ইফরান হোসেন, ঢাবি
আর বাকি মাত্র ১৮ দিন। এরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এই নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমার পর্ব শেষ করেছেন। এই নির্বাচনে অংশ নিতে ছাত্রনেতারা ৯টি প্যানেল ঘোষণা করছেন।
প্যানেলগুলো হলো— গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্যানেল, ছাত্রশিবিরের ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’, উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’’, বামপন্থি শিক্ষার্থীদের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’, ছাত্র অধিকার পরিষদের ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ , ইসালামী ছাত্র আন্দোলনের ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মাহিন সরকারের স্বতন্ত্র প্যানেল ‘ডিইউ ফার্স্ট’ এবং তিনটি বাম জোটের প্যানেল ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’।
ডাকসু নির্বাচনে বিভিন্ন পদের প্রার্থীসহ ভোটাররাও মনে করছেন, স্বতন্ত্রদের মধ্যে আলোচিত প্রার্থী থাকলেও মূল ভোটযুদ্ধ হবে ঘোষিত ৯টি প্যানেলের মধ্যেই। কিন্তু কারা রয়েছেন এই ৯টি প্যানেলের নেতৃত্বে? এসব প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন কারা? তাদের একাডেমিক বা সাংগঠনিক পরিচয়ই বা কী? এ প্রতিবেদনে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো এই ৯ প্যানেলের শীর্ষ ১৮ প্রার্থীর পরিচয়।
ছাত্রদল প্যানেল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ডাকসু নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে। এই প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী তানভীর বারী হামিম। তিনি কবি জসীমউদদীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক। উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী তিনি।
বাগছাসের ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল
চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন থেকে উঠে আসা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) তাদের ডাকসু প্যানেলের নাম দিয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’। এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. আব্দুল কাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি বাগছাস ঢাবি শাখার আহ্বায়ক। একসময় গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি ও ছাত্র অধিকার পরিষদের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। জুলাইয়ের শেষ দিকে আন্দোলনকে নতুন করে চাঙ্গা করে তোলা ৯ দফার ঘোষমা এসেছিল তার কাছ থেকেই।
বৈষম্যবিরোধী প্যানেলের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। চব্বিশের অভ্যুত্থানের সময় তিনিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে বাগছাস গঠিত হলে তিনি এ সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন।
উমামার নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’
চব্বিশের অভ্যুত্থানের আরেক চেনা মুখ উমামা ফাতেমা। ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক। আন্দোলন চলাকালে এবং আন্দোলনের পরেও প্ল্যাটফর্মটির মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে অবশ্য এ প্ল্যাটফর্ম থেকে সরে দাঁড়ান। ঢাবির প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী উমামা একসময় ছাত্র ফেডারেশনের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। চব্বিশের আন্দোলনের সময় ওই সংগঠন থেকেও অব্যাহতি নেন। ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল। এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তিনিই।
স্বতন্ত্রদের এই প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী আল সাদী ভূঁইয়া। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি।
ছাত্রশিবিরের ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’
এই প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রার্থী হয়েছেন সাদিক কায়েম। তিনিও চব্বিশের আন্দোলন দিয়ে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের এই শিক্ষার্থী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি। বর্তমানে শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ছাত্রশিবিরের প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদ ঢাবি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। কবি জসীম উদদীন হলের আবাসিক এই শিক্ষার্থী ছাত্তশিবিরের ঢাবি শাখার বর্তমান সভাপতি।
বামপন্থিদের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেল
ঢাবিতে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন বামপন্থি ছাত্র সংগঠন ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে জোয় বেঁধে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেল ঘোষণা করেছে। এই প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রার্থী করা হয়েছে শেখ তাসনিম আফরোজ ইমিকে। তিনি ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী। সবশেষ ২০১৯ সালে যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সে নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ে শামসুন নাহার হল সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেল থেকে জিএস পদে প্রার্থী হয়েছেন মেঘমল্লার বসু। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী। ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের সারিতেই দেখা যায় তাকে।
আরেক স্বতন্ত্র প্যানেল ‘ডিইউ ফার্স্ট’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন আরেক প্যানেল ‘ডিইউ ফার্স্ট’। এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী জামাল উদ্দীন খালিদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের এই শিক্ষার্থী স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক।
