
শিরিন হক

আজ আলোচনার বিষয় ‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন’, কিন্তু আমি তার আগে কিছু ভিন্ন কথা বলতে চাই। আপনারা সবাই জানেন, ৫ আগস্ট আমাদের প্রত্যাশা আকাশ ছুঁয়েছিল। যে তরুণ ছেলেমেয়েরা রাজপথে জীবন বাজি রেখে লড়াই করল, কেউ অঙ্গহানি বরণ করল, কেউ দৃষ্টি হারাল, কেউ বা এখনো হাসপাতালে বা বাড়িতে পড়ে আছে, তারা কেন নেমেছিল? আমরা মনে করেছিলাম, তারা একটি সুন্দর, ভালো বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিল।
যখন আমাকে নারী সংস্কার কমিশন গঠন করার কথা বলা হলো, আমরা প্রথমেই সেই তরুণদের লড়াইকে মূলমন্ত্র হিসেবে নিয়েছিলাম। তারা লড়েছিল বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের জন্য। আমাদের প্রতিবেদনের প্রচ্ছদেই তাই লেখা আছে— ‘সর্বস্তরে নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপ এবং নারীর সমতা অর্জনের লক্ষ্যে পদক্ষেপ’।
আমরা চার মাস ধরে বিভিন্ন শ্রেণিপেশা, অঞ্চল ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষের সঙ্গে, বিশেষত ঢাকার বাইরে গিয়ে পরামর্শ সভা করেছি। তাদের চাহিদা ও দাবিগুলোকেই আমরা সন্নিবেশিত করেছি। আমাদের মোট ৪২৩টি প্রস্তাবকে আমরা তিনটি ভাগে ভাগ করেছিলাম—
অনেকে বলতেন, ‘এগুলো তো হবে না, কেন রাখছেন?’ আমরা রেখেছি, কারণ আমরা মানুষকে জানাতে চাই নারী আন্দোলন কী চায়। নারীরা চায় মানুষ হিসেবে বিবেচিত হতে; মানুষের যে মর্যাদা, তার সবটুকু আমরা পেতে চাই, এক কণা কমও নয়। নাগরিক হিসেবেও আমরা সমনাগরিকের মর্যাদা চাই । আপনি যা পান, আমিও তাই।
৫ আগস্টের আন্দোলনের ম্যান্ডেট ছিল তিনটি— যে অনাচার, হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার; সংস্কার কেবল রাষ্ট্র সংস্কার নয়, সমাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের সংস্কার; এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।
সংস্কারের জন্য অনেকগুলো কমিশন গঠিত হয়েছিল। আমরা নারী কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিটি কমিশনের সঙ্গে বসেছি, কারণ নারীর বিষয়টি ‘ক্রস-কাটিং’। আমরা তাদের কথা শুনেছি, আমাদের প্রস্তাবগুলো জানিয়েছি। কিন্তু একটি কমিশন আমাদের সময় দেয়নি— সংবিধান কমিশন। আমি জানি না কেন তারা সময় দেয়নি। হয়তো তাদের ধারণা ছিল, সংবিধান সংস্কারে নারীদের আবার কী বলার থাকতে পারে! তারা আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ না-ই করতে পারতেন, কিন্তু সময় দেওয়াটা ছিল শোভন আচরণের অংশ। সেই সৌজন্যটুকু আমরা পাইনি।
