অরুণাভ বিশ্বাস
বর্ষা শুধু ঋতু নয়, বাংলা সাহিত্যের এক অতুলনীয় আবেগ, এক গভীর প্রতীক। বৃষ্টি মানেই যেন এক অদ্ভুত মায়া- মিশে থাকে প্রেমে, বিরহে, স্মৃতিতে, স্বপ্নে আর বাস্তবের ছায়ায়। বাংলা উপন্যাসে এই বর্ষা তাই কেবল প্রকৃতির দৃশ্যমাত্র নয়, বরং এক জীবন্ত চরিত্র, যাকে ঘিরে আবর্তিত হয় মানুষের অনুভবের জটিল জাল। কৃষিজীবী সমাজের আবহে গড়ে ওঠা আমাদের সাহিত্যজগতে বর্ষার স্থান তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপন্যাসে যখন চরিত্রেরা কথা বলে, হাঁটে, প্রেমে পড়ে কিংবা বিচ্ছিন্ন হয়—তখন সেই মুহূর্তগুলিকে গভীরতর করে তোলে বৃষ্টির মৃদু শব্দ, কাদামাটি, ভিজে মাঠ কিংবা জানালার কাচে পড়া জলের ছটা।
বাংলা সাহিত্যের জনক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসে বর্ষা প্রায় অনুপস্থিত, কারণ তাঁর অধিকাংশ রচনা ইতিহাসভিত্তিক, যেখানে প্রকৃতির চেয়ে মানবিক সংকটই প্রধান। তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সমকালীন লেখকরা বর্ষাকে সাহিত্যের হৃদয়ে স্থান দিয়েছেন। বিশেষ করে গ্রামবাংলার পটভূমিতে লেখা উপন্যাসে বর্ষার উপস্থিতি অবিচ্ছেদ্য।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর উপন্যাসে বর্ষাকে কখনো কাব্যিক আবহে তুলে ধরেছেন, কখনোবা ব্যবহার করেছেন মনোজাগতিক উত্তরণের প্রতীক হিসেবে। ‘নষ্টনীড়’ উপন্যাসে চারুলতার নিঃসঙ্গতা যেন আরও বেশি প্রকট হয় জানালার ধারে বসে তার বৃষ্টিমুগ্ধ চাহনিতে। ‘ঘরে-বাইরে’ উপন্যাসে বর্ষা কখনো প্রেমের সংকেত, কখনো জাতীয়তার জাগরণকালীন অন্তর্দ্বন্দ্বের ছায়াপাত। বৃষ্টির ছন্দ রবীন্দ্রসাহিত্যে কখনো প্রেমিকের উদাস চোখ, কখনো বৈষ্ণবের সঙ্গী, আবার কখনো বিপ্লবের অমোঘ নীরবতা।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসে বর্ষা আসে সংসারের সংকটের সময়, কিংবা বিরহের গভীর মুহূর্তে। ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসে একাধিকবার বর্ষা এসেছে ভ্রমণকালীন অভিজ্ঞতায়। বর্ষার জলছাপ সেখানে একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অন্যদিকে তেমনি জীবনের অনিশ্চয়তার প্রতীক। ‘দত্তা’ উপন্যাসে বৃষ্টির সঙ্গে প্রেমিক-প্রেমিকার মিলনের আবহ তৈরি হয়। বর্ষা শরৎচন্দ্রের গদ্যে এসে দাঁড়ায় মানব-প্রকৃতি মিলনের বাঁকে।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে বর্ষা যেন গ্রামবাংলার নিখুঁত প্রতিরূপ। অপু আর দুর্গার বর্ষার দিনে কাদায় ছুটে চলা, গা ভিজিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়ার যে আনন্দ তা কেবল একটি ঋতুকে নয়, এক অস্তিত্ববাদী জীবনবোধকে তুলে ধরে। এখানে বর্ষা মানে শুধু বৃষ্টি নয়, এক দারিদ্র্য-পীড়িত জীবনের সহজ আনন্দ, যা শিশুমনে স্বপ্ন আনে।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মানদীর মাঝি’ উপন্যাসে বর্ষা আবার আসে অনিশ্চয়তার ঘনঘটায়। মেঘলা আকাশ, টলটলে নদী আর জীবনের অনির্ধারিত গন্তব্য একত্রিত হয় যেন। বর্ষা এখানে একধরনের কাব্যিক আশংকা, যার মধ্য দিয়ে চরিত্রেরা তাদের জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘হাঁসুলিবাঁকের উপকথা’ উপন্যাসে দেখা যায় বর্ষা আর দুর্দশার এক নিঃসঙ্গ সহবাস। সেখানে বর্ষা মানে বন্যা, জমির ক্ষতি, অনাহার, কিন্তু সেই সঙ্গে প্রেমিক-প্রেমিকার গোপন দেখা, বৃষ্টির রাতে নদীর ধারে হাঁটা। তারাশঙ্করের গদ্যে বর্ষা একধরনের দ্বৈত সত্তার প্রতীক—আনন্দ ও অভিশাপ একসাথে।
