আফরোজা পারভীন
কী চলছে চারদিকে বুঝতে পারছি না! কেমন যেন ভয় ভয় লাগছে! গতকাল শিল্পকলায় নাটক চলাকালীন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ দলের একজন ফেসবুকে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের সমালোচনা করেছেন। তাই নাটক চলাকালীন একদল মঞ্চের সামনে হাজির হয়ে অপরাধীকে তাদের হাতে তুলে দেবার দাবি জানালেন। অপরাধী কত বড় অপরাধ করেছিলেন তা এখনও বিস্তারিত জানতে পারিনি। তবে নিশ্চয়ই তাদের হাতে তুলে দিতে হবে এমন কোন অপরাধ করেননি।
অপরাধ করলে তার বিচারের ব্যবস্থা আছে, আইন আছে আদালত আছে। সেসব না করে নাটকের প্রদর্শনী চলাকালে এমন হামলা কেন? একজনের জন্য পুরো টিমের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যাবে। তাদের পরিশ্রম টাকা পয়সা জলে যাবে। আর যারা টিকেট কেটে নাটক দেখতে এসেছিলেন তাদের কী দোষ! তারা তো জানতেন না কে কাকে কী বলেছে, কী লিখেছে। তারা নাটক ভালবাসেন । তাই ঢাকা শহরের জ্যাম ঠেলে পকেটের পয়সা খরচ করে নাটক দেখতে এসেছিলেন। অনেকে এমনও আছেন যাদের দ্বিতীয়বার টিকেট কাটার পয়সা নেই। দর্শকরা হৈ চৈ করেছেন বলে শুনিনি। আসলে করার সাহস পাননি। তারাও ভয় পেয়েছেন। তাই টাকার মায়া না করে নাটক দেখার ইচ্ছে ছেড়ে দিয়ে মানে মানে কেটে পড়েছেন।
ভয় পাওয়ার কথা। মাত্র কদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছাত্রকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এই পিটাপিটির মধ্যে দর্শকরা পড়েতে চাননি বলেই নিঃশব্দে চলে গেছেন।
এদেশের ইতিহাসে এমন ঘটনা কী আর কখনো ঘটেছে? আমার মনে পড়ে না। মনে আছে দেশের চরম খারাপ পরিস্থিতিতে বোমা গুলিগোলার মধ্যে একদিন শিল্পকলার এক্সপেরিমেন্টাল হলে ‘দর্পণে শরৎশশী’ দেখেছিলাম। সেদিনও শো বন্ধ হয়নি। কিন্তু কাল বন্ধ হয়েছে। কেন এমন হলো? হওয়াটা কী অনিবার্য ছিল। শুনেছি হলের সামনে সেনাবাহিনীর দুটো গাড়ি ছিল। নিরাপত্তার ব্যবস্থা তো জোরদারই ছিল। তাহলে শিল্পকলার ডিজি এসে অনুরোধ করে নাটক বন্ধ করলেন কেন জানতে ইচ্ছে করে।
আগে শিল্পকলা ছিল অনিয়মের আখড়া। হেন দুষ্কর্ম নেই যা সেখানে হতো না। দুর্নীতি থেকে শুরু করে মাতলামি সবই হতো। একটা গোষ্ঠি সেখানে শিকড় গেড়ে বসেছিল। বানিয়ে নিয়েছিল নিজস্ব সাম্রাজ্য। সত্যিকার শিল্পানুরাগীদের জন্য শিল্পকলা হয়ে গিয়েছিল ছলাকলা। সেখানে নতুন ডিজি আসায় শিল্পমনস্করা ভেবেছিল, এবার বুঝি সুবাতাস বইবে। কয়েকজন এসে হুমকি দিল, নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকার পরও কেন তিনি তাদের কথা মেনে নিলেন? কেন পুলিশ ডাকলেন না? কেন শো চালানো অব্যাহত রাখার চেষ্টা নিলেন না? তিনি কী কী চেষ্টা নিয়েছিলেন, কী কারণে অপারগ হলেন জানতে ইচ্ছে করে।
এর আগে তাপসী তাবাসসুম উর্মি প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে লিখলে তাকে সমর্থন করিনি। লিখেছি সে ভুল করেছে। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সে এ কাজ করতে পারে না। সে কন্ডাক্ট রুলে বাধা। কিন্তু এবার যিনি মন্তব্য করেছেন তিনি একজন নাট্যকর্মী। তার জন্য তো কন্ডাক্ট রুল প্রযোজ্য না। আজও খবরে দেখলাম আমাদের সংস্কৃতি উপদেষ্টা সস্ত্রীক যাত্রা দেখেছেন। তিনি একজন নামকরা লেখকও। তিনি থাকতে কেমন করে চলমান একটি প্রদর্শনী বন্ধ হয়! এ ঘটনা নিশ্চয়ই তিনি জেনেছেন। কী ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি?
