অনিমেষ হাওলাদার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য ভর্তিকে কেন্দ্র করে সেখানে আন্দোলন-অস্থিরতা শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য ভর্তিকে ‘প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা’র আওতায় সীমিত পরিসরে সর্বোচ্চ ৪০ জন পোষ্য ভর্তি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। বলা প্রয়োজন যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভাগের সংখ্যা ৩৯টি। এই হিসেবে প্রতিটি বিভাগে গড়ে ১জন মাত্র পোষ্য ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পূর্ব আলোচনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ব্যক্তি মাত্র একবার এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রাক আলোচনায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা সুনিদির্ষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তের ব্যাপক বিরোধিতা করে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেয়ার যে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন, তা লক্ষণীয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো কোনো শিক্ষার্থী পোষ্য ভর্তি ফের চালু করলে বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়ার হুমকি দেন। কোনো কোনো শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্য কোটার কবর দেয়ার কথা উল্লেখ করে লিখেন ‘যা কবর দেয়া হয়েছে, তা আর ফিরে আসবে না।’ বক্ষ্যমাণ নিবন্ধে ‘প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা’, ‘পোষ্য’ এবং শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে কোটা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করতে চাই।
পৃথিবীর সর্বত্র সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আছে। বাংলা অভিধানে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বলতে ‘সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা বা উপকারিতাকে বোঝানো হয়েছে। এখানে আরও বলা হয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধাগুলি ব্যক্তির জন্য মূল্যবান, যা তার কর্মজীবনের উন্নতি বা সামগ্রিক কল্যাণে অবদান রাখতে পারে। ইংরেজিতে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধাকে Institutional opportunities বা Institutional assistance বলা হয়েছে। Institutional opportunities বিশদভাবে তুলে ধরতে গিয়ে বলা হয়েছে, Institutional opportunities refer to openings or chances for growth, improvement, or advancement within an organization, often related to its structure, processes, or resources. এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিগণ ভোগ করেন। ইংরেজিতে পোষ্যকে Dependent বা Dependant বলা হয়েছে। এই Dependent বা নির্ভরশীলতা যিনি তার অভিভাবক তার ওপর বর্তায়। একজন বাবা-মা যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন, প্রয়োজনে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার আওতায় তার পোষ্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানো মাধ্যমে নির্ভরশীলতার দায়িত্ব পালন করেন।
এবার পোষ্য ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বিরোধীতা এবং শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া বা উড়াল দেয়ার প্রসঙ্গে ফেরা যাক। সরকারি চাকরিতে বিশেষত বিসিএস-এ কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলন মোকাবেলায় সরকারের দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ডের ফলে আন্দোলনের ঘটনা পরম্পরায় কোটা সংস্কারের দাবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ‘এক দফা’য় পরিণত হয় এবং ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষজন যোগ দেন। ছাত্র আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। বহুল প্রচলিত ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট, ২০২৪) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভারতে পালিয়ে যান।