আফরোজা পারভীন
৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিনটি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। পালিত হয় নারীর সমঅধিকার, নারীর প্রতি ন্যায্যতার দাবিতে। এবারও মহাসমারোহে পালিত হয়েছে।
এই দিনটি পালনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। নিউইয়র্কের রাস্তায় মিছিল নিয়ে নামেন তারা। সেই মিছিলে সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী দমন-পীড়ন চালায়।
সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয় ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। সম্মেলনটি হয় নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে। জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন সম্মেলনে নেতৃত্ব দেন। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ, জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন।
১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব করেন। সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে নারীদের সমঅধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরাও। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে থাকে।
বাংলাদেশেও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার লাভের আগে থেকেই এই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। পরে ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবীতেই যথাযথ মর্যাদায় দিনটি পালিত হচ্ছে নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে।
স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, নারী দিবস মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তের চিত্ত বিনোদনের দিবস নয়। শ্রমিকের রক্তে ঘামে কেনা একটি দিন। এ দিনটি পহেলা ফাল্গুন, নববর্ষ বা ঈদের দিন নয়। এ বোধটুকু থাকা দরকার। এ বোধ কারও আছে বলে মনে হয় না।
একেবারে ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে এবার এসেছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দেশে এখন অন্তবর্তীকালীন সরকার। সে সরকারের সাত মাস হতে চলল। আগে আমরা কথায় কথায় বলতাম, বাংলাদেশের নারীরা ভালো আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পিকার, সংসদ নেতা সব নারী। আমরা হিসাব দিয়ে বলতাম— এতজন নারী ডিসি, এতজন নারী এসপি আছেন ইত্যাদি ইত্যাদি।
এখন দেশে নারী প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পিকার, সংসদ নেতা কেউই নেই। তবে যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়েছে, সেখানে চারজন নারী আছেন। এই সরকার আসার পর যেমন অনেক কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে, তেমনই বেশ কয়েকজন নারী সচিবও হয়েছেন— এটাই আশার কথা।
নারী আন্দোলনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া নারী জাগরণের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘তোমাদের কন্যাগুলিকে শিক্ষা দিয়া ছাড়িয়া দাও, নিজেরাই নিজেদের অন্নের সংস্থান করুক।’ তার এই আহ্বানে নারীর অধিকার অর্জনের পন্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে এ দেশে নারী জাগরণে সাড়া পড়েছিল শিক্ষা গ্রহণকে কেন্দ্র করে। তাছাড়া ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নারী তার অধিকার আদায়ে সচেতন হয়ে ওঠে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নারীর অসামান্য অবদান তাদেরকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তোলে। নারীরা সোচ্চার হয়ে ওঠে অধিকার আদায়ে, জুলাই আন্দোলনেরও পিছিয়ে ছিল না নারী।
আজকের নারী তার অধিকার সুরক্ষায় সচেষ্ট। রাষ্ট্র, অর্থনীতি, পরিবার ও সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করা এবং উন্নয়নের মূলধারায় নারীকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে আগের সরকারগুলো কম-বেশি কাজ করেছে। বর্তমান সরকারও করছে।
নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সিডো সনদ প্রণয়ন করে। ১৯৮১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর এই সনদ গৃহীত হয়। বাংলাদেশ ১৯৮৪ সালে চারটি ধারায় কতিপয় সংরক্ষণসহ এই সনদে অনুস্বাক্ষর করে। ১৯৯৬ সালে দুটি ধারা থেকে সংরক্ষণ তুলে নেওয়া হয়। এটাকে বলা হয় নারীর জন্য ‘আন্তর্জাতিক বিল অব রাইটস।’ বাংলাদেশ এই সনদে অনুস্বাক্ষরকারী প্রথম ১০টি দেশের অন্যতম।
এর আগে ১৯৭৫ সালে প্রথম বিশ্ব নারী সম্মেলনে বাংলাদেশ অংশ নেয়। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নারী অধিকার সংক্রান্ত সব কটি প্লাটফর্মে বাংলাদেশ অংশ নেয়। এভাবে বাংলাদেশ দেশের বাইরে নারী উন্নয়নের যে আন্দোলন চলছিল তার মূলধারায় যুক্ত হয়ে পড়ে।
শুধু আন্তর্জাতিক ফোরামে দলিল-দস্তাবেজে সই করে ক্ষান্ত হয়নি বাংলাদেশ, ১৯৯৭ ‘জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি’ প্রণয়ন করা হয়। যুগ যুগ ধরে নির্যাতনের শিকার ও অবহেলিত বৃহত্তর নারী সমাজের ভাগ্যোন্নয়নের লক্ষ্যে করা হয় এই নীতিমালা। নারী উন্নয়ন নীতিতে এ দেশের নারী সমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ আন্দোলনের প্রতিফলন ঘটে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, ‘সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।’ তাছাড়া সংবিধানের ২৮(১), ২৮(২), ২৮(৩) ২৮(৪), ২৯(১), ২৯(২), ৬৫(৩) ও ৯ অনুচ্ছেদে সুনির্দিষ্টভাবে নারীর সমান অধিকার, প্রতিনিধিত্ব, অংশগ্রহণ ও মর্যাদার বিষয়টি নির্দিষ্ট করা আছে।
নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়ন ও নারীকে সার্বিক উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। তাছাড়া বিশ্বায়নের এই যুগে নারীকে সামষ্টিক অর্থনীতির মূলধারায় সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। প্রয়োজন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বলয়ের প্রসারের মধ্য দিয়ে হতদরিদ্র নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় নারী দারিদ্র্য বিমোচন, নারী নির্যাতন বন্ধ করা, নারী পাচার রোধ, কর্মক্ষেত্রসহ সব ক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা বিধান এবং আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডে নারীর পূর্ণ ও সমঅধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। দরিদ্র নারীদের জন্য চালু করা হয়েছে বিধবা ও দুঃস্থ ভাতা।
এ ছাড়াও চালু আছে মাতৃত্বকালীন ভাতা। শহরাঞ্চলে কর্মজীবী নারীদের ল্যাকটেটিং মাদার ভাতা দেওয়া হয়। ঢাকা শহরের গার্মেন্টস কর্মীরা এই ভাতা পেয়ে থাকেন। বিত্তহীন নারীর দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির আওতায় খাদ্য নিরাপত্তা হিসেবে দরিদ্র নারীদের চাল বা আটা দেওয়া হয়।
দারিদ্র্য বিমোচন ঋণ প্রদান কর্মসূচির আওতায় নারীদের কৃষি, সেলাই, বুটিক, হস্তশিল্প, বিউটিফিকেশন, কম্পিউটার ও বিভিন্ন আয়বর্ধক বিষয়ে ব্যাপক প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ও বিনা জামানতে ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়।
নারীর অধিকার সংরক্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে প্রণীত হয়েছে বেশ কিছু আইন। কিছু প্রচলিত আইনের সংশোধনও করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— যৌতুক নিরোধ আইন, বাল্যবিবাহ রোধ আইন, নারী নির্যাতন ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইন, নাগরিকত্ব আইন (সংশোধিত) ২০০৯, ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন ২০০৯, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন) ২০১০।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের আওতায় খোলা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার হেল্প লাইন। দেশের যেকোনো স্থান থেকে যেকোনো সময় এই লাইনে নারী সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ করা যায় বা যেকোনো সমস্যার সমাধান চেয়ে কল করা যায়।
তারপরেও অস্বীকার করার উপায় নেই, নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কারণ সমাজের একটি শ্রেণির নারীদের দেখে সমগ্র সমাজের বিচার হয় না। প্রান্তিক নারীই এ দেশে বেশি। তারা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তারাই বেশি নির্যাতন, অনাচারের শিকার। নারীরা উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত হচ্ছে। প্রশাসন, পুলিশ, বিচারব্যবস্থা, বিমান চালনা, সেনাবাহিনীসহ সব ক্ষেত্রে নারীরা যেমন ব্যাপকভাবে অংশ নিচ্ছে, উচ্চ পদে আসীন হচ্ছে; অন্যদিকে নারী নির্যাতনও চলছে।