এ ঘটনা আমাদের কী বার্তা দেয়? কারো বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। যত কষ্টই হোক মুখ বন্ধ করে থাকতে হবে। গুমরে গুমরে মরতে হবে। তাহলে দেশ এগোবে কী করে? দেশের অগ্রযাত্রায় যদি জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকে, জনগণ যদি নিজেদের বিচ্ছিন্ন মনে করে তাহলে দেশের উন্নতি হবে কী করে? আর উন্নতি মানে কী শুধু অর্থনৈতিক উন্নতি, শিল্প -সাহিত্য সংস্কৃতির উন্নতি না? শিল্প সাহিত্য ছাড়া কী কোন দেশ এগিয়েছে কখনো? এমনিতেই দেশে সংস্কৃতি ক্ষেত্রে খরা চলছে। আমাদের ছেলেবেলায় কত ভাল ভাল সিনেমা নির্মাণ হত এফডিসিতে। ছেলেবেলায় এফডিসিতে সুটিং দেখতে যেতাম। গমগম করত দর্শনার্থীতে। এখন সেখানে খুঁজিলে দশজন মানুষ একসাথে পাওয়া যায় না। এখন এফডিসি কোন ছবি বানায় না। তাহলে ওটা আছে কেন, ওটার কাজ কী? গরিব দেশে অকারণে হাতি পোষার দরকার কী? এফডিসির কথা শুধু শুনি নির্বাচনের সময়। এফডিসির নির্বাচন নিয়ে প্রতিবছর কেলেঙ্কারি হয়। সে কেলেঙ্কারি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এখন তো শুনি এসব কেলেঙ্কারির পেছনে রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও আছেন। তাদের নাকি কারো কারো বান্ধবী আছেন চিত্রজগতে। বান্ধবীরা তাদের আঙ্কেল ডাকেন। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার! আঙ্কেল আন্টিতে দেশ ভরে গেল! কত আঙ্কেল যে আছে/ ছিল দেশে। কারো ছিল ভাতের হোটেল, কারো আছে স্পা।
এখন সিনেমা বানায় মিডিয়া টাইকুনরা। সিনেমা বিজ্ঞাপন নাটক টিভি পরিচালনা সবকিছুতেই এমন কিছু টাইকুন আছেন। তাদের হাতেই সবকিছু। সৃজনশীল মানুষের হাতে তাই কাজ নেই। তাদের পকেটে পয়সা নেই।
আশায় ছিলাম, পরিস্থিতির খানিকটা পরিবর্তন হবে। কিন্তু এ যেন এক বিপরীত ধারা। ১৯ কোটি মানুষের দেশে অনেক রকম মন্তব্য হতেই পারে সরকারকে ঘিরে। কেউ ভাল বলবেন, কেউ খারাপ, কেউ পঠনমূলক সমালোচনা করবেন, কেউ বলবেন বুঝে, কেউ না বুঝে, কেউ বলার জন্যই বলবেন। এর সবকিছু কী গায়ে মাখতে হবে, কগনিজেন্সে নিতে হবে? তাহলে তো মহামুশকিল। কে কী বলছে তা দেখার জন্য লোক মোতায়েন করতে হবে।
একসময় নাটকের কর্মী ছিলাম। দীর্ঘদিন মঞ্চে কাজ করেছি। নাটক আজও আমার প্রবল ভালবাসার। তাই বার বার নাটক দেখতে ছুটে যাই। নাট্যশিল্প, শিল্পীর উন্নতিতে আনন্দিত হই। খারাপ কিছু হলে বড় বেশি বুকে বাজে। কাল যারা অভিনেতা অভিনেত্রী ছিলেন তাদের মনের অবস্থা বুঝে মুষড়ে পড়েছি। আর পরিচালক ? আহ্,া মঞ্চ আর মঞ্চের পেছনের প্রতিটা কর্মী? যারা হামলা করল তারা কী এসব বোঝে? তারা বোঝে না, কিন্তু ডিজি মহোদয় তো বোঝেন। তাহলে?
