
শাহরিয়ার শরীফ

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঝুঁকি কমাতে কৌশলগত পথে হাঁটছে বিএনপি। বয়োবৃদ্ধতা, অসুস্থতা ও ঋণখেলাপিসহ মনোনয়ন বাতিলের শঙ্কা বিবেচনায় রেখে বেশ কয়েকটি আসনে মূল প্রার্থীর পাশাপাশি বিকল্প প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। একই সঙ্গে মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষুব্ধ একাধিক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন, যা দলীয় শৃঙ্খলা ও ভোটের সমীকরণে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে অনেক আসনে প্রাথমিকভাবে ঘোষিত ধানের শীষের প্রার্থীর পাশাপাশি বিএনপি বিকল্প প্রার্থীকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে সংযুক্তি-১ উল্লেখ থাকলে তিনি প্রাথমিক চূড়ান্ত প্রার্থী ও সংযুক্তি-২ উল্লেখ থাকলে তিনি বিকল্প প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন।
কোনো কারণে প্রাথমিক প্রার্থী মনোনয়ন যাচাইবাছাইয়ে অযোগ্য ঘোষিত হলে সংশ্লিষ্ট আসনে বিকল্প প্রার্থীকে দলের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানানো হবে। এ ছাড়া দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনে সরে দাঁড়াতে বিকল্প প্রার্থীদের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামায় সইও নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে একাধিক আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। একই সময়ে নির্বাচনি কৌশলের অংশ হিসেবে শেষ মুহূর্তে অন্তত ১৮টি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করেছে বিএনপি। মাঠপর্যায়ের জরিপ, দলীয় অসন্তোষ ও স্থানীয় রাজনৈতিক সমীকরণ পর্যালোচনা করে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতেই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) একমাসের বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সাবেক তিনবারের এই প্রধানমন্ত্রীকে সর্বোচ্চ তিনটি আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। গুরুতর অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়ার তিনটি আসনেই বিকল্প প্রার্থী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এর মধ্যে ফেনী-১ (ফুলগাজী-পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া) আসনে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র জমা দেন ওই আসনের নির্বাচন সমন্বয়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম (মজনু)। খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে না পারলে তিনি এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন।
বগুড়া-৭ (গাবতলী) আসনে খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম এবং দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনেও খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রার্থী হিসেবে সাবেক পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম রাখা হয়েছে।
এদিকে কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-মেঘনা) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পাশাপাশি তার ছেলে ড. খন্দকার মারুফ হোসেনকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে রাখা হয়েছে। ঢাকা-৩ (কেরানীগঞ্জ) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পাশাপাশি ‘ডামি প্রার্থী’ হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা রেজাউল করিম পল।
এদিকে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন পান দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রফিক। তার খেলাপি ঋণসংক্রান্ত জটিলতা থাকায় বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয় জেলা বিএনপির সহসভাপতি এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকিরকে। বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমানকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। তারও খেলাপি ঋণসংক্রান্ত জটিলতার কারণে ওই আসনে বিএনপির নেতা মীর শাহে আলমকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তার মনোনয়নের চিঠিতে সংযুক্তি-২ লেখা রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া-কসবা) আসনে সাবেক সচিব মুশফিকুর রহমানকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। ৯০ বছর বয়সী মুশফিকুর রহমান বয়সের ভারের কারণে একা চলাফেরা করতে পারেন না। সে কারণে ওই আসনে কবির আহমেদ ভূঁইয়াকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তার মনোনয়নের চিঠিতে সংযুক্তি-২ লেখা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ-১ (ধর্মপাশা-মধ্যনগর-তাহিরপুর-জামালগঞ্জ) আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আনিসুল হককে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিকল্প প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুলকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে বিএনপি। তার মনোনয়নের চিঠিতেও সংযুক্তি-২ লেখা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই ও শাল্লা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পান দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. নাছির চৌধুরী। বর্ষীয়ান এই নেতাও অসুস্থতার কারণে একা চলাফেরা করতে পারেন না। সেজন্য ওই আসনে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক তাহির রায়হান চৌধুরী পাভেলকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। রোববার দুপুরে নাছির চৌধুরী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ে তার সঙ্গে তাহির রায়হান চৌধুরীও ছিলেন। পরে সন্ধ্যায় তাহির নিজে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে পরদিন মনোনয়ন জমা দেন।
মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও একমি গ্রুপের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সিনহাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনি শারীরিকভাবে মারাত্মক অসুস্থ থাকায় বিকল্প প্রার্থী হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির অনেক নেতাই দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন তাদের অনেকে। তবে বিএনপির হাইকমান্ড জানিয়েছেন, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে কেউ ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তাকে শিগগিরই বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হবে।
