ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
বাংলাদেশের কক্সবাজার বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন, অনেকে সাগরের ঢেউয়ের মধ্যে নেমে পড়েন আনন্দে। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, প্রায়ই শোনা যায়—সাঁতার জানা মানুষও এই সাগরে ডুবে মারা গেছেন। এই মৃত্যুগুলোর কারণ কী? সাঁতার জানা সত্ত্বেও কেন কেউ সাগরে প্রাণ হারান? আর এই বিপদ থেকে কীভাবে বাঁচা যায়?
এই প্রশ্নগুলো শুধুই কৌতূহল নয়, বরং অত্যন্ত জরুরি। কারণ অনেক মানুষ ভাবেন, “আমি তো ভালো সাঁতার জানি, একটু সাগরে নামলে কিছুই হবে না।” এই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কখনো কখনো হয়ে ওঠে প্রাণঘাতী।
মূলত, কক্সবাজারের সাগর বা বঙ্গোপসাগরের এই অঞ্চলকে অনেকটাই ধোঁকাবাজ টাইপের বলা চলে। উপরের পানি শান্ত দেখালেও নিচে থাকে প্রবল স্রোত, হঠাৎ তৈরি হয় রিপ কারেন্ট বা বিপজ্জনক টান। এটা একধরনের জলোচ্ছ্বাসময় স্রোত, যা পাড় থেকে সোজা গভীর সাগরের দিকে মানুষকে টেনে নিয়ে যায়।
ইউএস ন্যাশনাল ওশিয়েনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন** (ইউএস-এনওএএ) এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, “রিপ কারেন্ট হচ্ছে এমন একধরনের সংকীর্ণ ও শক্তিশালী জলের ধারা, যা উপকূল থেকে সোজা সাগরের গভীরের দিকে প্রবাহিত হয়।” এটা যখন তৈরি হয়, তখন আপনি যতই ভালো সাঁতার জানুন না কেন, তার গতিকে হারানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
ইউনাইটেড স্টেটস লাইফগার্ড অ্যাসোসিয়েশন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “রিপ কারেন্ট বছরে যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে ১০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়।” বাংলাদেশে এর সঠিক পরিসংখ্যান নেই, তবে সংবাদমাধ্যমে প্রতি বছর কক্সবাজারে সাগরে ডুবে অন্তত কয়েক ডজন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
সাঁতার জানলেও কেন বাঁচা কঠিন?
রিপ কারেন্ট সাধারণত খুব দ্রুতগামী হয়—প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ২ মিটার পর্যন্ত গতিতে পানিকে টেনে নেয় গভীর সমুদ্রের দিকে। কেউ যদি এই স্রোতের মধ্যে পড়ে, তবে সে স্বাভাবিকভাবে উপকূলের দিকে ফিরতে চেষ্টা করে, অর্থাৎ স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কাটে। এতে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে। একসময় হাত-পা চলা বন্ধ হয়ে যায়, শুরু হয় আতঙ্ক। আর তখনই ঘটে বিপর্যয়।
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটির সমুদ্রবিজ্ঞানী ড. রব ব্র্যান্ডার বলেন, “রিপ কারেন্টে পড়ে গেলে মানুষের প্রথম ভুল হলো—স্রোতের বিপরীতে লড়াই করা। এতে তারা ক্লান্ত হয়ে যায় এবং ডুবে যায়।” তিনি পরামর্শ দেন, “এই সময় স্রোতের সাথে লড়াই না করে স্রোতের দিক বরাবর কিছুটা গিয়ে পরে বাঁ দিকে বা ডানে সাঁতার কেটে বের হয়ে আসা উচিত।” তাঁর গবেষণা এই তথ্যেই শক্তি পেয়েছে যে, অধিকাংশ রিপ কারেন্ট এক নির্দিষ্ট সীমার পরে থেমে যায়।
বাংলাদেশে কক্সবাজার বা অন্যান্য সমুদ্রসৈকতে পর্যটকরা প্রায়ই বিনা নির্দেশনা বা লাইফগার্ডের অনুপস্থিতিতেই সাগরে নেমে পড়েন। অনেক সময় তাঁরা দলে থাকলেও কেউ কাউকে নজর রাখেন না। আবার অনেকে গিয়েই গভীর জলে চলে যান, ঢেউয়ের তালে খেলতে খেলতে হঠাৎ বিপদে পড়েন। অনেকে পানিতে নামার আগে স্রোতের গতিমুখ বোঝেন না, কিংবা ভুল জায়গা বেছে নেন। এর মধ্যে রিপ কারেন্ট, হঠাৎ গভীরতা পরিবর্তন, পানির নিচে বালির ফাঁদ, এবং হাই টাইডের ঝুঁকি সবচেয়ে বড় বিপদ।
২০২৩ সালের এক ঘটনা আমরা মনে করতে পারি—একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, যিনি সাঁতার জানতেন, কক্সবাজারে বন্ধুদের সঙ্গে গিয়েছিলেন। মজা করতে করতেই একটু দূরে চলে যান, কিন্তু আর ফেরেননি। পরে তাঁর দেহ মিলেছিল অনেক দূরে। বন্ধুদের ভাষ্যে জানা যায়, “সে খুব ভালো সাঁতার জানত, কখনও ভাবিনি এমন কিছু হবে।”
বাঁচার উপায় কী?