ভাবছি, কারণটা কী সরকারের সমালোচনা নাকি অন্য কিছু! নাটক মঞ্চায়নেই কী আপত্তি? নাকি নাটকের নামে? এটা কিন্তু আমার তাৎক্ষণিক ভাবনা। নাও হতে পারে। কিন্তু কেন এমনটা হলো সেটা তো জানার অধিকার নাগরিকদের আছে।
অনেকে শিল্পকলার ডিজির পদত্যাগ চেয়েছেন। দাবিটা খুব অযৌক্তিক মনে হচ্ছে না। তিনি কেন পুলিশ ডাকেননি। কেন সামনে দ-ায়মান সেনাবাহিনীকে বলেননি। সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে এই বিশৃঙ্খলা হলো কী করে? তার তো আরও শক্ত হয়ে দাঁড়ানো উচিত ছিল। কী করলেন তিনি?
যারা এসেছিল তারা কারা? কতজন? সেনাবাহিনির চেয়েও কী তাদের শক্তি বেশি ছিল। তাদের ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? দেশ নাট্যদল এবং অন্যান্য নাটকের দলগুলোর ভবিষ্যত এখন কী হবে! তারা কী নাটক চালাতে পারবে নাকি তাদেরও মাঝপথে নাটক বন্ধ করে দিতে হবে? এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে প্রতিটি সংস্কৃতিকর্মীর মনে।
লেখক: কথাশিল্পী, গবেষক
কী চলছে চারদিকে বুঝতে পারছি না! কেমন যেন ভয় ভয় লাগছে! গতকাল শিল্পকলায় নাটক চলাকালীন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ দলের একজন ফেসবুকে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের সমালোচনা করেছেন। তাই নাটক চলাকালীন একদল মঞ্চের সামনে হাজির হয়ে অপরাধীকে তাদের হাতে তুলে দেবার দাবি জানালেন। অপরাধী কত বড় অপরাধ করেছিলেন তা এখনও বিস্তারিত জানতে পারিনি। তবে নিশ্চয়ই তাদের হাতে তুলে দিতে হবে এমন কোন অপরাধ করেননি।
অপরাধ করলে তার বিচারের ব্যবস্থা আছে, আইন আছে আদালত আছে। সেসব না করে নাটকের প্রদর্শনী চলাকালে এমন হামলা কেন? একজনের জন্য পুরো টিমের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যাবে। তাদের পরিশ্রম টাকা পয়সা জলে যাবে। আর যারা টিকেট কেটে নাটক দেখতে এসেছিলেন তাদের কী দোষ! তারা তো জানতেন না কে কাকে কী বলেছে, কী লিখেছে। তারা নাটক ভালবাসেন । তাই ঢাকা শহরের জ্যাম ঠেলে পকেটের পয়সা খরচ করে নাটক দেখতে এসেছিলেন। অনেকে এমনও আছেন যাদের দ্বিতীয়বার টিকেট কাটার পয়সা নেই। দর্শকরা হৈ চৈ করেছেন বলে শুনিনি। আসলে করার সাহস পাননি। তারাও ভয় পেয়েছেন। তাই টাকার মায়া না করে নাটক দেখার ইচ্ছে ছেড়ে দিয়ে মানে মানে কেটে পড়েছেন।
ভয় পাওয়ার কথা। মাত্র কদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছাত্রকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এই পিটাপিটির মধ্যে দর্শকরা পড়েতে চাননি বলেই নিঃশব্দে চলে গেছেন।
এদেশের ইতিহাসে এমন ঘটনা কী আর কখনো ঘটেছে? আমার মনে পড়ে না। মনে আছে দেশের চরম খারাপ পরিস্থিতিতে বোমা গুলিগোলার মধ্যে একদিন শিল্পকলার এক্সপেরিমেন্টাল হলে ‘দর্পণে শরৎশশী’ দেখেছিলাম। সেদিনও শো বন্ধ হয়নি। কিন্তু কাল বন্ধ হয়েছে। কেন এমন হলো? হওয়াটা কী অনিবার্য ছিল। শুনেছি হলের সামনে সেনাবাহিনীর দুটো গাড়ি ছিল। নিরাপত্তার ব্যবস্থা তো জোরদারই ছিল। তাহলে শিল্পকলার ডিজি এসে অনুরোধ করে নাটক বন্ধ করলেন কেন জানতে ইচ্ছে করে।
