সোনালী প্রজন্ম গড়ার হাতিয়ার হোক বই

কামরুল হাসান শায়ক
কামরুল হাসান শায়ক

শিক্ষা-সংস্কৃতিতে অগ্রসর দেশগুলোতে বিশ্ব বই দিবসের আয়োজন রীতিমতো বিস্ময়কর। আগামী পৃথিবীর নেতৃত্ব দেবে মেধাবীরা, আর সমাজ বা রাষ্ট্রকাঠামো হয়ে উঠবে জ্ঞানভিত্তিক। বিশ্বায়নের যুগে এই মেধাবী প্রজন্ম এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার মূল উপাদান হচ্ছে বই এবং চর্চার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে পাঠাভ্যাস।

প্রতি বছর ২৩ এপ্রিল পৃথিবীর দেশে দেশে বেশ সাড়ম্বরে দিবসটি পালন করা হয়। এর লক্ষ্য আজকের প্রজন্মকে দিনের যথাযোগ্য করে গড়ে তোলা। এ বছর শতাধিক দেশে পালিত হয়েছে বিশ্ব বই দিবস। বিশ্ব বই দিবস বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষ এই দিবসের তাৎপর্য এবং বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এর গুরুত্ব আলোচনার পূর্বে এর একেবারে গোড়ার ইতিহাসটা খুব সংক্ষেপে আলোকপাত করা যাক।

কথিত আছে, স্পেনের কাতালানে জন্ম নেয়া বীর রোমান যোদ্ধা সেন্ট জর্ডি তার তরবারির আঘাতে ড্রাগন বধ করে বাঁচিয়েছিলেন কাতালানের রাজকন্যাকে। নিহত ড্রাগনের রক্তে ভেজা সেই মাটিতে বেড়ে ওঠে একটি গোলাপের গাছ। একদিন বীর জর্ডি সেই গাছের একটি গোলাপ উপহার দেন রাজকন্যাকে। বিনিময়ে রাজকন্যা দিয়েছিলেন প্রেম এবং জ্ঞান। ২৩ এপ্রিল ৩০৩ খ্রিস্টাব্দে রাজা কর্তৃক বীর জর্ডির হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড কাতালানবাসীকে শোকে মুহ্যমান করে তোলে, কিন্তু এতে আরও বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন জর্ডি। জর্ডির সম্মানে সেই থেকে কাতালানবাসী অনানুষ্ঠানিকভাবে ২৩ এপ্রিল উদযাপন শুরু করেন জর্ডি দিবস। অবশেষে ১৪৫৬ খ্রিস্টাব্দে কাতালান পার্লামেন্টে ওই দিনকে সেন্ট জর্ডি স্মরণে 'ফেস্টিভ্যাল ডে' ঘোষণা করা হয়। এই ফেস্টিভ্যাল ডে-তে প্রিয়জনকে গোলাপ ফুল এবং বই উপহার দেওয়ার প্রচলন শুরু করা হয়।

আরও স্পষ্ট করে বললে বিষয়টি এরকম- জর্ডি এবং রাজকন্যা যেহেতু গোলাপ এবং জ্ঞান বিনিময় করেছিলেন, তাই এই দিবসে ছেলেদের গোলাপ এবং মেয়েদের বই দেয়ার রেওয়াজ চালু হয়। তাই জর্ডি ডে- তে পুরো কাতালানের গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল স্থানগুলোতে বই আর ফুলের বিপুল পসরা বসতো। এই উৎসব ক্রমশ পুরো স্পেনে ছড়িয়ে পড়ে, সেই সঙ্গে ইউরোপের অন্যান্য দেশেও বিস্তার লাভ করে।

বই আর গোলাপ ফুলের সমন্বয়ে জর্ডি ডে-এর মাতামাতির মধ্যে স্পেনের লেখক ভিসেন্তে ক্লেভেল আন্দ্রেসের মাথায় সর্বপ্রথম বিশ্ব বই দিবস পালনের আইডিয়ার উদ্ভব ঘটে। এটি ছিল ১৯২২ সাল। ভিসেন্তে ছিলেন স্পেনের বিখ্যাত লেখক মিগুয়েল সার্ভেন্তেসের ভাবশিষ্য। তাই মিগুয়েল সার্ভেন্তেসের সম্মানে তার জন্মদিন ৭ এপ্রিলকে বিশ্ব বই দিবস ঘোষণা করেন, ১৯২৬ সাল থেকে ভিসেন্তে বিশ্ব বই দিবস পালনের সূত্রপাত করেন। ক্রমশ এটিও কয়েক বছরের মধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। অতঃপর ১৯৩০ সালে স্পেনের রাজা আলফোনসো-১৩ বিশ্ব বই দিবসের তারিখ জর্ডি দিবসের সঙ্গে সমন্বয় করে ২৩ এপ্রিল নির্ধারণ করেন। সেই থেকে স্পেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এই দিন বিশ্ব বই দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ১৯৯৫ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো তাদের সম্মেলনে মানুষকে বই পড়ায়, লেখায় এবং প্রকাশনায় উৎসাহিত করার লক্ষ্যে একটি বিশেষ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ইউনেস্কো ১৯৩০ সাল থেকে ২৩ এপ্রিল স্পেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রচলিত বই দিবস, পৃথিবীর বিখ্যাত লেখক উইলিয়াম শেক্সপিয়ার এবং ইনকা গারসিলাসো দে লা ভেগার মৃত্যু দিবসের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ২৩ এপ্রিলকেই ‘বিশ্ব বই দিবস এবং কপিরাইট দিবস ' হিসেবে ঘোষণা করে।

