ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
বাংলাদেশের আকাশে ঘনকালো মেঘ জমলেই আমরা টের পাই—আসছে বজ্রসহ বৃষ্টি। সেই সঙ্গে আসে ভয়ও। কারণ, প্রতি বছর শত শত মানুষ বজ্রপাতে প্রাণ হারান। ২০২৪ সালের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু এপ্রিল থেকে জুন—এই তিন মাসেই দেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন প্রায় ১২০ জন। অথচ উন্নত অনেক দেশে যেখানে আবহাওয়া অনেক বেশি বৈচিত্র্যময়, সেখানে বজ্রপাতে এত মৃত্যুর খবর শোনা যায় না। প্রশ্ন উঠেছে—বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যু কেন এত বেশি? আর আমরা কীভাবে এই বিপদ থেকে বাঁচতে পারি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। তবে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, কৃষিনির্ভর জীবনযাত্রা এবং বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতনতার ঘাটতি। এই ফিচারে আমরা সহজ ভাষায় বুঝে নেব, কেন বাংলাদেশে বজ্রপাত এত বেশি হয়, মানুষ মারা যায় কেন, আর কীভাবে এই বিপদ এড়ানো সম্ভব।
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বছরে দুইবার প্রাক-বর্ষা ও বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। সঙ্গে আসে তীব্র তাপদাহ। এই সময় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যায়। গরম বাতাস ওপরে উঠে গিয়ে ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এলে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়। এই মেঘ থেকে তৈরি হয় বজ্রপাত। আমেরিকার ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস-এর আবহাওয়াবিদ জেসিকা হার্ডি (Jessica Hardy) বলেন, *“যেখানে আর্দ্রতা বেশি, গরমের পর হঠাৎ ঠান্ডা বাতাস আসে, সেখানে বজ্রপাত বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক।”* এই ব্যাখ্যা বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও মিলে যায়।
আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। আগে যেসব এলাকায় বজ্রপাত হতো না বা কম হতো, এখন সেসব জায়গাতেও বেশি বেশি বজ্রপাত হচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে-র আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ড. জেমস পিটারস বলেন, *“পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বজ্রপাতের ঘটনাও বাড়ছে। কারণ, বেশি গরম মানেই বেশি জলীয় বাষ্প, আর তা মানেই বেশি বৈদ্যুতিক মেঘ।”* এই বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের বজ্রপাত পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।
তবে শুধু প্রকৃতি নয়, মানুষের জীবনযাপনও এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এখনো কৃষিনির্ভর। ধান কাটার মৌসুমে—যা সাধারণত বজ্রপাতের মৌসুমই—কৃষকেরা খোলা মাঠে কাজ করেন। তাঁদের হাতে থাকেব ধাতব দা বা কাস্তে, কখনো গরুর লাঙ্গল বা ট্রাক্টরের লোহার অংশ। বজ্রপাত হলে এই ধাতব বস্তুগুলো বিদ্যুৎ আকর্ষণ করে। ফলে সরাসরি বজ্রাঘাতে কৃষকের মৃত্যু হয়। ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো-বোল্ডার-এর প্রফেসর মাইকেল গ্ল্যাডস্টোন বলেন, “বাংলাদেশের মতো দেশে কৃষকেরা বজ্রপাতের সময় কী করতে হবে, তা জানেন না। ফলে খোলা মাঠে থেকে যায় এবং প্রাণ হারান।”
একই ঘটনা ঘটে স্কুলপড়ুয়া শিশু, গরু চরানো রাখাল, এমনকি রাস্তার সাধারণ পথচারীদের ক্ষেত্রেও। গ্রামের বাড়িগুলোর বেশিরভাগই এখনও উঁচু গাছপালার নিচে বা খোলা জায়গায়, যেগুলো বজ্রপাতের সময় বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। শহরের দিকেও অনেক সময় দেখা যায়, ছাদে কাপড় শুকাতে গেছেন কেউ, সেই সময়েই বজ্রপাত। এই ধরনের অসতর্ক আচরণ মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশ সরকার বজ্রপাতকে "প্রাকৃতিক দুর্যোগ" হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিছু জায়গায় বজ্রনিরোধক দণ্ড (লাইটনিং অ্যারেস্টর) বসানো হয়েছে, তবে তা খুবই সীমিত। গ্রামের দিকে এখনো এর প্রচলন নেই বললেই চলে। আবার বজ্রপাত শুরু হলেই কোথায় আশ্রয় নেবেন, কী করবেন বা কী করবেন না—এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের খুব কম ধারণা আছে।