মার্কিন রিপ কারেন্ট বিশেষজ্ঞ জেফ হ্যাভেনার বলেন, “রিপ কারেন্ট নিজে হত্যাকারী নয়, বরং মানুষের আতঙ্কই মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।” এই মন্তব্য আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে, সঠিক শিক্ষা ও মানসিক প্রস্তুতিই জীবন বাঁচাতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অব মিয়ামির সামুদ্রিক নিরাপত্তা গবেষক লরা ম্যাককিনলি বলেন, “প্রতি বছর রিপ কারেন্ট সম্পর্কিত মৃত্যু কমানো সম্ভব শুধু যদি মানুষ শেখে কীভাবে তা শনাক্ত করতে হয়।” তাঁর মতে, সাগরে ঢেউয়ের ফাঁকে যদি পানি অসমভাবে দূরে টানতে থাকে, বুঝতে হবে এটি একটি রিপ কারেন্ট এলাকা।
সাগর আমাদের কাছে শুধুই আনন্দের জায়গা নয়, বরং দায়িত্বশীলতার জায়গা। বিশেষ করে কক্সবাজারের মতো বিশাল ও গভীর সাগরের সামনে দাঁড়ালে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। সাঁতার জানা ভালো, কিন্তু তা দিয়ে সব বিপদ জয় করা যায় না। প্রকৃতি তার নিজের নিয়মে চলে। তাই দরকার নিয়ম জানা, বিপদ চেনা এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া। তা না হলে সামান্য আনন্দের জন্য জীবন দিতে হতে পারে—এটা আমরা কেউই চাই না।
বাংলাদেশের কক্সবাজার বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন, অনেকে সাগরের ঢেউয়ের মধ্যে নেমে পড়েন আনন্দে। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, প্রায়ই শোনা যায়—সাঁতার জানা মানুষও এই সাগরে ডুবে মারা গেছেন। এই মৃত্যুগুলোর কারণ কী? সাঁতার জানা সত্ত্বেও কেন কেউ সাগরে প্রাণ হারান? আর এই বিপদ থেকে কীভাবে বাঁচা যায়?
এই প্রশ্নগুলো শুধুই কৌতূহল নয়, বরং অত্যন্ত জরুরি। কারণ অনেক মানুষ ভাবেন, “আমি তো ভালো সাঁতার জানি, একটু সাগরে নামলে কিছুই হবে না।” এই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কখনো কখনো হয়ে ওঠে প্রাণঘাতী।
মূলত, কক্সবাজারের সাগর বা বঙ্গোপসাগরের এই অঞ্চলকে অনেকটাই ধোঁকাবাজ টাইপের বলা চলে। উপরের পানি শান্ত দেখালেও নিচে থাকে প্রবল স্রোত, হঠাৎ তৈরি হয় রিপ কারেন্ট বা বিপজ্জনক টান। এটা একধরনের জলোচ্ছ্বাসময় স্রোত, যা পাড় থেকে সোজা গভীর সাগরের দিকে মানুষকে টেনে নিয়ে যায়।
ইউএস ন্যাশনাল ওশিয়েনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন** (ইউএস-এনওএএ) এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, “রিপ কারেন্ট হচ্ছে এমন একধরনের সংকীর্ণ ও শক্তিশালী জলের ধারা, যা উপকূল থেকে সোজা সাগরের গভীরের দিকে প্রবাহিত হয়।” এটা যখন তৈরি হয়, তখন আপনি যতই ভালো সাঁতার জানুন না কেন, তার গতিকে হারানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
ইউনাইটেড স্টেটস লাইফগার্ড অ্যাসোসিয়েশন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “রিপ কারেন্ট বছরে যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে ১০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়।” বাংলাদেশে এর সঠিক পরিসংখ্যান নেই, তবে সংবাদমাধ্যমে প্রতি বছর কক্সবাজারে সাগরে ডুবে অন্তত কয়েক ডজন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
সাঁতার জানলেও কেন বাঁচা কঠিন?