আগে শিল্পকলা ছিল অনিয়মের আখড়া। হেন দুষ্কর্ম নেই যা সেখানে হতো না। দুর্নীতি থেকে শুরু করে মাতলামি সবই হতো। একটা গোষ্ঠি সেখানে শিকড় গেড়ে বসেছিল। বানিয়ে নিয়েছিল নিজস্ব সাম্রাজ্য। সত্যিকার শিল্পানুরাগীদের জন্য শিল্পকলা হয়ে গিয়েছিল ছলাকলা। সেখানে নতুন ডিজি আসায় শিল্পমনস্করা ভেবেছিল, এবার বুঝি সুবাতাস বইবে। কয়েকজন এসে হুমকি দিল, নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকার পরও কেন তিনি তাদের কথা মেনে নিলেন? কেন পুলিশ ডাকলেন না? কেন শো চালানো অব্যাহত রাখার চেষ্টা নিলেন না? তিনি কী কী চেষ্টা নিয়েছিলেন, কী কারণে অপারগ হলেন জানতে ইচ্ছে করে।
এর আগে তাপসী তাবাসসুম উর্মি প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে লিখলে তাকে সমর্থন করিনি। লিখেছি সে ভুল করেছে। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সে এ কাজ করতে পারে না। সে কন্ডাক্ট রুলে বাধা। কিন্তু এবার যিনি মন্তব্য করেছেন তিনি একজন নাট্যকর্মী। তার জন্য তো কন্ডাক্ট রুল প্রযোজ্য না। আজও খবরে দেখলাম আমাদের সংস্কৃতি উপদেষ্টা সস্ত্রীক যাত্রা দেখেছেন। তিনি একজন নামকরা লেখকও। তিনি থাকতে কেমন করে চলমান একটি প্রদর্শনী বন্ধ হয়! এ ঘটনা নিশ্চয়ই তিনি জেনেছেন। কী ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি?
এ ঘটনা আমাদের কী বার্তা দেয়? কারো বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। যত কষ্টই হোক মুখ বন্ধ করে থাকতে হবে। গুমরে গুমরে মরতে হবে। তাহলে দেশ এগোবে কী করে? দেশের অগ্রযাত্রায় যদি জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকে, জনগণ যদি নিজেদের বিচ্ছিন্ন মনে করে তাহলে দেশের উন্নতি হবে কী করে? আর উন্নতি মানে কী শুধু অর্থনৈতিক উন্নতি, শিল্প -সাহিত্য সংস্কৃতির উন্নতি না? শিল্প সাহিত্য ছাড়া কী কোন দেশ এগিয়েছে কখনো? এমনিতেই দেশে সংস্কৃতি ক্ষেত্রে খরা চলছে। আমাদের ছেলেবেলায় কত ভাল ভাল সিনেমা নির্মাণ হত এফডিসিতে। ছেলেবেলায় এফডিসিতে সুটিং দেখতে যেতাম। গমগম করত দর্শনার্থীতে। এখন সেখানে খুঁজিলে দশজন মানুষ একসাথে পাওয়া যায় না। এখন এফডিসি কোন ছবি বানায় না। তাহলে ওটা আছে কেন, ওটার কাজ কী? গরিব দেশে অকারণে হাতি পোষার দরকার কী? এফডিসির কথা শুধু শুনি নির্বাচনের সময়। এফডিসির নির্বাচন নিয়ে প্রতিবছর কেলেঙ্কারি হয়। সে কেলেঙ্কারি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এখন তো শুনি এসব কেলেঙ্কারির পেছনে রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও আছেন। তাদের নাকি কারো কারো বান্ধবী আছেন চিত্রজগতে। বান্ধবীরা তাদের আঙ্কেল ডাকেন। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার! আঙ্কেল আন্টিতে দেশ ভরে গেল! কত আঙ্কেল যে আছে/ ছিল দেশে। কারো ছিল ভাতের হোটেল, কারো আছে স্পা।
এখন সিনেমা বানায় মিডিয়া টাইকুনরা। সিনেমা বিজ্ঞাপন নাটক টিভি পরিচালনা সবকিছুতেই এমন কিছু টাইকুন আছেন। তাদের হাতেই সবকিছু। সৃজনশীল মানুষের হাতে তাই কাজ নেই। তাদের পকেটে পয়সা নেই।
আশায় ছিলাম, পরিস্থিতির খানিকটা পরিবর্তন হবে। কিন্তু এ যেন এক বিপরীত ধারা। ১৯ কোটি মানুষের দেশে অনেক রকম মন্তব্য হতেই পারে সরকারকে ঘিরে। কেউ ভাল বলবেন, কেউ খারাপ, কেউ পঠনমূলক সমালোচনা করবেন, কেউ বলবেন বুঝে, কেউ না বুঝে, কেউ বলার জন্যই বলবেন। এর সবকিছু কী গায়ে মাখতে হবে, কগনিজেন্সে নিতে হবে? তাহলে তো মহামুশকিল। কে কী বলছে তা দেখার জন্য লোক মোতায়েন করতে হবে।