বজ্রপাত থেকে বাঁচার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে সচেতনতা। আমেরিকার লাইটনিং সেফটি কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা রোন হোললি বলেন, “বজ্রপাত কখনো আগাম না জানিয়ে আসে না। আপনি যদি আবহাওয়ার খবর শুনেন, বজ্রের শব্দ পান বা আকাশে বিদ্যুৎ ঝলকানি দেখেন, সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। তাতেই জীবন বাঁচে।” তাঁর এই কথার মানে হলো, আকাশে গর্জন শুনলেই ঘরে চলে যেতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠ, জলাশয়, ধাতব বস্তু এবং বড় গাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। ঘরের মধ্যে থাকলেও সাবধান থাকতে হবে—ফ্রিজ, টিভি, ওয়াইফাই, কিচেন চিমনি বা ইলেকট্রিক তার থেকে দূরে থাকতে হবে। দরজা-জানালা বন্ধ করে মাথা নিচু করে বসে থাকতে হবে। বজ্রপাত চলাকালে ছাদে যাওয়া, মোবাইল ফোনে কথা বলা, ইলেকট্রিক যন্ত্রে চার্জ দেওয়া—এসব থেকে বিরত থাকতে হবে।
একটি মজার কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-এর পরিবেশবিজ্ঞানী অ্যালান বার্ক। তিনি বলেন, *“বজ্রপাত মানুষকে মারতে চায় না, এটা বিদ্যুতের সহজ রাস্তা খোঁজে। আপনি যদি সেই রাস্তা হন, তবে বিদ্যুৎ আপনাকে বেছে নেবে।”* তাই বজ্রপাতের সময় ধাতব ছাতা বা মোবাইল ফোন হাতে থাকাটা জীবনের জন্য বিপজ্জনক।
বিশেষ করে শিশুদের ব্যাপারে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে বজ্রপাত বিষয়ক সচেতনতামূলক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক শিক্ষা সংগঠন গ্লোবাল ওয়েদা এডুকেশন-এর সদস্য ক্যাথরিন মিলার। তিনি বলেন, “বাচ্চারা যদি ছোট থেকেই বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতন হয়, ভবিষ্যতে তারা অনেক বেশি সতর্ক হবে।”
বাংলাদেশে সম্প্রতি কয়েকটি জায়গায় সোলারচালিত বজ্রনিরোধক যন্ত্র বসানো হয়েছে। তবে এই যন্ত্রগুলো শুধু নির্দিষ্ট এলাকার জন্য কাজ করে, দেশের সব মানুষের জন্য নয়। তাই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ হচ্ছে ব্যক্তিগত সচেতনতা। আজকাল মোবাইলে আবহাওয়ার অ্যাপ আছে, সেখান থেকে বজ্রপাতের পূর্বাভাস জানা যায়। বারবার বলা হলেও, এই অ্যাপের ওপর মানুষ খুব কমই গুরুত্ব দেয়। অথচ আমেরিকার মতো দেশে স্কুল, অফিস, খেলার মাঠ—সবখানে বজ্রপাতের খবর এলেই সাইরেন বাজে, সবাই আশ্রয়ে চলে যায়।
বাংলাদেশেও যদি গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সবাই বজ্রপাতের পূর্বাভাস গুরুত্ব দিয়ে নেয়, বজ্রপাত সম্পর্কে শিশুদের শিক্ষা দেওয়া হয়, মাঠে কাজ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা হয়, তাহলেই আমরা এই ভয়াবহ মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারব।
শেষ কথা, বজ্রপাত একটি স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা হলেও, সেটিকে উপেক্ষা করা উচিত নয়। মানুষের প্রাণের চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই। একটু সচেতন হলে আমরা নিজের জীবন তো বাঁচাতে পারবই, পাশাপাশি পরিবারের অন্য সদস্যদেরও নিরাপদ রাখতে পারব। আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বজ্রপাতকে ভয় নয়, বিজ্ঞানের আলোয় বোঝার একটা উপায় হিসেবে তুলে ধরতে পারব।