ঘরে-বাইরে নারীরা প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ব্যাপকভাবে ঘটছে ইভটিজিং। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তা করার পর গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে এনেছে একদল লোক। তাদের বলা হচ্ছে ‘তৌহিদি জনতা’। তারা শুধু ছাড়িয়েই আনেনি, তাকে আকণ্ঠ মালা, মাথায় পাগড়ি পরিয়ে, বুকে পবিত্র কোরআন শরিফ দিয়ে প্রকাশ্যে এনেছে। ধিক্ ধিক্।
মাগুরায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণ করেছে তিনজন মিলে। শিশুটি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ফুঁসে উঠেছে সারা দেশ। দেশব্যাপী চলছে আন্দোলন। ধর্ষকদের প্রকাশ্য বিচারের দাবিতে চলমান এ আন্দোলন। মিছিলে স্লোগান উঠেছে— ‘তুমি কে, আমি কে/ আছিয়া আছিয়া’। ধর্ষণের মাত্রা বেড়ে গেছে অবিশ্বাস্যরকম। বিশেষ করে শিশু ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ চলছে লাগাতার।
অভিভাবকরা আজকাল তাদের নারী শিশু নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত। একসঙ্গে মা-মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনাও ঘটছে। এমনকি মেয়েকে ধর্ষণ করেছে বাবা— এমন ঘটনার কথাও শোনা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করি।
ভ্রাম্যমাণ আদালত আরও সক্রিয় করা দরকার। ইভটিজিং ও ধর্ষণের মূল উৎস নগ্ন ছবি ও মোবাইল। মোবাইলে অশ্লীল গান ও অশ্লীল ছবি লোড করে এক ধরনের বিকৃত রুচির মানুষ। তারা সে গান শোনে, আর ছবি দেখে উত্তেজিত হয়। এ বিষয়ে কঠোর আইন করা দরকার। কেউ মোবাইলে অশ্লীল ছবি লোড করলে তার উঁচু পর্যায়ের জরিমানা শুধু নয়, জেলের বিধান রাখা প্রয়োজন।
নারী নির্যাতন রোধের বিষয়টি কেবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ছেড়ে না দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় এর বিরুদ্ধে টিম গড়ে তোলা দরকার। সেই টিমে প্রগতিশীল ছেলেমেয়েদের সঙ্গে থাকবেন সমাজ কর্মী আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক। থানা-পুলিশ ফাঁড়ি থেকে শুরু করে সব জায়গার জরুরি নম্বর পাড়া-মহল্লার রাস্তার মোড়ে মোড়ে ডিসপ্লে করতে হবে।
নিয়মিতভাবে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। ধর্ষণবিরোধী র্যালি করতে হবে। ইভটিজিং বা ধর্ষণ করে যারা ধরা পড়বে, তাদের বায়োডাটা থানায় ডিসপ্লে করতে হবে। থানাগুলোতে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণবিরোধী অপরাধ সেল গড়ে তুলতে হবে। ধর্ষককে ধরতে পালে দ্রুততম সময়ে তার সর্বোচ্চ সাজা কার্যকর করত হবে।
আরও কথা আছে। অনেক পরিবার এখনো নারীকে চাকরি করতে দিতে চান না। এই প্রবণতা ছাড়তে হবে। হাতে অর্থ না থাকলে ক্ষমতায়ন হয় না, সমঅধিকার হয় না, ন্যায্যতা হয় না। নারীর হাতে অর্থ থাকতে হবে, পরিবারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তার মতামতের গুরুত্ব থাকতে হবে। তবেই আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন যৌক্তিক। নইলে নারীকে ঘরে বসিয়ে রাখা আর ধর্ষণ করার পর ঘটা করে নারী দিবস পালনের কোনো মানে হয় না।
লেখক: কথাশিল্পী, গবেষক
৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিনটি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। পালিত হয় নারীর সমঅধিকার, নারীর প্রতি ন্যায্যতার দাবিতে। এবারও মহাসমারোহে পালিত হয়েছে।
এই দিনটি পালনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। নিউইয়র্কের রাস্তায় মিছিল নিয়ে নামেন তারা। সেই মিছিলে সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী দমন-পীড়ন চালায়।
সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয় ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। সম্মেলনটি হয় নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে। জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন সম্মেলনে নেতৃত্ব দেন। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ, জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন।