বিশ্ব বই দিবস উপলক্ষে প্রতিবছর ইউনেস্কো একটি থিম ঘোষণা করে। ২০২৪ সালে বিশ্ব বই দিবসের থিম হচ্ছে- Read your way.

২০০১ সাল থেকে প্রতিবছর একটি শহরকে প্রতিযোগিতামূলকভাবে World Book Capital ঘোষণা করা হয়। ২০০১ সালে সর্বপ্রথম world Book Capital হিসেবে জয়ের মুকুট ছিনিয়ে নেয় মেক্সিকোর গুয়াদালাজারা শহর। ২০২৪ সালে এ বিজয় অর্জন করে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গ শহর। ২০২৫ এর বিজয়ী ব্রাজিলের রিও ডি জানেইরো শহর। ২০২৬ এর প্রতিযোগিতার জন্য আবেদনপত্রসহ যাবতীয় প্রামাণ্য কাগজপত্র গ্রহণের সর্বশেষ ছিল তারিখ ১০ এপ্রিল ২০২৪। ফলাফল এখনও অপ্রকাশিত।

আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রাণের শহর ঢাকাও এই মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হতে পারে ২০২৭ সালের জন্য। এর জন্য প্রয়োজন সরকারের শিক্ষা বা সংস্কৃতি মন্ত্রাণালয়ের আন্তরিক উদ্যোগ, লেখক-প্রকাশকের যৌথ প্রয়াস এবং সেই সঙ্গে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সর্বাত্মক সহযোগিতা। যদি এখন থেকেই একটি সামগ্রিক জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ করা যায়, তাহলে ২০২৭ সালে বিশ্ব বই দিবসে ঢাকা World Book Capital এর মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হলে দেশ ও জাতি হিসেবে আমরা যেমন বিশ্ব দরবারে সম্মানিত হবো, তেমনি এই উদ্যোগের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করার পথে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো।

এখানে উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক কামরুল হাসান শায়কের প্রস্তাবক্রমে ২০১৭ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ঢাকাকে World Book capital করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছিল। কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদকে আহ্বায়ক এবং প্রকাশক কামরুল হাসান শায়ককে সদস্য সচিব করে প্রকাশক ওসমান গনি, খান মাহবুব, তাজ উদ্দীনসহ নয় সদস্যদের একটি কমিটি গঠন করা হয়। যখন উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়, তখন প্রয়োজনীয় প্রমাণ্যপত্র তৈরি করে আবেদন জমা দেয়ার জন্য খুব স্বল্প সময় পেয়েছিল এই কমিটি। তারপরও অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এই কমিটি আবেদনপত্রের সঙ্গে যাবতীয় প্রমাণ্য দলিলপত্র যথাসময়ে সাবমিট করতে সমর্থ হয়। উল্লেখ্য, প্রমাণ্য দলিলের কী নোট পেপার তৈরি করেছিলেন বর্তমান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক নূরুল হুদা।

সেই উদ্যোগের পর এ বিষয়টি নিয়ে লেগে থেকে ধারাবাহিকভাবে অংশগ্রহণের আর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্ব বই দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশে উল্লেখ করার মতো তেমন কোনো আয়োজন চোখে পড়েনি। পত্রপত্রিকায় দায়সারা গোছের সংক্ষিপ্ত কিছু লেখা আর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কপিরাইট অফিসের 'মেধাসম্পদ বিকাশে কপিরাইট আইনের ভূমিকা' জাতীয় গতানুগতিক সেমিনার অনুষ্ঠান ছাড়া নীরবে-নিভৃতে বাংলাদেশের জন্য এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হারিয়ে যাচ্ছে।

