ড. মিহির কুমার রায়
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা নিয়ে বরাবরই সমালোচনা করে আসছেন বিশেষজ্ঞ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। নানা সমালোচনার মধ্যেই এবার বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ঢালাওভাবে সব খাতে নয়; স্থাপনা, বাড়ি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট, ফ্লোর স্পেস ও জমি কেনার ক্ষেত্রে এই সুযোগ রাখা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে করহার সাত গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে গত ২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ, নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থসহ সব ধরনের ডিপোজিটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে আবাসন খাতে সেই সুযোগ রাখা হয়। ধারণা ছিল, আসছে বাজেটে এই সুবিধাও প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু সেটি বহাল রেখেই বাজেট প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এ সুযোগ আগেও ছিল, এখনো রাখা হয়েছে। অনেকের দাবি ছিল এবং অনেকেই ধারণা করেছিলেন, এই সুযোগ বাতিল করা হতে পারে। কিন্তু বাতিল করা হয়নি।
তাত্ত্বিকভাবে কালো টাকার বিষয়টিকে অর্থনীতির চর্চায় তেমনভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না, বিশেষত শিক্ষা কিংবা গবেষণা কার্যক্রমে। অথচ অর্থনীতিতে এটি জিডিপির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে রয়েছে, যা উৎপাদনশীল খাতে ব্যয়িত হলে দেশের উৎপাদন ও কর্মসংস্থান উভয়েই বাড়ত।
তাই স্বভাবতই প্রশ্ন আসে— বিষয়টি কী? কালো টাকার একটি নিজস্ব ধারণা রয়েছে। যেমন— দেশের কর আইনে ‘কালো টাকা’র সংজ্ঞা না থাকলেও ‘অপ্রদর্শিত আয়’ কথাটি উল্লেখ আছে। ফলে কোনো ব্যক্তি যখন তার আয়কর রিটার্নে তার আহরিত আয় প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হন, সেই টাকাকেই কালো বলে ধরা হয়। এই আয় অবশ্য অবৈধ পথে নাও হতে পারে।
এখন অনেকে বলছে, অপ্রদর্শিত আয় দুই রকমের। যথা— বৈধ অর্জন কিন্তু আয় রিটার্নে প্রদর্শিত হয়নি এবং অবৈধ উপায়ে অর্জন; যার ওপর আয়কর দেয়া হয়নি। এখন নির্দিষ্ট পরিমাণ কর জরিমানাসহ প্রদানসাপেক্ষে অর্থনীতির মূলধারায় কালো টাকাকে সম্পৃক্ত করার প্রচেষ্টাকে কালো টাকা সাদা করা বলা হয়।
অর্থনৈতিক দর্শনে কালো টাকাকে বিভিন্ন রূপে দেখানো হয়েছে। যেমন— ধূসর, নিমজ্জিত, অনানুষ্ঠানিক, সুপ্ত, সমান্তরাল ইত্যাদি। এর মূল উৎস অনৈতিকতার ছাপে আবদ্ধ বিভিন্ন রূপে। যেমন— ঘুষ, মানব পাচার, সোনা পাচার, চাঁদাবাজি, জমি কেনাবেচার দালালি ইত্যাদি। এসবের গতিময়তা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বেশি, যা কোনো নিয়মের ছকে আবদ্ধ করা যায় না।
আয়কর আইনের ১৯(ই) ধারায় ৩(ঘ) উপধারা অনুযায়ী, বেআইনি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্জিত আয় যথাযথ আয়কর ও ১০ শতাংশ হারে জরিমানা দিয়ে টাকা সাদা করা যাবে না। কারণ এই উপার্জন নৈতিকতা ও সংবিধানের পরিপন্থি, যা সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে।