বাংলাদেশের আকাশে ঘনকালো মেঘ জমলেই আমরা টের পাই—আসছে বজ্রসহ বৃষ্টি। সেই সঙ্গে আসে ভয়ও। কারণ, প্রতি বছর শত শত মানুষ বজ্রপাতে প্রাণ হারান। ২০২৪ সালের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু এপ্রিল থেকে জুন—এই তিন মাসেই দেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন প্রায় ১২০ জন। অথচ উন্নত অনেক দেশে যেখানে আবহাওয়া অনেক বেশি বৈচিত্র্যময়, সেখানে বজ্রপাতে এত মৃত্যুর খবর শোনা যায় না। প্রশ্ন উঠেছে—বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যু কেন এত বেশি? আর আমরা কীভাবে এই বিপদ থেকে বাঁচতে পারি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। তবে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, কৃষিনির্ভর জীবনযাত্রা এবং বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতনতার ঘাটতি। এই ফিচারে আমরা সহজ ভাষায় বুঝে নেব, কেন বাংলাদেশে বজ্রপাত এত বেশি হয়, মানুষ মারা যায় কেন, আর কীভাবে এই বিপদ এড়ানো সম্ভব।
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বছরে দুইবার প্রাক-বর্ষা ও বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। সঙ্গে আসে তীব্র তাপদাহ। এই সময় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যায়। গরম বাতাস ওপরে উঠে গিয়ে ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এলে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়। এই মেঘ থেকে তৈরি হয় বজ্রপাত। আমেরিকার ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস-এর আবহাওয়াবিদ জেসিকা হার্ডি (Jessica Hardy) বলেন, *“যেখানে আর্দ্রতা বেশি, গরমের পর হঠাৎ ঠান্ডা বাতাস আসে, সেখানে বজ্রপাত বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক।”* এই ব্যাখ্যা বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও মিলে যায়।
আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। আগে যেসব এলাকায় বজ্রপাত হতো না বা কম হতো, এখন সেসব জায়গাতেও বেশি বেশি বজ্রপাত হচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে-র আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ড. জেমস পিটারস বলেন, *“পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বজ্রপাতের ঘটনাও বাড়ছে। কারণ, বেশি গরম মানেই বেশি জলীয় বাষ্প, আর তা মানেই বেশি বৈদ্যুতিক মেঘ।”* এই বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের বজ্রপাত পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।
তবে শুধু প্রকৃতি নয়, মানুষের জীবনযাপনও এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এখনো কৃষিনির্ভর। ধান কাটার মৌসুমে—যা সাধারণত বজ্রপাতের মৌসুমই—কৃষকেরা খোলা মাঠে কাজ করেন। তাঁদের হাতে থাকেব ধাতব দা বা কাস্তে, কখনো গরুর লাঙ্গল বা ট্রাক্টরের লোহার অংশ। বজ্রপাত হলে এই ধাতব বস্তুগুলো বিদ্যুৎ আকর্ষণ করে। ফলে সরাসরি বজ্রাঘাতে কৃষকের মৃত্যু হয়। ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো-বোল্ডার-এর প্রফেসর মাইকেল গ্ল্যাডস্টোন বলেন, “বাংলাদেশের মতো দেশে কৃষকেরা বজ্রপাতের সময় কী করতে হবে, তা জানেন না। ফলে খোলা মাঠে থেকে যায় এবং প্রাণ হারান।”
একই ঘটনা ঘটে স্কুলপড়ুয়া শিশু, গরু চরানো রাখাল, এমনকি রাস্তার সাধারণ পথচারীদের ক্ষেত্রেও। গ্রামের বাড়িগুলোর বেশিরভাগই এখনও উঁচু গাছপালার নিচে বা খোলা জায়গায়, যেগুলো বজ্রপাতের সময় বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। শহরের দিকেও অনেক সময় দেখা যায়, ছাদে কাপড় শুকাতে গেছেন কেউ, সেই সময়েই বজ্রপাত। এই ধরনের অসতর্ক আচরণ মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশ সরকার বজ্রপাতকে "প্রাকৃতিক দুর্যোগ" হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিছু জায়গায় বজ্রনিরোধক দণ্ড (লাইটনিং অ্যারেস্টর) বসানো হয়েছে, তবে তা খুবই সীমিত। গ্রামের দিকে এখনো এর প্রচলন নেই বললেই চলে। আবার বজ্রপাত শুরু হলেই কোথায় আশ্রয় নেবেন, কী করবেন বা কী করবেন না—এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের খুব কম ধারণা আছে।
