোসিয়েশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আলুর খোসা ফাইবারের অন্যতম সহজলভ্য উৎস। এটি হজম প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।”
এবার খনিজ উপাদানের দিকে নজর দেওয়া যাক। আলুতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনসহ নানা খনিজ থাকে। বিশেষ করে পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের (এনআইএইচ) গবেষক ড. মাইকেল গ্রিনবার্গ এক বক্তৃতায় বলেন, “যেসব মানুষ প্রতিদিন নিয়মিত আলু খান, তাঁদের মধ্যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়। কারণ আলুর পটাশিয়াম সোডিয়ামের ক্ষতিকর প্রভাবকে ব্যালান্স করতে সাহায্য করে।” এ ছাড়া আলুতে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে, যা শরীরে অক্সিজেন বহনে সহায়তা করে।
তবে আলুর সব গুণ একমাত্র নির্ভর করে এটি কীভাবে খাওয়া হচ্ছে তার ওপর। সেদ্ধ, ভাপানো বা হালকা বেক করা আলু শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু তেলেভাজা আলু যেমন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা চিপস খেলে শরীরের জন্য ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। কারণ ভাজার সময় এতে প্রচুর তেল ও ক্যালোরি যুক্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা ইউনিভার্সিটির পুষ্টিবিদ ড. র্যাচেল থমাস বলেন, “আলু নিজে কখনোই খারাপ নয়, বরং রান্নার ধরনই এটিকে স্বাস্থ্যকর বা অস্বাস্থ্যকর করে তোলে। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা ডিপ-ফ্রাইড আলুতে যে ক্যালোরি যোগ হয়, তা অতিরিক্ত ওজন এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।”
আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে বেশি, অর্থাৎ এটি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আলু সীমিত পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে একই সঙ্গে বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি আলু সেদ্ধ করে ঠান্ডা করা হয়, তাহলে এতে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ তৈরি হয়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে দেয় না। জার্মানির পুষ্টি বিজ্ঞানী ড. হ্যান্স মিলার বলেন, “ঠান্ডা সেদ্ধ আলুতে যে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ তৈরি হয়, তা অন্ত্রের জন্য উপকারী এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখতে পারে।”
বিশ্বজুড়ে আলুর ব্যবহারও বৈচিত্র্যময়। দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বতমালা থেকে এর উৎপত্তি, সেখানকার মানুষ বহু আগে থেকেই আলুকে প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে আলু চাষ হয় এবং কোটি কোটি মানুষ এটিকে প্রতিদিনের খাবারের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেন। জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও) আলুকে “গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি” বা বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তার একটি প্রধান উপাদান বলে আখ্যা দিয়েছে। তাঁদের মতে, আলু তুলনামূলকভাবে কম জমিতে বেশি উৎপাদন হয় এবং এটি দ্রুত মানুষের শক্তি ও পুষ্টি জোগাতে সক্ষম।
আলুর আরেকটি বিশেষ দিক হলো এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। বিশেষ করে রঙিন আলু যেমন লাল বা বেগুনি আলুতে অ্যান্থোসায়ানিন নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের কোষকে সুরক্ষা দেয় এবং বার্ধক্য বিলম্বিত করে। আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের গবেষক ড. এমিলি কার্টার বলেন, “রঙিন আলুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কেবল শরীরকে সুস্থ রাখে না, বরং দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন ক্যানসার বা হৃদরোগ প্রতিরোধেও সহায়তা করতে পারে।”
সব মিলিয়ে বলা যায়, আলু শুধু সুস্বাদুই নয়, বরং এর পুষ্টিগুণও অনেক। এতে কার্বোহাইড্রেট থেকে শুরু করে ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার সবই আছে, যা আমাদের শরীরকে শক্তি যোগায় এবং সুস্থ রাখে। তবে খাওয়ার ধরন ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করছে আলু আসলে কতটা উপকারী হবে। সেদ্ধ বা ভাপানো আলু আমাদের শরীরের জন্য আশীর্বাদ, কিন্তু ভাজা আলু অতিরিক্ত খেলে সেটি অভিশাপে পরিণত হতে পারে। বিজ্ঞানীদের ভাষায়, আলু একাধারে শক্তি, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের উৎস, যদি আমরা তা সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারি।
কন্নড় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির প্রখ্যাত অভিনেতা দিনেশ মাঙ্গালোর আর নেই। ‘কেজিএফ চ্যাপ্টার ১’-এ ডন শেঠির ভূমিকায় অভিনয় করে যিনি দেশজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, সেই জনপ্রিয় অভিনেতা সোমবার (২৫ আগস্ট) ভোররাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর।
৬ ঘণ্টা আগেসময় প্রতিদিন আসে ঋণদাতার বেশে, ক্যালেন্ডারের পাতায় লিখে যায় তাগিদ: আজও বেঁচে আছ, কালও বাঁচতে হবে— কিন্তু কোথা থেকে আনবে আলো,
১ দিন আগেসোনা আসলে এক ধরনের ‘নোবেল মেটাল’। নোবেল মেটাল বলতে বোঝায় এমন ধাতু, যা সাধারণ পরিবেশে খুব সহজে অক্সিজেন, পানি বা অ্যাসিডের সঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় যায় না। সোনার বৈশিষ্ট্য হলো, এটি অত্যন্ত স্থিতিশীল। সোনার পরমাণুগুলো এমনভাবে সাজানো যে, বাইরের অক্সিজেন বা আর্দ্রতা সহজে এর সঙ্গে রাসায়নিক বন্ধনে যুক্ত হতে পার
১ দিন আগে