জেমী হাফিজ
ঢাকার একজন সাধারণ নাগরিক যখন ক্লান্ত হয়ে ওঠেন, তখন মন খুলে দম নেওয়ার জন্য তিনি কোথায় গিয়ে বসবেন? এই প্রশ্নের জবাব কারও কাছে নেই। দেড় থেকে পৌনে দুই কোটি মানুষের এই শহরে বিনোদন দূরে থাক, মুক্ত বাতাসে একটু শ্বাস নেওয়া অনেকসময় কঠিন।
আজকাল সংবাদপত্রগুলো দূষিত শহরের তালিকায় বিশ্বে ঢাকার অবস্থান কত তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) এর তথ্য অনুযায়ী ঢাকা প্রায়ই দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম অবস্থানে থাকে, দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম অবস্থানে থাকাটা এখন সাধারণ চিত্র।
আজ থেকে ৩০ বছর আগে আমাদের শৈশব ও তারুণ্যের বেড়ানোর জায়গাগুলো এখন নানা রকমের অপরিচ্ছন্ন জঞ্জালে ভরা। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর স্রোত যেন শুধু আবদ্ধ জল। অনেক সময় সেখানকার দূষিত পানিতে জলজপ্রাণী ও উদ্ভিদও টিকতে পারে না।
গুলশান, গুলিস্তান, সেগুনবাগিচা, শান্তিবাগ, শান্তিনগর-এসব জায়গা এখন কেবল নামসর্বস্ব। অপরিকল্পিত নগরায়নের ছাপ এসব জায়গার প্রায় সর্বত্রই। পুরান ঢাকার বেশির ভাগ এলাকার স্থাপনা ও জীবনযাত্রার কথা মনে হলে গা শিউরে ওঠে।
আজ ঢাকাকে মনে হয় স্রেফ বিশৃঙ্খল, হই-হট্টগোলে ভরা এক দূষিত নগরী। হাজার হাজার যানবাহনে ভরপুর এক বিশৃঙ্খল শহুরে জঙ্গল, যেখানে গিজগিজ করছে অস্থির বাসিন্দারা।
ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৩০ হাজার। আর পুরান ঢাকার মতো এলাকাগুলোতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৮০ হাজার মানুষ বাস করে।
পূর্বাভাস অনুসারে, বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী নগর অঞ্চলে ২০৩০ সাল নাগাদ ৩০ মিলিয়ন মানুষ বাস করবে। এর ফলে ঢাকা পরিণত হবে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম মেগাসিটিতে।
ঢাকা নগরে নাগরিক আছে, কিন্তু কার্যকর নগর কর্তৃপক্ষ বলে কিছু আছে বলে মনে হয় না। রাস্তার ফুটপাতের প্রায় সবটাই হকারের দখলে। নগরে দুটি সিটি করপোরেশন ও দুজন মেয়র আছেন। পুরো বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। এই মন্ত্রণালয়ে আছেন একজন মন্ত্রী ও একজন সচিব।
এছাড়াও এসব দেখভাল করার জন্য আছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। আরও আছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, নগর উন্নয়ন অধিদফতরে পরিচালক, নগর গণপূর্ত বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী এবং আরবরী কালচার বিভাগে প্রধান বৃক্ষপালনবিদ।
সরকারের এসব নীতি নির্ধারক এবং কর্মকর্তাদের সুচিন্তিত ও কার্যকর পদক্ষেপ ঢাকার চেহারা অনেকটাই বদলে দিতে পারে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। শহরকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও বসবাস উপযোগী করার জন্য কিন্তু খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না। একটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে আমরা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করি। কিন্তু সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন শহরের জন্য শত কোটি টাকারও প্রয়োজন হবে না।
