লালমনিরহাট প্রতিনিধি
নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তা ও ধরলা নদীর শতাধিক চরের মানুষের। রাতে পানি হু হু করে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভোরের আলো ফুটতেই কমতে থাকে। চরবাসীর অভিযোগ, ভারতের গজলডোবা বাঁধের কারসাজিতেই এ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে তাদের।
লালমনিরহাট জেলার দুই পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসছে তিস্তা ও ধরলা নদী। নদীপারের বাসিন্দারা বলছেন, উজানের পাহাড়ি ঢল ও রাতের ভারী বৃষ্টিপাতে দুটি নদীই উম্মাদের মতো আচরণ করছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেকর্ড অনুয়ায়ী, তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সকাল ৯টায় তা বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। দুপুর ১২টায় তা ৫ সেন্টিমিটার ও বিকেল ৩টায় ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে সন্ধ্যা ৬টার পর ভারতের গজলডোবা বাঁধ থেকে পানি ছাড়লে তিস্তা আবার বিপজ্জনক হয়ে উঠবে বলে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
মহিষখোচায়তিস্তা নদীর মধ্যচরের বাসিন্দা মোখলেছ উদ্দিন বলেন, রোববার দিবাগত রাতে দুই চোখের পাতা এক করতে পারিনি। সোমবার ভোরে হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি ভয়ংকরভাবে শোঁ শোঁ শব্দ করে প্রবাহিত হতে শুরু করে। অনেকের ঘরে পানি উঠে যায়। চরে চরে কান্নার রোল পড়ে যায়। মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
তিস্তায় পানি বাড়লে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। ছবি: রাজনীতি ডটকম
মোখলেস আরও বলেন, সকলে প্রাণ বাঁচাতে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেয় সবাই। তখন কেবল সকালের আলো ফোটার অপেক্ষা করছিলাম। সকালে যখন সবাই আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, এমন সময় পানি কমতে থাকে।
এলাকাবাসী বলছে, গজলডোবা ও তিস্তা ব্যারেজের পানি ছাড়ার খবর মাইকিং করে প্রচার করা হতো। এমনকি স্থানীয় রেডিও ও পত্রপত্রিকায় খবর প্রচার করা হতো। ২০১১ সালের পর তিস্তা ও ধরলা নদী নিয়ে ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি না হওয়ায় এখন আর ভারত সরকার আগে থেকে পানি ছাড়ার খবর দেয় না। এখন পানি ছাড়ার খবর প্রচারও করা হয় না, যা তাদের সমস্যায় ফেলেছে।
গোর্বধন গ্রামের মরিয়ম বেগম বলেন, আগে আমরা খবর পেতাম কবে পানি ছাড়বে। এখন কোনো খবর দেয় না। আগে খবর পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেত। এখন ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানো যায় না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, তিস্তা নদী নিয়ে এখন ভারতের সঙ্গে পানি চুক্তি নেই। আগে নিয়মিত বাংলাদেশ-ভারত জিআরসি বৈঠক হতো। এখন সে বৈঠকও বন্ধ। আমরা ইন্টারনেট, দেশি-বিদেশি ওয়েবসাইট ও ভারতের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে পানির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে যতটা পারি ব্যবস্থা নেই।
চরাঞ্চলের একজন স্কুলশিক্ষক জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড সকাল ৬টা, সকাল ৯টা, দুপুর ১২টা, বিকেল ৩টা ও সন্ধ্যা ৬টায় পানির রেকর্ড সরকারিভাবে পরিমাপ করে থাকে। সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে রাতের কোনো সময় পানি পরিমাপ করে না। ভারতের গজলডোবা কর্তৃপক্ষ এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে থাকে। রাতে হু হু করে পানি ছাড়ে। পরিমাপ করায় না তা বোঝা যায় না। রেকর্ড না থাকায় প্রতিবাদ করা যায় না। কষ্ট পায় চরবাসী।
খরস্রোতা তিস্তায় পানি কমতে ছয় থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। এলাকাবাসী বলছেন, পানি কুড়িগ্রামে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে পড়ে। কিন্তু এরই মধ্যে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা ও নীলফামারীর বিস্তীর্ণ অঞ্চলের দুই কূলের ঘরবাড়ি, ফসল, গাছপালা ভাসিয়ে নিয়ে যায়। যখন ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি কমতে থাকে, তখন আবার দেখা দেয় ভয়াবহ নদীভাঙন।