সমকালীন বাংলা উপন্যাসেও বর্ষা এখনও তার আবেদন হারায়নি। মুসাফির, শংকর, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সেলিনা হোসেন কিংবা হুমায়ূন আহমেদের লেখায় বর্ষা একদিকে যেমন প্রেম ও নস্টালজিয়ার বাহক, অন্যদিকে বাস্তবতার অস্পষ্ট রেখার ভেতর সৃষ্ট এক আবহ। হুমায়ূন আহমেদের একাধিক উপন্যাসে বর্ষা যেন গল্পের চরিত্র হয়ে ওঠে। ‘নন্দিত নরকে’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’ কিংবা ‘এইসব দিনরাত্রি’—সবখানেই বর্ষা আসে এক নিঃসঙ্গ দুপুরে কিংবা দীর্ঘ রাতে।
এই প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেস ইউনিভার্সিটির সাহিত্য গবেষক ড. ন্যান্সি ব্রাউন বলেন, “বাংলা উপন্যাসে বর্ষার ব্যবহার শুধু নৈসর্গিক দৃশ্যায়ন নয়, বরং তা চরিত্রের মানসিক অবস্থার প্রতিফলন। এটি একটি ‘লিটারারি ডিভাইস’ যা একই সঙ্গে আবহ তৈরি করে এবং চরিত্রের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন বোঝাতে সাহায্য করে।” তাঁর মতে, বাংলার বৃষ্টিভেজা মাটি লেখকের হৃদয়ের মতোই নরম আর অনুভবপ্রবণ।
এ বিষয়ে কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য অধ্যাপক ড. পিটার জ্যাকসন বলেন, “বাংলা সাহিত্যে বর্ষা যেন এক আধ্যাত্মিক উপাদান। পশ্চিমে যেখানে বৃষ্টি মানে বিষাদ, সেখানে বাংলা সাহিত্যে বৃষ্টি অর্থ আবেগের প্রবাহ। এখানে তা কখনো প্রেমের বর্ণনা, কখনো মৃত্যুর প্রস্তুতি।”
বর্ষা শুধুই প্রকৃতির খেলা নয়, তা বাংলার সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং আবেগিক কাঠামোর গভীরে প্রবেশ করেছে। উপন্যাসে এই বর্ষা কখনো ভূমিকা নেয় সংকট তৈরি করার জন্য—যেমন বন্যা, ফসলের ক্ষতি, রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়া—আবার কখনো তা হয়ে ওঠে প্রেমিক-প্রেমিকার মিলনের উপলক্ষ। গ্রামের কাঁচা পথ, শহরের জানালা, নদীর ধারে দাঁড়িয়ে থাকা নৌকা কিংবা ভিজে কাপড়ের গন্ধ—সব কিছু মিলে বাংলা উপন্যাসে বর্ষা এক অনুপম প্রতীক হয়ে উঠেছে।
যেসব উপন্যাস বর্ষাকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়েছে, সেগুলোর পাঠে বোঝা যায়—একটি ঋতু কিভাবে সাহিত্যের ভাষা হয়ে উঠতে পারে। বর্ষা শুধু বৃষ্টি বা মেঘ নয়, বরং তা জীবন, সমাজ, প্রেম, যন্ত্রণা ও স্বপ্নের এক অবিচ্ছেদ্য অভিজ্ঞান। কখনো তা চরিত্রের মুক্তি, আবার কখনো বন্দিত্ব। কখনো তা প্রথম প্রেমের সাক্ষী, আবার কখনো তা চিরবিচ্ছেদের পর্দা।
সাহিত্য সমাজের আয়না। সেই আয়নায় বর্ষা প্রতিবিম্বিত হয় বাঙালির গ্লানি, ভালোবাসা ও আশা হয়ে। উপন্যাসের পৃষ্ঠায় যখন বর্ষার শব্দ নামে, তখন পাঠকের মনেও নামে এক আবেগের জোয়ার। সেই কারণেই, বাংলা উপন্যাসে বর্ষা চিরকাল থাকবে—প্রেমিকের চিঠির শেষ বাক্যের মতো, যেখানে লেখা থাকবে—‘বৃষ্টি নেমেছে, মনে পড়ছে তোমাকে।’
বর্ষা শুধু ঋতু নয়, বাংলা সাহিত্যের এক অতুলনীয় আবেগ, এক গভীর প্রতীক। বৃষ্টি মানেই যেন এক অদ্ভুত মায়া- মিশে থাকে প্রেমে, বিরহে, স্মৃতিতে, স্বপ্নে আর বাস্তবের ছায়ায়। বাংলা উপন্যাসে এই বর্ষা তাই কেবল প্রকৃতির দৃশ্যমাত্র নয়, বরং এক জীবন্ত চরিত্র, যাকে ঘিরে আবর্তিত হয় মানুষের অনুভবের জটিল জাল। কৃষিজীবী সমাজের আবহে গড়ে ওঠা আমাদের সাহিত্যজগতে বর্ষার স্থান তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপন্যাসে যখন চরিত্রেরা কথা বলে, হাঁটে, প্রেমে পড়ে কিংবা বিচ্ছিন্ন হয়—তখন সেই মুহূর্তগুলিকে গভীরতর করে তোলে বৃষ্টির মৃদু শব্দ, কাদামাটি, ভিজে মাঠ কিংবা জানালার কাচে পড়া জলের ছটা।
