যুক্তরাষ্ট্র যৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ করবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ২০: ০২

বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র যৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

সোমবার (১৪ জুলাই) সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিনদিনের আলোচনা শেষে দেশে ফিরে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা উৎসাহব্যঞ্জক এবং যথেষ্ট এনগেজিং (সন্তুষ্টজনক) ছিল বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

তিনি বলেন, তিনদিন খুবই এনগেজ (ব্যস্ত) সময় কাটিয়েছি। দুই দেশের শুল্ক সমঝোতায় প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ জন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সুন্দর সুন্দর কিছু পরামর্শ আমরা পেয়েছি সেখানে। সেগুলো কাজে লাগাবো।

তবে সুনির্দিষ্ট কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বা কোন কোন বিষয়ে দুই দেশ একমত কিংবা দ্বিমত পোষণ করেছে- সাংবাদিকদের এসব প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা ‘নন-ডিসক্লোজেবল ইস্যু’ বলে অনেক বিষয় এড়িয়ে যান।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌক্তিক শুল্কহারের কথা বলা হচ্ছে, আসলে কত শতাংশ শুল্ককে যৌক্তিক মনে করছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘শূন্য’৷

১ আগস্ট থেকে পাল্টা শুল্ক পুনঃআরোপিত নাকি নতুন শুল্কহার পাওয়া যাবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা যৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ করবে। কারণ আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা করছে। ২০১৫ সাল থেকে শুল্ক-কর পরিশোধ করেই সেটা করছি। আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নিজস্ব সক্ষমতার ভিত্তিতে এ ব্যবসা করছে এবং তুলনামূলকভাবে আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈষম্যের শুল্ক না হলে আমরা সেটা করে যাবো।

চীনের সঙ্গে ব্যবসা নিরুৎসাহিত করতে যুক্তরাষ্ট্র কোনো শর্ত দিচ্ছে কি না- জানতে চাইলে উপদেষ্টা এর কোনো উত্তর দেননি। তিনি বলেন, আমরা নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট নিয়ে কোনো প্রশ্নের জবাব এখন দেবো না।

তিনি বলেন, তিনদিনের দ্বিতীয় রাউন্ডের বৈঠক শেষে আমরা এখন তৃতীয় রাউন্ডের বৈঠকের জন্য প্রস্তুতি নিতে ফিরে এসেছি। দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে আজ বৈঠক করেছি। এছাড়া কিছু আন্তঃমন্ত্রণালয়ে আলোচনার বিষয় রয়েছে। সেগুলো শেষ করে আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি আবারও আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যাবো।

‘আমরা আশা করছি, আমাদের যেন একটা ভালো আউটকাম আসে, সেজন্য সবাই মিলে চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ যোগ করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।

সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, সর্বশেষ তিনদিনের নেগোসিয়েশনে আমরা খুব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত হয়ে কাজ করেছি। আমরা খুব গুরুত্ব দিচ্ছি, যেন আমাদের বড় শুল্কের আঘাত না আসে। আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি।

গত ৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক পুনঃআরোপিত হয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সঙ্গে দুই দফা আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ৯-১১ জুলাই তিনদিনের বৈঠক হয়। এরপর রোববার যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে ফিরেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। সঙ্গে ছিল বাণিজ্য সচিবসহ একটি প্রতিনিধিদল।

অন্যদিকে সোমবার সংবাদ সম্মেলনের আগে দেশের ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ অ্যাগ্রিমেন্টের খসড়ার (সংযুক্ত সংযোজনীসহ) বিষয়ে আলোচনার হয়।

ওই বৈঠকে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. মাসরুর রিয়াজ, সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কম্পোনেন্ট ম্যানেজার ড. মোস্তফা আবিদ খান উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হাফিজুর রহমান, বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ঢাকা চেম্বার, মেট্রোপলিটন চেম্বার, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআই), লেদারগুডস ফুটওয়্যার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ব্যবসায়ীদের পক্ষে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, সরকার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে নেগোসিয়েশন করছে। আমরা সন্তুষ্ট।

বৈঠকে বাংলাদেশ–যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক ইস্যুতে ব্যবসায়ীদের নানান হতাশার কথা এতদিন বলা হয়েছে-সাংবাদিকদের এমন মন্তব্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এটা আগের হতাশা। এখন কোনো হতাশা নেই।

ad
ad

বিশ্ব রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

এনবিআরের আন্দোলন সরকারবিরোধীতে রূপ নেয়: জ্বালানি উপদেষ্টা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের আন্দোলন প্রথমে নিরপেক্ষ হলেও পরবর্তী সময়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

১ দিন আগে

যুক্তরাষ্ট্রের ৪০% মূল্য সংযোজন নিয়ে বিজিএমইএ সভাপতির উদ্বেগ

বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান (বাবু) বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৪০ শতাংশ স্থানীয় মূল্য সংযোজনের যে শর্ত প্রস্তাব করেছে, সেটি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

২ দিন আগে

ইসলামী ব্যাংক রাজশাহী জোনের অর্ধ-বার্ষিক ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মোঃ ওমর ফারুক খান সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ড. এম. কামাল উদ্দীন জসীম এবং এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আ ন ম সিদ্দিকুর রহমান।

২ দিন আগে

যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক আলোচনায় সুফল মেলেনি, আলোচনা চলবে

বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে নড়চড় হয়নি।

৩ দিন আগে