এলাকাবাসী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য বলছে, নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে তিস্তা ও ধরলা পাড়ের কয়েক শ পরিবার। এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে হাতীবান্ধা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক বসতভিটা। সদর উপজেলার মোগলহাটের ফলিমারী চরে ধরলা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা ও বাড়িঘর। হুমকির মুখে রয়েছে বিদ্যালয়, মসজিদ ও মাদরাসা।
শুকনো মৌসুমে তিস্তা নদী শুকিয়ে যায়। চওড়ায় খালের আকারে নেমে আসে। বর্ষায় তা ১২ থেকে ১৪ কিলোমিটার প্রশস্ত হয়ে ওঠে জায়গায় জায়গায়। একই অবস্থা ধরলা নদীরও।
তিস্তা ও ধরলায় পানি বাড়লে অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটতে শুরু করেছেন। ছবি: রাজনীতি ডটকম
এখন হঠাৎ তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার সিন্দুর্না, ডাউয়া বাড়ি, পাটিকাপাড়া, বিছনদই, পারুলিয়া, শৈলমারীর চর, গড্ডিমারী, হলদিবাড়ি, মাঝেরচর, রাজপুর, খুনিয়াগাছ, মোগলহাট, মহিষখোচা, বারোঘরিয়ায় গঙ্গাচরা, দক্ষিণপারুলিয়া, ফলিমারীর চর, কুলাঘাটের টুনটুনির চরসহ শতাধিক চরের সবজি জাতীয় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নদী তীরবর্তী বাদম, মরিচ, ভুট্টা, ধানক্ষেত তলিয়ে গেছে।
এ ছাড়া প্রায় শতাধিক পরিবারের আশ্রয়স্থল বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। অনেকে নিঃস্ব হয়ে পথে বসে গেছে। এসব পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ছে। অনেকে বাঁধে রাস্তায় ও সরকারি জমি এবং স্কুলের মাঠে আশ্রায় নিয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে তিস্তা পাড়ের বেশ কয়েকটি স্থানের বাঁধের রাস্তা। তিস্তা নদী থেকে ড্রজিং মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে দিনরাত বালু তোলার কারণে কোথাও কোথাও পানির তোড়ে ধস নেমেছে।
হাতীবান্ধার গড্ডিমারীর তালেব মোড়ের ওয়াপদা বাঁধ ও হাতীবান্ধা বাইপাস সড়ক। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি কাজের অংশ হিসেবে স্পার বাঁধ ও চন্ডিমারী বাঁধ রক্ষায় জিও ব্যাগ ফেলছে। মহিষখোচা স্পার রক্ষায় কিছু বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। এসব কাজেও দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জেলা সদরের মোগলহাট সীমান্তে ধরলা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ভারতের কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে থাকা নগদটারি, জারিধরলার অনেকে বাংলাদেশের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। পানি বাড়লে প্রতিবছরই এমন অনেক ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়ে থাকেন। মানবিক কারণে দুই দেশের সীমান্ত বাহিনী থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন দেখেও যেন না দেখার ভান করে থাকে।
জানতে চাইলে পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকার কিছু কিছু জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। নদী দুটির গতিবিধি সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। তিস্তা নদী শাসন ছাড়া এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো উপায় এই মূহূর্তে নেই।
তিস্তা নদী মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে কাজ করছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, তিস্তা ব্যারেজ বাস্তবায়নের সময় বলা হয়েছিল, এই ব্যারেজ লালমনিরহাটের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেটা হয়নি, হয়েছে উলটোটা। তিস্তা ব্যারেজ লালমনিরহাট জেলার জন্য অভিশাপ বয়ে নিয়ে এসেছে। তাই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে লালমনিরহাটের স্বার্থ সবার আগে রক্ষা করতে হবে।
নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তা ও ধরলা নদীর শতাধিক চরের মানুষের। রাতে পানি হু হু করে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভোরের আলো ফুটতেই কমতে থাকে। চরবাসীর অভিযোগ, ভারতের গজলডোবা বাঁধের কারসাজিতেই এ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে তাদের।