বিএনপির যেসব নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন— ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ ও বিজয়নগরের একাংশ) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা, ঢাকা-১২ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা-১৪ এস এ সিদ্দিক সাজু, পটুয়াখালী-৩ হাসান মামুন, ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ-সদর আংশিক) আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ।
‘বিদ্রোহী প্রার্থী’র তালিকায় আরও রয়েছেন— কুড়িগ্রাম-৩ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক, চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক এম এ হান্নান, চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও দক্ষিণ) আসনের বিএনপির সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত মোহাম্মদ নূরুল হুদার ছেলে ও জেলা বিএনপির নেতা তানভীর হুদা, সুনামগঞ্জ-৪ (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) আসনে মুলাদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুস সাত্তার খান।
এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আনোয়ারের ছেলে কাজী তাপস, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে করিম সরকার, ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে বিএনপি নেতা মামুন বিন আবদুল মান্নানও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর বাইরেও আরও বেশ কিছু আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করতে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন অনেক বিএনপি নেতা।
বিকল্প প্রার্থীদের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘নির্বাচনের কৌশল হিসেবে কিছু আসনে বিকল্প প্রার্থী রাখা হয়েছে। কারও প্রার্থিতা বাতিল হলে সে আসনে দলের অন্য প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারবেন। যেসব আসনে সমঝোতা হয়েছে সেখানেও শেষ পর্যন্ত সমস্যা থাকবে না।’
স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়া বিএনপির একজন নির্বাহী কমিটির সদস্য রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘১৭ বছরের ত্যাগ-সংগ্রাম করেছি। মাঠের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছি। এখন নেতাকর্মীদের চাপেই নির্বাচনে লড়তে বাধ্য হয়েছি। আশা করি দল মনোনয়ন না দিলেও দলকে বিজয় উপহার দিতে পারব।’

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঝুঁকি কমাতে কৌশলগত পথে হাঁটছে বিএনপি। বয়োবৃদ্ধতা, অসুস্থতা ও ঋণখেলাপিসহ মনোনয়ন বাতিলের শঙ্কা বিবেচনায় রেখে বেশ কয়েকটি আসনে মূল প্রার্থীর পাশাপাশি বিকল্প প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। একই সঙ্গে মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষুব্ধ একাধিক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন, যা দলীয় শৃঙ্খলা ও ভোটের সমীকরণে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে অনেক আসনে প্রাথমিকভাবে ঘোষিত ধানের শীষের প্রার্থীর পাশাপাশি বিএনপি বিকল্প প্রার্থীকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে সংযুক্তি-১ উল্লেখ থাকলে তিনি প্রাথমিক চূড়ান্ত প্রার্থী ও সংযুক্তি-২ উল্লেখ থাকলে তিনি বিকল্প প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন।
কোনো কারণে প্রাথমিক প্রার্থী মনোনয়ন যাচাইবাছাইয়ে অযোগ্য ঘোষিত হলে সংশ্লিষ্ট আসনে বিকল্প প্রার্থীকে দলের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানানো হবে। এ ছাড়া দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনে সরে দাঁড়াতে বিকল্প প্রার্থীদের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামায় সইও নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে একাধিক আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। একই সময়ে নির্বাচনি কৌশলের অংশ হিসেবে শেষ মুহূর্তে অন্তত ১৮টি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করেছে বিএনপি। মাঠপর্যায়ের জরিপ, দলীয় অসন্তোষ ও স্থানীয় রাজনৈতিক সমীকরণ পর্যালোচনা করে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতেই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) একমাসের বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সাবেক তিনবারের এই প্রধানমন্ত্রীকে সর্বোচ্চ তিনটি আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। গুরুতর অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়ার তিনটি আসনেই বিকল্প প্রার্থী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এর মধ্যে ফেনী-১ (ফুলগাজী-পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া) আসনে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র জমা দেন ওই আসনের নির্বাচন সমন্বয়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম (মজনু)। খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে না পারলে তিনি এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন।
বগুড়া-৭ (গাবতলী) আসনে খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম এবং দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনেও খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রার্থী হিসেবে সাবেক পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম রাখা হয়েছে।
এদিকে কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-মেঘনা) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পাশাপাশি তার ছেলে ড. খন্দকার মারুফ হোসেনকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে রাখা হয়েছে। ঢাকা-৩ (কেরানীগঞ্জ) আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পাশাপাশি ‘ডামি প্রার্থী’ হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা রেজাউল করিম পল।
