দীপক দেব
চলতি বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করার অঙ্গীকার অসংখ্যবার প্রকাশ করেছে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ন্যূনতম সংস্কার শেষ করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি।
প্রশ্ন উঠছে—দলগতভাবে শক্ত ও সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা রাজনৈতিক দল বিএনপি কেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে অনড়? যেখানে নির্বাচন হলে আগামীতে দলটির ক্ষমতায় আসার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত, সেখানে দলটির নেতারা কেন নির্বাচন নিয়ে বারবার ষড়যন্ত্রের কথা তুলছেন।
তবে বিএনপি নেতাদের এসব বক্তব্য ‘জাস্টিফাইড’ মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী। তিনি রাজনীতি ডটকমকে বলেন, কারণ নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের অস্পষ্টতা আছে, সেকারণেই ষড়যন্ত্রের কথা আসছে।
‘এখনও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নাই। কোনও সময় বলে ডিসেম্বরে, কোনও সময় বলে ফেব্রুয়ারি, আবার বলে জুন মাসে। একটা ফিক্সড ডেট বলবে যে অমুক মাসে নির্বাচন—এমন কোনও রোডম্যাপ তো এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কাজেই একটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে,’ বলেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।
‘তারা বলেছিল এই সরকার সংস্কার করে এবং বিচার করে নির্বাচন দিয়ে দিবে। তো নয় মাস তো কেটে গেছে—এ নয় মাসে তো সংস্কারের কোন অগ্রগতি দেখি না, বিচারের তেমন অগ্রগতি দেখি না,’ যোগ করেন তিনি।
রাজনীতি সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে আছে বিএনপি। এছাড়া প্রশাসন থেকে শুরু করে মাঠের রাজনীতিতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিতে খুব বেশি সময়ক্ষেপণ করেনি দলটি। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর স্বাভাবিকভাবেই মাঠ প্রশাসনের উপর দলটির অঘোষিত কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের বিষয়গুলো ফলাও করে উঠে আসছে। কেন্দ্র থেকে এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেও থামানো যাচ্ছে না তৃণমূলের এক শ্রেণির নেতাকর্মীদের। এতে করে দলগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিএনপির ভাবমূর্তি। তাই কালক্ষেপণ না করে দ্রুত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে কঠোরতার মাধ্যমে সমাধান খুঁজছে দলটির হাইকমান্ড। এজন্য বিএনপি শীর্ষ নেতারা মনে করছেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বড় ধরনের বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি দলীয় নিয়ন্ত্রণের রাশ টেনে ধরা সম্ভব হবে।
কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দলের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই মূলত বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ। তিনি রাজনীতি ডটকমকে বলেন, দলটির অনেকেই দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে অনেক ধরনের অপকর্মের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে। এই অবস্থার কারণে দলের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনের ওপর দ্রুত জোর দিচ্ছে। বিএনপির একাংশ মনে করছে ক্ষমতায় গেলে দলের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা অনেক সহজ হবে।
প্রবীণ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এলাহী নেওয়াজ খান সাজু রাজনীতি ডটকমকে বলেন, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যত বেশি সময় লাগবে, তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিএনপি। নির্বাচন যখনই হোক, শেষ পর্যন্ত হয়তো ক্ষমতায় আসবে বিএনপি। কিন্তু কিছু নেতাকর্মীর অপকীর্তির জন্য দলের ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষুণ্ন হয়েছে। যদিও বিএনপি ওইসব অপকীর্তির জন্য তিন হাজারের অধিক নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। তবুও কোথাও যেন একটা সংকট রয়ে গেছে। এজন্য দলের আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয় যেমন দায়ী, তেমনি বাইরের বিভিন্ন শক্তির ইন্ধন রয়েছে, যারা বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়া থেকে সুবিধা পেতে চায়।