ধানমন্ডি লেক, হাতিরঝিল অথবা জাতীয় সংসদ ভবনের কথাই ধরা যাক। সেখান কত জায়গা। কিন্তু গুছিয়ে রাখলে আরও এসব স্থান আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন হতে পারে।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পার্ক, ফোয়ারা এবং সবুজ উদ্যানগুলোর আশে পাশে কয়েকটা খালি বেঞ্চ থাকা দরকার। খালের পাড়ে বাধাঁনো এক টুকরা পাথর বা নদীর ধারে একটু বসার জায়গা নাগরিকদের স্বস্তি দিতে পারে।
এসব কাজের জন্য কিন্তু অনেক টাকার প্রয়োজন নেই। যতটুকু দরকার তা দেওয়ার সামর্থ্য নিশ্চয়ই আমাদের সরকারের রয়েছে। রাজশাহী নগরীকে সবুজ ও সুন্দর করে গড়ে তোলার কাজ করছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। সবাই এর প্রশংসা করে।
ঢাকার মহাখালী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের দুই ধারে শোভা বর্ধনের কাজ করেছে সড়ক বিভাগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রথম সরকারের মেয়াদে (১৯৯৬-২০০০) ধানমন্ডি লেক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে এলজিইডি। আবার শেখ হাসিনা সরকারের দ্বিতীয় দফায় সরকার হাতিরঝিল লেক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে। ধানমন্ডি লেক ও হাতিরঝিলে কিছুটা হলেও স্বাস্থ্যকর ও বেড়ানোর উপযোগী পরিবেশ বিদ্যমান।
প্রতিদিনের একঘেঁয়ে জীবনের ব্যস্ততা ছেড়ে কিছুটা অবসর কাটানো এবং প্রকৃতির মাঝে সুন্দরভাবে সময় কাটানোর ইচ্ছা থাকে অনেকেরই। তাই প্রাকৃতিক সান্নিধ্যে বিলাসবহুল মনোমুগ্ধকর সব স্পট কিংবা রিসোর্ট গড়ে উঠেছে ঢাকার আশপাশসহ বিভিন্ন স্থানে।
ঢাকা শহরে হয়তো আবার আগের মতো মৌ মৌ গন্ধে ভ্রমরের গুঞ্জন শোনা কঠিন। পাখির কলতানে হয়তো মুখর হবে না। বুড়িগঙ্গায় গাংচিল নেচে গেয়ে উড়ে বেড়াবে না। তাই বলে চোখে দেখা সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা কঠিন কিছু না। সৌন্দর্য বর্ধনের এই কাজটি করতে চাই বিশেষ মনযোগ।
শহরের এই পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি কথা হচ্ছিল সরকারের একজন পদস্থ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের সঙ্গে, যিনি এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন সৃজনশীল চিন্তা আমাকে মুগ্ধ করে, উদ্বুদ্ধ করে এ নিয়ে কিছু লিখতে ও কাজ করতে। নগর নান্দনিক বোর্ড বা অথরিটি গঠনের চিন্তা ওনার কাছ থেকে পাই।
ঢাকাসহ দেশের শহরগুলোকে সাজিয়ে তোলার জন্য আলাদা বোর্ড বা কর্তৃপক্ষ গঠন করে সৌন্দর্য্য ও নাগরিক নান্দনিকতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা সম্ভব। আর সেটার সঠিক সময় এখনই।
বিশেষজ্ঞ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, সুশীলসমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকারের স্থানীয় সরকার বা গণপূর্ত মন্ত্রাণালয় প্রথমে ঢাকায় নগর নান্দনিক বোর্ড বা অথরিটি গঠন করতে পারে।
এই বোর্ডের ভাবনায় থাকবে শুধু রাজধানী ঢাকাকে বিভিন্ন আরো সৌন্দর্য্যময় করে তোলা। রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ওসমানি উদ্যান, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বর ছাড়াও মহানগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অব্যাবহৃত স্থানে বৃক্ষরোপণ করার পাশাপাশি সৌন্দর্য বর্ধন করা যেতে পারে।
এই তো ঢাকা উত্তরের উদ্যোগে প্রাণ ফিরে পেতে যাচ্ছে ঢাকার ‘প্যারিস খাল’। রাজধানীর মিরপুর-১০ মোড় থেকে উত্তর-পূর্ব দিকেই প্যারিস রোড। এই সড়কের পাশেই ‘প্যারিস খাল’।