বণিক বার্তায় একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে, কালো টাকা সাদা টাকা উভয়ই মানি সার্কুলেশনের অন্তর্ভুক্ত হলেও অর্থনীতিতে প্রথমটির প্রভাব নেতিবাচক, যা সরকারের হিসাবের মধ্যে থাকে না, বিশৃঙ্খল গতিতে চলতে থাকে, আর্থসামাজিক পথে ক্ষত তৈরি করে। এই অর্থ প্রকারান্তরে ব্যাষ্টিক-সামষ্টিক অর্থনীতিতে অবক্ষয়ের রাস্তাকে প্রশস্ত করে।
আবার এই কালো টাকা প্রচলিত আইনকে ফাঁকি দিয়ে জনপদে বিচরণ করে এবং ন্যায়সঙ্গত শ্রমের চেয়ে প্রাপ্তি বেশি থাকায় এ টাকা ব্যয়ের সময় অর্থনীতির নিয়মকানুন মেনে চলা হয় না।
নোবেল বিজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত্য কুমার সেন বলেছিলেন, সভ্যতার গোড়া থেকে সাদা ও কালো পরস্পরকে হাত ধরাধরি করে আসছে, যা পৃথিবীর সব দেশেই কম-বেশি রয়েছে একটি নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে। যেমন— পশ্চিমা বিশ্ব, মধ্যম আয়ের লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ার কিছু দেশ। এসব দেশে অফশোর হিসাব বলে একটি কার্যক্রম প্রচলতি আছে, যেখানে বিষেশায়িত অঞ্চলে কালো টাকা বিনিয়োগ করলে কোনো প্রশ্নের মোকাবিলা করতে হয় না; যা অর্থনীতিতে বিনিয়োগের একটি বড় অংশ দখল করে রয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অসাংবিধানিক, অনৈতিক ও বৈষম্যমূলক, যা অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দুর্নীতিকে উৎসাহ দেয় এবং এটি সংবিধানের ২০ (২) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। অন্তর্বর্তী সরকার এটি বহাল রাখলে সেটি হবে হতাশাজনক ও নিজের জন্য বিব্রতকর।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, দুর্নীতিকে উৎসাহ দিয়ে অবৈধ অর্থকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। জমি বিক্রি করেন গরিবরা, কেনেন ধনীরা। অথচ তাদের কর ফাঁকি ও অপরাধ ক্ষমা পেয়ে যায়।
তথ্য বলছে, বর্তমানে গুলশান-বনানী, ধানমন্ডি-মতিঝিলসহ ঢাকার অভিজাত এলাকায় জমি কিনলে বর্গমিটারে ১৫ হাজার টাকা ও ফ্ল্যাটে ছয় হাজার টাকা কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করা যায়। এসব করহার আগামী বাজেটে সাত গুণ বাড়ানো হতে পারে। অন্যদিকে মোহাম্মদপুর, মিরপুর, উত্তরা, যাত্রাবাড়ীসহ অন্যান্য এলাকায় জমিতে বিদ্যমান করহার ১০ হাজার ও ফ্ল্যাটে ৩৫০০ টাকা, যা বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিজাত এলাকায় এক একটি অ্যাপার্টমেন্ট ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকা দামে বিক্রি হলেও দলিলে মূল্য দেখানো হয় এক থেকে দুই কোটি টাকা। ক্রেতাদের বড় একটি অংশ সরকারি কর্মকর্তা হলেও তাদের বেতন কাঠামো অনুযায়ী এসব সম্পদ কেনার সামর্থ্য থাকার কথা নয়। ফলে এসব লেনদেনের বড় অংশ অবৈধ আয় দিয়ে হয়।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, রিহ্যাবের দাবি থাকে এ সুযোগ রাখার। এ জন্য করহার বাড়িয়ে আদর্শ হারে আনার চেষ্টা থাকে। তবে এটা নীতিগতভাবে অনুচিত। সব ধরনের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করা উচিত। এটি সামাজিক ন্যায্যতার পরিপন্থি এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের দাবির বিরোধী।