পরে যখন সেই সংবিধান কমিশনের প্রধানকেই ‘ঐকমত্য কমিশনে’র সহসভাপতি করা হলো, আমরা হতাশ হলাম। তিনি প্রথম ছয়টি কমিশনকে নিয়ে বসলেও পরের পাঁচটি কমিশনকে (নারী, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, শ্রম, গণমাধ্যম) ডাকলেনই না। আমরা পাঁচ কমিশনের প্রধানরা মিলে প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিতভাবে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম, নারী, স্বাস্থ্য বা স্থানীয় সরকার কি গুরুত্বপূর্ণ নয়? আমরা পরে চেক করে জেনেছি, সেই চিঠি দপ্তর পর্যন্ত পৌঁছেছিল, কিন্তু কোনো উত্তর আসেনি।
সুতরাং আমরা এই পুরো প্রক্রিয়ায় কিছুটা মর্মাহত। ‘জুলাই সনদ’ সেই প্রক্রিয়ারই অংশ— একটি সম্পূর্ণ নারী-বিবর্জিত প্রক্রিয়া। যেদিন সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এ সনদ ঘোষণা হয়, আমি সেখানেই ছিলাম। আমি সঙ্গে সঙ্গেই পোস্ট করেছিলাম— ‘আজ আবারও দক্ষিণ প্লাজায় পুরুষ-শাসন কায়েম হলো।’ সেখানে একজন নারীও ছিলেন না, কোনো নারী সংগঠনকে ডাকা হয়নি। এটা আমাদের ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন করেছে।
আমার পক্ষে এ সনদের প্রতি সম্মান রাখা সম্ভব নয়। আপনারা বাস্তবায়ন নিয়ে যতই চিন্তা করুন, আমি এই সনদকে গ্রহণই করি না। এর প্রতি আমার কোনো সম্মান নেই। আমরা নারী আন্দোলনকারীরা তো জলে ভেসে আসিনি। আমার বড় বোনেরা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, ১৯৭০ সাল থেকে সংগ্রাম করছে; আমরাও ১৯৮৩ সাল থেকে লড়ছি। এভাবে উপেক্ষা করা আমরা গ্রহণ করতে পারি না।
এরপর প্রস্তাব করা হলো ‘গণভোট’ নামক একটি অদ্ভুত জিনিস। ৪৮টি বিষয়ে আপনি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলবেন! আমি একজন শিক্ষিত মানুষ হয়েও ৪৮টি বিষয় একসঙ্গে ধারণ করতে পারি না। আমার যদি মনে হয় ৩০টি গ্রহণযোগ্য আর ১৮টি নয়, সেটা আলাদা করার কোনো উপায় আছে? এটা একটা উদ্ভট পরিস্থিতি।
সবচেয়ে কষ্টের বিষয়, যখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বললেন ‘রাজাকারের বাচ্চারা কোথায়’, তখন এই রোকেয়া হলের মেয়েরাই রাত ১২টায় গেট ভেঙে বেরিয়েছিল। তাদের দেখেই কিন্তু আন্দোলন দানা বেঁধেছে। অথচ আজ? ‘কোটি কয়েক মেয়ে’ ছাড়া এই যে এত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, কোনো পলিসি টেবিলে নারীরা নেই। একটার পর একটা অধ্যাদেশ পাস হচ্ছে, কয়টা নারী-নিরপেক্ষ? আমাদের অনেক নারী আইনজ্ঞ আছেন, তারা তো খসড়াগুলো দেখতে পারতেন। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা কি তিন পা এগিয়ে চার পা পিছিয়ে গেলাম?
