বিজ্ঞান

মহাশূন্য স্টেশনে যে কলম ব্যবহার করা হয়

অরুণ কুমার
মহাকাশে বিশেষ এক কলম ব্যবহার করেন নভোচারীরা


আমরা বলপেন দিয়ে লিখি, সেটা পেছনে মহাকর্ষ বলের ভূমিকা রয়েছে। শুনতে অবাক লাগলেও সেটা সত্যি। কিন্তু মহাকাশে কিংবা মহাশূন্য স্টেশনে বসে বিজ্ঞানীরা কীভাবে লেখেন? সেখানে তো মহাকর্ষীয় প্রভাব মোটামুটি শূন্য। আবার পেন্সিল দিয়ে লেখারও অসুবিধা আছে সেখানে?

তাহলে?

সেটা জানতে হলে, আগে আমাদের জানতে হবে কলম দিয়ে কীভাবে লেখালিখি করি।

সাধারণ বলপেনে তরল ঘন-আঠালো কালি ব্যবহার করা হয়। আর নিবের শেষ মাথায় থাকে ছোট্ট একটা ধাতব বল। নিব থেকে বেরুতে না পারলেও এক জায়গায় থেকে ঘুরতে পারে। ফলে বলের কারণে কালি সরাসরি বেরিয়ে পড়ে যেতে পারে না। নিবের বলে এসে ধাক্কা খায়। নিবের গায়ে মেখে যায় কালি। লেখার সময় বল কাগজের সঙ্গে ঘষা খেয়ে ঘুরতে থাকে। কালি মাখা দিকটা ঘুরে এসে কাগজে লেখা তৈরি হয়। একই সঙ্গে কালি মুছেও যায়। কিন্ত নিবের বল প্রতিনিয়ত ঘুরছে বলে কালি অনবরত কালিও মাখচে নিজের, তাই অনবরত লেখা হচ্ছে কাগজে।

অন্যদিকে ঝর্না কলমের নিবে এরকম ঘুর্ণ্যমান বল থাকে না। কিন্তু নিবে মাথায় অ্যাডজস্ট করা বল থাকে। তাপরেও গড়িয়ে পড়ে না, তার কারণ নিবের রাবার প্যাড। এটা কালি ছড়িয়ে পড়তে বাধা দেয়। কিন্তু সবসময় ভেজা সপসপে অবস্থায় থাকে। তাই নিব ঘসলেই লেখা হয়।

কিন্তু শুধু কালি আর কলম দিয়ে লেখা যায় না। লেখার জন্য দরকার হয় মহাকর্ষ বলের উপস্থিতি। মহাকর্ষ বল আছে বলেই কলমের কালি নিচের দিকে চলে আসার প্রবণতা দেখায়। মহাকর্ষ বল না থাকলে কলমের ওপরের দিকের কালি নিচের দিকের কালির ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারত না। যেখানকার কালি সেখানেই থেকে যেত।

মহাকাশে বিশেষ, করে মহাশূন্য স্টেশনে এমটাই ঘটে। সেখানে মহাশূন্য স্টেশন এমনভাবে ঘোরে পৃথিবীর মহাকর্ষ বলের প্রভাব এর ভেতরে থাকে না বললেই চলে। তাই সেখানকার বিজ্ঞানীরা লেখালেখির জন্য চাইলেও সাধারণ কলম ব্যবহার করতে পারেন না।

তাহলে তাঁরা লেখেন কীভাবে?

প্রথমে একটা সমাধান বের করেছিলেন, কিন্তু সেটা ছিল ভুল। কলমের বদলে পেন্সিল ব্যবহারের চেষ্টা করেছিলেন রুশ বিজ্ঞানীরা। পেন্সিল দিয়ে ঘষে সহজেই কাগজে লেখা সম্ভব, মহাকর্ষ বল এখানে দরকার হয় না। কিন্তু সমস্যটা ছিল অন্য জায়গায়। পেন্সিলের শিষ তৈরি হয় হয় গ্রাফাইট দিয়ে। লেখার সময় গ্রাফাইটের কণা ছড়িয়ে পড়ে মহাশূন্য স্টেশনের ভেতর। নভোচারীর নিশ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢুকে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। গ্রাফাইট আবার বিদ্যুৎ পরিবাহী। তাই এর কণা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ভেতর ঢুকে শট সার্কিট তৈরি করে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা দেখা দেখা দিতে পারে।

এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিশার কোম্পানি নভোচারীদের জন্য তৈরি করে এক বিশেষ কলম, ১৯৬৫ সালে। মহাকর্ষীয় চাপ যেহেতু ওখানে পাওয়া যাবে না, তাই কলমের ভেতরে নাইট্রোজেন গ্যাসের সাহায্যে বিশেষ চাপের ব্যবস্থা করা হয়। সেই ধরনের কলম এখনো মহাকাশে ব্যবহার করা হয়।

ফিশার কোম্পানি সেই কলম তৈরি করতে বিনিয়োগ করেছিল ১০ লাখ ডলার। এ কলম দিয়ে যেকোনো সমতলে যেকোনো কোণ থেকে লেখা সম্ভব। অত্যন্ত নিম্ন তাপমাত্রায় যেমন কাজ করতে পারে তেমিন ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপতাত্রাতেও এর কোনো ক্ষতি হয় না।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে চিঠি ইস্যুতে মুখ খুলছে না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

পররাষ্ট্র সচিব সিয়াম বলেন, এ সংবাদ সম্মেলন ও সংবাদ কর্মীদের সঙ্গে যে আলাপ চলছে, তা সম্পূর্ণই ভুটান সফরসংক্রান্ত। এর বাইরে অন্য কোনো বিষয়ে আলোচনা করা অসৌজন্যমূলক হবে। আমি আশা করি আপনারা বিষয়টি বুঝবেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বও দ্বিপাক্ষিক সফরেই সীমাবদ্ধ রাখবেন।

৪ ঘণ্টা আগে

হাসিনা-কামালকে ফেরাতে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে সরকার

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার ভারতকে চিঠি পাঠাবে। সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এই তথ্য জানিয়েছেন।

৬ ঘণ্টা আগে

সাকিব আল হাসানকে দুদকে তলব

শেয়ার বাজার সংক্রান্ত মামলার আসামি ক্রিকেটার ও মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে তাকে আগামী ২৬ নভেম্বর হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

৬ ঘণ্টা আগে

গণভোট আইন কবে, জানালেন আইন উপদেষ্টা

আগামী ৩ থেকে ৪ কার্যদিবসের মধ্যে গণভোট আইন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

৭ ঘণ্টা আগে