এদিকে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন পান দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রফিক। তার খেলাপি ঋণসংক্রান্ত জটিলতা থাকায় বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয় জেলা বিএনপির সহসভাপতি এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকিরকে। বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমানকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। তারও খেলাপি ঋণসংক্রান্ত জটিলতার কারণে ওই আসনে বিএনপির নেতা মীর শাহে আলমকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তার মনোনয়নের চিঠিতে সংযুক্তি-২ লেখা রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া-কসবা) আসনে সাবেক সচিব মুশফিকুর রহমানকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। ৯০ বছর বয়সী মুশফিকুর রহমান বয়সের ভারের কারণে একা চলাফেরা করতে পারেন না। সে কারণে ওই আসনে কবির আহমেদ ভূঁইয়াকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তার মনোনয়নের চিঠিতে সংযুক্তি-২ লেখা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ-১ (ধর্মপাশা-মধ্যনগর-তাহিরপুর-জামালগঞ্জ) আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আনিসুল হককে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিকল্প প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুলকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে বিএনপি। তার মনোনয়নের চিঠিতেও সংযুক্তি-২ লেখা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই ও শাল্লা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পান দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. নাছির চৌধুরী। বর্ষীয়ান এই নেতাও অসুস্থতার কারণে একা চলাফেরা করতে পারেন না। সেজন্য ওই আসনে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক তাহির রায়হান চৌধুরী পাভেলকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। রোববার দুপুরে নাছির চৌধুরী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ে তার সঙ্গে তাহির রায়হান চৌধুরীও ছিলেন। পরে সন্ধ্যায় তাহির নিজে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে পরদিন মনোনয়ন জমা দেন।
মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও একমি গ্রুপের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সিনহাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনি শারীরিকভাবে মারাত্মক অসুস্থ থাকায় বিকল্প প্রার্থী হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির অনেক নেতাই দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন তাদের অনেকে। তবে বিএনপির হাইকমান্ড জানিয়েছেন, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে কেউ ধানের শীষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তাকে শিগগিরই বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হবে।
বিএনপির যেসব নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন— ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ ও বিজয়নগরের একাংশ) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা, ঢাকা-১২ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা-১৪ এস এ সিদ্দিক সাজু, পটুয়াখালী-৩ হাসান মামুন, ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ-সদর আংশিক) আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ।
‘বিদ্রোহী প্রার্থী’র তালিকায় আরও রয়েছেন— কুড়িগ্রাম-৩ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক, চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক এম এ হান্নান, চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও দক্ষিণ) আসনের বিএনপির সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত মোহাম্মদ নূরুল হুদার ছেলে ও জেলা বিএনপির নেতা তানভীর হুদা, সুনামগঞ্জ-৪ (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) আসনে মুলাদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুস সাত্তার খান।
এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আনোয়ারের ছেলে কাজী তাপস, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে করিম সরকার, ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে বিএনপি নেতা মামুন বিন আবদুল মান্নানও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর বাইরেও আরও বেশ কিছু আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করতে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন অনেক বিএনপি নেতা।
বিকল্প প্রার্থীদের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘নির্বাচনের কৌশল হিসেবে কিছু আসনে বিকল্প প্রার্থী রাখা হয়েছে। কারও প্রার্থিতা বাতিল হলে সে আসনে দলের অন্য প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারবেন। যেসব আসনে সমঝোতা হয়েছে সেখানেও শেষ পর্যন্ত সমস্যা থাকবে না।’
স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়া বিএনপির একজন নির্বাহী কমিটির সদস্য রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘১৭ বছরের ত্যাগ-সংগ্রাম করেছি। মাঠের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছি। এখন নেতাকর্মীদের চাপেই নির্বাচনে লড়তে বাধ্য হয়েছি। আশা করি দল মনোনয়ন না দিলেও দলকে বিজয় উপহার দিতে পারব।’

তিনি বলেন, একটি ফ্যাসিবাদী সরকার বাংলাদেশের কাঁধে চেপে বসেছিল। যার মাধ্যমে তারা এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে নিয়েছিল। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি সুষ্ঠু ভোটে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তখনই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
৬ ঘণ্টা আগে
সৈয়দ এ সিদ্দিক সাজু দারুস সালাম থানা বিএনপির আহ্বায়ক ও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ঢাকা-১৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রায় লক্ষাধিক ভোট পেয়েছিলেন। তবে এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন।
৬ ঘণ্টা আগে
নাহিদ বলেন, উনি পদত্যাগ করেছেন সরকার থেকে। আজ আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আনুষ্ঠানিকভাবে এনসিপিতে যোগদান করলেন। আমরা তাকে স্বাগত জানাই, অভিনন্দন জানাই। আমরা আশা করব, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে আমাদের পথচলা সামনের দিনগুলোতেও পুরনো দিনগুলোর মতো আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।
৬ ঘণ্টা আগে
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন,বাংলাদেশের মানুষ ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচিত সংসদ ও নির্বাচিত সরকারের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। মানুষ তার মালিকানা ফিরে পেয়েছে, তাই আজ আনন্দের দিন। আমরা গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার পথে হাঁটছি। এই আনন্দ সবার।
৬ ঘণ্টা আগে