আমরা কমিশনের পক্ষ থেকে বলেছিলাম, ১৯৭২ সালে যখন ৩০০ আসনের সংসদ গঠন করা হয়, তখনকার জনসংখ্যা আর আজকের জনসংখ্যা এক নয়। আমরা মনে করি, এখন ৬০০ আসনের সংসদ হওয়া প্রয়োজন এবং এর মাধ্যমে সংরক্ষিত আসনের নারী-পুরুষের মধ্যে একটি ভারসাম্য আনা সম্ভব।
যেদিন আমরা প্রতিবেদন জমা দিলাম, সেদিনই আমি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, এ প্রতিবেদন নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক, সমালোচনা হবে। আমরা সবটাকেই স্বাগত জানাই। কারণ আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়গুলো নিষ্পত্তি হবে। কিন্তু আমরা দেখলাম কী? তর্ক-বিতর্ক নয়, দেখলাম গালিগালাজ। গালিগালাজ তো গ্রহণযোগ্য নয়। আরও দুঃখের বিষয়, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এই গালিগালাজের কোনো প্রতিবাদও আমরা শুনিনি।
সবশেষে বলতে চাই, এই নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যা করেছে, আমরা তা পারিনি। আমি তাদের সালাম জানাই এবং চাই, তারাই এই দেশের হাল ধরুক। আমি আশাবাদী ছিলাম, তারা যে নতুন দল করেছে, সেই দলটি সাহসের সঙ্গে এমন অনেক কথা বলবে যা আগে কেউ ভোটের ভয়ে বা সমাজের ভয়ে বলতে পারেনি। আমি তাদের সেই ভূমিকায় এখনো সেভাবে দেখতে পাইনি। আশা রাখি সামনে হয়তো দেখতে পাব।
তাদের প্রতি আমার প্রত্যাশা—
মানবিক রাষ্ট্রের একটি পূর্বশর্ত হলো মৃত্যুদণ্ডের বিলোপ। আমি মনে করি, ‘ন্যায়পাল’ (Ombudsman) বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে, যা আমাদের সংবিধানে শুরু থেকেই থাকলেও বাস্তবায়ন হয়নি। আমি আশা করব, এ নতুন দলটি তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে এই বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।
ধন্যবাদ।
[শনিবার (৮ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘নারীর কণ্ঠে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন রূপরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা ও নারী কমিশনের প্রধান শিরিন হক। তার পুরো বক্তব্যটি ঈষৎ পরিমার্জিত আকারে প্রায় হুবহু তুলে ধরা হলো।]

আজ আলোচনার বিষয় ‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন’, কিন্তু আমি তার আগে কিছু ভিন্ন কথা বলতে চাই। আপনারা সবাই জানেন, ৫ আগস্ট আমাদের প্রত্যাশা আকাশ ছুঁয়েছিল। যে তরুণ ছেলেমেয়েরা রাজপথে জীবন বাজি রেখে লড়াই করল, কেউ অঙ্গহানি বরণ করল, কেউ দৃষ্টি হারাল, কেউ বা এখনো হাসপাতালে বা বাড়িতে পড়ে আছে, তারা কেন নেমেছিল? আমরা মনে করেছিলাম, তারা একটি সুন্দর, ভালো বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিল।
যখন আমাকে নারী সংস্কার কমিশন গঠন করার কথা বলা হলো, আমরা প্রথমেই সেই তরুণদের লড়াইকে মূলমন্ত্র হিসেবে নিয়েছিলাম। তারা লড়েছিল বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের জন্য। আমাদের প্রতিবেদনের প্রচ্ছদেই তাই লেখা আছে— ‘সর্বস্তরে নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপ এবং নারীর সমতা অর্জনের লক্ষ্যে পদক্ষেপ’।
আমরা চার মাস ধরে বিভিন্ন শ্রেণিপেশা, অঞ্চল ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষের সঙ্গে, বিশেষত ঢাকার বাইরে গিয়ে পরামর্শ সভা করেছি। তাদের চাহিদা ও দাবিগুলোকেই আমরা সন্নিবেশিত করেছি। আমাদের মোট ৪২৩টি প্রস্তাবকে আমরা তিনটি ভাগে ভাগ করেছিলাম—
অনেকে বলতেন, ‘এগুলো তো হবে না, কেন রাখছেন?’ আমরা রেখেছি, কারণ আমরা মানুষকে জানাতে চাই নারী আন্দোলন কী চায়। নারীরা চায় মানুষ হিসেবে বিবেচিত হতে; মানুষের যে মর্যাদা, তার সবটুকু আমরা পেতে চাই, এক কণা কমও নয়। নাগরিক হিসেবেও আমরা সমনাগরিকের মর্যাদা চাই । আপনি যা পান, আমিও তাই।
