সবার মুখে ফেব্রুয়ারিতে ভোট, বিরোধ জুলাই সনদ ঘিরে

সজীব রহমান
প্রতীকী ছবি

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দোলাচল শুরু থেকেই। জুনে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর থেকেই প্রধান উপদেষ্টা বলে আসছেন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের কথা। তবে তাতে যেন আশ্বস্ত হতে পারছিলেন না কেউ।

এর মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও তৈরি হয়েছে মতভিন্নতা। বিএনপি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে জোর দিয়ে কথা বললেও জামায়াতে ইসলামী সংখ্যানুপাতিক তথা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিষয়ে অনড় ছিল। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আবার সংস্কার-বিচারের আগে নির্বাচনের বিষয়ে কোনোভাবেই রাজি ছিল না।

তবে হঠাৎ করেই ঘুরে গেছে হাওয়া। বদলে গেছে সবার সুর। সবার মুখে মুখে এখন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। কেউ বলছেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে আর শঙ্কা নেই। কেউ বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে ভোট হতেই হবে। তবে সংস্কার নিয়ে ৮৪টি বিষয়ে ঐকমত্য হলেও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে এখনো ঐকমত্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। এ নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি তিন দলের অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন।

ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা শুরু থেকেই

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে ভোটের কথা বলা হয়েছে বারবার। তবে বিএনপির দাবি ছিল, ভোট হতে হবে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই। এ নিয়ে সরকার ও বিএনপির মধ্যে দ্বন্দ্বও ক্রমেই প্রকট হতে থাকে।

এ পরিস্থিতির অবসান ঘটে গত জুনে। লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠকের পর ফেব্রুয়ারিতে ভোটের ইঙ্গিত আসে সরকারের তরফে। চূড়ান্ত ঘোষণা আসে গত ৫ আগস্ট, জুলাই আন্দোলনের বর্ষপূর্তির দিনে। প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজা শুরুর আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে।

এ ঘোষণাকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ব্যাপকভাবে স্বাগত জানালেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া আসে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির পক্ষ থেকে। দলগুলো বলছিল, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পাশাপাশি সংস্কার প্রক্রিয়ার যথাযথ অগ্রগতি না হওয়া সত্ত্বওে ভোটের ঘোষণা জুলাইয়ের শহিদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।

কেবল একটি দলের প্রধানের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ওই একটি দলের দাবিকে প্রাধান্য দিতেই ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে— এমন অভিযোগও ওঠে জামায়াত-এনসিপির পক্ষ থেকে। সরকার অন্যায্যভাবে একটি দলকে গুরুত্ব দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এসব দলের নেতারা।

ভোটের সামনে পিআর-গণপরিষদ

এদিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করলে সেখানে ভোটের পদ্ধতি নিয়ে মতপার্থক্য প্রকট হয়ে ওঠে। এ সময় আলোচনায় উঠে আসে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, ভোটে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির প্রয়োগ, জুলাই সনদের সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচন।

ঐকমত্য পরিষদের আলোচনায় প্রায় সব দলই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ নিয়ে একমত পোষণ করে। তবে দুই কক্ষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার পদ্ধতি নিয়ে দেখা দেয় দ্বিমত। বিএনপি নিম্নকক্ষে প্রচলিত পদ্ধতিতে ভোটের পাশাপাশি নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতেই উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্বের পক্ষে মত দেয়। এনসিপির প্রস্তাব, নিম্নকক্ষে প্রচলিত পদ্ধতিতে ভোট হলেও উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব হবে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী নিম্নকক্ষের ভোটই পিআর পদ্ধতিতে না হলে ভোটে যাবে না বলে অনড় অবস্থানের কথা জানায়।

এদিকে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়েও দলগুলো একমত হতে পারেনি। এনসিপি ও জামায়াতের দাবি, জুলাই সনদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি বলেছে, ভোটে নির্বাচিত সরকার জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার পূরণ করবে। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিও রয়েছে এনসিপির। তাদের দাবি, গণপরিষদ নির্বাচন না হলেও অন্তত গণভোটের মাধ্যমে মীমাংসা করে তারপর জাতীয় নির্বাচনের পথে যেতে হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর এমন পালটাপালটি অবস্থানে স্বাভাবিকভাবেই ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। সরকারের তরফ থেকে প্রধান উপদেষ্টাসহ তার প্রেস সচিব ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা বারবার ফেব্রুয়ারিতে ভোটের কথা জোর দিয়ে বলে আসছেন। তবে জামায়াতের পক্ষ থেকেও বারবারই পিআর পদ্ধতিতে ভোট আর এনসিপির পক্ষ থেকে গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলে আসছিলেন দলগুলোর নেতারা।

রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী এমন অবস্থানের কারণে ফেব্রুয়ারিতে ভোটের আয়োজন নিয়ে শঙ্কার জানিয়েছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই। তারা বলছিলেন, দলগুলোর মধ্যে ঐক্য না এলে জুলাই-পরবর্তী যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে গণতান্ত্রিক যাত্রার সুযোগ নিয়ে, সেটি নষ্ট হবে।

হঠাৎ বদলে গেছে সুর

রাজনৈতিক এমন ঘোলাটে পরিস্থিতির মধ্যে হঠাৎ করেই প্রায় সব পক্ষ থেকেই ভোট নিয়ে সুরে বদল দেখা দিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ভোট আয়োজন নিয়ে নমনীয় হয়ে উঠেছেন প্রায় সবাই।

প্রধান উপদেষ্টা তো বারবারই ফেব্রুয়ারিতে ভোটের কথা বলে আসছিলেন। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন— ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচন হবে। এটি নিয়ে কমিশনের পূর্ণাঙ্গ অঙ্গীকার আছে। কেউ ব্যত্যয় ঘটানোর চেষ্টা করলে সেটি হবে জাতির জন্য চরম বিপর্যয়।’ এ দিন ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে যুক্ত হয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কোনো বিকল্প আমাদের হাতে নেই।’

প্রধান উপদেষ্টা রোববারও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে যুক্ত হয়ে বলেছেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হবে। সেটি হবে মহোৎসবের নির্বাচন, যদি আমরা ঐকমত্যের মাধ্যমে ফয়সালা করতে পারি।’

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক গোলটেবিল বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে কেবল যে অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে তা নয়, জাতীয় নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হবে। আমি তা-ই মনে করি। সেই কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রয়োজন এ জিনিসটা মোকাবিলা করা।

শনিবারেই বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করতে বরিশাল গিয়েছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। সেখানে তার বক্তব্যেও উঠে আসে নির্বাচন প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে কোনো সংশয় নেই। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে, আমাদের অংশগ্রহণের প্রয়োজন নেই।’

এদিকে গত সপ্তাহে যমুনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনার বিষয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যেভাবে হোক ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। পৃথিবীর কোনো শক্তি এ নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না।’

শুক্রবার মাগুরায় কবি ফররুখ আহমদের পৈতৃক বাড়ি পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন শফিকুল আলম। সেখানেও তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য পুরো জাতি প্রস্তুত। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানও কাজ করতে শুরু করেছে। আশা করছি ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

সরকার আগে থেকে বললেও এখন জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের কণ্ঠেও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে নমনীয় সুর শোনা যাচ্ছে। শনিবার এক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেওয়া জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দের বক্তব্যে সেটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারি মাসে হতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচন যদি না হয়, আবার আমাদের সবাইকে আগের চেয়ে ভয়ংকর অবস্থায় যেতে হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

আগস্টের শেষ সপ্তাহেও দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়নে অনেকেই কেন বাধা দেখছেন, তা বোধগম্য নয়। আগের সংবিধানে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে এনসিপি অংশগ্রহণ করবে কি না সংশয় রয়েছে।

তবে শনিবার এক অনুষ্ঠানে আখতার বলেন, ‘নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনের বিষয়ে কোনো সংশয় নেই।’ অবশ্য জুলাই সনদ আর সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়নের আলোচনা এখনো আটকে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। নির্বাচনের পর দেশ কীভাবে পরিচালিত হবে, সেটি এখন ঠিক করা না গেলে নির্বাচন কাঙ্ক্ষিত ফল দেবে না বলেও মত দেন তিনি।

রাজনৈতিক দলের বাইরে অন্যদের কাছ থেকেও ফেব্রুয়ারিতে ভোটের বিষয়ে বক্তব্য আসছে। এক অনুষ্ঠানে হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও এ কে আজাদও নির্বাচনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন। বলেন, ১নির্বাচন না হলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।’

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন এ কে আজাদ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করেছিলেন। জয়ও পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগে সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। নির্বাচন এখন অবধারিত, এটা ফেব্রুয়ারির মধ্যে হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’

বিএনপি নেতারা অবশ্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের পক্ষে কথা বলে আসছেন আরও অনেক আগে থেকেই। এখন তারা বরং নির্বাচন ঘিরে নানা ষড়যন্ত্র দেখছেন।

শনিবার দিনাজপুরের বিরামপুরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। সেখানে তিনি বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচন বানচালে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হতে পারে। সম্প্রতি দেশে অনেকে বিভিন্ন কথা বলে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টির করার চেষ্টা করছেন। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