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে ২২ বার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছে সরকার। তবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মাত্র ৪৭ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ২০ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা সাদা হয় ২০২০-২১ অর্থবছরে। এনবিআর কর্মকর্তারা মনে করেন, কোভিডের সময় বিদেশে অর্থ পাচার কমে যাওয়ায় ওই বছর বেশি কালো টাকা সাদা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি তার গবেষণায় উল্লেখ করেছেন, দেশে অপ্রদর্শিত কালো টাকার পরিমাণ সাত লাখ হাজার কোটি টাকার বেশি, যার কোনো প্রভাব দৃশ্যত অর্থনীতিতে দেখা যাচ্ছে না।
এই কালো টাকার উপস্থিতির কারণে অর্থনীতিতে যেসব সমস্যা দৃশ্যমান তা হলো— ধনী-গরিবের আয়ের বৈষম্য তৈরি; দ্বৈত অর্থনীতি (কালো বনাম সাদা); জাতীয় আয়ে তত্ত্ব বিভ্রাট; সরকার কর্তৃক রাজস্ব হারানো; সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ভাটা; বাহুল্য ব্যয় বৃদ্ধি; দুষ্প্রাপ্য সম্পদের ওপর বাড়তি চাপ যা বাজার ব্যবস্থায় মূল্য বাড়ায়, সমাজের নৈতিক মানদণ্ড নষ্ট হয়, উৎপাদন ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে ইত্যাদি।
এসব সমস্যার সমাধানে একটি স্বল্প-দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন, যা বাজেট বক্তৃতায় তেমন উল্লেখিত হয় না। তবে দীর্ঘমেয়াদি কালো টাকার অনুশীলন কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়, যে বিষয়ে এখন থেকেই সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রথমত, প্রখ্যাত জার্মান অর্থনীতিবিদ ডেভিড মোরিলের বক্তব্যের আলোকে কালো টাকার পরিমাণ নির্ধারণসহ বাহকদের চিহ্নিত করতে হবে, যেন অর্থনীতির অনুকূলে ইতিবাচক কার্যক্রম নেওয়ার পথ সুগম হয়।
দ্বিতীয়ত, কার্ল মার্ক্সের উক্তি হলো— কালো টাকা ছাড়া কোনো পুঁজি গঠিত হয় না। এ কথা সত্য হলে দেশের ভেতরে যে কালো টাকা রয়েছে তা দিয়ে গঠিত পুঁজি দেশের বড় বড় খাতের বিনিয়োগের মাধ্যমে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এতে বিদেশি নির্ভরতাও কমবে।
তৃতীয়ত, দেশের ভেতরে কালো টাকা উৎপাদনের ক্ষেত্রগুলো বন্ধ করতে হবে ক্রমান্বয়ে। কাজটি যেহেতু অপ্রদর্শিত অর্থনীতির অংশ, তাই এর প্রশাসনিক কাঠামো এমন হওয়া উচিত যেখানে অবৈধভাবে যেন অর্থ উপার্জনের সুযোগ না থাকে
পঁচাত্তর-পরবর্তী সামরিক সরকারগুলো এ বিষয়টিকে নিয়ে আসে বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। বাজেটের আগে-পরে এ বিষয়টি হালে পানি পায় এই যুক্তিতে— যা জিডিপির একটি বড় অংশ তাকে অর্থনীতির মূলধারায় নিয়ে আসতে না পারলে উন্নয়ন অনেকাংশে ব্যাহত হবে।
বাস্তবে দেখা গেল, এ প্রক্রিয়ায় সাড়া খুব একটা পাওয়া যায় না। এর পেছনে কারণ রয়েছে তিনটি। প্রথমত, এনবিআর হয়তো নির্ধারিত ২০ শতাংশ (১০ শতাংশ কর ও ১০ শতাংশ জরিমানা) নিয়ে আয়কর রিটার্নের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার ব্যবস্থা করল। কিন্তিু ভয়টা হলো, ভবিষ্যতে এই রেকর্ড ধরে কালো টাকার মালিক কোনো হয়রানির স্বীকার হয় কি না!
