অরুণ কুমার
আধুনিক রান্নাঘরের সঙ্গে গ্রামবাংলার পরিচিত রান্নাঘরের আকাশ-পাতাল তফাত। সেকালের গ্রামীণ গ্রহস্থ পরিবারে রান্নাঘর ছিল বিশেষ কিছু। শহুরে রান্নাঘরের মতো শোবার ঘরের পাশাপাশেই রান্নাঘরি ছিল অকল্পনীয় ব্যাপার। শহরে আসলে ফ্ল্যাট বাসায় থাকে মানুষ। উঠোন নেই, তাই রান্নাঘর শোয়ার ঘর থেকে দূরে হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
সেকালের গৃহস্থবাড়ির দুই প্রান্তে হতো শোবার ও রান্নাঘরের অবস্থান। এর অবশ্য কারণ আছে। প্রথম কারণ অবশ্যই আগুন লাগার ভয়।
রান্নাঘরে আগুন নিয়ে কারবার। তাই প্রায়ই আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনা কম ছিল না। কিন্তু সেই আগুন যেন দ্রুত ছড়িয়ে না পড়তে পারে, এ জন্য রান্নাঘর থাকত শোবার ঘর থেকে দূরে। এতে শোবার ঘরের দামি জিনিসপত্র বেঁচে যেত সহজেই।
রান্নাঘর দূরে হওয়ার আরেকটা সুবিধা ছিল। কাঠ পুড়িয়ে রান্না করা হতো। ধোঁয়া হতো প্রচুর। সেই ধোঁয়াও শোবার ঘরে এসে সমস্যা করতে পারত না দূরে হওয়ার কারণে।
আর্থিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে রান্নাঘর বা হেঁশেলের রকমফের হতো। দরিদ্রের হেঁশেল ঘর দাঁড়িয়ে থাকত বাঁশ-কঞ্চির বেড়ার ওপর। চাল হিসেবে তালাপাতা, পাটখড়ি বা ত্রিপল। গৃহস্থের হেঁশেল মাটির তৈরি, বাঁশের চটাও হতো। তবে চাল হিসেবে কেউ ব্যবহার করতেন টালি, কারও ঘরের খড় বা নাড়া দিয়ে ছাওয়া।
রান্নাঘরের এককোণে মাটির চুলা, পাশেই কিছু জ্বালানি। হাঁড়িকুড়ি ঝুলিয়ে রাখার জন্য একাধিক শিকে। কারও কারও ঘরে আলমারিও থাকত। একটা মই ঝুলানো থাকত। মইয়ের ওপর যেসব হাঁড়ি-পাতিল কম ব্যবহার করা হয় সেগুলো রাখা হতো।
হেঁশেল ঘরের একটা অংশ ব্যবহার করা হতো ভাঁড়ার ঘর হিসেবে। রান্নাঘরগুলো হতো দোচালা। একটির সঙ্গে আরেকটা ঠেস, লম্বা পিরামিডের মতো করে। তাই দেয়ালের মাথা থেকে চালের শীর্ষরেখা পর্যন্ত ফাঁকা থাকে। সামনে দেয়াল থেকে পেছনের দেয়াল পর্যন্ত আড়াআড়ি করে রাখা হতো মোটা বাঁশ। এগুলোকে বলা হতো আড়া। আড়ার ওপর আবার বাঁশের মাচা। একে বলে আড়মাচা। আড়মাচায় সারা বছরের জন্য জমিয়ে রাখা হতো রসুন, পেঁয়াজ, কখনো কখনো ধানের বস্তাও রাখা হতো। হেঁশেলের চুলার ঠিক পেছনেই কলস, মাটির কিংবা কাঁসার, খাবার পানির জন্য। এককাণে থাকত মালসা বা শানকি, ভাতের মাড় গালবার জন্য।
হেঁশেলের অর্ধেক রান্নাবান্নার জন্য, বাকি অর্ধেক ভাঁড়ার ঘর। কারও কারও রান্নাঘরে বিশালাকৃতির মাটির হাঁড়া রাখা হতো। পেল্লায় আকারের কলসের মতো দেখতে। তুলনায় মুখ ও গলা অনেক ছোট। হাঁড়ার পেটের ভেতরে রাখা হতো প্রতিদিনকার রান্নার চাল।