মাহিন সরকার নিজে জিএস প্রার্থী হয়েছেন এই প্যানেল থেকে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। চব্বিশের অভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন। পরে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মনোনীত হন। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠন হলে যুগ্ম সদস্য সচিব করা হয় তাকে। তিনি যেদিন ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন, সে দিন এনসিপি তাকে পদ থেকে বহিষ্কার করে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’
২০১৮ সালে কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল ছাত্র অধিকার পরিষদ। সবশেষ ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে জয় পাওয়া নুরুল হক ছিলেন এ সংগঠনের আহ্বায়ক। ছাত্র অধিকার পরিষদ এবারেও ডাকসু নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছে, যেখানে সংগঠনটির বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে ভিপি প্রার্থী করা হয়েছে। ইয়ামিন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতিও ছিলেন।
এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি। ঢাবি শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী তিনি।
তিন বাম জোটের ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ প্যানেল
ঢাবিতে ক্রিয়াশীল তিন বাম জোটের এই প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রার্থী হয়েছেন নাইম হাসান হৃদয়। তিনি যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বিসিএলের ঢাবি শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী এনামুল হাসান অনয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল
চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ইয়াসিন আরাফাত। তিনি সংগঠনের ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী।
এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী খায়রুল আহসান মারজান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি সংগঠনের ঢাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
আর বাকি মাত্র ১৮ দিন। এরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এই নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমার পর্ব শেষ করেছেন। এই নির্বাচনে অংশ নিতে ছাত্রনেতারা ৯টি প্যানেল ঘোষণা করছেন।
প্যানেলগুলো হলো— গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্যানেল, ছাত্রশিবিরের ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’, উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’’, বামপন্থি শিক্ষার্থীদের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’, ছাত্র অধিকার পরিষদের ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ , ইসালামী ছাত্র আন্দোলনের ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মাহিন সরকারের স্বতন্ত্র প্যানেল ‘ডিইউ ফার্স্ট’ এবং তিনটি বাম জোটের প্যানেল ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’।
ডাকসু নির্বাচনে বিভিন্ন পদের প্রার্থীসহ ভোটাররাও মনে করছেন, স্বতন্ত্রদের মধ্যে আলোচিত প্রার্থী থাকলেও মূল ভোটযুদ্ধ হবে ঘোষিত ৯টি প্যানেলের মধ্যেই। কিন্তু কারা রয়েছেন এই ৯টি প্যানেলের নেতৃত্বে? এসব প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন কারা? তাদের একাডেমিক বা সাংগঠনিক পরিচয়ই বা কী? এ প্রতিবেদনে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো এই ৯ প্যানেলের শীর্ষ ১৮ প্রার্থীর পরিচয়।
ছাত্রদল প্যানেল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ডাকসু নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে। এই প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী তানভীর বারী হামিম। তিনি কবি জসীমউদদীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক। উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী তিনি।
বাগছাসের ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল
চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন থেকে উঠে আসা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) তাদের ডাকসু প্যানেলের নাম দিয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’। এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. আব্দুল কাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি বাগছাস ঢাবি শাখার আহ্বায়ক। একসময় গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি ও ছাত্র অধিকার পরিষদের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। জুলাইয়ের শেষ দিকে আন্দোলনকে নতুন করে চাঙ্গা করে তোলা ৯ দফার ঘোষমা এসেছিল তার কাছ থেকেই।
বৈষম্যবিরোধী প্যানেলের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। চব্বিশের অভ্যুত্থানের সময় তিনিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে বাগছাস গঠিত হলে তিনি এ সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন।
উমামার নেতৃত্বে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’
চব্বিশের অভ্যুত্থানের আরেক চেনা মুখ উমামা ফাতেমা। ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক। আন্দোলন চলাকালে এবং আন্দোলনের পরেও প্ল্যাটফর্মটির মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে অবশ্য এ প্ল্যাটফর্ম থেকে সরে দাঁড়ান। ঢাবির প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী উমামা একসময় ছাত্র ফেডারেশনের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। চব্বিশের আন্দোলনের সময় ওই সংগঠন থেকেও অব্যাহতি নেন। ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল। এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তিনিই।