ঐকমত্য আসেনি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে

দুই দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রায় ৩০ দিনের দীর্ঘ বৈঠক শেষে সংস্কার প্রশ্নের ৮৪টি বিষয়ে ঐকমত্য এসেছে। এর মধ্যেও কিছু কিছু বিষয়ে দলগুলোর দ্বিমতও আছে, সেগুলো ‘নোট অব ডিসেন্ট’সহ স্থান পেয়েছে জুলাই সনদে। তবে এই সনদ, বিশেষ করে সংবিধান নিয়ে সংস্কার প্রস্তাবগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে এখনো একমত হতে পারেনি দলগুলো।

সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের পক্ষে অবস্থান জানিয়েছে বিএনপি। জামায়াত আবার আগামী নির্বাচনের আগেই রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশের মাধ্যমে বা গণভোটের মাধ্যমে এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন চায়। আর এনসিপি চায়, গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন হোক।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘একদম যেটা বাস্তবায়নযোগ্য, সে রকম একটা প্রক্রিয়া (প্রসেস) বের করুন। আপনারা অনেকের বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়েছেন। তারা যা যা বলেছেন, তার মধ্যে যদি আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) যথাযথ (অ্যাপ্রোপ্রিয়েট) মনে করেন যে আমি এই পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করব, আপনার স্বাধীনতা আছে (ইউ আর অ্যাট লিবার্টি)।’

অন্যদিকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘প্রভিশনাল কনস্টিটিউশনাল অর্ডার’ অথবা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা সম্ভব। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও উৎসবমুখর পরিবেশে ইতিহাসসেরা নির্বাচন। ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সনদ এবং এর ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন হলেই তা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, সংবিধান-সম্পর্কিত যেসব প্রস্তাবে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোর মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক অনেকগুলো জায়গায় পরিবর্তন আসবে। এত বড় ধরনের পরিবর্তন শুধু সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে আনা হলে তা টেকসই হবে কি না, আশঙ্কা আছে। কারণ এর আগে সংবিধানের সংশোধনী আদালতে চ্যালেঞ্জ হয়ে বাতিল হয়েছে। তাই এনসিপি মনে করে, গণপরিষদ নির্বাচন করে সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলোর টেকসই বাস্তবায়ন সম্ভব।

ad
ad

মতামত থেকে আরও পড়ুন

আর্থিক সংকটে ক্ষুদ্র-শিল্প উদ্যোক্তারা: সমাধান জরুরি

গত বছরের জুনে ব্যাংক ঋণের সুদহার ছিল ৯ শতাংশ, যা বর্তমানে ১৪–১৫ শতাংশে পৌঁছেছে। শোনা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও এক দফা নীতি সুদহার বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে। এমন দফায় দফায় সুদহার বৃদ্ধির ফলে বড় প্রতিষ্ঠানও চাপে পড়তে পারে এবং বহু প্রতিষ্ঠান রুগ্ন তালিকাভুক্ত হবে। উল্লেখযোগ্য, ২০২০ সালের এপ্রিলে স

১৬ দিন আগে

স্কুল শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হোক

কোচিং সংস্কৃতি শুধু শিক্ষাকে পুনর্নির্ধারণ করেনি, পরিবারের ওপর এক অসহনীয় আর্থিক বোঝাও চাপিয়েছে। প্রতিষ্টানের শিক্ষকদের যথাযথ আন্তরিকতার অভাবের কারণেই অভিবাবকের তাদের সন্তারদের নিয়ে হতাশায় থাকেন।

১৭ দিন আগে

রোহিঙ্গা সংকট: আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে কক্সবাজারে শুরু হয়েছে তিন দিনের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ২৪-২৬ আগস্ট,২০২৫ পর্যন্ত উখিয়ার ইনানীতে সেনাবাহিনীর হোটেল বে-ওয়াচ মিলনায়তনে স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে এই ডায়লগের আয়োজন করছে রোহিঙ্গা ইস্যু বিষয়ক হাই রিপ্রেজ

১৯ দিন আগে

কলামিস্ট তারিখ ইবরাহিমের অনন্ত যাত্রা

অসাধারণ ছিল তারিখ ইবরাহিমের রাজনৈতিক ভূত-ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত আলোচনাগুলো। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের আন্দোলনের রাজনৈতিক কর্মীরা এ থেকে খোরাক পেতেন। কেন্দ্রীয় রাজনীতিবিদরাও সে সময় তারিখ ইবরাহিমের লেখা থেকে পাথেয় খুঁজতেন। কেউ সেদিন জানতে পারেনি, সামরিক সরকারের গোয়েন্দারাও খুঁজে বের করতে পারেনি তারিখ ইবরাহিম ন

২১ দিন আগে