কিছুদিন আগেও এই খালটি ছিল বেদখলে। একসময়ের ৪০ ফুট চওড়া খালটি নালায় পরিণত হয়েছিল। সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন খালটি উদ্ধার ও পরিষ্কার করেছে। খালটি পরিষ্কারে কাজ করেছে প্রায় ১ হাজার ২০০ স্বেচ্ছাসেবী।
সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, পুরোপুরি উদ্ধারের পর খালের পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে।
প্যারিস খালের মতো ঢাকা শহরের আরও বেশ কয়েকটি খাল হারিয়ে গেছে। দখল ও দূষণে এসব খাল চিহ্নিত করা কঠিন। তবে কঠিন হলেও তা মোটেও অবাস্তব নয়।
ঢাকা শহর জনসংখ্যার ভারে ন্যুয়ে পড়ছে। নগরবাসী অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত। বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ ও যানজটের মতো বিষয়গুলো মানুষকে প্রতিদিন ভোগাচ্ছে। নান্দনিক বোর্ড গঠন করে যান্ত্রিক শহরবাসীকে কিছুটা স্বস্তি দেওয়া যেতে পারে।
জেমী হাফিজ, সমাজকর্মী
ঢাকার একজন সাধারণ নাগরিক যখন ক্লান্ত হয়ে ওঠেন, তখন মন খুলে দম নেওয়ার জন্য তিনি কোথায় গিয়ে বসবেন? এই প্রশ্নের জবাব কারও কাছে নেই। দেড় থেকে পৌনে দুই কোটি মানুষের এই শহরে বিনোদন দূরে থাক, মুক্ত বাতাসে একটু শ্বাস নেওয়া অনেকসময় কঠিন।
আজকাল সংবাদপত্রগুলো দূষিত শহরের তালিকায় বিশ্বে ঢাকার অবস্থান কত তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) এর তথ্য অনুযায়ী ঢাকা প্রায়ই দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম অবস্থানে থাকে, দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম অবস্থানে থাকাটা এখন সাধারণ চিত্র।
আজ থেকে ৩০ বছর আগে আমাদের শৈশব ও তারুণ্যের বেড়ানোর জায়গাগুলো এখন নানা রকমের অপরিচ্ছন্ন জঞ্জালে ভরা। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর স্রোত যেন শুধু আবদ্ধ জল। অনেক সময় সেখানকার দূষিত পানিতে জলজপ্রাণী ও উদ্ভিদও টিকতে পারে না।
গুলশান, গুলিস্তান, সেগুনবাগিচা, শান্তিবাগ, শান্তিনগর-এসব জায়গা এখন কেবল নামসর্বস্ব। অপরিকল্পিত নগরায়নের ছাপ এসব জায়গার প্রায় সর্বত্রই। পুরান ঢাকার বেশির ভাগ এলাকার স্থাপনা ও জীবনযাত্রার কথা মনে হলে গা শিউরে ওঠে।
আজ ঢাকাকে মনে হয় স্রেফ বিশৃঙ্খল, হই-হট্টগোলে ভরা এক দূষিত নগরী। হাজার হাজার যানবাহনে ভরপুর এক বিশৃঙ্খল শহুরে জঙ্গল, যেখানে গিজগিজ করছে অস্থির বাসিন্দারা।
ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৩০ হাজার। আর পুরান ঢাকার মতো এলাকাগুলোতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৮০ হাজার মানুষ বাস করে।
পূর্বাভাস অনুসারে, বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী নগর অঞ্চলে ২০৩০ সাল নাগাদ ৩০ মিলিয়ন মানুষ বাস করবে। এর ফলে ঢাকা পরিণত হবে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম মেগাসিটিতে।
ঢাকা নগরে নাগরিক আছে, কিন্তু কার্যকর নগর কর্তৃপক্ষ বলে কিছু আছে বলে মনে হয় না। রাস্তার ফুটপাতের প্রায় সবটাই হকারের দখলে। নগরে দুটি সিটি করপোরেশন ও দুজন মেয়র আছেন। পুরো বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। এই মন্ত্রণালয়ে আছেন একজন মন্ত্রী ও একজন সচিব।
এছাড়াও এসব দেখভাল করার জন্য আছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। আরও আছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, নগর উন্নয়ন অধিদফতরে পরিচালক, নগর গণপূর্ত বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী এবং আরবরী কালচার বিভাগে প্রধান বৃক্ষপালনবিদ।