ডিসেম্বরের পর নির্বাচন: যেসব সমস্যা দেখছে বিএনপি
বিএনপি নির্বাচনের জন্য তাগিদ দিলেও গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রনেতাদের হাত ধরে গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সংস্কার ও আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন প্রশ্নে অনড় অবস্থানে রয়েছে।
এছাড়া সংবিধান সংস্কার, গণপরিষদ গঠন করে সংবিধান পুনঃলিখনের মতো দীর্ঘমেয়াদি জটিল দাবিগুলোও বিএনপির সংশয় আরও ঘনিভুত করে তুলছে। বিএনপি নেতারা এসব দাবিকে নির্বাচন প্রলম্বিত করার কৌশল হিসেবে দেখছেন।
ডিসেম্বরে নির্বাচনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বিএনপি নেতারা বলে আসছেন—প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যেসব সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেগুলোই কার্যকর হবে। যে সংস্কারগুলোর বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেটা তো ১৫-২০ দিন বা এক মাসের মধ্যে করে ফেলা সম্ভব। এরপর ঐকমত্য হলে সনদে সিগনেচার করতে সময় লাগবে না। সুতরাং নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়ার কোনো কারণ নেই।
এনসিপি ও জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপি নেতারা বলছেন, কিছু কিছু নতুন রাজনৈতিক দল এবং পুরনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যে নির্বাচন বিলম্বিত করার ইঙ্গিত লক্ষ্য করা যায়। সরকারের বক্তব্য এবং তাদের কথা ও কর্মকাণ্ড—সবকিছু বিবেচনা করলে দেখা যায় নির্বাচন নিয়ে একটা অনিশ্চিত পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য কল্যাণকর নয়।
বিএনপি নেতারা মনে করছেন—ডিসেম্বর বা জানুয়ারির পরের মাসগুলোতে রমজান, ঈদ কিংবা বর্ষা মৌসুমে নির্বাচন অনুষ্ঠান কতটা সম্ভব, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে।
এছাড়া নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে পিছিয়ে গেলে আরও কিছু জটিলতা দেখছেন দলটির নেতারা। কারণ আগামী বছর রমজান চলবে মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত। এরপর কয়েকদিন ঈদুল ফিতরের ছুটি। এপ্রিল মাসে আসবে এসএসসি পরীক্ষা। ভোট গ্রহণের জন্য তখন স্কুল ও শিক্ষকদের পাওয়া কঠিন হবে।
এপ্রিলের পর মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে কোরবানি ঈদ ও হাটকেন্দ্রিক ব্যস্ততা। ফলে এই সময়ের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত টানা যে দুই থেকে তিন মাসের সময় প্রয়োজন হবে, সেট বের করা সম্ভব নয়। এমন বাস্তবতায় নতুন বছরের শুরুতেই ভোট না হলে পরে সেটা আরও বিলম্বিত হয়ে জুনের পরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।
গত ১০ মে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেউ যেন ভোটের অধিকার কুক্ষিগত করার ষড়যন্ত্র করতে না পারে, সেজন্য জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
সরকারের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সফল দেখতে চায়। তবে এখানে একটি কথা রয়ে গেছে। সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণের কাছে যাতে স্বচ্ছ ধারণা থাকে, এই কারণে বিএনপি প্রথম থেকে এই সরকারের কাছে তাদের একটি কর্মপরিকল্পনা-পথনকশা ঘোষণার আহ্বান বারবার জানিয়ে আসছে।
বিএনপির বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার যে যুক্তিটা আমরা এরই মধ্যে বলে দিয়েছি। আমরা আসলে এখন জানতে চাই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হওয়ার যুক্তিগুলো কি। কেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা যাবে না, এটাই আমাদের প্রশ্ন। এর পেছনে কোনও যুক্তি আছে কি? ‘
সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সংস্কারের জন্য ঐকমত্য কমিশনের প্রধান বলেছেন, মে মাসের মাঝামাঝি বিষয়গুলো চূড়ান্ত করে ফেলবেন। তাহলে কাজটা শেষ করতে কয়দিন লাগবে? তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে সমস্যা কোথায়?
কী করবে বিএনপি?
নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ না আসলে বিএনপির পরবর্তী অবস্থান নিয়ে এখনই কিছু বলতে চান না দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তবে এই নেতা বলেন, ‘আমাদের যুবদল ছাত্রদল, স্বচ্ছাসেবক দল যৌথভাবে কর্মসূচি পালন করছে। আমাদের জেলা ও মহানগর গুলোতেও কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আগামীতেও জনগণের স্বার্থে বিএনপি যখন যে কর্মসূচি পালন করার দরকার তা করবে।’
দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য সুস্পষ্ট কিছু না বললেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজপথে আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, দেশের মানুষ ভোট দিতে উদগ্রীব। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছি নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে। কারণ, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে যেমন আন্দোলন হয়েছে, নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্যও তা হতে পারে, সেক্ষেত্রে বিব্রতকর পরিস্থিতি আবারও সৃষ্টি হতে পারে।
তবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি আদায়ে এখনই দলটি বড় ধরনের কোন আন্দোলনে যাবে বলে মনে করেন না ড. সাব্বির আহমেদ।
যা বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম রাজনীতি ডটকমকে বলেন, রাজনৈতিক দল রাজনৈতিকভাবে সুবিধা নিতে চাইবে। ধরেন বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ কিছু কিছু রাজনৈতিক দল সময় নিতে চাচ্ছে, কারণ সময় পেলে তাদের জন্য হোমওয়ার্ক করা ও দল গোছাতে সুবিধা হবে। সেজন্যই হয়তো বিএনপি নির্বাচন নিয়ে সংশয় দেখছে। তিনি বলেন, এখানে একটা স্বার্থের সংঘাত আছে, যেকারণে বিএনপি চাইছে দ্রুত নির্বাচন, আর এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামিসহ কেউ কেউ চাচ্ছে নির্বাচন বিলম্বিত হোক।
অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, আবার নতুন দল এনসিপির পক্ষ থেকে গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান পুনঃলিখনের বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, এমন সাংঘর্ষিক চিত্র থাকলে তো নির্বাচনই ঝুলে যাবে। নির্বাচন ঝুলে গেলে এবং গণপ্রতিনিধিত্ব সরকার না পেলে তা দেশের জন্য ভালো হবে না বলেও মনে করেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।
ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় বিএনপির মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
নির্বাচনের সঙ্গে তারেক রহমানের দেশে ফেরা
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিষয়টি এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। আগে বলা হয়েছিল সব মামলা এবং সাজা প্রত্যাহার হলেই তারেক জিয়া দেশে ফিরবেন। এখন বলা হচ্ছে, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেই তিনি দেশে ফিরতে পারেন।
তাই দলের কান্ডারিকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করতেও দ্রুত নির্বাচনের জোর দাবি করা হচ্ছে বিএনপির পক্ষ থেকে। ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, যদি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয় এবং নির্বাচন করা যায় তাহলে তারেক জিয়া দেশে ফিরবেন।
আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজপথে আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, দেশের মানুষ ভোট দিতে উদগ্রীব। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছি নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে। কারণ, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে যেমন আন্দোলন হয়েছে, নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্যও তা হতে পারে, সেক্ষেত্রে বিব্রতকর পরিস্থিতি আবারও সৃষ্টি হতে পারে।
তবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি আদায়ে এখনই দলটি বড় ধরনের কোন আন্দোলনে যাবে বলে মনে করেন না ড. সাব্বির আহমেদ।
চলতি বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করার অঙ্গীকার অসংখ্যবার প্রকাশ করেছে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ন্যূনতম সংস্কার শেষ করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি।