বাংলা সাহিত্যের জনক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসে বর্ষা প্রায় অনুপস্থিত, কারণ তাঁর অধিকাংশ রচনা ইতিহাসভিত্তিক, যেখানে প্রকৃতির চেয়ে মানবিক সংকটই প্রধান। তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সমকালীন লেখকরা বর্ষাকে সাহিত্যের হৃদয়ে স্থান দিয়েছেন। বিশেষ করে গ্রামবাংলার পটভূমিতে লেখা উপন্যাসে বর্ষার উপস্থিতি অবিচ্ছেদ্য।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর উপন্যাসে বর্ষাকে কখনো কাব্যিক আবহে তুলে ধরেছেন, কখনোবা ব্যবহার করেছেন মনোজাগতিক উত্তরণের প্রতীক হিসেবে। ‘নষ্টনীড়’ উপন্যাসে চারুলতার নিঃসঙ্গতা যেন আরও বেশি প্রকট হয় জানালার ধারে বসে তার বৃষ্টিমুগ্ধ চাহনিতে। ‘ঘরে-বাইরে’ উপন্যাসে বর্ষা কখনো প্রেমের সংকেত, কখনো জাতীয়তার জাগরণকালীন অন্তর্দ্বন্দ্বের ছায়াপাত। বৃষ্টির ছন্দ রবীন্দ্রসাহিত্যে কখনো প্রেমিকের উদাস চোখ, কখনো বৈষ্ণবের সঙ্গী, আবার কখনো বিপ্লবের অমোঘ নীরবতা।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসে বর্ষা আসে সংসারের সংকটের সময়, কিংবা বিরহের গভীর মুহূর্তে। ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসে একাধিকবার বর্ষা এসেছে ভ্রমণকালীন অভিজ্ঞতায়। বর্ষার জলছাপ সেখানে একদিকে যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অন্যদিকে তেমনি জীবনের অনিশ্চয়তার প্রতীক। ‘দত্তা’ উপন্যাসে বৃষ্টির সঙ্গে প্রেমিক-প্রেমিকার মিলনের আবহ তৈরি হয়। বর্ষা শরৎচন্দ্রের গদ্যে এসে দাঁড়ায় মানব-প্রকৃতি মিলনের বাঁকে।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে বর্ষা যেন গ্রামবাংলার নিখুঁত প্রতিরূপ। অপু আর দুর্গার বর্ষার দিনে কাদায় ছুটে চলা, গা ভিজিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়ার যে আনন্দ তা কেবল একটি ঋতুকে নয়, এক অস্তিত্ববাদী জীবনবোধকে তুলে ধরে। এখানে বর্ষা মানে শুধু বৃষ্টি নয়, এক দারিদ্র্য-পীড়িত জীবনের সহজ আনন্দ, যা শিশুমনে স্বপ্ন আনে।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মানদীর মাঝি’ উপন্যাসে বর্ষা আবার আসে অনিশ্চয়তার ঘনঘটায়। মেঘলা আকাশ, টলটলে নদী আর জীবনের অনির্ধারিত গন্তব্য একত্রিত হয় যেন। বর্ষা এখানে একধরনের কাব্যিক আশংকা, যার মধ্য দিয়ে চরিত্রেরা তাদের জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘হাঁসুলিবাঁকের উপকথা’ উপন্যাসে দেখা যায় বর্ষা আর দুর্দশার এক নিঃসঙ্গ সহবাস। সেখানে বর্ষা মানে বন্যা, জমির ক্ষতি, অনাহার, কিন্তু সেই সঙ্গে প্রেমিক-প্রেমিকার গোপন দেখা, বৃষ্টির রাতে নদীর ধারে হাঁটা। তারাশঙ্করের গদ্যে বর্ষা একধরনের দ্বৈত সত্তার প্রতীক—আনন্দ ও অভিশাপ একসাথে।
সমকালীন বাংলা উপন্যাসেও বর্ষা এখনও তার আবেদন হারায়নি। মুসাফির, শংকর, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সেলিনা হোসেন কিংবা হুমায়ূন আহমেদের লেখায় বর্ষা একদিকে যেমন প্রেম ও নস্টালজিয়ার বাহক, অন্যদিকে বাস্তবতার অস্পষ্ট রেখার ভেতর সৃষ্ট এক আবহ। হুমায়ূন আহমেদের একাধিক উপন্যাসে বর্ষা যেন গল্পের চরিত্র হয়ে ওঠে। ‘নন্দিত নরকে’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’ কিংবা ‘এইসব দিনরাত্রি’—সবখানেই বর্ষা আসে এক নিঃসঙ্গ দুপুরে কিংবা দীর্ঘ রাতে।