অবশ্য ২০২২ সালে বেশ কিছু কর্মসূচি চোখে পড়ে। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুরের নেতৃত্বে গ্রন্থভবনে (২৩-২৬ এপ্রিল) চার দিনব্যাপী ' বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ ' বিষয়ক বই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ২৬ এপ্রিল আয়োজন করা হয় ' তরুণ প্রজন্মকে গ্রন্থপাঠে উদ্বুদ্ধকরণে কার কী করণীয়' শীর্ষক সেমিনার। এছাড়াও ঢাকা মহানগরী ও সংলগ্ন জেলাগুলোর বেসরকারি গ্রন্থাগারসমূহের ৫০ জন বর্ষসেরা পাঠক-পাঠিকাকে বিশেষ বই উপহার দেয়া হয়।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আয়োজন করে আলোচনা সভা। কপিরাইট অফিস যথারীতি কপিরাইট সংক্রান্ত সেমিনারের আয়োজন করে। এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় জাগো ফাউন্ডেশন বিশ্ব বই দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী বইপড়া বিষয়ক সচেতনতামূলক কর্মসূচি ঘোষণা করে। কিন্তু ২০২৩ সালে এসে আশ্চর্যজনকভাবে ঈদের পরের দিন বিশ্ব বই দিবস পালন সম্ভব নয় অজুহাতে সব কর্মসূচি বাতিল করা নিশ্চয়ই অত্যন্ত লজ্জার।

আজকের পৃথিবীতে দেশে দেশে বিশ্ব বই দিবসকে আগামীদিনের যোগ্য প্রজন্ম গড়ে তোলার প্রেরণার দিন হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারিভাবে গণজাগরণমূলক পালনের জন্য বৈচিত্র্যময় সৃজনশীল কর্মসূচি গ্রহণ করছে অত্যন্ত সাড়ম্বরে।

আমেরিকা, ইউকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশ, চীন, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রাজিল, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, আয়ারল্যান্ড, রাশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারতসহ শতাধিক দেশে বিশ্ব বই দিবসে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক সমন্বয়ে সরকারি- বেসরকারি উদ্যোগে দেশব্যাপী বেশ চমৎকার কিছু কর্মসূচি পালিত হচ্ছে জাঁকজমকপূর্ণভাবে, যা বাংলাদেশের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।

উল্লেখযোগ্য কিছু কর্মসূচি হচ্ছে:

১. প্রিয় গল্প-উপন্যাস বইয়ের সবচেয়ে প্রিয় চরিত্রে নিজেকে পোশাকে- মেকআপে সাজিয়ে বিশ্ব বই দিবসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ।

২. বিশ্ব বই দিবসে সকল শিক্ষার্থী নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তার পাঠকৃত প্রিয় বই নিয়ে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকবে। শ্রেণি শিক্ষকের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা যার যার পছন্দের বই বিনিময় করবে। পাঠকৃত বইয়ের বিষয় নিয়ে পাঠচক্রের আয়োজন।

৩. শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে তাদের কল্পনার জগত কেন্দ্র করে গল্প বলতে উৎসাহিত করবেন, প্রতিযোগিতামূলকভাবে শিক্ষার্থীদের পুরষ্কৃত করবেন।

৪. পাঠকৃত প্রিয় বইয়ের রিভিউ লেখার প্রতিযোগিতা।

৫. অভিভাবকদের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীর নিজ জীবনে ঘটে যাওয়া যে কোনো বিষয়ের উপর গল্প লেখা প্রতিযোগিতা আয়োজন।

৬. বিশ্ব বই দিবসে বই পড়াকে উৎসাহিত ও অনেক বই থেকে নিজের পছন্দের বই বেছে নিতে বিচিত্র রকম সমৃদ্ধ বইয়ের সমন্বয়ে ক্লাসে ক্লাসে দর্শনীয় বুক কর্ণার স্থাপন।

৭. বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় বা স্থানীয় পর্যায়ের লেখকদের আমন্ত্রণ জানানো। লেখকগণ ক্লাসে ক্লাসে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অডিটোরিয়ামে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হবেন, তাদের সৃষ্ট বিভিন্ন চরিত্রের বা লেখার বিভিন্ন বিষয়ের পেছনের মজার মজার গল্প বলবেন। এতে শিক্ষার্থীরা সেই গল্প সংশ্লিষ্ট বইগুলো পড়তে উৎসাহিত হবে, যা তাদের সৃজনশীল মননজগত নির্মাণে ভূমিকা রাখবে।

৮. নির্দিষ্ট সময়ে কে কতো বেশি বই কতোটা কোয়ালিটিপূর্ণভাবে পাঠ করতে পারলো- সেই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা।

৯. ফুলস্কেপ কাগজের শিটে বইয়ের তালিকার সঙ্গে ছোট করে ঘটনার ক্লু বা চরিত্র উল্লেখ করে অথবা লেখক তালিকা দিয়ে মিলকরণ প্রতিযোগিতার আয়োজন।

