সারদায় প্রশিক্ষণরত আরও ৫৮ এসআইকে অব্যাহতি

রাজশাহী ব্যুরো

রাজশাহীর চারঘাটে সারদা পুলিশ একাডেমিতে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণরত আরও ৫৮ জন এসআইকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। রোববার অব্যাহতিপত্র পেয়ে আজ সোমবার দুপুরে তারা একাডেমি থেকে চলে যান।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে ৪০তম ক্যাডেট ব্যাচে প্রশিক্ষণরত ৫৮ এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

এর আগে, গত ২২ অক্টোবর একই অভিযোগে ২৫২ জন উপ-পরিদর্শককে (এসআই) অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ৪০তম এসআই ব্যাচে মোট ৩১০ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। তার আগে, তাদের শোকজ করা হয়।

সারদা পুলিশ একাডেমি সূত্র জানায়, ২১ অক্টোবর ৪০তম এসআই ব্যাচের ১০ জন এসআইকে দ্বিতীয় দফায় শোকজ করা হয়। এরপর ২৪ অক্টোবর তৃতীয় দফায় আরও ৪৯ জনকে শোকজ করা হয়। তিনদিনের মধ্যে তাদের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস) মো. তারেক বিন রশিদ কারণ দর্শানোর নোটিশে সই করেন।

প্রশিক্ষণরত এক এসআইকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, ২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চেমনি মেমোরিয়াল হলে আইনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধারার ওপর প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের ক্লাস ছিল। প্রশিক্ষণ চলাকালে পরিদর্শক পদমর্যাদার চারজন প্রশিক্ষক দেখতে পান, সিটে বসার সময় ওই এসআই শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসে হইচই করে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। একজন প্রশিক্ষক বারবার শৃঙ্খলার সঙ্গে বসতে বললেও তিনি নির্দেশ অমান্য ও কর্ণপাত না করে বসা নিয়ে হইচই করতে থাকেন।

নোটিশে আরও বলা হয়, পাঠদান চলাকালে এই এসআইয়ের ক্লাসে কোনো মনোযোগ ছিল না এবং পাশাপাশি বসে কথা বলছিলেন। এজন্য একজন প্রশিক্ষক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একাডেমির অধ্যক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাই বিধি অনুযায়ী কেন তাকে চলমান মৌলিক প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না, তা কৈফিয়ত তলবনামা প্রাপ্তির পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে ওই এসআইকে দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এর আগে ২১ অক্টোবর ১০ এসআইকে দেওয়া কারণ দর্শানো নোটিশের একটি কপি পাওয়া গেছে। তাতে বলা হয়, ১৬ অক্টোবর জিমনেসিয়ামে ‘এক্সপেরিয়েন্স শেয়ারিং ইন অর্ডার টু ফেস পলিটিক্যাল এইমড’ বিষয়ে ক্লাস ছিল। সেদিন বিশেষ অতিথি বক্তা হিসেবে ছিলেন পুলিশ একাডেমির সাবেক অধ্যক্ষ মো. নজিবুর রহমান। সেদিন এসআই শৃঙ্খলার সঙ্গে না বসে এলোমেলোভাবে বসেন এবং হইচই করেন। তাকেও তিনদিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়।

এদিকে, প্রথম দফায় অব্যাহতি দেওয়া ২৫২ এসআইকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি প্যারেড মাঠে ১ অক্টোবর ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) প্রবেশনারস ব্যাচ–২০২৩–এর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুশীলন প্যারেড কার্যক্রম চলছিল। এ সময়ে পূর্বনির্ধারিত মেনু অনুযায়ী প্যারেডে অংশগ্রহণকারী সব প্রশিক্ষণার্থীর প্যারেড বিরতিতে সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়। কিন্তু প্রশিক্ষণরত ওই এসআইরা নাশতা না খেয়ে হইচই করে মাঠের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেন। তারা অন্যান্য প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের পরস্পর সংগঠিত করে একাডেমি কর্তৃপক্ষকে হেয়প্রতিপন্ন করে চরম বিশৃঙ্খলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন। এ ছাড়া তারা অন্যদের সঙ্গে হইচই করতে করতে নিজের খেয়াল-খুশিমতো প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যান। একজন প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআই হিসেবে এরূপ আচরণ এবং বিনা অনুমতিতে প্যারেড মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যাওয়া সম্পূর্ণভাবে শৃঙ্খলাপরিপন্থী। শৃঙ্খলাবিরোধী এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল পদ হিসেবে বিবেচিত সাব–ইন্সপেক্টর পদে কাজ করার পথে বড় ধরনের অন্তরায় ও অযোগ্যতার শামিল।

এ বিষয়ে জানতে পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ ও পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাসুদুর রহমান ভূঞাকে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে এ বিষয়ে পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) এনামুল হক সাগর বলেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে রাজশাহীর সারদায় প্রশিক্ষণরত আরও ৫৮ জন এসআইকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। রোববার তাদের অব্যাহতিপত্র দেওয়া হয়। সোমবার দুপুরে তাঁরা একাডেমি থেকে চলে যান।

উল্লেখ্য, ৪০ তম ব্যাচের আউটসাইডার ক্যাডেট হিসেবে সারদা পুলিশ একাডেমিতে মোট ৮০৪ জন প্রশিক্ষণরত ছিলেন। ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর এই ক্যাডেট এসআইদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কথা ছিল গতকাল সোমবার (৪ নভেম্বর)। কিন্তু শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার দিনেই অব্যাহতি পেলেন ৫৮ জন এসআই। এর আগে, প্রথম দফায় গত ২১ অক্টোবর একই অভিযোগে ২৫২ জন উপ-পরিদর্শককে (এসআই) অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ নিয়ে ৪০তম এসআই ব্যাচে মোট ৩১০ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

ad
ad

মাঠের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক হলেন তথ্য উপদেষ্টার বাবা

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাবা আজিজুর রহমান বাচ্চু।

১৬ ঘণ্টা আগে

আউশ আবাদ: কম খরচে ভালো ফলনে নান্দাইলের কৃষক খুশি

এ বছর নান্দাইলে আউশ ধানের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয়েছে। এবার ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে মাত্র ৮৫০ হেক্টর জমিতে। তবে ফলন ভালো হয়েছে, প্রতি হেক্টরে গড় ফলন ২.৮২ মেট্রিক টন।

১৮ ঘণ্টা আগে

এক মোটরসাইকেলে ৪ জন, প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নিহত ৩

২০ ঘণ্টা আগে

বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় কিশোরীকে কুপিয়ে জখম, গ্রেফতার ৩

১ দিন আগে