স্বতন্ত্রদের এই প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী আল সাদী ভূঁইয়া। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি।
ছাত্রশিবিরের ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’
এই প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রার্থী হয়েছেন সাদিক কায়েম। তিনিও চব্বিশের আন্দোলন দিয়ে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের এই শিক্ষার্থী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি। বর্তমানে শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ছাত্রশিবিরের প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদ ঢাবি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। কবি জসীম উদদীন হলের আবাসিক এই শিক্ষার্থী ছাত্তশিবিরের ঢাবি শাখার বর্তমান সভাপতি।
বামপন্থিদের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেল
ঢাবিতে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন বামপন্থি ছাত্র সংগঠন ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে জোয় বেঁধে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেল ঘোষণা করেছে। এই প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রার্থী করা হয়েছে শেখ তাসনিম আফরোজ ইমিকে। তিনি ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী। সবশেষ ২০১৯ সালে যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সে নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ে শামসুন নাহার হল সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেল থেকে জিএস পদে প্রার্থী হয়েছেন মেঘমল্লার বসু। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী। ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের সারিতেই দেখা যায় তাকে।
আরেক স্বতন্ত্র প্যানেল ‘ডিইউ ফার্স্ট’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন আরেক প্যানেল ‘ডিইউ ফার্স্ট’। এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী জামাল উদ্দীন খালিদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের এই শিক্ষার্থী স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক।
মাহিন সরকার নিজে জিএস প্রার্থী হয়েছেন এই প্যানেল থেকে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। চব্বিশের অভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন। পরে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মনোনীত হন। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠন হলে যুগ্ম সদস্য সচিব করা হয় তাকে। তিনি যেদিন ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন, সে দিন এনসিপি তাকে পদ থেকে বহিষ্কার করে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’
২০১৮ সালে কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল ছাত্র অধিকার পরিষদ। সবশেষ ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে জয় পাওয়া নুরুল হক ছিলেন এ সংগঠনের আহ্বায়ক। ছাত্র অধিকার পরিষদ এবারেও ডাকসু নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছে, যেখানে সংগঠনটির বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে ভিপি প্রার্থী করা হয়েছে। ইয়ামিন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতিও ছিলেন।
এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি। ঢাবি শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী তিনি।
তিন বাম জোটের ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ প্যানেল
ঢাবিতে ক্রিয়াশীল তিন বাম জোটের এই প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রার্থী হয়েছেন নাইম হাসান হৃদয়। তিনি যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বিসিএলের ঢাবি শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী এনামুল হাসান অনয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল
চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ইয়াসিন আরাফাত। তিনি সংগঠনের ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী।
এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী খায়রুল আহসান মারজান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি সংগঠনের ঢাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন উপযুক্ত নয়। পিআর পদ্ধতিতে ভিন্ন মত থাকলেও সেটিই রাজনৈতিক সৌন্দর্য, আর সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এ সংকট সমাধান সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
১৯ ঘণ্টা আগেসঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানানা জামায়াতের এ নেতা। হামিদুর রহমান আযাদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুর রহমান মূসা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
২১ ঘণ্টা আগেতথাকথিত কবি, সাহিত্যিক ও অভিনয় শিল্পীরা অনুভূতিহীন হয়ে ১৫ আগস্টে শোক প্রকাশ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বস্তুগত প্রাপ্তির লোভেই তারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলেন তিনি।
১ দিন আগেজুলাই জাতীয় সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দেওয়ার পক্ষপাতী নয় বিএনপি। সনদ সম্পর্কে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না– এ অঙ্গীকারেও একমত নয় দলটি। বিএনপি চায়, যেসব সাংবিধানিক সংস্কারে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নির্বাচনের আগে নয়; আগামী সংসদে বাস্তবায়ন করা হবে।
১ দিন আগে