দ্বিতীয়ত, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ বিষয়টি নিয়ে ভরিষ্যতে কোনো ধরনের ঝামেলা করবে কি না। যদি ঝামেলা করে, তবে দেশের প্রচলিত অইনে তাকে শাস্তি পোহাতে হবে। কারণ দেশের প্রচলিত আইনে এর কোনো সুরক্ষার কথা বলা নেই।
তৃতীয়ত, সামাজিক মর্যাদার ভয় রয়েই গেছে। কারণ বাংলাদেশের রক্ষণশীল সমাজে কালো টাকার মালিক যদি আয়কর রিটার্নের মাধ্যমে কোনো মামলায় জড়ায়, তবে তা বংশ পরম্পরায় যাতনা বইতে হবে, যা মানসিক অশান্তির কারণ হতে পারে।
রাষ্ট্রের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ‘দুর্নীতিজাত অনুপার্জিত আয়ে’র উৎস, উপায় ও উপলক্ষ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। অবৈধভাবে অর্জিত বা আয়ের জ্ঞাত সূত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন যেকোনো অর্থবিত্তকে কালো টাকা অভিহিত করার যে আইনি অবস্থানে রয়েছে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সেটাই সাংবিধানিকভাবে বেশি যৌক্তিক।
এর আলোকে দুর্বৃত্তায়নের ভয়াবহ বেড়াজাল থেকে আইনের আওতায় ‘মার্জিনখোর রাজনীতিবিদ, ঘুষখোর সুশীল সেবক (আমলা) ও মুনাফাবাজ বা কালোবাজারি বা চোরাকারবারি বা ব্যাংক ঋণ লুটেরা ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের’ অপরাধের শাস্তি বিধান করা হলে সমাজে ও অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক বার্তা যাবে।
দুর্নীতিজাত কালো টাকা লালন থেকে সরে না এলে আয় ও সম্পদ বণ্টনের ক্রমবর্ধমান বৈষম্য থেকে বাংলাদেশের মুক্তি মিলবে না। কালো টাকা সাদা করার মতো অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে যৌক্তিকতা দেওয়ার চেষ্টা না করাই তাই সমীচীন। কালো টাকা তৈরির প্রেরণা ও প্রযত্ন প্রদানের নীতি সর্বতোভাবে পরিত্যাজ্য হওয়াই কাম্য।
লেখক: অর্থনীতির অধ্যাপক, কুমিল্লা বার্ডের সাবেক পরিচালক, সিটি ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের সাবেক ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা নিয়ে বরাবরই সমালোচনা করে আসছেন বিশেষজ্ঞ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। নানা সমালোচনার মধ্যেই এবার বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ঢালাওভাবে সব খাতে নয়; স্থাপনা, বাড়ি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট, ফ্লোর স্পেস ও জমি কেনার ক্ষেত্রে এই সুযোগ রাখা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে করহার সাত গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে গত ২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ, নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থসহ সব ধরনের ডিপোজিটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে আবাসন খাতে সেই সুযোগ রাখা হয়। ধারণা ছিল, আসছে বাজেটে এই সুবিধাও প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু সেটি বহাল রেখেই বাজেট প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এ সুযোগ আগেও ছিল, এখনো রাখা হয়েছে। অনেকের দাবি ছিল এবং অনেকেই ধারণা করেছিলেন, এই সুযোগ বাতিল করা হতে পারে। কিন্তু বাতিল করা হয়নি।
তাত্ত্বিকভাবে কালো টাকার বিষয়টিকে অর্থনীতির চর্চায় তেমনভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না, বিশেষত শিক্ষা কিংবা গবেষণা কার্যক্রমে। অথচ অর্থনীতিতে এটি জিডিপির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে রয়েছে, যা উৎপাদনশীল খাতে ব্যয়িত হলে দেশের উৎপাদন ও কর্মসংস্থান উভয়েই বাড়ত।
তাই স্বভাবতই প্রশ্ন আসে— বিষয়টি কী? কালো টাকার একটি নিজস্ব ধারণা রয়েছে। যেমন— দেশের কর আইনে ‘কালো টাকা’র সংজ্ঞা না থাকলেও ‘অপ্রদর্শিত আয়’ কথাটি উল্লেখ আছে। ফলে কোনো ব্যক্তি যখন তার আয়কর রিটার্নে তার আহরিত আয় প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হন, সেই টাকাকেই কালো বলে ধরা হয়। এই আয় অবশ্য অবৈধ পথে নাও হতে পারে।
