
রাজু আলীম

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ও বিতর্কিত বিষয়গুলোর একটি হলো কিছু সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ। এ প্রক্রিয়া অর্থনৈতিক সংকট, দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণহীন ঋণ বিতরণের পরিপ্রেক্ষিতে গৃহীত হলেও একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত কিছু ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য ও কার্যকর পরিচালনার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্ন উঠছে।
এর অন্যতম উদাহরণ এক্সিম ব্যাংক, যেটি বর্তমানে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল আর্থিক অবস্থানেও একীভূতকরণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত শুধু আর্থিক সূচক বা সংখ্যাগত মানদণ্ডে নয়, কাঠামোগত বিশ্লেষণ ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থাপনার স্থায়িত্বের আলোকে গ্রহণ করা উচিত। এ নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে তৈরি হয় আলোচনা। নিজেদের আর্থিক অবস্থান নিয়ে শক্তিশালী অবস্থান তুলে ধরেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা পর্ষদ। যার ফলে, শেষ পর্যন্ত একীভূতকরণ প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে এক্সিম ব্যাংককে।
এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একীভূত না হওয়ার জন্য আবেদন জানানো হলে বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি বিবেচনায় নেয় এবং নীতিগতভাবে একীভূতকরণের তালিকা থেকে এক্সিম ব্যাংককে অব্যাহতি দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, যেসব কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল, এক্সিম ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা, পরিচালন কাঠামো এবং গ্রাহক আস্থা সেই প্রেক্ষাপটে ব্যতিক্রম। ফলস্বরূপ, এক্সিম ব্যাংককে এ প্রক্রিয়া থেকে বাদ দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রাথমিকভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক— এই পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করে একটি নতুন আর্থিক প্রতিষ্ঠান গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল দুর্বল ব্যাংকগুলোর আর্থিক সংকট কাটিয়ে একটি শক্তিশালী কাঠামো নির্মাণ।
ফরেনসিক অডিট ও সম্পদের গুণগত মান যাচাইয়ের (Asset Quality Review) মাধ্যমে একীভূতকরণের পূর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। তবে অর্থনৈতিক সূচকে তুলনামূলকভাবে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এক্সিম ব্যাংক এ উদ্যোগের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং সরাসরি জানিয়ে দেয়, তারা একীভূতকরণে রাজি নয়।

এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম স্বপন
এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো আবেদনে বলা হয়, ব্যাংকটির আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, ঋণ আদায় ও মূলধন কাঠামো অন্যান্য চিহ্নিত ব্যাংকগুলোর তুলনায় অনেক ভালো। একীভূত হলে গ্রাহক আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং স্থিতিশীল একটি ব্যাংক অকারণে ঝুঁকির মুখে পড়বে।
একই প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইনফোড) নির্বাহী পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসাইন খান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ব্যাংককে জোর করে একীভূত করবে না। বিষয়টি আর্থিক স্বাস্থ্য ও আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে।’
তার এই বক্তব্য স্পষ্ট করে, এক্সিম ব্যাংকের আবেদন গ্রহণযোগ্য বিবেচনায় পড়েছে এবং তা প্রক্রিয়াগতভাবে অনুমোদনের পথে।
অর্থনীতিবিদরা বিষয়টিকে দেখছেন ব্যাংকিং খাতের এক ধরনের পরীক্ষিত ব্যতিক্রম হিসেবে। ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইনফোড) নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তফা কে. মুজেরীর মতে, ‘দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত হলেই শক্তিশালী ব্যাংক তৈরি হবে— এ ধারণা সবসময় কার্যকর নাও হতে পারে। বরং এতে সুস্থ ব্যাংকের ওপর নেতিবাচক চাপ তৈরি হতে পারে।’ তার যুক্তি, এর মাধ্যমে আসল সমস্যার সমাধান হবে না, বরং সমস্যার গভীরতা আরও বাড়তে পারে।
এক্সিম ব্যাংকের নিজস্ব তথ্য বলছে, গত ৯ মাসে গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা তুলেছেন, যা কোনো ধরনের তারল্য সংকট বা আমানত গ্রাহকদের ভোগান্তির ইঙ্গিত দেয় না।
চলতি বছরে মে মাস পর্যন্ত ব্যাংকটির মোট লেনদেন ১৮ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা, নতুন হিসাব খোলা হয়েছে প্রায় দুই লাখ ৯৪ হাজার এবং আমানত এসেছে ১০ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। ব্যাংকের বর্তমান আমানত দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকায় এবং ঋণ বা বিনিয়োগের পরিমাণ ৫৩ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের অনুপাতে এক্সিম ব্যাংক দেশের শীর্ষ ১০ ব্যাংকের বাইরে এবং মূলধন ঘাটতি নেই।
চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, আমরা নিয়মিতভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছি। ঋণ আদায় হচ্ছে, আমদানি-রপ্তানি সচল। আমাদের একীভূত করা হলে গ্রাহকেরা বিভ্রান্ত হবে এবং ব্যাংকের ইতিবাচক গতি থেমে যাবে। একজন অনিয়মকারী ব্যাংকারের জন্য সুপরিচালিত একটি ব্যাংককে ধ্বংস করা ঠিক নয়।
এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ব্যাংকটির বর্তমান পরিচালন পর্ষদের আত্মবিশ্বাস ও স্বচ্ছ অবস্থানের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ব্যাংকটি বিশ্বাস করে, একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারলে আগামী বছর তারা আরও সুসংগঠিত রূপে ফিরে আসবে এবং একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।
বর্তমানে এক্সিম ব্যাংকের পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা যেভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তা অনেক দিক থেকে একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ব্যাংকটি খেলাপি ঋণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়েছে এবং ঋণ আদায়ের কার্যকর কৌশল নিয়েছে। তাই এ ধরনের একটি ব্যাংককে সংকটাপন্ন ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার মাধ্যমে তার পরিচালনগত স্বকীয়তা হারাতে পারে।
অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ, এক্সিম ব্যাংককে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত, যেন এটি একটি ‘রোল মডেল ব্যাংক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। আর সরকারের উচিত হবে এমন ব্যাংকের ওপর নীতিগত চাপ না প্রয়োগ করে বরং দুর্বল ব্যাংকগুলোতে ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন, জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা।
অর্থনীতির সার্বিক চিত্র বিচার করে বলা যায়, এক্সিম ব্যাংকের একীভূতকরণ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত একটি যুক্তিসম্মত নীতিগত পদক্ষেপ। এটি শুধু একটি ব্যাংক রক্ষার পদক্ষেপ নয়, বরং আর্থিক খাতে সুশাসন ও কর্মক্ষমতা নির্ভর মূল্যায়নের উদাহরণ হিসেবেও বিবেচিত হবে। এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে একটি ইতিবাচক বার্তা পাঠাবে— সুপরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করতে হলে তাদের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করা জরুরি।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ও বিতর্কিত বিষয়গুলোর একটি হলো কিছু সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ। এ প্রক্রিয়া অর্থনৈতিক সংকট, দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণহীন ঋণ বিতরণের পরিপ্রেক্ষিতে গৃহীত হলেও একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত কিছু ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য ও কার্যকর পরিচালনার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্ন উঠছে।
এর অন্যতম উদাহরণ এক্সিম ব্যাংক, যেটি বর্তমানে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল আর্থিক অবস্থানেও একীভূতকরণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত শুধু আর্থিক সূচক বা সংখ্যাগত মানদণ্ডে নয়, কাঠামোগত বিশ্লেষণ ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থাপনার স্থায়িত্বের আলোকে গ্রহণ করা উচিত। এ নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে তৈরি হয় আলোচনা। নিজেদের আর্থিক অবস্থান নিয়ে শক্তিশালী অবস্থান তুলে ধরেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা পর্ষদ। যার ফলে, শেষ পর্যন্ত একীভূতকরণ প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে এক্সিম ব্যাংককে।
এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একীভূত না হওয়ার জন্য আবেদন জানানো হলে বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি বিবেচনায় নেয় এবং নীতিগতভাবে একীভূতকরণের তালিকা থেকে এক্সিম ব্যাংককে অব্যাহতি দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, যেসব কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল, এক্সিম ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা, পরিচালন কাঠামো এবং গ্রাহক আস্থা সেই প্রেক্ষাপটে ব্যতিক্রম। ফলস্বরূপ, এক্সিম ব্যাংককে এ প্রক্রিয়া থেকে বাদ দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রাথমিকভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক— এই পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করে একটি নতুন আর্থিক প্রতিষ্ঠান গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল দুর্বল ব্যাংকগুলোর আর্থিক সংকট কাটিয়ে একটি শক্তিশালী কাঠামো নির্মাণ।
ফরেনসিক অডিট ও সম্পদের গুণগত মান যাচাইয়ের (Asset Quality Review) মাধ্যমে একীভূতকরণের পূর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। তবে অর্থনৈতিক সূচকে তুলনামূলকভাবে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এক্সিম ব্যাংক এ উদ্যোগের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং সরাসরি জানিয়ে দেয়, তারা একীভূতকরণে রাজি নয়।

এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম স্বপন
এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো আবেদনে বলা হয়, ব্যাংকটির আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, ঋণ আদায় ও মূলধন কাঠামো অন্যান্য চিহ্নিত ব্যাংকগুলোর তুলনায় অনেক ভালো। একীভূত হলে গ্রাহক আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং স্থিতিশীল একটি ব্যাংক অকারণে ঝুঁকির মুখে পড়বে।
