
জবি প্রতিনিধি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দুই দশক পর হতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। ২০০৫ সালে পূর্ণাঙ্গ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের পর এটিই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন। ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫’-এ ছাত্র সংসদ সংক্রান্ত কোনো ধারা না থাকায় প্রতিষ্ঠার পর এতদিন জকসু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ভবনের ৩৯টি কেন্দ্রে ১৭৮টি বুথে একযোগে জকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলবে।
জকসু নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১৬ হাজার ৬৪৫ জন। তাদের প্রত্যক্ষ ভোটে কেন্দ্রীয় সংসদের ২১টি পদে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। এসব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ১৫৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে পুরুষ প্রার্থী ১৩৮ জন, নারী প্রার্থী ১৯ জন। নির্বাচনে প্যানেলে রয়েছে মোট চারটি।
এ নির্বাচনের মাধ্যমে এক বছরের জন্য গঠন করা হবে ২৩ সদস্যের কেন্দ্রীয় সংসদ। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদাধিকারবলে কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলে গঠন করা হবে ১৫ সদস্যের হল সংসদ। হল প্রাধ্যক্ষ পদাধিকারবলে এ সংসদের সভাপতি হবেন। তিনি আবাসিক শিক্ষক বা হাউজ টিউটরদের মধ্য থেকে একজনকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে মনোনয়ন দেবেন।
জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান জানান, কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য ৩৮টি ও হল সংসদের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি ১০০ জন ভোটারের জন্য একটি করে বুথ থাকবে। ভোটগ্রহণ শেষে ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) মেশিনে ভোট গণনা করা হবে এবং ফলাফল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তন থেকে ঘোষণা করা হবে।
গত ৫ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। প্রাথমিকভাবে ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ ছিল ২২ ডিসেম্বর। তবে ভূমিকম্পের কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আট দিন পিছিয়ে ভোটগ্রহণের দিন পুনর্নির্ধারণ করে ৩০ ডিসেম্বর করা হয়।
১৮৫৮ সালে ব্রাহ্ম স্কুল নামে যাত্রা শুরু করে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ১৮৮৪ সালে এটির নাম হয় জগন্নাথ কলেজ। কলেজ থাকাকালে এখানে মোট ১৪ বার শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম নির্বাচন হয় ১৯৫৪-৫৫ শিক্ষাবর্ষে, সবশেষ ১৯৮৭-৮৮ শিক্ষাবর্ষে।
এরপর দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা নির্বাচন দাবিতে সোচ্চার থাকলেও আইনি জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের পরও আইনে ছাত্র সংসদের ধারা যুক্ত করা হয়নি। গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। ফলে দীর্ঘ প্রায় ৩৮ বছর পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছেন।
| প্যানেল | ছাত্র সংগঠন | ভিপি প্রার্থী | জিএস প্রার্থী | এজিএস প্রার্থী |
|---|---|---|---|---|
| ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান | ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ | এ কে এম রাকিব | খাদিজাতুল কুবরা | আতিকুর রহমান তানজিল |
| মওলানা ভাসানী ব্রিগেড | বামপন্থি ও সাংস্কৃতিক সংগঠন | গৌরব ভৌমিক | ইভান তাহসীব | শামসুল আলম মারুফ |
| অদম্য জবিয়ান ঐক্য | ছাত্রশিবির, ইনকিলাব মঞ্চ, আপ বাংলাদেশ | রিয়াজুল ইসলাম | আব্দুল আলিম আরিফ | মাসুদ রানা |
| ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান | জাতীয় ছাত্রশক্তি | কিশোয়ার আনজুম সাম্য | ফয়সাল মুরাদ | শাহিন মিয়া |
জকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ১২ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক পদে চারজন, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে সাতজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে সাতজন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে পাঁচজন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে পাঁচজন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে আটজন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে সাতজন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে আটজন, পরিবহন সম্পাদক পদে চারজন, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থী কল্যাণ সম্পাদক পদে ১০ জন, পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদে ছয়জন এবং কার্যনির্বাহী সদস্যের সাতটি পদের বিপরীতে ৫৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
হল সংসদ নির্বাচনে কেবল নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। হল প্রাধ্যক্ষ আঞ্জুমান আরা জানান, হল সংসদে মোট ভোটার এক হাজার ২৪২ জন। তাদের প্রত্যক্ষ ভোটে ১৩টি পদে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। এসব পদে মোট ৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদের মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে তিনজন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে তিনজন, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে দুজন, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে দুজন, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে চারজন, পাঠাগার সম্পাদক পদে দুজন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে দুজন, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থী কল্যাণ সম্পাদক তিনজন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে চারজন এবং কার্যনির্বাহী সদস্যের চারটি পদের বিপরীতে আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবারের জকসু নির্বাচনে চারটি প্যানেল অংশ নিচ্ছে। এগুলো হলো— ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদের যৌথ ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’; বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলোর ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’; ছাত্রশিবির, ইনকিলাব মঞ্চ ও আপ বাংলাদেশ সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’; এবং জাতীয় ছাত্রশক্তির ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’। এ ছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে এ কে এম রাকিব, জিএস পদে খাদিজাতুল কুবরা ও এজিএস পদে বি এম আতিকুর রহমান তানজিল প্রার্থী হয়েছেন।
‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে গৌরব ভৌমিক, জিএস পদে ইভান তাহসীব এবং এজিএস পদে শামসুল আলম মারুফ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে রিয়াজুল ইসলাম, জিএস পদে আব্দুল আলিম আরিফ ও এজিএস পদে মাসুদ রানা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আর জাতীয় ছাত্রশক্তির ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে কিশোয়ার আনজুম সাম্য, জিএস পদে মো. ফয়সাল মুরাদ ও এজিএস পদে প্রার্থী হয়েছেন শাহিন মিয়া।
এবারের নির্বাচনে ওএমআর পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। জকসুর ব্যালট তিন পাতার ও হল সংসদের ব্যালট এক পাতার। ব্যালটে পদের নাম, ব্যালট নম্বর, প্রার্থীর নাম ও ভোট প্রদানের ঘর থাকবে। ভোট গণনার জন্য ছয়টি ওএমআর মেশিন ব্যবহার করা হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করলে ওএমআর মেশিনে তা শনাক্ত হবে। প্রতিটি বিভাগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। ভোটগ্রহণের সময়সীমা বিকেল ৩টা পর্যন্ত হলেও ওই সময়ের মধ্যে কেন্দ্রের চৌহদ্দিতে অবস্থানকারী ভোটারদের প্রয়োজনে পরে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ, আনসার, গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাব সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা প্রভাব বিস্তার বরদাশত করা হবে না।
দীর্ঘদিন পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। প্রার্থীরা আবাসন সংকট, পরিবহন, শিক্ষা ও গবেষণা, ক্যাম্পাস নিরাপত্তা এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা, এই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি কার্যকর ও প্রতিনিধিত্বশীল ছাত্র সংসদ গঠিত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দুই দশক পর হতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। ২০০৫ সালে পূর্ণাঙ্গ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের পর এটিই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন। ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫’-এ ছাত্র সংসদ সংক্রান্ত কোনো ধারা না থাকায় প্রতিষ্ঠার পর এতদিন জকসু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ভবনের ৩৯টি কেন্দ্রে ১৭৮টি বুথে একযোগে জকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলবে।
জকসু নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১৬ হাজার ৬৪৫ জন। তাদের প্রত্যক্ষ ভোটে কেন্দ্রীয় সংসদের ২১টি পদে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। এসব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ১৫৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে পুরুষ প্রার্থী ১৩৮ জন, নারী প্রার্থী ১৯ জন। নির্বাচনে প্যানেলে রয়েছে মোট চারটি।
এ নির্বাচনের মাধ্যমে এক বছরের জন্য গঠন করা হবে ২৩ সদস্যের কেন্দ্রীয় সংসদ। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদাধিকারবলে কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলে গঠন করা হবে ১৫ সদস্যের হল সংসদ। হল প্রাধ্যক্ষ পদাধিকারবলে এ সংসদের সভাপতি হবেন। তিনি আবাসিক শিক্ষক বা হাউজ টিউটরদের মধ্য থেকে একজনকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে মনোনয়ন দেবেন।
জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান জানান, কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য ৩৮টি ও হল সংসদের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি ১০০ জন ভোটারের জন্য একটি করে বুথ থাকবে। ভোটগ্রহণ শেষে ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) মেশিনে ভোট গণনা করা হবে এবং ফলাফল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তন থেকে ঘোষণা করা হবে।
গত ৫ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। প্রাথমিকভাবে ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ ছিল ২২ ডিসেম্বর। তবে ভূমিকম্পের কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আট দিন পিছিয়ে ভোটগ্রহণের দিন পুনর্নির্ধারণ করে ৩০ ডিসেম্বর করা হয়।
১৮৫৮ সালে ব্রাহ্ম স্কুল নামে যাত্রা শুরু করে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ১৮৮৪ সালে এটির নাম হয় জগন্নাথ কলেজ। কলেজ থাকাকালে এখানে মোট ১৪ বার শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম নির্বাচন হয় ১৯৫৪-৫৫ শিক্ষাবর্ষে, সবশেষ ১৯৮৭-৮৮ শিক্ষাবর্ষে।
এরপর দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা নির্বাচন দাবিতে সোচ্চার থাকলেও আইনি জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের পরও আইনে ছাত্র সংসদের ধারা যুক্ত করা হয়নি। গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। ফলে দীর্ঘ প্রায় ৩৮ বছর পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছেন।
| প্যানেল | ছাত্র সংগঠন | ভিপি প্রার্থী | জিএস প্রার্থী | এজিএস প্রার্থী |
|---|---|---|---|---|
| ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান | ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ | এ কে এম রাকিব | খাদিজাতুল কুবরা | আতিকুর রহমান তানজিল |
| মওলানা ভাসানী ব্রিগেড | বামপন্থি ও সাংস্কৃতিক সংগঠন | গৌরব ভৌমিক | ইভান তাহসীব | শামসুল আলম মারুফ |
| অদম্য জবিয়ান ঐক্য | ছাত্রশিবির, ইনকিলাব মঞ্চ, আপ বাংলাদেশ | রিয়াজুল ইসলাম | আব্দুল আলিম আরিফ | মাসুদ রানা |
| ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান | জাতীয় ছাত্রশক্তি | কিশোয়ার আনজুম সাম্য | ফয়সাল মুরাদ | শাহিন মিয়া |
জকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ১২ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক পদে চারজন, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে সাতজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে সাতজন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে পাঁচজন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে পাঁচজন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে আটজন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে সাতজন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে আটজন, পরিবহন সম্পাদক পদে চারজন, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থী কল্যাণ সম্পাদক পদে ১০ জন, পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদে ছয়জন এবং কার্যনির্বাহী সদস্যের সাতটি পদের বিপরীতে ৫৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
হল সংসদ নির্বাচনে কেবল নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। হল প্রাধ্যক্ষ আঞ্জুমান আরা জানান, হল সংসদে মোট ভোটার এক হাজার ২৪২ জন। তাদের প্রত্যক্ষ ভোটে ১৩টি পদে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। এসব পদে মোট ৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদের মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে তিনজন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে তিনজন, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে দুজন, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে দুজন, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে চারজন, পাঠাগার সম্পাদক পদে দুজন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে দুজন, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থী কল্যাণ সম্পাদক তিনজন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে চারজন এবং কার্যনির্বাহী সদস্যের চারটি পদের বিপরীতে আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবারের জকসু নির্বাচনে চারটি প্যানেল অংশ নিচ্ছে। এগুলো হলো— ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদের যৌথ ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’; বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলোর ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’; ছাত্রশিবির, ইনকিলাব মঞ্চ ও আপ বাংলাদেশ সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’; এবং জাতীয় ছাত্রশক্তির ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’। এ ছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে এ কে এম রাকিব, জিএস পদে খাদিজাতুল কুবরা ও এজিএস পদে বি এম আতিকুর রহমান তানজিল প্রার্থী হয়েছেন।
‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে গৌরব ভৌমিক, জিএস পদে ইভান তাহসীব এবং এজিএস পদে শামসুল আলম মারুফ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে রিয়াজুল ইসলাম, জিএস পদে আব্দুল আলিম আরিফ ও এজিএস পদে মাসুদ রানা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আর জাতীয় ছাত্রশক্তির ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে কিশোয়ার আনজুম সাম্য, জিএস পদে মো. ফয়সাল মুরাদ ও এজিএস পদে প্রার্থী হয়েছেন শাহিন মিয়া।
এবারের নির্বাচনে ওএমআর পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। জকসুর ব্যালট তিন পাতার ও হল সংসদের ব্যালট এক পাতার। ব্যালটে পদের নাম, ব্যালট নম্বর, প্রার্থীর নাম ও ভোট প্রদানের ঘর থাকবে। ভোট গণনার জন্য ছয়টি ওএমআর মেশিন ব্যবহার করা হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করলে ওএমআর মেশিনে তা শনাক্ত হবে। প্রতিটি বিভাগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। ভোটগ্রহণের সময়সীমা বিকেল ৩টা পর্যন্ত হলেও ওই সময়ের মধ্যে কেন্দ্রের চৌহদ্দিতে অবস্থানকারী ভোটারদের প্রয়োজনে পরে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ, আনসার, গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাব সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা প্রভাব বিস্তার বরদাশত করা হবে না।
দীর্ঘদিন পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। প্রার্থীরা আবাসন সংকট, পরিবহন, শিক্ষা ও গবেষণা, ক্যাম্পাস নিরাপত্তা এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা, এই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি কার্যকর ও প্রতিনিধিত্বশীল ছাত্র সংসদ গঠিত হবে।

তিনি বলেন, একটি ফ্যাসিবাদী সরকার বাংলাদেশের কাঁধে চেপে বসেছিল। যার মাধ্যমে তারা এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে নিয়েছিল। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি সুষ্ঠু ভোটে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তখনই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
৮ ঘণ্টা আগে
সৈয়দ এ সিদ্দিক সাজু দারুস সালাম থানা বিএনপির আহ্বায়ক ও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ঢাকা-১৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রায় লক্ষাধিক ভোট পেয়েছিলেন। তবে এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন।
৮ ঘণ্টা আগে
নাহিদ বলেন, উনি পদত্যাগ করেছেন সরকার থেকে। আজ আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আনুষ্ঠানিকভাবে এনসিপিতে যোগদান করলেন। আমরা তাকে স্বাগত জানাই, অভিনন্দন জানাই। আমরা আশা করব, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে আমাদের পথচলা সামনের দিনগুলোতেও পুরনো দিনগুলোর মতো আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।
৮ ঘণ্টা আগে
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন,বাংলাদেশের মানুষ ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচিত সংসদ ও নির্বাচিত সরকারের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। মানুষ তার মালিকানা ফিরে পেয়েছে, তাই আজ আনন্দের দিন। আমরা গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার পথে হাঁটছি। এই আনন্দ সবার।
৮ ঘণ্টা আগে