৫ আগস্টের আন্দোলনের ম্যান্ডেট ছিল তিনটি— যে অনাচার, হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার; সংস্কার কেবল রাষ্ট্র সংস্কার নয়, সমাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের সংস্কার; এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।
সংস্কারের জন্য অনেকগুলো কমিশন গঠিত হয়েছিল। আমরা নারী কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিটি কমিশনের সঙ্গে বসেছি, কারণ নারীর বিষয়টি ‘ক্রস-কাটিং’। আমরা তাদের কথা শুনেছি, আমাদের প্রস্তাবগুলো জানিয়েছি। কিন্তু একটি কমিশন আমাদের সময় দেয়নি— সংবিধান কমিশন। আমি জানি না কেন তারা সময় দেয়নি। হয়তো তাদের ধারণা ছিল, সংবিধান সংস্কারে নারীদের আবার কী বলার থাকতে পারে! তারা আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ না-ই করতে পারতেন, কিন্তু সময় দেওয়াটা ছিল শোভন আচরণের অংশ। সেই সৌজন্যটুকু আমরা পাইনি।
পরে যখন সেই সংবিধান কমিশনের প্রধানকেই ‘ঐকমত্য কমিশনে’র সহসভাপতি করা হলো, আমরা হতাশ হলাম। তিনি প্রথম ছয়টি কমিশনকে নিয়ে বসলেও পরের পাঁচটি কমিশনকে (নারী, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার, শ্রম, গণমাধ্যম) ডাকলেনই না। আমরা পাঁচ কমিশনের প্রধানরা মিলে প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিতভাবে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম, নারী, স্বাস্থ্য বা স্থানীয় সরকার কি গুরুত্বপূর্ণ নয়? আমরা পরে চেক করে জেনেছি, সেই চিঠি দপ্তর পর্যন্ত পৌঁছেছিল, কিন্তু কোনো উত্তর আসেনি।
সুতরাং আমরা এই পুরো প্রক্রিয়ায় কিছুটা মর্মাহত। ‘জুলাই সনদ’ সেই প্রক্রিয়ারই অংশ— একটি সম্পূর্ণ নারী-বিবর্জিত প্রক্রিয়া। যেদিন সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এ সনদ ঘোষণা হয়, আমি সেখানেই ছিলাম। আমি সঙ্গে সঙ্গেই পোস্ট করেছিলাম— ‘আজ আবারও দক্ষিণ প্লাজায় পুরুষ-শাসন কায়েম হলো।’ সেখানে একজন নারীও ছিলেন না, কোনো নারী সংগঠনকে ডাকা হয়নি। এটা আমাদের ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন করেছে।
আমার পক্ষে এ সনদের প্রতি সম্মান রাখা সম্ভব নয়। আপনারা বাস্তবায়ন নিয়ে যতই চিন্তা করুন, আমি এই সনদকে গ্রহণই করি না। এর প্রতি আমার কোনো সম্মান নেই। আমরা নারী আন্দোলনকারীরা তো জলে ভেসে আসিনি। আমার বড় বোনেরা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, ১৯৭০ সাল থেকে সংগ্রাম করছে; আমরাও ১৯৮৩ সাল থেকে লড়ছি। এভাবে উপেক্ষা করা আমরা গ্রহণ করতে পারি না।
এরপর প্রস্তাব করা হলো ‘গণভোট’ নামক একটি অদ্ভুত জিনিস। ৪৮টি বিষয়ে আপনি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলবেন! আমি একজন শিক্ষিত মানুষ হয়েও ৪৮টি বিষয় একসঙ্গে ধারণ করতে পারি না। আমার যদি মনে হয় ৩০টি গ্রহণযোগ্য আর ১৮টি নয়, সেটা আলাদা করার কোনো উপায় আছে? এটা একটা উদ্ভট পরিস্থিতি।
সবচেয়ে কষ্টের বিষয়, যখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বললেন ‘রাজাকারের বাচ্চারা কোথায়’, তখন এই রোকেয়া হলের মেয়েরাই রাত ১২টায় গেট ভেঙে বেরিয়েছিল। তাদের দেখেই কিন্তু আন্দোলন দানা বেঁধেছে। অথচ আজ? ‘কোটি কয়েক মেয়ে’ ছাড়া এই যে এত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, কোনো পলিসি টেবিলে নারীরা নেই। একটার পর একটা অধ্যাদেশ পাস হচ্ছে, কয়টা নারী-নিরপেক্ষ? আমাদের অনেক নারী আইনজ্ঞ আছেন, তারা তো খসড়াগুলো দেখতে পারতেন। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা কি তিন পা এগিয়ে চার পা পিছিয়ে গেলাম?