এখন অনেকে বলছে, অপ্রদর্শিত আয় দুই রকমের। যথা— বৈধ অর্জন কিন্তু আয় রিটার্নে প্রদর্শিত হয়নি এবং অবৈধ উপায়ে অর্জন; যার ওপর আয়কর দেয়া হয়নি। এখন নির্দিষ্ট পরিমাণ কর জরিমানাসহ প্রদানসাপেক্ষে অর্থনীতির মূলধারায় কালো টাকাকে সম্পৃক্ত করার প্রচেষ্টাকে কালো টাকা সাদা করা বলা হয়।
অর্থনৈতিক দর্শনে কালো টাকাকে বিভিন্ন রূপে দেখানো হয়েছে। যেমন— ধূসর, নিমজ্জিত, অনানুষ্ঠানিক, সুপ্ত, সমান্তরাল ইত্যাদি। এর মূল উৎস অনৈতিকতার ছাপে আবদ্ধ বিভিন্ন রূপে। যেমন— ঘুষ, মানব পাচার, সোনা পাচার, চাঁদাবাজি, জমি কেনাবেচার দালালি ইত্যাদি। এসবের গতিময়তা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বেশি, যা কোনো নিয়মের ছকে আবদ্ধ করা যায় না।
আয়কর আইনের ১৯(ই) ধারায় ৩(ঘ) উপধারা অনুযায়ী, বেআইনি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্জিত আয় যথাযথ আয়কর ও ১০ শতাংশ হারে জরিমানা দিয়ে টাকা সাদা করা যাবে না। কারণ এই উপার্জন নৈতিকতা ও সংবিধানের পরিপন্থি, যা সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে।
বণিক বার্তায় একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে, কালো টাকা সাদা টাকা উভয়ই মানি সার্কুলেশনের অন্তর্ভুক্ত হলেও অর্থনীতিতে প্রথমটির প্রভাব নেতিবাচক, যা সরকারের হিসাবের মধ্যে থাকে না, বিশৃঙ্খল গতিতে চলতে থাকে, আর্থসামাজিক পথে ক্ষত তৈরি করে। এই অর্থ প্রকারান্তরে ব্যাষ্টিক-সামষ্টিক অর্থনীতিতে অবক্ষয়ের রাস্তাকে প্রশস্ত করে।
আবার এই কালো টাকা প্রচলিত আইনকে ফাঁকি দিয়ে জনপদে বিচরণ করে এবং ন্যায়সঙ্গত শ্রমের চেয়ে প্রাপ্তি বেশি থাকায় এ টাকা ব্যয়ের সময় অর্থনীতির নিয়মকানুন মেনে চলা হয় না।
নোবেল বিজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত্য কুমার সেন বলেছিলেন, সভ্যতার গোড়া থেকে সাদা ও কালো পরস্পরকে হাত ধরাধরি করে আসছে, যা পৃথিবীর সব দেশেই কম-বেশি রয়েছে একটি নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে। যেমন— পশ্চিমা বিশ্ব, মধ্যম আয়ের লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ার কিছু দেশ। এসব দেশে অফশোর হিসাব বলে একটি কার্যক্রম প্রচলতি আছে, যেখানে বিষেশায়িত অঞ্চলে কালো টাকা বিনিয়োগ করলে কোনো প্রশ্নের মোকাবিলা করতে হয় না; যা অর্থনীতিতে বিনিয়োগের একটি বড় অংশ দখল করে রয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ও দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অসাংবিধানিক, অনৈতিক ও বৈষম্যমূলক, যা অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দুর্নীতিকে উৎসাহ দেয় এবং এটি সংবিধানের ২০ (২) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। অন্তর্বর্তী সরকার এটি বহাল রাখলে সেটি হবে হতাশাজনক ও নিজের জন্য বিব্রতকর।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, দুর্নীতিকে উৎসাহ দিয়ে অবৈধ অর্থকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। জমি বিক্রি করেন গরিবরা, কেনেন ধনীরা। অথচ তাদের কর ফাঁকি ও অপরাধ ক্ষমা পেয়ে যায়।
তথ্য বলছে, বর্তমানে গুলশান-বনানী, ধানমন্ডি-মতিঝিলসহ ঢাকার অভিজাত এলাকায় জমি কিনলে বর্গমিটারে ১৫ হাজার টাকা ও ফ্ল্যাটে ছয় হাজার টাকা কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করা যায়। এসব করহার আগামী বাজেটে সাত গুণ বাড়ানো হতে পারে। অন্যদিকে মোহাম্মদপুর, মিরপুর, উত্তরা, যাত্রাবাড়ীসহ অন্যান্য এলাকায় জমিতে বিদ্যমান করহার ১০ হাজার ও ফ্ল্যাটে ৩৫০০ টাকা, যা বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিজাত এলাকায় এক একটি অ্যাপার্টমেন্ট ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকা দামে বিক্রি হলেও দলিলে মূল্য দেখানো হয় এক থেকে দুই কোটি টাকা। ক্রেতাদের বড় একটি অংশ সরকারি কর্মকর্তা হলেও তাদের বেতন কাঠামো অনুযায়ী এসব সম্পদ কেনার সামর্থ্য থাকার কথা নয়। ফলে এসব লেনদেনের বড় অংশ অবৈধ আয় দিয়ে হয়।