সরকারের এসব নীতি নির্ধারক এবং কর্মকর্তাদের সুচিন্তিত ও কার্যকর পদক্ষেপ ঢাকার চেহারা অনেকটাই বদলে দিতে পারে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। শহরকে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও বসবাস উপযোগী করার জন্য কিন্তু খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না। একটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে আমরা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করি। কিন্তু সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন শহরের জন্য শত কোটি টাকারও প্রয়োজন হবে না।
ধানমন্ডি লেক, হাতিরঝিল অথবা জাতীয় সংসদ ভবনের কথাই ধরা যাক। সেখান কত জায়গা। কিন্তু গুছিয়ে রাখলে আরও এসব স্থান আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন হতে পারে।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পার্ক, ফোয়ারা এবং সবুজ উদ্যানগুলোর আশে পাশে কয়েকটা খালি বেঞ্চ থাকা দরকার। খালের পাড়ে বাধাঁনো এক টুকরা পাথর বা নদীর ধারে একটু বসার জায়গা নাগরিকদের স্বস্তি দিতে পারে।
এসব কাজের জন্য কিন্তু অনেক টাকার প্রয়োজন নেই। যতটুকু দরকার তা দেওয়ার সামর্থ্য নিশ্চয়ই আমাদের সরকারের রয়েছে। রাজশাহী নগরীকে সবুজ ও সুন্দর করে গড়ে তোলার কাজ করছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। সবাই এর প্রশংসা করে।
ঢাকার মহাখালী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের দুই ধারে শোভা বর্ধনের কাজ করেছে সড়ক বিভাগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রথম সরকারের মেয়াদে (১৯৯৬-২০০০) ধানমন্ডি লেক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে এলজিইডি। আবার শেখ হাসিনা সরকারের দ্বিতীয় দফায় সরকার হাতিরঝিল লেক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে। ধানমন্ডি লেক ও হাতিরঝিলে কিছুটা হলেও স্বাস্থ্যকর ও বেড়ানোর উপযোগী পরিবেশ বিদ্যমান।
প্রতিদিনের একঘেঁয়ে জীবনের ব্যস্ততা ছেড়ে কিছুটা অবসর কাটানো এবং প্রকৃতির মাঝে সুন্দরভাবে সময় কাটানোর ইচ্ছা থাকে অনেকেরই। তাই প্রাকৃতিক সান্নিধ্যে বিলাসবহুল মনোমুগ্ধকর সব স্পট কিংবা রিসোর্ট গড়ে উঠেছে ঢাকার আশপাশসহ বিভিন্ন স্থানে।
ঢাকা শহরে হয়তো আবার আগের মতো মৌ মৌ গন্ধে ভ্রমরের গুঞ্জন শোনা কঠিন। পাখির কলতানে হয়তো মুখর হবে না। বুড়িগঙ্গায় গাংচিল নেচে গেয়ে উড়ে বেড়াবে না। তাই বলে চোখে দেখা সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা কঠিন কিছু না। সৌন্দর্য বর্ধনের এই কাজটি করতে চাই বিশেষ মনযোগ।
শহরের এই পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি কথা হচ্ছিল সরকারের একজন পদস্থ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের সঙ্গে, যিনি এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন সৃজনশীল চিন্তা আমাকে মুগ্ধ করে, উদ্বুদ্ধ করে এ নিয়ে কিছু লিখতে ও কাজ করতে। নগর নান্দনিক বোর্ড বা অথরিটি গঠনের চিন্তা ওনার কাছ থেকে পাই।
ঢাকাসহ দেশের শহরগুলোকে সাজিয়ে তোলার জন্য আলাদা বোর্ড বা কর্তৃপক্ষ গঠন করে সৌন্দর্য্য ও নাগরিক নান্দনিকতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা সম্ভব। আর সেটার সঠিক সময় এখনই।
