শাহরিয়ার শরীফ
দেশে হচ্ছেটা কী?— এমন প্রশ্ন মানুষের মুখে মুখে। প্রায় প্রতিদিন ঢাকা শহরে বিক্ষোভ-অবরোধ হচ্ছে, এর ফল প্রচণ্ড যানজট আর মানুষের দুর্ভোগ। যেন ক্ষোভ-বিক্ষোভের শহরে পরিণত হয়েছে ঢাকা।
এমনিতে স্বাভাবিক সময়ে ঢাকায় চলাচল করা কঠিন। যানজটে নাকাল নিত্যদিনের জীবন। তার ওপর এসব ক্ষোভ-বিক্ষোভ, মানববন্ধন আর ভাঙচুরের ঘটনায় নগরজীবন অতীষ্ঠ।
দাবি থাকবে, এর প্রকাশ হবে। কিন্তু কথায় কথায় এভাবে সড়ক অবরোধ করলে জনজীবনের কী হবে?
পুরান ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতের এজলাসে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি এজলাস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। বাধার মুখে তারা আগুন নেভাতে পারেননি। পরে বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে তারা আবার যান। গিয়ে দেখেন, এজলাস পুড়ে গেছে।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি (পিপি) বোরহান উদ্দিন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এজলাসকক্ষ এমনভাবে পুড়ে গেছে যে কোনো সংস্কার না করলে সহসা এখান বিচারকাজ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না।
আলিয়া মাদরাসা মাঠে আদালত বসানোর প্রতিবাদ করছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। তারা এই আদালত সরিয়ে নেওয়ার দাবি করছেন। অস্থায়ী বিশেষ আদালত সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে গতকাল দিবাগত রাত ১টার দিকেই তারা সড়ক অবরোধ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সেনাবাহিনী। ১০ ঘণ্টা পর আজ বেলা ১১টার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যান। কিন্তু ওই এলাকার সড়কগুলোতে ছিল ইট-পাটকেলের স্তূপ।
বিডিআর বিদ্রোহ তথা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের একটি মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার এই আদালতে হওয়ার কথা ছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেই শুনানি স্থগিত করতে হয়েছে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ১৫ বছর আগের এই হত্যাকাণ্ড পুনর্তদন্তের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে সরকার। আজ থেকে আলিয়া মাদরাসা মাঠে জামিন শুনানি শুরু হওয়ার কথা ছিল।
ঘটনা কিন্তু এখানেই শেষ নয়। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় দণ্ডিত বিডিআর সদস্যদের কারামুক্তি, মামলার পুনর্তদন্ত, ন্যায়বিচার নিশ্চিত, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও পুনর্বাসনের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগ ‘ব্লকেড’ করা হয়েছে। চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যসহ ‘ভুক্তভোগী’ পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা এই ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন।
বেলা দেড়টার দিকে শাহবাগ ‘ব্লকেড’ করা হয়। এতে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শাহবাগ মোড়সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সড়কে তৈরি হয় তীব্র যানজট।
গতকাল রাত থেকে বকশীবাজার-শাহবাগ এলাকায় চলছে অস্থিরতা। একেকদিন একেক এলাকার জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশ সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। কিন্তু অন্য এলাকার কী হবে?
এমনিতেই রাজধানীর অলিগলি ও আশপাশের এলাকায় চলাচলকারী অবৈধ ব্যাটারির রিকশা ও ইজিবাইক উঠে এসেছে মূল সড়কে। এলোমেলো চলাচল, হুটহাট ঘোরানো, উলটো পথে চলাচলের কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা।
শুধু ব্যাটারির রিকশাচালকরাই নন, অন্য পরিবহণচালকদেরও অনেকে সড়ক আইন মানছেন না। ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে তারা চলার চেষ্টা করছেন খেয়ালখুশিমতো। আছে পুরানো যানবাহন, অদক্ষ চালকের বাড়াবাড়ি।
এমনিতেই নানা কারণে জনজীবনে রয়েছে অস্বস্তি। জিনিসপত্রের দাম, ছিনতাই-ডাকাতি, রাজনৈতিক সংঘাত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানা কারণে দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। রাজনৈতিক সংকট তো আছেই।
যে শহরে স্বাভাবিক অবস্থায় চলাফেরা করা কঠিন, সেখানে এমন নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা থাকলে মানুষ ঘরের বাইরে বের হবে কীভাবে? এভাবেই কি চলতে থাকবে? এটাই কি বাক স্বাধীনতা ও সুশাসনের দৃষ্টান্ত?
লেখক: সাংবাদিক
দেশে হচ্ছেটা কী?— এমন প্রশ্ন মানুষের মুখে মুখে। প্রায় প্রতিদিন ঢাকা শহরে বিক্ষোভ-অবরোধ হচ্ছে, এর ফল প্রচণ্ড যানজট আর মানুষের দুর্ভোগ। যেন ক্ষোভ-বিক্ষোভের শহরে পরিণত হয়েছে ঢাকা।
এমনিতে স্বাভাবিক সময়ে ঢাকায় চলাচল করা কঠিন। যানজটে নাকাল নিত্যদিনের জীবন। তার ওপর এসব ক্ষোভ-বিক্ষোভ, মানববন্ধন আর ভাঙচুরের ঘটনায় নগরজীবন অতীষ্ঠ।
দাবি থাকবে, এর প্রকাশ হবে। কিন্তু কথায় কথায় এভাবে সড়ক অবরোধ করলে জনজীবনের কী হবে?