আমরা কমিশনের পক্ষ থেকে বলেছিলাম, ১৯৭২ সালে যখন ৩০০ আসনের সংসদ গঠন করা হয়, তখনকার জনসংখ্যা আর আজকের জনসংখ্যা এক নয়। আমরা মনে করি, এখন ৬০০ আসনের সংসদ হওয়া প্রয়োজন এবং এর মাধ্যমে সংরক্ষিত আসনের নারী-পুরুষের মধ্যে একটি ভারসাম্য আনা সম্ভব।
যেদিন আমরা প্রতিবেদন জমা দিলাম, সেদিনই আমি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, এ প্রতিবেদন নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক, সমালোচনা হবে। আমরা সবটাকেই স্বাগত জানাই। কারণ আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়গুলো নিষ্পত্তি হবে। কিন্তু আমরা দেখলাম কী? তর্ক-বিতর্ক নয়, দেখলাম গালিগালাজ। গালিগালাজ তো গ্রহণযোগ্য নয়। আরও দুঃখের বিষয়, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এই গালিগালাজের কোনো প্রতিবাদও আমরা শুনিনি।
সবশেষে বলতে চাই, এই নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যা করেছে, আমরা তা পারিনি। আমি তাদের সালাম জানাই এবং চাই, তারাই এই দেশের হাল ধরুক। আমি আশাবাদী ছিলাম, তারা যে নতুন দল করেছে, সেই দলটি সাহসের সঙ্গে এমন অনেক কথা বলবে যা আগে কেউ ভোটের ভয়ে বা সমাজের ভয়ে বলতে পারেনি। আমি তাদের সেই ভূমিকায় এখনো সেভাবে দেখতে পাইনি। আশা রাখি সামনে হয়তো দেখতে পাব।
তাদের প্রতি আমার প্রত্যাশা—
মানবিক রাষ্ট্রের একটি পূর্বশর্ত হলো মৃত্যুদণ্ডের বিলোপ। আমি মনে করি, ‘ন্যায়পাল’ (Ombudsman) বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে, যা আমাদের সংবিধানে শুরু থেকেই থাকলেও বাস্তবায়ন হয়নি। আমি আশা করব, এ নতুন দলটি তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে এই বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।
ধন্যবাদ।
[শনিবার (৮ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘নারীর কণ্ঠে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন রূপরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা ও নারী কমিশনের প্রধান শিরিন হক। তার পুরো বক্তব্যটি ঈষৎ পরিমার্জিত আকারে প্রায় হুবহু তুলে ধরা হলো।]

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় সাইডলাইনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সঙ্গে সাক্ষাতের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি পাঠানো হয়, যার মধ্যে সরকারের জন্য অস্বস্তিকর কিছু বিষয় রয়েছে।
১৮ দিন আগে
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক এমন শব্দচয়নের বিরোধিতা করে তাঁর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। পাশাপাশি প্রশ্নবিদ্ধ জুলাই জাতীয় সনদ প্রসঙ্গে খুব শিগগিরই একটি আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা প্রকাশের অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে।
২০ দিন আগে
অনেকে বলছেন, এবারও পুরস্কারটি যেন পশ্চিমা শক্তি ও মার্কিন নীতির সমর্থনে বিতরণ করা হয়েছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতি, দেশটির বিপুল তেল মজুদ, সাধারণ জনগণের কষ্ট—সবকিছুই এক জটিল চিত্র তৈরি করেছে।
২২ দিন আগে
ইতিবাচক দিকে জিপিএ-৫ কমে যাওয়ার অর্থ ‘গ্রেড ইনফ্লেশনে’র লাগাম টানা। এতে মেধা বাছাই তুলনামূলক নিরপেক্ষ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন জিপিএর পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা, রচনা, প্রজেক্ট, পোর্টফোলিও ও সাক্ষাৎকারের ওপর জোর দিতে পারবে।
২৩ দিন আগে