রান্নাঘরের এককোণে রাখা হয় আলু। সারা বছর খাওয়ার জন্য। কেউ কেউ রান্নাঘরের এ দিকটায় ছাগল বাঁধার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করতেন। যাদের আমা কাঁঠালেন বাগান আছে, তারা এই কোণে রাখতে নিজেদের খাওয়ার জন্য এসব ফল।
একটু বড় গৃহস্থ যারা, তাদের রান্নাঘর আর ভাঁড়ার ঘর আলাদা। ভাঁড়ার ঘরে আরও বহু জিনিস রাখত তারা- এক পাশে মাচা কিংবা ইট দিয়ে উঁচু করে তার ওপর রাখা হতো ধান-চাল বিভিন্ন ডালের বস্তা। কারও পাটের আঁটি। ড্রাম থাকত এক কোণে, ধান, মুগ মুসর, কিংবা গমের বীজ।
কেউ কেউ যেমন রান্নাঘরকে ভাঁড়ার ঘর হিসেবে ব্যবহার করতেন, কারও কারও শোবার ঘরটাই ছিল ভাঁড়ার ঘর। যে যেটিই ব্যবহার করুন না কেন, ভাঁড়ার ঘরের চেহারা আর জিনিসপত্র একই।
আধুনিক রান্নাঘরের সঙ্গে গ্রামবাংলার পরিচিত রান্নাঘরের আকাশ-পাতাল তফাত। সেকালের গ্রামীণ গ্রহস্থ পরিবারে রান্নাঘর ছিল বিশেষ কিছু। শহুরে রান্নাঘরের মতো শোবার ঘরের পাশাপাশেই রান্নাঘরি ছিল অকল্পনীয় ব্যাপার। শহরে আসলে ফ্ল্যাট বাসায় থাকে মানুষ। উঠোন নেই, তাই রান্নাঘর শোয়ার ঘর থেকে দূরে হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
সেকালের গৃহস্থবাড়ির দুই প্রান্তে হতো শোবার ও রান্নাঘরের অবস্থান। এর অবশ্য কারণ আছে। প্রথম কারণ অবশ্যই আগুন লাগার ভয়।
রান্নাঘরে আগুন নিয়ে কারবার। তাই প্রায়ই আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনা কম ছিল না। কিন্তু সেই আগুন যেন দ্রুত ছড়িয়ে না পড়তে পারে, এ জন্য রান্নাঘর থাকত শোবার ঘর থেকে দূরে। এতে শোবার ঘরের দামি জিনিসপত্র বেঁচে যেত সহজেই।
রান্নাঘর দূরে হওয়ার আরেকটা সুবিধা ছিল। কাঠ পুড়িয়ে রান্না করা হতো। ধোঁয়া হতো প্রচুর। সেই ধোঁয়াও শোবার ঘরে এসে সমস্যা করতে পারত না দূরে হওয়ার কারণে।
আর্থিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে রান্নাঘর বা হেঁশেলের রকমফের হতো। দরিদ্রের হেঁশেল ঘর দাঁড়িয়ে থাকত বাঁশ-কঞ্চির বেড়ার ওপর। চাল হিসেবে তালাপাতা, পাটখড়ি বা ত্রিপল। গৃহস্থের হেঁশেল মাটির তৈরি, বাঁশের চটাও হতো। তবে চাল হিসেবে কেউ ব্যবহার করতেন টালি, কারও ঘরের খড় বা নাড়া দিয়ে ছাওয়া।
রান্নাঘরের এককোণে মাটির চুলা, পাশেই কিছু জ্বালানি। হাঁড়িকুড়ি ঝুলিয়ে রাখার জন্য একাধিক শিকে। কারও কারও ঘরে আলমারিও থাকত। একটা মই ঝুলানো থাকত। মইয়ের ওপর যেসব হাঁড়ি-পাতিল কম ব্যবহার করা হয় সেগুলো রাখা হতো।
হেঁশেল ঘরের একটা অংশ ব্যবহার করা হতো ভাঁড়ার ঘর হিসেবে। রান্নাঘরগুলো হতো দোচালা। একটির সঙ্গে আরেকটা ঠেস, লম্বা পিরামিডের মতো করে। তাই দেয়ালের মাথা থেকে চালের শীর্ষরেখা পর্যন্ত ফাঁকা থাকে। সামনে দেয়াল থেকে পেছনের দেয়াল পর্যন্ত আড়াআড়ি করে রাখা হতো মোটা বাঁশ। এগুলোকে বলা হতো আড়া। আড়ার ওপর আবার বাঁশের মাচা। একে বলে আড়মাচা। আড়মাচায় সারা বছরের জন্য জমিয়ে রাখা হতো রসুন, পেঁয়াজ, কখনো কখনো ধানের বস্তাও রাখা হতো। হেঁশেলের চুলার ঠিক পেছনেই কলস, মাটির কিংবা কাঁসার, খাবার পানির জন্য। এককাণে থাকত মালসা বা শানকি, ভাতের মাড় গালবার জন্য।