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, রিহ্যাবের দাবি থাকে এ সুযোগ রাখার। এ জন্য করহার বাড়িয়ে আদর্শ হারে আনার চেষ্টা থাকে। তবে এটা নীতিগতভাবে অনুচিত। সব ধরনের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করা উচিত। এটি সামাজিক ন্যায্যতার পরিপন্থি এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের দাবির বিরোধী।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে ২২ বার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছে সরকার। তবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মাত্র ৪৭ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ২০ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা সাদা হয় ২০২০-২১ অর্থবছরে। এনবিআর কর্মকর্তারা মনে করেন, কোভিডের সময় বিদেশে অর্থ পাচার কমে যাওয়ায় ওই বছর বেশি কালো টাকা সাদা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি তার গবেষণায় উল্লেখ করেছেন, দেশে অপ্রদর্শিত কালো টাকার পরিমাণ সাত লাখ হাজার কোটি টাকার বেশি, যার কোনো প্রভাব দৃশ্যত অর্থনীতিতে দেখা যাচ্ছে না।
এই কালো টাকার উপস্থিতির কারণে অর্থনীতিতে যেসব সমস্যা দৃশ্যমান তা হলো— ধনী-গরিবের আয়ের বৈষম্য তৈরি; দ্বৈত অর্থনীতি (কালো বনাম সাদা); জাতীয় আয়ে তত্ত্ব বিভ্রাট; সরকার কর্তৃক রাজস্ব হারানো; সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ভাটা; বাহুল্য ব্যয় বৃদ্ধি; দুষ্প্রাপ্য সম্পদের ওপর বাড়তি চাপ যা বাজার ব্যবস্থায় মূল্য বাড়ায়, সমাজের নৈতিক মানদণ্ড নষ্ট হয়, উৎপাদন ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে ইত্যাদি।
এসব সমস্যার সমাধানে একটি স্বল্প-দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন, যা বাজেট বক্তৃতায় তেমন উল্লেখিত হয় না। তবে দীর্ঘমেয়াদি কালো টাকার অনুশীলন কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়, যে বিষয়ে এখন থেকেই সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রথমত, প্রখ্যাত জার্মান অর্থনীতিবিদ ডেভিড মোরিলের বক্তব্যের আলোকে কালো টাকার পরিমাণ নির্ধারণসহ বাহকদের চিহ্নিত করতে হবে, যেন অর্থনীতির অনুকূলে ইতিবাচক কার্যক্রম নেওয়ার পথ সুগম হয়।
দ্বিতীয়ত, কার্ল মার্ক্সের উক্তি হলো— কালো টাকা ছাড়া কোনো পুঁজি গঠিত হয় না। এ কথা সত্য হলে দেশের ভেতরে যে কালো টাকা রয়েছে তা দিয়ে গঠিত পুঁজি দেশের বড় বড় খাতের বিনিয়োগের মাধ্যমে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এতে বিদেশি নির্ভরতাও কমবে।
তৃতীয়ত, দেশের ভেতরে কালো টাকা উৎপাদনের ক্ষেত্রগুলো বন্ধ করতে হবে ক্রমান্বয়ে। কাজটি যেহেতু অপ্রদর্শিত অর্থনীতির অংশ, তাই এর প্রশাসনিক কাঠামো এমন হওয়া উচিত যেখানে অবৈধভাবে যেন অর্থ উপার্জনের সুযোগ না থাকে
পঁচাত্তর-পরবর্তী সামরিক সরকারগুলো এ বিষয়টিকে নিয়ে আসে বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। বাজেটের আগে-পরে এ বিষয়টি হালে পানি পায় এই যুক্তিতে— যা জিডিপির একটি বড় অংশ তাকে অর্থনীতির মূলধারায় নিয়ে আসতে না পারলে উন্নয়ন অনেকাংশে ব্যাহত হবে।
বাস্তবে দেখা গেল, এ প্রক্রিয়ায় সাড়া খুব একটা পাওয়া যায় না। এর পেছনে কারণ রয়েছে তিনটি। প্রথমত, এনবিআর হয়তো নির্ধারিত ২০ শতাংশ (১০ শতাংশ কর ও ১০ শতাংশ জরিমানা) নিয়ে আয়কর রিটার্নের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার ব্যবস্থা করল। কিন্তিু ভয়টা হলো, ভবিষ্যতে এই রেকর্ড ধরে কালো টাকার মালিক কোনো হয়রানির স্বীকার হয় কি না!