১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব করেন। সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে নারীদের সমঅধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরাও। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে থাকে।
বাংলাদেশেও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার লাভের আগে থেকেই এই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। পরে ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবীতেই যথাযথ মর্যাদায় দিনটি পালিত হচ্ছে নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে।
স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, নারী দিবস মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তের চিত্ত বিনোদনের দিবস নয়। শ্রমিকের রক্তে ঘামে কেনা একটি দিন। এ দিনটি পহেলা ফাল্গুন, নববর্ষ বা ঈদের দিন নয়। এ বোধটুকু থাকা দরকার। এ বোধ কারও আছে বলে মনে হয় না।
একেবারে ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে এবার এসেছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দেশে এখন অন্তবর্তীকালীন সরকার। সে সরকারের সাত মাস হতে চলল। আগে আমরা কথায় কথায় বলতাম, বাংলাদেশের নারীরা ভালো আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পিকার, সংসদ নেতা সব নারী। আমরা হিসাব দিয়ে বলতাম— এতজন নারী ডিসি, এতজন নারী এসপি আছেন ইত্যাদি ইত্যাদি।
এখন দেশে নারী প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পিকার, সংসদ নেতা কেউই নেই। তবে যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়েছে, সেখানে চারজন নারী আছেন। এই সরকার আসার পর যেমন অনেক কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে, তেমনই বেশ কয়েকজন নারী সচিবও হয়েছেন— এটাই আশার কথা।
নারী আন্দোলনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া নারী জাগরণের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘তোমাদের কন্যাগুলিকে শিক্ষা দিয়া ছাড়িয়া দাও, নিজেরাই নিজেদের অন্নের সংস্থান করুক।’ তার এই আহ্বানে নারীর অধিকার অর্জনের পন্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে এ দেশে নারী জাগরণে সাড়া পড়েছিল শিক্ষা গ্রহণকে কেন্দ্র করে। তাছাড়া ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নারী তার অধিকার আদায়ে সচেতন হয়ে ওঠে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নারীর অসামান্য অবদান তাদেরকে আত্মপ্রত্যয়ী করে তোলে। নারীরা সোচ্চার হয়ে ওঠে অধিকার আদায়ে, জুলাই আন্দোলনেরও পিছিয়ে ছিল না নারী।
আজকের নারী তার অধিকার সুরক্ষায় সচেষ্ট। রাষ্ট্র, অর্থনীতি, পরিবার ও সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করা এবং উন্নয়নের মূলধারায় নারীকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে আগের সরকারগুলো কম-বেশি কাজ করেছে। বর্তমান সরকারও করছে।
নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সিডো সনদ প্রণয়ন করে। ১৯৮১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর এই সনদ গৃহীত হয়। বাংলাদেশ ১৯৮৪ সালে চারটি ধারায় কতিপয় সংরক্ষণসহ এই সনদে অনুস্বাক্ষর করে। ১৯৯৬ সালে দুটি ধারা থেকে সংরক্ষণ তুলে নেওয়া হয়। এটাকে বলা হয় নারীর জন্য ‘আন্তর্জাতিক বিল অব রাইটস।’ বাংলাদেশ এই সনদে অনুস্বাক্ষরকারী প্রথম ১০টি দেশের অন্যতম।
এর আগে ১৯৭৫ সালে প্রথম বিশ্ব নারী সম্মেলনে বাংলাদেশ অংশ নেয়। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নারী অধিকার সংক্রান্ত সব কটি প্লাটফর্মে বাংলাদেশ অংশ নেয়। এভাবে বাংলাদেশ দেশের বাইরে নারী উন্নয়নের যে আন্দোলন চলছিল তার মূলধারায় যুক্ত হয়ে পড়ে।
শুধু আন্তর্জাতিক ফোরামে দলিল-দস্তাবেজে সই করে ক্ষান্ত হয়নি বাংলাদেশ, ১৯৯৭ ‘জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি’ প্রণয়ন করা হয়। যুগ যুগ ধরে নির্যাতনের শিকার ও অবহেলিত বৃহত্তর নারী সমাজের ভাগ্যোন্নয়নের লক্ষ্যে করা হয় এই নীতিমালা। নারী উন্নয়ন নীতিতে এ দেশের নারী সমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ আন্দোলনের প্রতিফলন ঘটে।
বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, ‘সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।’ তাছাড়া সংবিধানের ২৮(১), ২৮(২), ২৮(৩) ২৮(৪), ২৯(১), ২৯(২), ৬৫(৩) ও ৯ অনুচ্ছেদে সুনির্দিষ্টভাবে নারীর সমান অধিকার, প্রতিনিধিত্ব, অংশগ্রহণ ও মর্যাদার বিষয়টি নির্দিষ্ট করা আছে।
নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়ন ও নারীকে সার্বিক উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। তাছাড়া বিশ্বায়নের এই যুগে নারীকে সামষ্টিক অর্থনীতির মূলধারায় সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। প্রয়োজন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বলয়ের প্রসারের মধ্য দিয়ে হতদরিদ্র নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় নারী দারিদ্র্য বিমোচন, নারী নির্যাতন বন্ধ করা, নারী পাচার রোধ, কর্মক্ষেত্রসহ সব ক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা বিধান এবং আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডে নারীর পূর্ণ ও সমঅধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। দরিদ্র নারীদের জন্য চালু করা হয়েছে বিধবা ও দুঃস্থ ভাতা।
এ ছাড়াও চালু আছে মাতৃত্বকালীন ভাতা। শহরাঞ্চলে কর্মজীবী নারীদের ল্যাকটেটিং মাদার ভাতা দেওয়া হয়। ঢাকা শহরের গার্মেন্টস কর্মীরা এই ভাতা পেয়ে থাকেন। বিত্তহীন নারীর দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির আওতায় খাদ্য নিরাপত্তা হিসেবে দরিদ্র নারীদের চাল বা আটা দেওয়া হয়।
দারিদ্র্য বিমোচন ঋণ প্রদান কর্মসূচির আওতায় নারীদের কৃষি, সেলাই, বুটিক, হস্তশিল্প, বিউটিফিকেশন, কম্পিউটার ও বিভিন্ন আয়বর্ধক বিষয়ে ব্যাপক প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ও বিনা জামানতে ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়।
নারীর অধিকার সংরক্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে প্রণীত হয়েছে বেশ কিছু আইন। কিছু প্রচলিত আইনের সংশোধনও করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— যৌতুক নিরোধ আইন, বাল্যবিবাহ রোধ আইন, নারী নির্যাতন ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইন, নাগরিকত্ব আইন (সংশোধিত) ২০০৯, ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন ২০০৯, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন) ২০১০।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের আওতায় খোলা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার হেল্প লাইন। দেশের যেকোনো স্থান থেকে যেকোনো সময় এই লাইনে নারী সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ করা যায় বা যেকোনো সমস্যার সমাধান চেয়ে কল করা যায়।
তারপরেও অস্বীকার করার উপায় নেই, নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কারণ সমাজের একটি শ্রেণির নারীদের দেখে সমগ্র সমাজের বিচার হয় না। প্রান্তিক নারীই এ দেশে বেশি। তারা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তারাই বেশি নির্যাতন, অনাচারের শিকার। নারীরা উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত হচ্ছে। প্রশাসন, পুলিশ, বিচারব্যবস্থা, বিমান চালনা, সেনাবাহিনীসহ সব ক্ষেত্রে নারীরা যেমন ব্যাপকভাবে অংশ নিচ্ছে, উচ্চ পদে আসীন হচ্ছে; অন্যদিকে নারী নির্যাতনও চলছে।
ঘরে-বাইরে নারীরা প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ব্যাপকভাবে ঘটছে ইভটিজিং। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তা করার পর গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে এনেছে একদল লোক। তাদের বলা হচ্ছে ‘তৌহিদি জনতা’। তারা শুধু ছাড়িয়েই আনেনি, তাকে আকণ্ঠ মালা, মাথায় পাগড়ি পরিয়ে, বুকে পবিত্র কোরআন শরিফ দিয়ে প্রকাশ্যে এনেছে। ধিক্ ধিক্।