হেঁশেলের অর্ধেক রান্নাবান্নার জন্য, বাকি অর্ধেক ভাঁড়ার ঘর। কারও কারও রান্নাঘরে বিশালাকৃতির মাটির হাঁড়া রাখা হতো। পেল্লায় আকারের কলসের মতো দেখতে। তুলনায় মুখ ও গলা অনেক ছোট। হাঁড়ার পেটের ভেতরে রাখা হতো প্রতিদিনকার রান্নার চাল।
রান্নাঘরের এককোণে রাখা হয় আলু। সারা বছর খাওয়ার জন্য। কেউ কেউ রান্নাঘরের এ দিকটায় ছাগল বাঁধার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করতেন। যাদের আমা কাঁঠালেন বাগান আছে, তারা এই কোণে রাখতে নিজেদের খাওয়ার জন্য এসব ফল।
একটু বড় গৃহস্থ যারা, তাদের রান্নাঘর আর ভাঁড়ার ঘর আলাদা। ভাঁড়ার ঘরে আরও বহু জিনিস রাখত তারা- এক পাশে মাচা কিংবা ইট দিয়ে উঁচু করে তার ওপর রাখা হতো ধান-চাল বিভিন্ন ডালের বস্তা। কারও পাটের আঁটি। ড্রাম থাকত এক কোণে, ধান, মুগ মুসর, কিংবা গমের বীজ।
কেউ কেউ যেমন রান্নাঘরকে ভাঁড়ার ঘর হিসেবে ব্যবহার করতেন, কারও কারও শোবার ঘরটাই ছিল ভাঁড়ার ঘর। যে যেটিই ব্যবহার করুন না কেন, ভাঁড়ার ঘরের চেহারা আর জিনিসপত্র একই।
ভিডিও বার্তায় হানিয়া বলেছিলেন, তিনি বাংলাদেশে আসছেন একটি ছোট্ট সারপ্রাইজ নিয়ে। সেই ‘সারপ্রাইজ’ ঠিক কী, তা হয়তো করপোরেট ইভেন্টের সীমায় আটকে থাকবে। কিন্তু ভক্তদের কাছে সবচেয়ে বড় চমক তো তিনি নিজেই— ঢাকায় এসে, এই শহরের মাটিতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের প্রতি সমর্থন জানানো।
২২ দিন আগেকবি রেজাউদ্দিন স্টালিনকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
২৩ দিন আগেঅনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও গবেষক রেহনুমা আহমেদ, সংগীতশিল্পী কফিল আহমেদ, বিশ্বসূফি সংস্থার সদস্য হাসান শাহ সুরেশ্বরী দীপু নূরী, সায়ান, অরূপ রাহী, কাজী কৃষ্ণকলি ইসলাম, সহজিয়া ব্যান্ডের রাজুসহ বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মীরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সমগীতের সভাপ্রধ
২৪ দিন আগেপ্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান তাদের বৃহস্পতিবার প্রথম পাতা সাজিয়েছে ট্রাম্পের সফর নিয়েই। সেখানে মূল সংবাদের পাশেই স্থান পেয়েছে ব্রিটিশ ‘পোয়েট লরিয়েট’ তথা রাষ্ট্রীয়ভাবে নিযুক্ত কবি ক্যারল অ্যান ডাফির কবিতা STATE/BANQUET। বিশ্বব্যবস্থা যে রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তারই এক মূর্ত
২৪ দিন আগে