লালমনিরহাট জেলার দুই পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসছে তিস্তা ও ধরলা নদী। নদীপারের বাসিন্দারা বলছেন, উজানের পাহাড়ি ঢল ও রাতের ভারী বৃষ্টিপাতে দুটি নদীই উম্মাদের মতো আচরণ করছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেকর্ড অনুয়ায়ী, তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সকাল ৯টায় তা বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। দুপুর ১২টায় তা ৫ সেন্টিমিটার ও বিকেল ৩টায় ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে সন্ধ্যা ৬টার পর ভারতের গজলডোবা বাঁধ থেকে পানি ছাড়লে তিস্তা আবার বিপজ্জনক হয়ে উঠবে বলে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
মহিষখোচায়তিস্তা নদীর মধ্যচরের বাসিন্দা মোখলেছ উদ্দিন বলেন, রোববার দিবাগত রাতে দুই চোখের পাতা এক করতে পারিনি। সোমবার ভোরে হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি ভয়ংকরভাবে শোঁ শোঁ শব্দ করে প্রবাহিত হতে শুরু করে। অনেকের ঘরে পানি উঠে যায়। চরে চরে কান্নার রোল পড়ে যায়। মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
তিস্তায় পানি বাড়লে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। ছবি: রাজনীতি ডটকম
মোখলেস আরও বলেন, সকলে প্রাণ বাঁচাতে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেয় সবাই। তখন কেবল সকালের আলো ফোটার অপেক্ষা করছিলাম। সকালে যখন সবাই আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, এমন সময় পানি কমতে থাকে।
এলাকাবাসী বলছে, গজলডোবা ও তিস্তা ব্যারেজের পানি ছাড়ার খবর মাইকিং করে প্রচার করা হতো। এমনকি স্থানীয় রেডিও ও পত্রপত্রিকায় খবর প্রচার করা হতো। ২০১১ সালের পর তিস্তা ও ধরলা নদী নিয়ে ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি না হওয়ায় এখন আর ভারত সরকার আগে থেকে পানি ছাড়ার খবর দেয় না। এখন পানি ছাড়ার খবর প্রচারও করা হয় না, যা তাদের সমস্যায় ফেলেছে।
গোর্বধন গ্রামের মরিয়ম বেগম বলেন, আগে আমরা খবর পেতাম কবে পানি ছাড়বে। এখন কোনো খবর দেয় না। আগে খবর পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেত। এখন ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানো যায় না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, তিস্তা নদী নিয়ে এখন ভারতের সঙ্গে পানি চুক্তি নেই। আগে নিয়মিত বাংলাদেশ-ভারত জিআরসি বৈঠক হতো। এখন সে বৈঠকও বন্ধ। আমরা ইন্টারনেট, দেশি-বিদেশি ওয়েবসাইট ও ভারতের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে পানির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে যতটা পারি ব্যবস্থা নেই।
চরাঞ্চলের একজন স্কুলশিক্ষক জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড সকাল ৬টা, সকাল ৯টা, দুপুর ১২টা, বিকেল ৩টা ও সন্ধ্যা ৬টায় পানির রেকর্ড সরকারিভাবে পরিমাপ করে থাকে। সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে রাতের কোনো সময় পানি পরিমাপ করে না। ভারতের গজলডোবা কর্তৃপক্ষ এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে থাকে। রাতে হু হু করে পানি ছাড়ে। পরিমাপ করায় না তা বোঝা যায় না। রেকর্ড না থাকায় প্রতিবাদ করা যায় না। কষ্ট পায় চরবাসী।
খরস্রোতা তিস্তায় পানি কমতে ছয় থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। এলাকাবাসী বলছেন, পানি কুড়িগ্রামে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে পড়ে। কিন্তু এরই মধ্যে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা ও নীলফামারীর বিস্তীর্ণ অঞ্চলের দুই কূলের ঘরবাড়ি, ফসল, গাছপালা ভাসিয়ে নিয়ে যায়। যখন ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি কমতে থাকে, তখন আবার দেখা দেয় ভয়াবহ নদীভাঙন।
এলাকাবাসী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য বলছে, নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে তিস্তা ও ধরলা পাড়ের কয়েক শ পরিবার। এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে হাতীবান্ধা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক বসতভিটা। সদর উপজেলার মোগলহাটের ফলিমারী চরে ধরলা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা ও বাড়িঘর। হুমকির মুখে রয়েছে বিদ্যালয়, মসজিদ ও মাদরাসা।
শুকনো মৌসুমে তিস্তা নদী শুকিয়ে যায়। চওড়ায় খালের আকারে নেমে আসে। বর্ষায় তা ১২ থেকে ১৪ কিলোমিটার প্রশস্ত হয়ে ওঠে জায়গায় জায়গায়। একই অবস্থা ধরলা নদীরও।
তিস্তা ও ধরলায় পানি বাড়লে অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটতে শুরু করেছেন। ছবি: রাজনীতি ডটকম
