মেয়ের জিপিএ–৫ পাওয়ার খবরে বাড়িতে কান্নার রোল

রাজশাহী ব্যুরো

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছেন মোবাশ্বিরা ইসলাম মোহনা। রবিবার প্রকাশিত ফলাফলে কাঙ্ক্ষিত ফল পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে উঠলেও মোহনার বাড়িতে নেমেছে বিষাদ, পড়েছে কান্নার রোল-আহাজারি। কারণ পরীক্ষা দেওয়ার পরপরই জিবে একটি অস্ত্রোপচারের ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মেয়ের মৃত্যুর শোক ১ মাস ২২ দিনে অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছিল পরিবার। কিন্তু মৃত মেয়ের এমন সফলতা হৃদয়ের ক্ষত আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে ওই পরিবারে আবারও শুরু হয়েছে কান্না-আহাজারি।

মৃত মোবাশ্বিরা ইসলাম মোহনা রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নওটিকা গ্রামে স্কুলশিক্ষক মহিরুল ইসলামের মেয়ে। তিনি এবার উপজেলার নওটিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। পরীক্ষা শেষে জিবে একটি অস্ত্রোপচার করার পর তার মৃত্যু হয়।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন মোবাশ্বিরা ইসলাম মোহনার জিহ্বার নিচে ছোট সিস্ট লক্ষ্য করা যায়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সেই সিস্ট অপসারণে অস্ত্রোপচারের জন্য রাজশাহী নগরের আল আমিন নামে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। গত ২০ মার্চ সন্ধ্যার আগে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। পরে চেতনা ফিরে পেলে বাবা-মা ও স্বজনদের সাথে কথা বলেন। কিন্তু পরে এক নার্স এসে একটি ইনজেকশন দিলে আবারও অচেতন হয়ে পড়েন মোহনা। একপর্যায়ে পরিস্থিতির অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টা ১০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরে ২১ মার্চ বিকেলে জানাজা শেষে নওটিকা গ্রামে কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

দেড় মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়ায় মেয়ে হারানোর শোক অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছিল পরিবার। কিন্তু মৃত মেয়ের এমন সফলতায় হৃদয়ে নতুন ক্ষতের সৃষ্টি হওয়ায় আবারও কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোবাশ্বিরার বাবা মহিরুল ইসলাম বলেন, ভালো ফলাফল করে ভালো কলেজে ভর্তির স্বপ্ন ছিল আমার মেয়ের। সে লক্ষ্যে পড়ালেখা নিয়ে অনেক পরিশ্রমও করেছিল সে। ফলে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে সফলতার সাথে এসএসসি পাশও করলো। কিন্তু সে তার নিজের ফলাফল দেখে যেতে পারলো না।

তিনি আরও বলেন, অস্ত্রোপচার করতে যাওয়ার সময় মোহনা তার মাকে বলেছিল, ‘আমি রাজশাহী কলেজেই ভর্তি হব। আমার নম্বর ১ হাজার ২০০–এর ওপরেই থাকবে’। প্রত্যাশা মতো নম্বরও ১ হাজার ২০০–এর বেশিই পেল। কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়া তো দুর, নিজের ফলাফলও জানতে পারলো না মেয়েটা। তার অনেক আগেই চলে গেল না ফেরার দেশে।

এদিকে, মোহনার মা বিলাপ করে বলেন, আমার মেয়ে কলেজ দেখেই হাসপাতালে গেল। যাওয়ার আগে বলেছিল, ‘মা, আমি রাজশাহী কলেজেই ভর্তি হব।’ তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জিবের নিচে ছোট্ট একটি সিস্ট অস্ত্রোপচারে তার মৃত্যু হয়ে গেল।

ad
ad

মাঠের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

৩৬শে জুলাইয়ে টেবিলের নিচের রাজনীতির কবর রচনা হয়েছে: শিবির সভাপতি

রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রশিবির আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাদের কর্মকাণ্ড ও আদর্শিক অবস্থান কাছ থেকে দেখে সেই বিভ্রান্তি কাটিয়ে উঠছেন।

২ ঘণ্টা আগে

মৎস্য রপ্তানি নীতিমালা গ্রহণে সাহায্য করবে সরকার: মৎস্য উপদেষ্টা

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, রাজশাহীর চাষীরা বাংলাদেশের মৎস্য চাষে যুগান্তকারী পরিবর্তন করেছেন। বিদেশনির্ভর বড় আকারের রুই থেকে রাজশাহীর জীবন্ত রুইজাতীয় মাছ আজ দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়েছে। আজ সময় এসেছে বিদেশে রপ্তানি উপযোগী করার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি, নীতিমালা গ্রহণ করা। সর

৩ ঘণ্টা আগে

দিনাজপুরে বাসচাপায় একই পরিবারের ৪ জন নিহত

দিনাজপুর সদর উপজেলায় ইজিবাইক ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার দশমাইল সড়কের গম গবেষণা কেন্দ্রের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা সবাই ইজিবাইকের যাত্রী ছিলেন।

৩ ঘণ্টা আগে

কিশোরগঞ্জে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ ভাইয়ের মৃত্যু

ভোর সকালে বাড়ির পাশে গরুর জন্য খড় আনতে গিয়ে আগে থেকে পড়ে থাকা চিড়া বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয় বড় ভাই নুরু খান। তাকে বাঁচাতে দৌড়ে গেলে ছোট ভাই ফজলু খানও একই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে ঘটনাস্থলেই তাদের দুইজনের মৃত্যু হয়।

৬ ঘণ্টা আগে