মধুমাস জ্যৈষ্ঠের প্রথমদিনই রাজশাহীতে আম নামানো শুরু

রাজশাহী ব্যুরো

জেলা প্রশাসন ঘোষিত ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ অনুযায়ী বাংলা মাস জ্যৈষ্ঠের প্রথমদিনেই আজ বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহীতে গুটি-জাতীয় আম দিয়ে শুরু হয়েছে চলতি মৌসুমে আম নামানো ও বাজারজাতকরণ। আর এর মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে শুরু হলো বিশাল আমযজ্ঞ। গুটিজাতের এই আম অতটা মিষ্টি ও সুস্বাদু নয়। তাই ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা অপেক্ষায় আছেন গোপালভোগ, রানী পছন্দ, লক্ষণভোগ ও ক্ষিরসাপাতের জন্য। তবে পরিপক্ষ হওয়া সাপেক্ষে এগুলো নামানো ও বাজারজাতকরণে গত ৭ মে ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ ঘোষণা করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন।

‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার গুটি আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবারের আম সংগ্রহ কার্যক্রম। গোপালভোগ আম সংগ্রহ করা যাবে ২২ মে থেকে। লকনা বা লক্ষণভোগ ও রানীপছন্দ আম পাড়া যাবে ২৫ মে থেকে। এছাড়াও হিমসাগর ও খিরসাপাত ৩০ মে, ল্যাংড়া আম বা বানানা ম্যাংগো ১০ জুন, আম্রপালী বা ফজলি আম ১৫ জুন নামানোর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বারি-৪ আম ৫ জুলাই, আশ্বিনা আম ১০ জুলাই ও গৌড়মতি ১৫ জুলাই থেকে নামাতে পারবেন বাগান মালিকরা। এছাড়া কাটিমন ও বারি আম-১১ জাতের সারা বছর পাড়া যাবে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে রাজশাহীর বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই রাজশাহীর বিভিন্ন বাগানে আম পাড়ায় ব্যস্ত বাগানিরা। বাগানে গুটিজাতীয় আমগুলোর কিছু পেকে হলুদ হয়েছে। আবার কিছু কিছু সবুজে ধুষর রয়েছে। জাল ও লাঠিঝুরি নিয়ে আমের গাছিরা বাগান থেকে সেই আম নামান। প্রথম দিন বাগানগুলো থেকে নেমেছে সাগরিকা, চোষা বা চোরষা, বৈশাখী ও চাপড়া নামের গুটি আম। এই আমগুলো নামিয়ে খড় বিছানো নির্দিষ্ট স্থানে তা থরে থরে সাজানো হয়। পরে আমের কষ শুকিয়ে রাখা হয় ক্যারেটে। দুপুর গড়াতেই সেই ক্যারেটে করে আম পৌঁছে যায় স্থানীয় হাট-বাজারে। এ বছর মৌসুমের শুরতেই গুটিজাতের আম ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে পাইকারি বিক্রি হয়। আর খুচরা বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এই গুটিজাতের আম।

এ বছর আমের ফলন, রঙ-রূপ, ঘ্রাণ সবই ভালো, তবে দাম তুলনামূলক কম বলে জানান বাগানিরা। নগরের ক্যান্টনমেন্ট এলাকার আম বাগানি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কিছু উন্নত জাতের ব্র্যান্ডের বাইরে যত আম আছে সবই গুটি। এমন প্রায় ৩০০ রকমের আম আছে। এর কিছু কিছুর নাম আছে। আজ পাড়ছি সাগরিকা। আমাদের গুটি আম ইতিমধ্যে গাছে পেকে গেছে। গাছপাকা আম নামানো শুরু হয়েছে। এবার যে সময়টা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেটা খুব সুন্দরভাবে মিলে গেছে।’

পুঠিয়া উপজেলার আমচাষি আশিকুর রহমান জানান, 'এলাকার সব বাগানে গত বছরের তুলনায় এবার আমের ফলন ভালো। প্রথম দিন বাগান থেকে বড় আকারের গুটি আম ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। ছোট আমগুলোর দাম ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা মণ। গত বছরের তুলনায় এবার শুরুতেই আমের দাম কম।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) সালমা আক্তার জানান, রাজশাহীতে এ বছর আমের আবাদ হয়েছে ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে। এর থেকে আমের সম্ভাব্য গড় উৎপাদন ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ২৬ টন। আমের সম্ভাব্য মোট উৎপাদন ২ লাখ ৬০ হাজার ৬ টন। এ ছাড়া আমের সম্ভাব্য মোট বিক্রি ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৯৫ কোটি ৮৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬২০ টাকা।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার জানান, বৃহস্পতিবার থেকে সব ধরনের গুটি আম পাড়তে পারছেন চাষিরা। তবে যদি কোনো ধরনের দুর্যোগ হয়, সেক্ষেত্রে চাষিরা নিজ নিজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) অনুমতি নিয়ে গাছ থেকে নির্ধারিত সময়ের আগেও আম নামাতে পাড়বেন। জেলা প্রশাসনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে- রাজশাহীর বাগানগুলো থেকে পরিপক্ব ও নিরাপদ আম নামানো এবং বাজারজাতকরণ করা।

ad
ad

মাঠের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

সাপের কামড়ে প্রাণ গেল ইজিবাইকের চালকের

১ দিন আগে

হঠাৎ ঝড়ে ঘরবাড়ি-গাছপালা লণ্ডভণ্ড, পান বরজের ব্যাপক ক্ষতি

ঝড়ের কবলে পড়া এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঝড়ের পর গাছে চাপা পড়ে জাটিয়া ইউনিয়নের নিজতুলন্দর গ্রামের সুরুজ আলীর দুটি, নুরুল ইসলামের একটি, আব্দুর রহিমের দুটি, আবু সিদ্দিকের একটি ও ইদ্রিস আলীর দুটি এবং সোহাগী ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের রিপনের দুটি, শাহ্ নেওয়াজের একটি ও সিরাজুল ইসলামের একটি বসতঘর ভেঙে গেছে

১ দিন আগে

আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম এখন সিলেটের ডিসি

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা সারোয়ার আলমকে সিলেট জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদে বদলি ও পদায়ন করা হলো। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

২ দিন আগে

৩ দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ৪৩তম নন-ক্যাডারদের

প্রার্থীরা জানান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যুব উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিপুলসংখ্যক শূন্য পদ রয়েছে। অথচ সরকারি উদাসীনতার কারণে ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার সুপারিশপ্রাপ্তরা নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর ফলে দেশের সামগ্রিক প্রশাসনিক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে শূন্যপদ বাড়ছে, অন্যদি

২ দিন আগে