এখন হঠাৎ তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার সিন্দুর্না, ডাউয়া বাড়ি, পাটিকাপাড়া, বিছনদই, পারুলিয়া, শৈলমারীর চর, গড্ডিমারী, হলদিবাড়ি, মাঝেরচর, রাজপুর, খুনিয়াগাছ, মোগলহাট, মহিষখোচা, বারোঘরিয়ায় গঙ্গাচরা, দক্ষিণপারুলিয়া, ফলিমারীর চর, কুলাঘাটের টুনটুনির চরসহ শতাধিক চরের সবজি জাতীয় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নদী তীরবর্তী বাদম, মরিচ, ভুট্টা, ধানক্ষেত তলিয়ে গেছে।
এ ছাড়া প্রায় শতাধিক পরিবারের আশ্রয়স্থল বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। অনেকে নিঃস্ব হয়ে পথে বসে গেছে। এসব পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ছে। অনেকে বাঁধে রাস্তায় ও সরকারি জমি এবং স্কুলের মাঠে আশ্রায় নিয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে তিস্তা পাড়ের বেশ কয়েকটি স্থানের বাঁধের রাস্তা। তিস্তা নদী থেকে ড্রজিং মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে দিনরাত বালু তোলার কারণে কোথাও কোথাও পানির তোড়ে ধস নেমেছে।
হাতীবান্ধার গড্ডিমারীর তালেব মোড়ের ওয়াপদা বাঁধ ও হাতীবান্ধা বাইপাস সড়ক। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি কাজের অংশ হিসেবে স্পার বাঁধ ও চন্ডিমারী বাঁধ রক্ষায় জিও ব্যাগ ফেলছে। মহিষখোচা স্পার রক্ষায় কিছু বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। এসব কাজেও দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জেলা সদরের মোগলহাট সীমান্তে ধরলা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ভারতের কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে থাকা নগদটারি, জারিধরলার অনেকে বাংলাদেশের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। পানি বাড়লে প্রতিবছরই এমন অনেক ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়ে থাকেন। মানবিক কারণে দুই দেশের সীমান্ত বাহিনী থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন দেখেও যেন না দেখার ভান করে থাকে।
জানতে চাইলে পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকার কিছু কিছু জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। নদী দুটির গতিবিধি সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। তিস্তা নদী শাসন ছাড়া এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো উপায় এই মূহূর্তে নেই।
তিস্তা নদী মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে কাজ করছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, তিস্তা ব্যারেজ বাস্তবায়নের সময় বলা হয়েছিল, এই ব্যারেজ লালমনিরহাটের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেটা হয়নি, হয়েছে উলটোটা। তিস্তা ব্যারেজ লালমনিরহাট জেলার জন্য অভিশাপ বয়ে নিয়ে এসেছে। তাই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে লালমনিরহাটের স্বার্থ সবার আগে রক্ষা করতে হবে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ৪-৫দিন ধরে তুলশী রানী কোনো কথা বলছিলেন না। নাওয়া-খাওয়াও ছেড়ে দেন। সোমবার সকালে বাবুলালের মা পাতানি বালা তার কোলে শিশুটিকে দেন খাওয়ানোর জন্য। কয়েক মিনিট পর এসে দেখেন তার ছেলের বউ শিশুটিকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে বিছানায় রেখেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেআদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘দি সিলেট খাজাঞ্চিবাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ এর দুই শিক্ষক ও ভাইস প্রিন্সিপালকে বহিষ্কারকে কেন্দ্র করে দায়ের করা এক রিটের প্রেক্ষিতে এ নোটিশ জারি করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগেনিহত রাকিব মাতুব্বর চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাতুব্বরের ছেলে। একই এলাকার ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি তিনি। বর্তমানে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতিতে রাকিব যুক্ত ছিলেন বলেও জানা গেছে।
১৮ ঘণ্টা আগেরোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল থেকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে অডিটরিয়াম ও সামনের চত্বর।
১৮ ঘণ্টা আগে