প্রশ্ন উঠছে—দলগতভাবে শক্ত ও সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা রাজনৈতিক দল বিএনপি কেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে অনড়? যেখানে নির্বাচন হলে আগামীতে দলটির ক্ষমতায় আসার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত, সেখানে দলটির নেতারা কেন নির্বাচন নিয়ে বারবার ষড়যন্ত্রের কথা তুলছেন।
তবে বিএনপি নেতাদের এসব বক্তব্য ‘জাস্টিফাইড’ মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী। তিনি রাজনীতি ডটকমকে বলেন, কারণ নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের অস্পষ্টতা আছে, সেকারণেই ষড়যন্ত্রের কথা আসছে।
‘এখনও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নাই। কোনও সময় বলে ডিসেম্বরে, কোনও সময় বলে ফেব্রুয়ারি, আবার বলে জুন মাসে। একটা ফিক্সড ডেট বলবে যে অমুক মাসে নির্বাচন—এমন কোনও রোডম্যাপ তো এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কাজেই একটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে,’ বলেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।
‘তারা বলেছিল এই সরকার সংস্কার করে এবং বিচার করে নির্বাচন দিয়ে দিবে। তো নয় মাস তো কেটে গেছে—এ নয় মাসে তো সংস্কারের কোন অগ্রগতি দেখি না, বিচারের তেমন অগ্রগতি দেখি না,’ যোগ করেন তিনি।
রাজনীতি সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে আছে বিএনপি। এছাড়া প্রশাসন থেকে শুরু করে মাঠের রাজনীতিতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিতে খুব বেশি সময়ক্ষেপণ করেনি দলটি। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর স্বাভাবিকভাবেই মাঠ প্রশাসনের উপর দলটির অঘোষিত কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের বিষয়গুলো ফলাও করে উঠে আসছে। কেন্দ্র থেকে এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেও থামানো যাচ্ছে না তৃণমূলের এক শ্রেণির নেতাকর্মীদের। এতে করে দলগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিএনপির ভাবমূর্তি। তাই কালক্ষেপণ না করে দ্রুত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে কঠোরতার মাধ্যমে সমাধান খুঁজছে দলটির হাইকমান্ড। এজন্য বিএনপি শীর্ষ নেতারা মনে করছেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বড় ধরনের বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি দলীয় নিয়ন্ত্রণের রাশ টেনে ধরা সম্ভব হবে।
কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দলের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই মূলত বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ। তিনি রাজনীতি ডটকমকে বলেন, দলটির অনেকেই দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে অনেক ধরনের অপকর্মের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে। এই অবস্থার কারণে দলের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনের ওপর দ্রুত জোর দিচ্ছে। বিএনপির একাংশ মনে করছে ক্ষমতায় গেলে দলের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা অনেক সহজ হবে।
প্রবীণ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এলাহী নেওয়াজ খান সাজু রাজনীতি ডটকমকে বলেন, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যত বেশি সময় লাগবে, তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিএনপি। নির্বাচন যখনই হোক, শেষ পর্যন্ত হয়তো ক্ষমতায় আসবে বিএনপি। কিন্তু কিছু নেতাকর্মীর অপকীর্তির জন্য দলের ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষুণ্ন হয়েছে। যদিও বিএনপি ওইসব অপকীর্তির জন্য তিন হাজারের অধিক নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। তবুও কোথাও যেন একটা সংকট রয়ে গেছে। এজন্য দলের আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয় যেমন দায়ী, তেমনি বাইরের বিভিন্ন শক্তির ইন্ধন রয়েছে, যারা বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়া থেকে সুবিধা পেতে চায়।
ডিসেম্বরের পর নির্বাচন: যেসব সমস্যা দেখছে বিএনপি
বিএনপি নির্বাচনের জন্য তাগিদ দিলেও গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রনেতাদের হাত ধরে গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সংস্কার ও আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন প্রশ্নে অনড় অবস্থানে রয়েছে।
এছাড়া সংবিধান সংস্কার, গণপরিষদ গঠন করে সংবিধান পুনঃলিখনের মতো দীর্ঘমেয়াদি জটিল দাবিগুলোও বিএনপির সংশয় আরও ঘনিভুত করে তুলছে। বিএনপি নেতারা এসব দাবিকে নির্বাচন প্রলম্বিত করার কৌশল হিসেবে দেখছেন।