এই প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেস ইউনিভার্সিটির সাহিত্য গবেষক ড. ন্যান্সি ব্রাউন বলেন, “বাংলা উপন্যাসে বর্ষার ব্যবহার শুধু নৈসর্গিক দৃশ্যায়ন নয়, বরং তা চরিত্রের মানসিক অবস্থার প্রতিফলন। এটি একটি ‘লিটারারি ডিভাইস’ যা একই সঙ্গে আবহ তৈরি করে এবং চরিত্রের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন বোঝাতে সাহায্য করে।” তাঁর মতে, বাংলার বৃষ্টিভেজা মাটি লেখকের হৃদয়ের মতোই নরম আর অনুভবপ্রবণ।
এ বিষয়ে কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য অধ্যাপক ড. পিটার জ্যাকসন বলেন, “বাংলা সাহিত্যে বর্ষা যেন এক আধ্যাত্মিক উপাদান। পশ্চিমে যেখানে বৃষ্টি মানে বিষাদ, সেখানে বাংলা সাহিত্যে বৃষ্টি অর্থ আবেগের প্রবাহ। এখানে তা কখনো প্রেমের বর্ণনা, কখনো মৃত্যুর প্রস্তুতি।”
বর্ষা শুধুই প্রকৃতির খেলা নয়, তা বাংলার সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং আবেগিক কাঠামোর গভীরে প্রবেশ করেছে। উপন্যাসে এই বর্ষা কখনো ভূমিকা নেয় সংকট তৈরি করার জন্য—যেমন বন্যা, ফসলের ক্ষতি, রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়া—আবার কখনো তা হয়ে ওঠে প্রেমিক-প্রেমিকার মিলনের উপলক্ষ। গ্রামের কাঁচা পথ, শহরের জানালা, নদীর ধারে দাঁড়িয়ে থাকা নৌকা কিংবা ভিজে কাপড়ের গন্ধ—সব কিছু মিলে বাংলা উপন্যাসে বর্ষা এক অনুপম প্রতীক হয়ে উঠেছে।
যেসব উপন্যাস বর্ষাকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়েছে, সেগুলোর পাঠে বোঝা যায়—একটি ঋতু কিভাবে সাহিত্যের ভাষা হয়ে উঠতে পারে। বর্ষা শুধু বৃষ্টি বা মেঘ নয়, বরং তা জীবন, সমাজ, প্রেম, যন্ত্রণা ও স্বপ্নের এক অবিচ্ছেদ্য অভিজ্ঞান। কখনো তা চরিত্রের মুক্তি, আবার কখনো বন্দিত্ব। কখনো তা প্রথম প্রেমের সাক্ষী, আবার কখনো তা চিরবিচ্ছেদের পর্দা।
সাহিত্য সমাজের আয়না। সেই আয়নায় বর্ষা প্রতিবিম্বিত হয় বাঙালির গ্লানি, ভালোবাসা ও আশা হয়ে। উপন্যাসের পৃষ্ঠায় যখন বর্ষার শব্দ নামে, তখন পাঠকের মনেও নামে এক আবেগের জোয়ার। সেই কারণেই, বাংলা উপন্যাসে বর্ষা চিরকাল থাকবে—প্রেমিকের চিঠির শেষ বাক্যের মতো, যেখানে লেখা থাকবে—‘বৃষ্টি নেমেছে, মনে পড়ছে তোমাকে।’
ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কা। আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় শুরু হয়েছে এই ম্যাচ।
১১ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল— মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার কারণে এই তিন বিভাগে প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস ছিল আগে থেকেই। এবার ২৪ ঘণ্টার জন্য প্রবল বর্ষণের সতর্কবার্তায় যুক্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগও। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই চার বিভাগেই আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
১৪ ঘণ্টা আগেতবে এই ধারণা গবেষণাগারে থেমে থাকেনি। ২০০৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ব্রিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একত্রিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্কের সূচনা করেন।
১ দিন আগে