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য ভর্তি বিরোধীতাকারী শিক্ষার্থীরা চাকরিতে কোটা প্রথার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য ভর্তি কোটাকে অভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন। আমরা মনে করি, এই দুইটি কোটার মধ্যে সাদৃশ্য নেই। মনে করি বিসিএস চাকরিতে গত বছর মোট পদের সংখ্যা ছিল ৫০০। এরমধ্যে মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন কোটাতে ১০০টি পদ সংরক্ষিত। এখানে ১০০টি পদ সংরক্ষিত থাকায় চাকরি প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে ৪০০টি পদের বিপরীতে। এতে স্বাভাবিকভাবেই একজন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ সংকুচিত হয়েছে। কোটা ভিত্তিক ১০০টি পদ সংরক্ষিত না থাকলে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হতো। সংরক্ষিত ১০০টি পদের প্রভাব প্রত্যেক চাকরি প্রার্থীর ওপর গিয়ে পড়েছে। এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার আওতায় হোক বা অন্য যে কোনো নামেই হোক পোষ্য ভর্তি কোটায় ফেরা যাক। মনে করি চলতি শিক্ষাবর্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯০০ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। দেশের মধ্যে একমাত্র সম্পূর্ণ আবাসিক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষে আবাসিক হলসমূহে সিট সংখ্যা ১৯০০টি হওয়ায় সিট বাড়ানোর আরও কোনো সুযোগ নেই। মেধা ভিত্তিক এবং আরও কয়েকটি কোটা যেমন আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, দলিত সম্প্রদায়, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, প্রতিবন্ধী, খেলোয়াড় কোটায় নির্ধারিত অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীসহ ১৯০০টি সিটের বিপরীতে ১৯০০জন শিক্ষার্থী ভর্তির পর আবাসিক হলসমূহে সিট দেওয়া হবে না এবং আবাসিক হলসমূহে থাকতে পারবে না- এই শর্তে ৪০ জন পোষ্য ভর্তি করা হলো। এই ৪০ জন পোষ্য ভর্তির অনুমতি দেওয়ার ফলে ভর্তিকৃত ১৯০০ শিক্ষার্থীসহ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী অপরাপর শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো প্রভাব পড়ছে কী? নিশ্চয় পড়েনি। এবার মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি গ্রহণ করে পোষ্য হিসেবে একজন শিক্ষার্থীকেও ভর্তি করাবে না। এক্ষেত্রে ১৯০০ সিটের স্থলে সিট সংখ্যা বেড়ে ১৯০১টি হবে কী? অবশ্যই না।
সুতরাং একথা স্বীকার্য যে, পোষ্য ভর্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্র্থীদের ওপর কোনো ধরনের প্রভাব ফেলে না। এমতাবস্থায় কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শেখ হাসিনা উড়াল দেয়া আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটাকে অভিন্ন করে দেখার সুযোগ নেই। দু’টি ভিন্ন বিষয়কে একই সমান্তরাল করে দেখা শুধু অস্থিরতাই তৈরি করে না, কারো কারো অধিকারকেও ক্ষুণœ করে। যারা পুলিশ বা প্রতিরক্ষা বাহিনীতে চাকরি করেন, তারা রেশনে অপেক্ষাকৃত অনেক কম দামে বিভিন্ন পণ্যদ্রব্য পেয়ে থাকেন। এই সুবিধা আমরা সবাই কী চাইতে পারি বা প্রাপ্য বা এই সুবিধা বন্ধ করে দেয়ার কথা বলতে পারি? পারি না। ব্যাংকে যারা চাকরি করেন, তারা সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে বাড়িঘর করতে পারেন। আমরাও কী ওই সুবিধা পেতে পারি? সজহ উত্তর পারি না।
আমরা কথা প্রসঙ্গে উন্নত, আধুনিক এবং প্রগতিশীলতার কথা বলি। অধিকার সুরক্ষা, যুক্তি এবং ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলার কথা বলি। বৈষম্য বিলোপের কথা বলি। একজন ব্যক্তি তিনি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, তার প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত সুবিধা আমরা আটকাতে পারি না। আমি যা ভোগ করি বা আমি যা প্রাপ্য তা গ্রহণ নাও করতে পারি। ক্ষেত্র বিশেষে সেই সুবিধার কবরও রচনা করতে পারি। কিন্তু অপরজনের সুবিধার কবর আমি রচনা করতে পারি না। কারণ এটির হকদার আমি না। একজনের সুবিধা যদি অপরজনের ওপর প্রভাব না ফেলে, অপরজন বঞ্চনা-ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই সুবিধা রদ করার কথা বলা ন্যায়সঙ্গত নয়। আর বলা বাহুল্য যে, একজন চাকরিরত ব্যক্তির পোষ্য সুবিধা একবার মাত্র ব্যবহারের নিয়ম করে চাকরিরত ব্যক্তির যদি একাধিক সন্তান থাকে; এক্ষেত্রে যদি প্রাতিষ্ঠানিক পোষ্য সুবিধার প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু নতুন নিয়মের ফলে তা অপর সন্তানের জন্য প্রযোজ্য না হয়, এক্ষেত্রে বৈষম্যের দাবি করা হলে, তা অমূলক হবে না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য ভর্তিকে কেন্দ্র করে সেখানে আন্দোলন-অস্থিরতা শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য ভর্তিকে ‘প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা’র আওতায় সীমিত পরিসরে সর্বোচ্চ ৪০ জন পোষ্য ভর্তি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। বলা প্রয়োজন যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভাগের সংখ্যা ৩৯টি। এই হিসেবে প্রতিটি বিভাগে গড়ে ১জন মাত্র পোষ্য ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পূর্ব আলোচনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ব্যক্তি মাত্র একবার এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রাক আলোচনায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা সুনিদির্ষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তের ব্যাপক বিরোধিতা করে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেয়ার যে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন, তা লক্ষণীয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো কোনো শিক্ষার্থী পোষ্য ভর্তি ফের চালু করলে বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়ার হুমকি দেন। কোনো কোনো শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্য কোটার কবর দেয়ার কথা উল্লেখ করে লিখেন ‘যা কবর দেয়া হয়েছে, তা আর ফিরে আসবে না।’ বক্ষ্যমাণ নিবন্ধে ‘প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা’, ‘পোষ্য’ এবং শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে কোটা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করতে চাই।
পৃথিবীর সর্বত্র সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে নানা ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আছে। বাংলা অভিধানে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বলতে ‘সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা বা উপকারিতাকে বোঝানো হয়েছে। এখানে আরও বলা হয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধাগুলি ব্যক্তির জন্য মূল্যবান, যা তার কর্মজীবনের উন্নতি বা সামগ্রিক কল্যাণে অবদান রাখতে পারে। ইংরেজিতে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধাকে Institutional opportunities বা Institutional assistance বলা হয়েছে। Institutional opportunities বিশদভাবে তুলে ধরতে গিয়ে বলা হয়েছে, Institutional opportunities refer to openings or chances for growth, improvement, or advancement within an organization, often related to its structure, processes, or resources. এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিগণ ভোগ করেন। ইংরেজিতে পোষ্যকে Dependent বা Dependant বলা হয়েছে। এই Dependent বা নির্ভরশীলতা যিনি তার অভিভাবক তার ওপর বর্তায়। একজন বাবা-মা যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেন, প্রয়োজনে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার আওতায় তার পোষ্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানো মাধ্যমে নির্ভরশীলতার দায়িত্ব পালন করেন।
এবার পোষ্য ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বিরোধীতা এবং শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া বা উড়াল দেয়ার প্রসঙ্গে ফেরা যাক। সরকারি চাকরিতে বিশেষত বিসিএস-এ কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলন মোকাবেলায় সরকারের দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ডের ফলে আন্দোলনের ঘটনা পরম্পরায় কোটা সংস্কারের দাবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ‘এক দফা’য় পরিণত হয় এবং ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষজন যোগ দেন। ছাত্র আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। বহুল প্রচলিত ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট, ২০২৪) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভারতে পালিয়ে যান।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য ভর্তি বিরোধীতাকারী শিক্ষার্থীরা চাকরিতে কোটা প্রথার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য ভর্তি কোটাকে অভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন। আমরা মনে করি, এই দুইটি কোটার মধ্যে সাদৃশ্য নেই। মনে করি বিসিএস চাকরিতে গত বছর মোট পদের সংখ্যা ছিল ৫০০। এরমধ্যে মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন কোটাতে ১০০টি পদ সংরক্ষিত। এখানে ১০০টি পদ সংরক্ষিত থাকায় চাকরি প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে ৪০০টি পদের বিপরীতে। এতে স্বাভাবিকভাবেই একজন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ সংকুচিত হয়েছে। কোটা ভিত্তিক ১০০টি পদ সংরক্ষিত না থাকলে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হতো। সংরক্ষিত ১০০টি পদের প্রভাব প্রত্যেক চাকরি প্রার্থীর ওপর গিয়ে পড়েছে। এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার আওতায় হোক বা অন্য যে কোনো নামেই হোক পোষ্য ভর্তি কোটায় ফেরা যাক। মনে করি চলতি শিক্ষাবর্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯০০ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। দেশের মধ্যে একমাত্র সম্পূর্ণ আবাসিক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষে আবাসিক হলসমূহে সিট সংখ্যা ১৯০০টি হওয়ায় সিট