একই প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইনফোড) নির্বাহী পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসাইন খান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ব্যাংককে জোর করে একীভূত করবে না। বিষয়টি আর্থিক স্বাস্থ্য ও আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে।’
তার এই বক্তব্য স্পষ্ট করে, এক্সিম ব্যাংকের আবেদন গ্রহণযোগ্য বিবেচনায় পড়েছে এবং তা প্রক্রিয়াগতভাবে অনুমোদনের পথে।
অর্থনীতিবিদরা বিষয়টিকে দেখছেন ব্যাংকিং খাতের এক ধরনের পরীক্ষিত ব্যতিক্রম হিসেবে। ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইনফোড) নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তফা কে. মুজেরীর মতে, ‘দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত হলেই শক্তিশালী ব্যাংক তৈরি হবে— এ ধারণা সবসময় কার্যকর নাও হতে পারে। বরং এতে সুস্থ ব্যাংকের ওপর নেতিবাচক চাপ তৈরি হতে পারে।’ তার যুক্তি, এর মাধ্যমে আসল সমস্যার সমাধান হবে না, বরং সমস্যার গভীরতা আরও বাড়তে পারে।
এক্সিম ব্যাংকের নিজস্ব তথ্য বলছে, গত ৯ মাসে গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা তুলেছেন, যা কোনো ধরনের তারল্য সংকট বা আমানত গ্রাহকদের ভোগান্তির ইঙ্গিত দেয় না।
চলতি বছরে মে মাস পর্যন্ত ব্যাংকটির মোট লেনদেন ১৮ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা, নতুন হিসাব খোলা হয়েছে প্রায় দুই লাখ ৯৪ হাজার এবং আমানত এসেছে ১০ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। ব্যাংকের বর্তমান আমানত দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকায় এবং ঋণ বা বিনিয়োগের পরিমাণ ৫৩ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের অনুপাতে এক্সিম ব্যাংক দেশের শীর্ষ ১০ ব্যাংকের বাইরে এবং মূলধন ঘাটতি নেই।
চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, আমরা নিয়মিতভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছি। ঋণ আদায় হচ্ছে, আমদানি-রপ্তানি সচল। আমাদের একীভূত করা হলে গ্রাহকেরা বিভ্রান্ত হবে এবং ব্যাংকের ইতিবাচক গতি থেমে যাবে। একজন অনিয়মকারী ব্যাংকারের জন্য সুপরিচালিত একটি ব্যাংককে ধ্বংস করা ঠিক নয়।
এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ব্যাংকটির বর্তমান পরিচালন পর্ষদের আত্মবিশ্বাস ও স্বচ্ছ অবস্থানের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ব্যাংকটি বিশ্বাস করে, একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারলে আগামী বছর তারা আরও সুসংগঠিত রূপে ফিরে আসবে এবং একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।
বর্তমানে এক্সিম ব্যাংকের পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা যেভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তা অনেক দিক থেকে একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ব্যাংকটি খেলাপি ঋণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়েছে এবং ঋণ আদায়ের কার্যকর কৌশল নিয়েছে। তাই এ ধরনের একটি ব্যাংককে সংকটাপন্ন ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার মাধ্যমে তার পরিচালনগত স্বকীয়তা হারাতে পারে।
অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ, এক্সিম ব্যাংককে স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত, যেন এটি একটি ‘রোল মডেল ব্যাংক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। আর সরকারের উচিত হবে এমন ব্যাংকের ওপর নীতিগত চাপ না প্রয়োগ করে বরং দুর্বল ব্যাংকগুলোতে ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন, জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা।
অর্থনীতির সার্বিক চিত্র বিচার করে বলা যায়, এক্সিম ব্যাংকের একীভূতকরণ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত একটি যুক্তিসম্মত নীতিগত পদক্ষেপ। এটি শুধু একটি ব্যাংক রক্ষার পদক্ষেপ নয়, বরং আর্থিক খাতে সুশাসন ও কর্মক্ষমতা নির্ভর মূল্যায়নের উদাহরণ হিসেবেও বিবেচিত হবে। এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে একটি ইতিবাচক বার্তা পাঠাবে— সুপরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করতে হলে তাদের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করা জরুরি।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক এমন শব্দচয়নের বিরোধিতা করে তাঁর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। পাশাপাশি প্রশ্নবিদ্ধ জুলাই জাতীয় সনদ প্রসঙ্গে খুব শিগগিরই একটি আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা প্রকাশের অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে।
২০ দিন আগে
অনেকে বলছেন, এবারও পুরস্কারটি যেন পশ্চিমা শক্তি ও মার্কিন নীতির সমর্থনে বিতরণ করা হয়েছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতি, দেশটির বিপুল তেল মজুদ, সাধারণ জনগণের কষ্ট—সবকিছুই এক জটিল চিত্র তৈরি করেছে।
২২ দিন আগে
ইতিবাচক দিকে জিপিএ-৫ কমে যাওয়ার অর্থ ‘গ্রেড ইনফ্লেশনে’র লাগাম টানা। এতে মেধা বাছাই তুলনামূলক নিরপেক্ষ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন জিপিএর পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা, রচনা, প্রজেক্ট, পোর্টফোলিও ও সাক্ষাৎকারের ওপর জোর দিতে পারবে।
২৩ দিন আগে