ডিসেম্বরে নির্বাচনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বিএনপি নেতারা বলে আসছেন—প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যেসব সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেগুলোই কার্যকর হবে। যে সংস্কারগুলোর বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেটা তো ১৫-২০ দিন বা এক মাসের মধ্যে করে ফেলা সম্ভব। এরপর ঐকমত্য হলে সনদে সিগনেচার করতে সময় লাগবে না। সুতরাং নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়ার কোনো কারণ নেই।
এনসিপি ও জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপি নেতারা বলছেন, কিছু কিছু নতুন রাজনৈতিক দল এবং পুরনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যে নির্বাচন বিলম্বিত করার ইঙ্গিত লক্ষ্য করা যায়। সরকারের বক্তব্য এবং তাদের কথা ও কর্মকাণ্ড—সবকিছু বিবেচনা করলে দেখা যায় নির্বাচন নিয়ে একটা অনিশ্চিত পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য কল্যাণকর নয়।
বিএনপি নেতারা মনে করছেন—ডিসেম্বর বা জানুয়ারির পরের মাসগুলোতে রমজান, ঈদ কিংবা বর্ষা মৌসুমে নির্বাচন অনুষ্ঠান কতটা সম্ভব, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে।
এছাড়া নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে পিছিয়ে গেলে আরও কিছু জটিলতা দেখছেন দলটির নেতারা। কারণ আগামী বছর রমজান চলবে মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত। এরপর কয়েকদিন ঈদুল ফিতরের ছুটি। এপ্রিল মাসে আসবে এসএসসি পরীক্ষা। ভোট গ্রহণের জন্য তখন স্কুল ও শিক্ষকদের পাওয়া কঠিন হবে।
এপ্রিলের পর মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে কোরবানি ঈদ ও হাটকেন্দ্রিক ব্যস্ততা। ফলে এই সময়ের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত টানা যে দুই থেকে তিন মাসের সময় প্রয়োজন হবে, সেট বের করা সম্ভব নয়। এমন বাস্তবতায় নতুন বছরের শুরুতেই ভোট না হলে পরে সেটা আরও বিলম্বিত হয়ে জুনের পরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।
গত ১০ মে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেউ যেন ভোটের অধিকার কুক্ষিগত করার ষড়যন্ত্র করতে না পারে, সেজন্য জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
সরকারের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সফল দেখতে চায়। তবে এখানে একটি কথা রয়ে গেছে। সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণের কাছে যাতে স্বচ্ছ ধারণা থাকে, এই কারণে বিএনপি প্রথম থেকে এই সরকারের কাছে তাদের একটি কর্মপরিকল্পনা-পথনকশা ঘোষণার আহ্বান বারবার জানিয়ে আসছে।
বিএনপির বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার যে যুক্তিটা আমরা এরই মধ্যে বলে দিয়েছি। আমরা আসলে এখন জানতে চাই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হওয়ার যুক্তিগুলো কি। কেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা যাবে না, এটাই আমাদের প্রশ্ন। এর পেছনে কোনও যুক্তি আছে কি? ‘
সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সংস্কারের জন্য ঐকমত্য কমিশনের প্রধান বলেছেন, মে মাসের মাঝামাঝি বিষয়গুলো চূড়ান্ত করে ফেলবেন। তাহলে কাজটা শেষ করতে কয়দিন লাগবে? তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে সমস্যা কোথায়?
কী করবে বিএনপি?
নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ না আসলে বিএনপির পরবর্তী অবস্থান নিয়ে এখনই কিছু বলতে চান না দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তবে এই নেতা বলেন, ‘আমাদের যুবদল ছাত্রদল, স্বচ্ছাসেবক দল যৌথভাবে কর্মসূচি পালন করছে। আমাদের জেলা ও মহানগর গুলোতেও কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আগামীতেও জনগণের স্বার্থে বিএনপি যখন যে কর্মসূচি পালন করার দরকার তা করবে।’
দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য সুস্পষ্ট কিছু না বললেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজপথে আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, দেশের মানুষ ভোট দিতে উদগ্রীব। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছি নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে। কারণ, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে যেমন আন্দোলন হয়েছে, নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্যও তা হতে পারে, সেক্ষেত্রে বিব্রতকর পরিস্থিতি আবারও সৃষ্টি হতে পারে।
তবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি আদায়ে এখনই দলটি বড় ধরনের কোন আন্দোলনে যাবে বলে মনে করেন না ড. সাব্বির আহমেদ।
যা বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম রাজনীতি ডটকমকে বলেন, রাজনৈতিক দল রাজনৈতিকভাবে সুবিধা নিতে চাইবে। ধরেন বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ কিছু কিছু রাজনৈতিক দল সময় নিতে চাচ্ছে, কারণ সময় পেলে তাদের জন্য হোমওয়ার্ক করা ও দল গোছাতে সুবিধা হবে। সেজন্যই হয়তো বিএনপি নির্বাচন নিয়ে সংশয় দেখছে। তিনি বলেন, এখানে একটা স্বার্থের সংঘাত আছে, যেকারণে বিএনপি চাইছে দ্রুত নির্বাচন, আর এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামিসহ কেউ কেউ চাচ্ছে নির্বাচন বিলম্বিত হোক।
অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, আবার নতুন দল এনসিপির পক্ষ থেকে গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান পুনঃলিখনের বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে। তিনি বলেন, এমন সাংঘর্ষিক চিত্র থাকলে তো নির্বাচনই ঝুলে যাবে। নির্বাচন ঝুলে গেলে এবং গণপ্রতিনিধিত্ব সরকার না পেলে তা দেশের জন্য ভালো হবে না বলেও মনে করেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।
ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় বিএনপির মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
নির্বাচনের সঙ্গে তারেক রহমানের দেশে ফেরা
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিষয়টি এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। আগে বলা হয়েছিল সব মামলা এবং সাজা প্রত্যাহার হলেই তারেক জিয়া দেশে ফিরবেন। এখন বলা হচ্ছে, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেই তিনি দেশে ফিরতে পারেন।
তাই দলের কান্ডারিকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করতেও দ্রুত নির্বাচনের জোর দাবি করা হচ্ছে বিএনপির পক্ষ থেকে। ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, যদি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয় এবং নির্বাচন করা যায় তাহলে তারেক জিয়া দেশে ফিরবেন।
আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজপথে আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন, দেশের মানুষ ভোট দিতে উদগ্রীব। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছি নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে। কারণ, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে যেমন আন্দোলন হয়েছে, নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্যও তা হতে পারে, সেক্ষেত্রে বিব্রতকর পরিস্থিতি আবারও সৃষ্টি হতে পারে।
তবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি আদায়ে এখনই দলটি বড় ধরনের কোন আন্দোলনে যাবে বলে মনে করেন না ড. সাব্বির আহমেদ।
বিপুলসংখ্যক জামায়াত-শিবির, ডানপন্থি ও পাকিস্তানপন্থি মাহফুজকে ‘ধুয়ে’ দিয়েছে। তারা বলেছে, দেশটা মাহফুজের বাবার না। মাহফুজের নামে গরুর নামকরণ করে গরুটিকে কুরবানি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আরেক গ্রুপ।
৩ দিন আগেশনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একেবারে আচমকাই সামাজিক মাধ্যমে ঘোষণা করেন যে, ভারত ও পাকিস্তান চার দিন ধরে চলমান সীমান্ত সংঘর্ষের পর ‘সম্পূর্ণ এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’তে সম্মত হয়েছে। চলমান সংঘাতে এটা ছিল নাটকীয় একটা মোড়।
৩ দিন আগেআমার সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল শ্রদ্ধা, স্নেহ ও ভালোবাসার। বেতারে তিনি অনুষ্ঠানের পর আমার কাছে আসতেন। একান্ত অনেক কথা হতো ডিউটি রুমে। আমি তার কাছে বসে বসে সেই কথাগুলো প্রাণভরে শুনতাম। গান গেয়ে বেড়ে ওঠা, পরিবারের কথা, শিল্পী জীবনের কথা।
৫ দিন আগেযুদ্ধের বিভীষিকা মানব ইতিহাসের এক পুনরাবৃত্তিমূলক ট্র্যাজেডি। প্রায়ই রাজনৈতিক মতাদর্শ, আঞ্চলিক বিরোধ ও নিরাপত্তা উদ্বেগের নিরিখে একে ব্যাখ্যা করা হয়। তবে এই আখ্যানগুলোর গভীরে অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও নির্ভরশীলতার এক জটিল জাল বিস্তৃত। আধুনিক সংঘাত ও তাদের দীর্ঘস্থায়ী পরিণতিগুলোর একটি সামগ্রিক ধারণা লা
৫ দিন আগে