রিপ কারেন্ট সাধারণত খুব দ্রুতগামী হয়—প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ২ মিটার পর্যন্ত গতিতে পানিকে টেনে নেয় গভীর সমুদ্রের দিকে। কেউ যদি এই স্রোতের মধ্যে পড়ে, তবে সে স্বাভাবিকভাবে উপকূলের দিকে ফিরতে চেষ্টা করে, অর্থাৎ স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কাটে। এতে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে। একসময় হাত-পা চলা বন্ধ হয়ে যায়, শুরু হয় আতঙ্ক। আর তখনই ঘটে বিপর্যয়।
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটির সমুদ্রবিজ্ঞানী ড. রব ব্র্যান্ডার বলেন, “রিপ কারেন্টে পড়ে গেলে মানুষের প্রথম ভুল হলো—স্রোতের বিপরীতে লড়াই করা। এতে তারা ক্লান্ত হয়ে যায় এবং ডুবে যায়।” তিনি পরামর্শ দেন, “এই সময় স্রোতের সাথে লড়াই না করে স্রোতের দিক বরাবর কিছুটা গিয়ে পরে বাঁ দিকে বা ডানে সাঁতার কেটে বের হয়ে আসা উচিত।” তাঁর গবেষণা এই তথ্যেই শক্তি পেয়েছে যে, অধিকাংশ রিপ কারেন্ট এক নির্দিষ্ট সীমার পরে থেমে যায়।
বাংলাদেশে কক্সবাজার বা অন্যান্য সমুদ্রসৈকতে পর্যটকরা প্রায়ই বিনা নির্দেশনা বা লাইফগার্ডের অনুপস্থিতিতেই সাগরে নেমে পড়েন। অনেক সময় তাঁরা দলে থাকলেও কেউ কাউকে নজর রাখেন না। আবার অনেকে গিয়েই গভীর জলে চলে যান, ঢেউয়ের তালে খেলতে খেলতে হঠাৎ বিপদে পড়েন। অনেকে পানিতে নামার আগে স্রোতের গতিমুখ বোঝেন না, কিংবা ভুল জায়গা বেছে নেন। এর মধ্যে রিপ কারেন্ট, হঠাৎ গভীরতা পরিবর্তন, পানির নিচে বালির ফাঁদ, এবং হাই টাইডের ঝুঁকি সবচেয়ে বড় বিপদ।
২০২৩ সালের এক ঘটনা আমরা মনে করতে পারি—একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, যিনি সাঁতার জানতেন, কক্সবাজারে বন্ধুদের সঙ্গে গিয়েছিলেন। মজা করতে করতেই একটু দূরে চলে যান, কিন্তু আর ফেরেননি। পরে তাঁর দেহ মিলেছিল অনেক দূরে। বন্ধুদের ভাষ্যে জানা যায়, “সে খুব ভালো সাঁতার জানত, কখনও ভাবিনি এমন কিছু হবে।”
বাঁচার উপায় কী?
মার্কিন রিপ কারেন্ট বিশেষজ্ঞ জেফ হ্যাভেনার বলেন, “রিপ কারেন্ট নিজে হত্যাকারী নয়, বরং মানুষের আতঙ্কই মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।” এই মন্তব্য আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে, সঠিক শিক্ষা ও মানসিক প্রস্তুতিই জীবন বাঁচাতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অব মিয়ামির সামুদ্রিক নিরাপত্তা গবেষক লরা ম্যাককিনলি বলেন, “প্রতি বছর রিপ কারেন্ট সম্পর্কিত মৃত্যু কমানো সম্ভব শুধু যদি মানুষ শেখে কীভাবে তা শনাক্ত করতে হয়।” তাঁর মতে, সাগরে ঢেউয়ের ফাঁকে যদি পানি অসমভাবে দূরে টানতে থাকে, বুঝতে হবে এটি একটি রিপ কারেন্ট এলাকা।
সাগর আমাদের কাছে শুধুই আনন্দের জায়গা নয়, বরং দায়িত্বশীলতার জায়গা। বিশেষ করে কক্সবাজারের মতো বিশাল ও গভীর সাগরের সামনে দাঁড়ালে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। সাঁতার জানা ভালো, কিন্তু তা দিয়ে সব বিপদ জয় করা যায় না। প্রকৃতি তার নিজের নিয়মে চলে। তাই দরকার নিয়ম জানা, বিপদ চেনা এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া। তা না হলে সামান্য আনন্দের জন্য জীবন দিতে হতে পারে—এটা আমরা কেউই চাই না।
ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কা। আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় শুরু হয়েছে এই ম্যাচ।
১৩ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল— মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার কারণে এই তিন বিভাগে প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস ছিল আগে থেকেই। এবার ২৪ ঘণ্টার জন্য প্রবল বর্ষণের সতর্কবার্তায় যুক্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগও। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই চার বিভাগেই আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
১৬ ঘণ্টা আগেতবে এই ধারণা গবেষণাগারে থেমে থাকেনি। ২০০৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ব্রিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একত্রিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্কের সূচনা করেন।
১ দিন আগে