পুরান ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতের এজলাসে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি এজলাস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। বাধার মুখে তারা আগুন নেভাতে পারেননি। পরে বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে তারা আবার যান। গিয়ে দেখেন, এজলাস পুড়ে গেছে।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি (পিপি) বোরহান উদ্দিন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এজলাসকক্ষ এমনভাবে পুড়ে গেছে যে কোনো সংস্কার না করলে সহসা এখান বিচারকাজ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না।
আলিয়া মাদরাসা মাঠে আদালত বসানোর প্রতিবাদ করছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। তারা এই আদালত সরিয়ে নেওয়ার দাবি করছেন। অস্থায়ী বিশেষ আদালত সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে গতকাল দিবাগত রাত ১টার দিকেই তারা সড়ক অবরোধ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সেনাবাহিনী। ১০ ঘণ্টা পর আজ বেলা ১১টার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যান। কিন্তু ওই এলাকার সড়কগুলোতে ছিল ইট-পাটকেলের স্তূপ।
বিডিআর বিদ্রোহ তথা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের একটি মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার এই আদালতে হওয়ার কথা ছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেই শুনানি স্থগিত করতে হয়েছে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ১৫ বছর আগের এই হত্যাকাণ্ড পুনর্তদন্তের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে সরকার। আজ থেকে আলিয়া মাদরাসা মাঠে জামিন শুনানি শুরু হওয়ার কথা ছিল।
ঘটনা কিন্তু এখানেই শেষ নয়। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় দণ্ডিত বিডিআর সদস্যদের কারামুক্তি, মামলার পুনর্তদন্ত, ন্যায়বিচার নিশ্চিত, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও পুনর্বাসনের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগ ‘ব্লকেড’ করা হয়েছে। চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যসহ ‘ভুক্তভোগী’ পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা এই ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন।
বেলা দেড়টার দিকে শাহবাগ ‘ব্লকেড’ করা হয়। এতে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শাহবাগ মোড়সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সড়কে তৈরি হয় তীব্র যানজট।
গতকাল রাত থেকে বকশীবাজার-শাহবাগ এলাকায় চলছে অস্থিরতা। একেকদিন একেক এলাকার জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশ সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। কিন্তু অন্য এলাকার কী হবে?
এমনিতেই রাজধানীর অলিগলি ও আশপাশের এলাকায় চলাচলকারী অবৈধ ব্যাটারির রিকশা ও ইজিবাইক উঠে এসেছে মূল সড়কে। এলোমেলো চলাচল, হুটহাট ঘোরানো, উলটো পথে চলাচলের কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা।
শুধু ব্যাটারির রিকশাচালকরাই নন, অন্য পরিবহণচালকদেরও অনেকে সড়ক আইন মানছেন না। ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে তারা চলার চেষ্টা করছেন খেয়ালখুশিমতো। আছে পুরানো যানবাহন, অদক্ষ চালকের বাড়াবাড়ি।
এমনিতেই নানা কারণে জনজীবনে রয়েছে অস্বস্তি। জিনিসপত্রের দাম, ছিনতাই-ডাকাতি, রাজনৈতিক সংঘাত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানা কারণে দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। রাজনৈতিক সংকট তো আছেই।
যে শহরে স্বাভাবিক অবস্থায় চলাফেরা করা কঠিন, সেখানে এমন নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা থাকলে মানুষ ঘরের বাইরে বের হবে কীভাবে? এভাবেই কি চলতে থাকবে? এটাই কি বাক স্বাধীনতা ও সুশাসনের দৃষ্টান্ত?
লেখক: সাংবাদিক
২০০৮ থেকে ২০২৪। বাংলাদেশে শুরু হলো এক রক্তঝরানোর অধ্যায়। হত্যা, খুন, গুম, আয়নাঘর— বিরোধী দলের নেতাদের ওপর অমানুষিক, নির্মম, নিষ্ঠুর অত্যাচার। মানবতা বিসর্জন দিয়ে রক্তের হোলি খেলায় মেতেছিল ফ্যাসিস্ট সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে গুলির নির্দেশ দিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে গিয়ে নিজের দেশের
৪ দিন আগেতবে হঠাৎ করেই ঘুরে গেছে হাওয়া। বদলে গেছে সবার সুর। সবার মুখে মুখে এখন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। কেউ বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে ভোট হতেই হবে। তবে সংস্কার নিয়ে ৮৪টি বিষয়ে ঐকমত্য হলেও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে এখনো ঐকমত্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। এ নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি তিন দলের অবস্থান ভিন্
৫ দিন আগেএই সেপ্টেম্বরেই ১৫৮ বছরে পা দিলো সেই বই, যার নাম থেকে এই হেডলাইনের খেলা— কার্ল মার্ক্সের যুগান্তকারী গ্রন্থ ‘ডাস ক্যাপিটাল’।
১৮ দিন আগেএকটি জাতির উন্নয়নের ভিত্তি তার জনশক্তির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহারের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল দেশে, জনসংখ্যাগত স্থিতিশীলতা (Demographic Stability) অর্জন করা এখন আর কেবল জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের একটি কৌশল নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সুশাসনের এক অবিচ্ছেদ্য অং
১৯ দিন আগে