বজ্রপাত থেকে বাঁচার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে সচেতনতা। আমেরিকার লাইটনিং সেফটি কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা রোন হোললি বলেন, “বজ্রপাত কখনো আগাম না জানিয়ে আসে না। আপনি যদি আবহাওয়ার খবর শুনেন, বজ্রের শব্দ পান বা আকাশে বিদ্যুৎ ঝলকানি দেখেন, সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। তাতেই জীবন বাঁচে।” তাঁর এই কথার মানে হলো, আকাশে গর্জন শুনলেই ঘরে চলে যেতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠ, জলাশয়, ধাতব বস্তু এবং বড় গাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। ঘরের মধ্যে থাকলেও সাবধান থাকতে হবে—ফ্রিজ, টিভি, ওয়াইফাই, কিচেন চিমনি বা ইলেকট্রিক তার থেকে দূরে থাকতে হবে। দরজা-জানালা বন্ধ করে মাথা নিচু করে বসে থাকতে হবে। বজ্রপাত চলাকালে ছাদে যাওয়া, মোবাইল ফোনে কথা বলা, ইলেকট্রিক যন্ত্রে চার্জ দেওয়া—এসব থেকে বিরত থাকতে হবে।
একটি মজার কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-এর পরিবেশবিজ্ঞানী অ্যালান বার্ক। তিনি বলেন, *“বজ্রপাত মানুষকে মারতে চায় না, এটা বিদ্যুতের সহজ রাস্তা খোঁজে। আপনি যদি সেই রাস্তা হন, তবে বিদ্যুৎ আপনাকে বেছে নেবে।”* তাই বজ্রপাতের সময় ধাতব ছাতা বা মোবাইল ফোন হাতে থাকাটা জীবনের জন্য বিপজ্জনক।
বিশেষ করে শিশুদের ব্যাপারে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে বজ্রপাত বিষয়ক সচেতনতামূলক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক শিক্ষা সংগঠন গ্লোবাল ওয়েদা এডুকেশন-এর সদস্য ক্যাথরিন মিলার। তিনি বলেন, “বাচ্চারা যদি ছোট থেকেই বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতন হয়, ভবিষ্যতে তারা অনেক বেশি সতর্ক হবে।”
বাংলাদেশে সম্প্রতি কয়েকটি জায়গায় সোলারচালিত বজ্রনিরোধক যন্ত্র বসানো হয়েছে। তবে এই যন্ত্রগুলো শুধু নির্দিষ্ট এলাকার জন্য কাজ করে, দেশের সব মানুষের জন্য নয়। তাই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ হচ্ছে ব্যক্তিগত সচেতনতা। আজকাল মোবাইলে আবহাওয়ার অ্যাপ আছে, সেখান থেকে বজ্রপাতের পূর্বাভাস জানা যায়। বারবার বলা হলেও, এই অ্যাপের ওপর মানুষ খুব কমই গুরুত্ব দেয়। অথচ আমেরিকার মতো দেশে স্কুল, অফিস, খেলার মাঠ—সবখানে বজ্রপাতের খবর এলেই সাইরেন বাজে, সবাই আশ্রয়ে চলে যায়।
বাংলাদেশেও যদি গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সবাই বজ্রপাতের পূর্বাভাস গুরুত্ব দিয়ে নেয়, বজ্রপাত সম্পর্কে শিশুদের শিক্ষা দেওয়া হয়, মাঠে কাজ করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা হয়, তাহলেই আমরা এই ভয়াবহ মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারব।
শেষ কথা, বজ্রপাত একটি স্বাভাবিক প্রাকৃতিক ঘটনা হলেও, সেটিকে উপেক্ষা করা উচিত নয়। মানুষের প্রাণের চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই। একটু সচেতন হলে আমরা নিজের জীবন তো বাঁচাতে পারবই, পাশাপাশি পরিবারের অন্য সদস্যদেরও নিরাপদ রাখতে পারব। আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বজ্রপাতকে ভয় নয়, বিজ্ঞানের আলোয় বোঝার একটা উপায় হিসেবে তুলে ধরতে পারব।
ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কা। আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় শুরু হয়েছে এই ম্যাচ।
১২ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল— মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার কারণে এই তিন বিভাগে প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস ছিল আগে থেকেই। এবার ২৪ ঘণ্টার জন্য প্রবল বর্ষণের সতর্কবার্তায় যুক্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগও। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই চার বিভাগেই আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
১৫ ঘণ্টা আগেতবে এই ধারণা গবেষণাগারে থেমে থাকেনি। ২০০৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ব্রিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একত্রিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি সহযোগিতামূলক সম্পর্কের সূচনা করেন।
১ দিন আগে