মাগুরায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণ করেছে তিনজন মিলে। শিশুটি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ফুঁসে উঠেছে সারা দেশ। দেশব্যাপী চলছে আন্দোলন। ধর্ষকদের প্রকাশ্য বিচারের দাবিতে চলমান এ আন্দোলন। মিছিলে স্লোগান উঠেছে— ‘তুমি কে, আমি কে/ আছিয়া আছিয়া’। ধর্ষণের মাত্রা বেড়ে গেছে অবিশ্বাস্যরকম। বিশেষ করে শিশু ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ চলছে লাগাতার।
অভিভাবকরা আজকাল তাদের নারী শিশু নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত। একসঙ্গে মা-মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনাও ঘটছে। এমনকি মেয়েকে ধর্ষণ করেছে বাবা— এমন ঘটনার কথাও শোনা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করি।
ভ্রাম্যমাণ আদালত আরও সক্রিয় করা দরকার। ইভটিজিং ও ধর্ষণের মূল উৎস নগ্ন ছবি ও মোবাইল। মোবাইলে অশ্লীল গান ও অশ্লীল ছবি লোড করে এক ধরনের বিকৃত রুচির মানুষ। তারা সে গান শোনে, আর ছবি দেখে উত্তেজিত হয়। এ বিষয়ে কঠোর আইন করা দরকার। কেউ মোবাইলে অশ্লীল ছবি লোড করলে তার উঁচু পর্যায়ের জরিমানা শুধু নয়, জেলের বিধান রাখা প্রয়োজন।
নারী নির্যাতন রোধের বিষয়টি কেবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ছেড়ে না দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় এর বিরুদ্ধে টিম গড়ে তোলা দরকার। সেই টিমে প্রগতিশীল ছেলেমেয়েদের সঙ্গে থাকবেন সমাজ কর্মী আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক। থানা-পুলিশ ফাঁড়ি থেকে শুরু করে সব জায়গার জরুরি নম্বর পাড়া-মহল্লার রাস্তার মোড়ে মোড়ে ডিসপ্লে করতে হবে।
নিয়মিতভাবে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। ধর্ষণবিরোধী র্যালি করতে হবে। ইভটিজিং বা ধর্ষণ করে যারা ধরা পড়বে, তাদের বায়োডাটা থানায় ডিসপ্লে করতে হবে। থানাগুলোতে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণবিরোধী অপরাধ সেল গড়ে তুলতে হবে। ধর্ষককে ধরতে পালে দ্রুততম সময়ে তার সর্বোচ্চ সাজা কার্যকর করত হবে।
আরও কথা আছে। অনেক পরিবার এখনো নারীকে চাকরি করতে দিতে চান না। এই প্রবণতা ছাড়তে হবে। হাতে অর্থ না থাকলে ক্ষমতায়ন হয় না, সমঅধিকার হয় না, ন্যায্যতা হয় না। নারীর হাতে অর্থ থাকতে হবে, পরিবারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তার মতামতের গুরুত্ব থাকতে হবে। তবেই আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন যৌক্তিক। নইলে নারীকে ঘরে বসিয়ে রাখা আর ধর্ষণ করার পর ঘটা করে নারী দিবস পালনের কোনো মানে হয় না।
লেখক: কথাশিল্পী, গবেষক
স্লোগান বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অবিছ্ছেদ্য অংশ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে স্লোগানের ব্যবহার ছিল। “ব্রিটিশ হটাও, দেশ বাঁচাও”; “বিদেশি পণ্য বর্জন করো, দেশি পণ্য ব্যবহার করো”; “তুমি আমি স্বদেশি, স্বদেশি স্বদেশি” “আমরা লড়ব, আমরা জিতব” ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে এরূপ অনেক স্লোগানই রাজনৈতিক সচেতন
৪ দিন আগে২২ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ নিয়ে একটি প্রস্তাবনা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে । তাতে প্রধান শিক্ষকরা আগে কত টাকা বেতন ও ভাতা পেতেন, আর দশম গ্রেড বাস্তবায়ন হলে কত পাবেন—তা নিয়ে পরিপূর্ণ হিসাব রয়েছে ।
৫ দিন আগেভিওজিএসএস হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদ্বেগ, স্বার্থ ও অগ্রাধিকারসমূহের বিষয়ে আলোচনা করা, ধারণা ও সমাধান বিনিময় করা, এবং উন্নয়ন সমাধান বিনির্মাণে কণ্ঠ ও উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য একটি অভিন্ন মঞ্চ প্রদানের লক্ষ্যে ভারতের প্রচেষ্টা।
৫ দিন আগেবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকেই খাজা সলিমুল্লাহ, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, আল্লামা ইকবাল, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ অনুধাবন করেন যে, ভারতবর্ষ স্বাধীন হলে মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমির প্রয়োজন হবে। অন্যথায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির মধ্যে গৃহযুদ্ধ লেগেই থাকবে। রা
৯ দিন আগে