১০. বুক ক্লাব অথবা পাঠাগারগুলোতে বিশ্ব বই দিবসে বই নিয়ে আলোচনা, মুক্ত মতামত প্রদান, গ্রুপস্টাডি আয়োজন।

১১. দেশব্যাপী বই বিষয়ক সভা, সেমিনার আয়োজন।

১২. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই-বন্ধু কর্মসূচি বাস্তবায়ন। এক্ষেত্রে বন্ধুত্বে বয়স বিবেচ্য হবে না বরং কে কতো ভালো পাঠক সেই বিবেচনায় জোড়ায় জোড়ায় বন্ধুগ্রুপ ঠিক করে দিবেন শিক্ষক। তারা অন্তরঙ্গতার সঙ্গে বইপাঠ, আলোচনা এবং নিজস্ব ভাবনা বিনিময়ের মাধ্যমে নিজেদের সমৃদ্ধ করবে।

এরকম বহুমুখী সৃজনশীল কর্মসূচি বিশ্ব বই দিবসকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তাদের সোনালী প্রজন্ম গড়ার প্রত্যয়ে পালিত হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে সৃজনশীল জ্ঞানভিত্তিক জাতি নির্মাণে বাংলাদেশে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বৈচিত্র্যময় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ব বই দিবস পালন এখন সময়ের দাবি।

আবার শুধুমাত্র বিশ্ব বই দিবস-এ একদিনের জন্য সব আয়োজন করে থেমে গেলে চলবে না, এইসব কর্মসূচির পাশাপাশি সারা বছরব্যাপী কর্মসূচি প্রণয়ন করে ঈপ্সিত লক্ষ্য অভিমুখী অভিযাত্রার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিক্রম করছি আমরা। অথচ আজও একটি কাঙ্ক্ষিত সোনালী প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারিনি। এরকম একটি প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য সুসংগঠিত পাঠাভ্যাস আন্দোলনের মাধ্যমে একটি জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি অপরিহার্য। বছরব্যাপী বই বিষয়ক ব্যাপক কর্মসূচির পাশাপাশি ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব বই দিবসকে বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপন করতে হবে। বই পড়ার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে সোনালী প্রজন্মে রূপান্তর করার বিকল্প নেই।

লেখক: প্রকাশক, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ad
ad

মতামত থেকে আরও পড়ুন

মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ

প্যানেল আলোচনায় যুদ্ধের ভয়াবহতা ও ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরার পাশাপাশি সবার সম্মিলিত সহায়তায় কীভাবে রাশিয়াকে যুদ্ধে পর্যুদস্ত করা যায় সেসব বিষয় উঠে আসে। ন্যাটোর তত্ত্বাবধানে সমরাস্ত্র ও তহবিল সংগ্রহ, এমনকি সম্মিলিত সৈন্যবাহিনী পাঠানোর সম্ভাব্যতা নিয়েও আলোচনা চলছিল বলে রাষ্ট্রদূতদের অবহিত করা হয়।

৪ দিন আগে

রক্তাক্ত বাংলাদেশ: ১৯৭১ থেকে ২০২৫

২০০৮ থেকে ২০২৪। বাংলাদেশে শুরু হলো এক রক্তঝরানোর অধ্যায়। হত্যা, খুন, গুম, আয়নাঘর— বিরোধী দলের নেতাদের ওপর অমানুষিক, নির্মম, নিষ্ঠুর অত্যাচার। মানবতা বিসর্জন দিয়ে রক্তের হোলি খেলায় মেতেছিল ফ্যাসিস্ট সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে গুলির নির্দেশ দিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে গিয়ে নিজের দেশের

৫ দিন আগে

সবার মুখে ফেব্রুয়ারিতে ভোট, বিরোধ জুলাই সনদ ঘিরে

তবে হঠাৎ করেই ঘুরে গেছে হাওয়া। বদলে গেছে সবার সুর। সবার মুখে মুখে এখন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। কেউ বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে ভোট হতেই হবে। তবে সংস্কার নিয়ে ৮৪টি বিষয়ে ঐকমত্য হলেও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে এখনো ঐকমত্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। এ নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি তিন দলের অবস্থান ভিন্

৬ দিন আগে

টেলিগ্রাফের হেডিং— ডাস ক্যাপিটাল

এই সেপ্টেম্বরেই ১৫৮ বছরে পা দিলো সেই বই, যার নাম থেকে এই হেডলাইনের খেলা— কার্ল মার্ক্সের যুগান্তকারী গ্রন্থ ‘ডাস ক্যাপিটাল’।

১৯ দিন আগে