বিশেষজ্ঞ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, সুশীলসমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকারের স্থানীয় সরকার বা গণপূর্ত মন্ত্রাণালয় প্রথমে ঢাকায় নগর নান্দনিক বোর্ড বা অথরিটি গঠন করতে পারে।
এই বোর্ডের ভাবনায় থাকবে শুধু রাজধানী ঢাকাকে বিভিন্ন আরো সৌন্দর্য্যময় করে তোলা। রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ওসমানি উদ্যান, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বর ছাড়াও মহানগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অব্যাবহৃত স্থানে বৃক্ষরোপণ করার পাশাপাশি সৌন্দর্য বর্ধন করা যেতে পারে।
এই তো ঢাকা উত্তরের উদ্যোগে প্রাণ ফিরে পেতে যাচ্ছে ঢাকার ‘প্যারিস খাল’। রাজধানীর মিরপুর-১০ মোড় থেকে উত্তর-পূর্ব দিকেই প্যারিস রোড। এই সড়কের পাশেই ‘প্যারিস খাল’।
কিছুদিন আগেও এই খালটি ছিল বেদখলে। একসময়ের ৪০ ফুট চওড়া খালটি নালায় পরিণত হয়েছিল। সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন খালটি উদ্ধার ও পরিষ্কার করেছে। খালটি পরিষ্কারে কাজ করেছে প্রায় ১ হাজার ২০০ স্বেচ্ছাসেবী।
সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, পুরোপুরি উদ্ধারের পর খালের পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে।
প্যারিস খালের মতো ঢাকা শহরের আরও বেশ কয়েকটি খাল হারিয়ে গেছে। দখল ও দূষণে এসব খাল চিহ্নিত করা কঠিন। তবে কঠিন হলেও তা মোটেও অবাস্তব নয়।
ঢাকা শহর জনসংখ্যার ভারে ন্যুয়ে পড়ছে। নগরবাসী অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত। বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ ও যানজটের মতো বিষয়গুলো মানুষকে প্রতিদিন ভোগাচ্ছে। নান্দনিক বোর্ড গঠন করে যান্ত্রিক শহরবাসীকে কিছুটা স্বস্তি দেওয়া যেতে পারে।
জেমী হাফিজ, সমাজকর্মী
প্যানেল আলোচনায় যুদ্ধের ভয়াবহতা ও ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরার পাশাপাশি সবার সম্মিলিত সহায়তায় কীভাবে রাশিয়াকে যুদ্ধে পর্যুদস্ত করা যায় সেসব বিষয় উঠে আসে। ন্যাটোর তত্ত্বাবধানে সমরাস্ত্র ও তহবিল সংগ্রহ, এমনকি সম্মিলিত সৈন্যবাহিনী পাঠানোর সম্ভাব্যতা নিয়েও আলোচনা চলছিল বলে রাষ্ট্রদূতদের অবহিত করা হয়।
৪ দিন আগে২০০৮ থেকে ২০২৪। বাংলাদেশে শুরু হলো এক রক্তঝরানোর অধ্যায়। হত্যা, খুন, গুম, আয়নাঘর— বিরোধী দলের নেতাদের ওপর অমানুষিক, নির্মম, নিষ্ঠুর অত্যাচার। মানবতা বিসর্জন দিয়ে রক্তের হোলি খেলায় মেতেছিল ফ্যাসিস্ট সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে গুলির নির্দেশ দিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে গিয়ে নিজের দেশের
৫ দিন আগেতবে হঠাৎ করেই ঘুরে গেছে হাওয়া। বদলে গেছে সবার সুর। সবার মুখে মুখে এখন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। কেউ বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে ভোট হতেই হবে। তবে সংস্কার নিয়ে ৮৪টি বিষয়ে ঐকমত্য হলেও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে এখনো ঐকমত্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। এ নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি তিন দলের অবস্থান ভিন্
৬ দিন আগেএই সেপ্টেম্বরেই ১৫৮ বছরে পা দিলো সেই বই, যার নাম থেকে এই হেডলাইনের খেলা— কার্ল মার্ক্সের যুগান্তকারী গ্রন্থ ‘ডাস ক্যাপিটাল’।
১৯ দিন আগে