দ্বিতীয়ত, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ বিষয়টি নিয়ে ভরিষ্যতে কোনো ধরনের ঝামেলা করবে কি না। যদি ঝামেলা করে, তবে দেশের প্রচলিত অইনে তাকে শাস্তি পোহাতে হবে। কারণ দেশের প্রচলিত আইনে এর কোনো সুরক্ষার কথা বলা নেই।
তৃতীয়ত, সামাজিক মর্যাদার ভয় রয়েই গেছে। কারণ বাংলাদেশের রক্ষণশীল সমাজে কালো টাকার মালিক যদি আয়কর রিটার্নের মাধ্যমে কোনো মামলায় জড়ায়, তবে তা বংশ পরম্পরায় যাতনা বইতে হবে, যা মানসিক অশান্তির কারণ হতে পারে।
রাষ্ট্রের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ‘দুর্নীতিজাত অনুপার্জিত আয়ে’র উৎস, উপায় ও উপলক্ষ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। অবৈধভাবে অর্জিত বা আয়ের জ্ঞাত সূত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন যেকোনো অর্থবিত্তকে কালো টাকা অভিহিত করার যে আইনি অবস্থানে রয়েছে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সেটাই সাংবিধানিকভাবে বেশি যৌক্তিক।
এর আলোকে দুর্বৃত্তায়নের ভয়াবহ বেড়াজাল থেকে আইনের আওতায় ‘মার্জিনখোর রাজনীতিবিদ, ঘুষখোর সুশীল সেবক (আমলা) ও মুনাফাবাজ বা কালোবাজারি বা চোরাকারবারি বা ব্যাংক ঋণ লুটেরা ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের’ অপরাধের শাস্তি বিধান করা হলে সমাজে ও অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক বার্তা যাবে।
দুর্নীতিজাত কালো টাকা লালন থেকে সরে না এলে আয় ও সম্পদ বণ্টনের ক্রমবর্ধমান বৈষম্য থেকে বাংলাদেশের মুক্তি মিলবে না। কালো টাকা সাদা করার মতো অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে যৌক্তিকতা দেওয়ার চেষ্টা না করাই তাই সমীচীন। কালো টাকা তৈরির প্রেরণা ও প্রযত্ন প্রদানের নীতি সর্বতোভাবে পরিত্যাজ্য হওয়াই কাম্য।
লেখক: অর্থনীতির অধ্যাপক, কুমিল্লা বার্ডের সাবেক পরিচালক, সিটি ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের সাবেক ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য
স্লোগান বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অবিছ্ছেদ্য অংশ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে স্লোগানের ব্যবহার ছিল। “ব্রিটিশ হটাও, দেশ বাঁচাও”; “বিদেশি পণ্য বর্জন করো, দেশি পণ্য ব্যবহার করো”; “তুমি আমি স্বদেশি, স্বদেশি স্বদেশি” “আমরা লড়ব, আমরা জিতব” ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে এরূপ অনেক স্লোগানই রাজনৈতিক সচেতন
৪ দিন আগে২২ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ নিয়ে একটি প্রস্তাবনা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে । তাতে প্রধান শিক্ষকরা আগে কত টাকা বেতন ও ভাতা পেতেন, আর দশম গ্রেড বাস্তবায়ন হলে কত পাবেন—তা নিয়ে পরিপূর্ণ হিসাব রয়েছে ।
৫ দিন আগেভিওজিএসএস হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদ্বেগ, স্বার্থ ও অগ্রাধিকারসমূহের বিষয়ে আলোচনা করা, ধারণা ও সমাধান বিনিময় করা, এবং উন্নয়ন সমাধান বিনির্মাণে কণ্ঠ ও উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য একটি অভিন্ন মঞ্চ প্রদানের লক্ষ্যে ভারতের প্রচেষ্টা।
৫ দিন আগেবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকেই খাজা সলিমুল্লাহ, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, আল্লামা ইকবাল, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ অনুধাবন করেন যে, ভারতবর্ষ স্বাধীন হলে মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমির প্রয়োজন হবে। অন্যথায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির মধ্যে গৃহযুদ্ধ লেগেই থাকবে। রা
৯ দিন আগে