একসময় নাটকের কর্মী ছিলাম। দীর্ঘদিন মঞ্চে কাজ করেছি। নাটক আজও আমার প্রবল ভালবাসার। তাই বার বার নাটক দেখতে ছুটে যাই। নাট্যশিল্প, শিল্পীর উন্নতিতে আনন্দিত হই। খারাপ কিছু হলে বড় বেশি বুকে বাজে। কাল যারা অভিনেতা অভিনেত্রী ছিলেন তাদের মনের অবস্থা বুঝে মুষড়ে পড়েছি। আর পরিচালক ? আহ্,া মঞ্চ আর মঞ্চের পেছনের প্রতিটা কর্মী? যারা হামলা করল তারা কী এসব বোঝে? তারা বোঝে না, কিন্তু ডিজি মহোদয় তো বোঝেন। তাহলে?
ভাবছি, কারণটা কী সরকারের সমালোচনা নাকি অন্য কিছু! নাটক মঞ্চায়নেই কী আপত্তি? নাকি নাটকের নামে? এটা কিন্তু আমার তাৎক্ষণিক ভাবনা। নাও হতে পারে। কিন্তু কেন এমনটা হলো সেটা তো জানার অধিকার নাগরিকদের আছে।
অনেকে শিল্পকলার ডিজির পদত্যাগ চেয়েছেন। দাবিটা খুব অযৌক্তিক মনে হচ্ছে না। তিনি কেন পুলিশ ডাকেননি। কেন সামনে দ-ায়মান সেনাবাহিনীকে বলেননি। সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে এই বিশৃঙ্খলা হলো কী করে? তার তো আরও শক্ত হয়ে দাঁড়ানো উচিত ছিল। কী করলেন তিনি?
যারা এসেছিল তারা কারা? কতজন? সেনাবাহিনির চেয়েও কী তাদের শক্তি বেশি ছিল। তাদের ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? দেশ নাট্যদল এবং অন্যান্য নাটকের দলগুলোর ভবিষ্যত এখন কী হবে! তারা কী নাটক চালাতে পারবে নাকি তাদেরও মাঝপথে নাটক বন্ধ করে দিতে হবে? এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে প্রতিটি সংস্কৃতিকর্মীর মনে।
লেখক: কথাশিল্পী, গবেষক
২০০৮ থেকে ২০২৪। বাংলাদেশে শুরু হলো এক রক্তঝরানোর অধ্যায়। হত্যা, খুন, গুম, আয়নাঘর— বিরোধী দলের নেতাদের ওপর অমানুষিক, নির্মম, নিষ্ঠুর অত্যাচার। মানবতা বিসর্জন দিয়ে রক্তের হোলি খেলায় মেতেছিল ফ্যাসিস্ট সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে গুলির নির্দেশ দিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে গিয়ে নিজের দেশের
৫ দিন আগেতবে হঠাৎ করেই ঘুরে গেছে হাওয়া। বদলে গেছে সবার সুর। সবার মুখে মুখে এখন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। কেউ বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে ভোট হতেই হবে। তবে সংস্কার নিয়ে ৮৪টি বিষয়ে ঐকমত্য হলেও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে এখনো ঐকমত্যে আসতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। এ নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি তিন দলের অবস্থান ভিন্
৫ দিন আগেএই সেপ্টেম্বরেই ১৫৮ বছরে পা দিলো সেই বই, যার নাম থেকে এই হেডলাইনের খেলা— কার্ল মার্ক্সের যুগান্তকারী গ্রন্থ ‘ডাস ক্যাপিটাল’।
১৯ দিন আগেএকটি জাতির উন্নয়নের ভিত্তি তার জনশক্তির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহারের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল দেশে, জনসংখ্যাগত স্থিতিশীলতা (Demographic Stability) অর্জন করা এখন আর কেবল জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের একটি কৌশল নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সুশাসনের এক অবিচ্ছেদ্য অং
১৯ দিন আগে