বাড়ানোর আরও কোনো সুযোগ নেই। মেধা ভিত্তিক এবং আরও কয়েকটি কোটা যেমন আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, দলিত সম্প্রদায়, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, প্রতিবন্ধী, খেলোয়াড় কোটায় নির্ধারিত অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীসহ ১৯০০টি সিটের বিপরীতে ১৯০০জন শিক্ষার্থী ভর্তির পর আবাসিক হলসমূহে সিট দেওয়া হবে না এবং আবাসিক হলসমূহে থাকতে পারবে না- এই শর্তে ৪০ জন পোষ্য ভর্তি করা হলো। এই ৪০ জন পোষ্য ভর্তির অনুমতি দেওয়ার ফলে ভর্তিকৃত ১৯০০ শিক্ষার্থীসহ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী অপরাপর শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো প্রভাব পড়ছে কী? নিশ্চয় পড়েনি। এবার মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি গ্রহণ করে পোষ্য হিসেবে একজন শিক্ষার্থীকেও ভর্তি করাবে না। এক্ষেত্রে ১৯০০ সিটের স্থলে সিট সংখ্যা বেড়ে ১৯০১টি হবে কী? অবশ্যই না।
সুতরাং একথা স্বীকার্য যে, পোষ্য ভর্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্র্থীদের ওপর কোনো ধরনের প্রভাব ফেলে না। এমতাবস্থায় কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শেখ হাসিনা উড়াল দেয়া আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটাকে অভিন্ন করে দেখার সুযোগ নেই। দু’টি ভিন্ন বিষয়কে একই সমান্তরাল করে দেখা শুধু অস্থিরতাই তৈরি করে না, কারো কারো অধিকারকেও ক্ষুণœ করে। যারা পুলিশ বা প্রতিরক্ষা বাহিনীতে চাকরি করেন, তারা রেশনে অপেক্ষাকৃত অনেক কম দামে বিভিন্ন পণ্যদ্রব্য পেয়ে থাকেন। এই সুবিধা আমরা সবাই কী চাইতে পারি বা প্রাপ্য বা এই সুবিধা বন্ধ করে দেয়ার কথা বলতে পারি? পারি না। ব্যাংকে যারা চাকরি করেন, তারা সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে বাড়িঘর করতে পারেন। আমরাও কী ওই সুবিধা পেতে পারি? সজহ উত্তর পারি না।
আমরা কথা প্রসঙ্গে উন্নত, আধুনিক এবং প্রগতিশীলতার কথা বলি। অধিকার সুরক্ষা, যুক্তি এবং ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলার কথা বলি। বৈষম্য বিলোপের কথা বলি। একজন ব্যক্তি তিনি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, তার প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত সুবিধা আমরা আটকাতে পারি না। আমি যা ভোগ করি বা আমি যা প্রাপ্য তা গ্রহণ নাও করতে পারি। ক্ষেত্র বিশেষে সেই সুবিধার কবরও রচনা করতে পারি। কিন্তু অপরজনের সুবিধার কবর আমি রচনা করতে পারি না। কারণ এটির হকদার আমি না। একজনের সুবিধা যদি অপরজনের ওপর প্রভাব না ফেলে, অপরজন বঞ্চনা-ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই সুবিধা রদ করার কথা বলা ন্যায়সঙ্গত নয়। আর বলা বাহুল্য যে, একজন চাকরিরত ব্যক্তির পোষ্য সুবিধা একবার মাত্র ব্যবহারের নিয়ম করে চাকরিরত ব্যক্তির যদি একাধিক সন্তান থাকে; এক্ষেত্রে যদি প্রাতিষ্ঠানিক পোষ্য সুবিধার প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু নতুন নিয়মের ফলে তা অপর সন্তানের জন্য প্রযোজ্য না হয়, এক্ষেত্রে বৈষম্যের দাবি করা হলে, তা অমূলক হবে না।
২২ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ নিয়ে একটি প্রস্তাবনা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে । তাতে প্রধান শিক্ষকরা আগে কত টাকা বেতন ও ভাতা পেতেন, আর দশম গ্রেড বাস্তবায়ন হলে কত পাবেন—তা নিয়ে পরিপূর্ণ হিসাব রয়েছে ।
৪ দিন আগেভিওজিএসএস হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদ্বেগ, স্বার্থ ও অগ্রাধিকারসমূহের বিষয়ে আলোচনা করা, ধারণা ও সমাধান বিনিময় করা, এবং উন্নয়ন সমাধান বিনির্মাণে কণ্ঠ ও উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য একটি অভিন্ন মঞ্চ প্রদানের লক্ষ্যে ভারতের প্রচেষ্টা।
৫ দিন আগেবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকেই খাজা সলিমুল্লাহ, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, আল্লামা ইকবাল, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ অনুধাবন করেন যে, ভারতবর্ষ স্বাধীন হলে মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমির প্রয়োজন হবে। অন্যথায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির মধ্যে গৃহযুদ্ধ লেগেই থাকবে। রা
৯ দিন আগেশেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানী নেতাদের প্রতি খারাপ ভাষার ব্যবহার করতে শুনিনি। স্বাধীনতার ঘোষক বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তাঁর জীবদ্দশায় শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করেননি। শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে এনে রাজনীতি করার সুযোগস
৯ দিন আগে