সরকার দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে সংস্কার প্রস্তাব করছে : জিএম কাদের

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ২১: ২১

সরকার দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে সংস্কার প্রস্তাব করছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, এটা কখনোই বাস্তবায়ন হবে না। নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন, তারাই প্রয়োজন মতো সংস্কার করবেন। এখন যারা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন তারা তো এলিয়েন। তারা অন্য গ্রহ থেকে এসেছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া এই দেশের মঙ্গল হবে না।

রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে বর্ধিত সভার দ্বিতীয় দিনে এসব কথা বলেন জিএম কাদের।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। গ্রহণযোগ্যতা না পেলে দেশে বিনিয়োগ হবে না, কর্মসংস্থান হবে না, শুধু বেকারত্ব বাড়বে। আবার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হলেও কেউ এখানে বিনিয়োগ করবে না। দেশের কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বেকারত্ব বাড়ছে, কৃষকরা পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। যারা আলুর দাম কম দেখে খুশি হচ্ছেন, তারা কৃষকের কান্না দেখেননি। এখন রেমিট্যান্স আসছে, রেমিটেন্সের ওপর একটা দেশ চলতে পারে না।

তিনি বলেন, সরকারকে বৈধ করতেই সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হবে। সরকার একটা দল গঠন করেছে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে সংস্কার চালাচ্ছে। যেনতেনভাবে তাদের নির্বাচনে পাস করাবেন, তা কি হাসিনার নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে? শেখ হাসিনা সব কিছু হাতে নিয়েই থাকতে পারল না, আপনারা কত দিন থাকতে পারবেন? যাদের নির্বাচন থেকে বাদ দেবেন তারা ঘরে বসে আঙুল চুষবে? দেশে স্থিতিশীলতা আসবে কেমন করে? ভালো নির্বাচন দিতে হবে, সবাইকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে।

জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আবারও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যারা শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিল, তাদেরকে লাঙ্গল প্রতীক দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন ষড়যন্ত্রকারীদের আবেদন সাদরে গ্রহণ করেছে। নির্বাচন কমিশনের যে ভদ্রলোক ষড়যন্ত্রকারীদের আবেদন গ্রহণ করেছেন, তিনি নির্বাচনে আমার বিপক্ষে কারচুপি করতে চেয়ে ধরা পড়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এখন সেই লোকটি আমার বিরুদ্ধ লেগেছে।

জাতীয় পার্টি যেন কাউন্সিল করতে না পারে সেজন্য কোনো হল ভাড়া দেওয়া হচ্ছে না দাবি করে তিনি বলেন, কাউন্সিল করতে না পারলেই আমাদের বাতিল করতে পারবে। এই পলিসিতে ষড়যন্ত্র করছে তারা। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন আমাদের হল ভাড়া দিচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানটি আগে ছিল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের মতো, এখন সরকারের সঙ্গে আছে এমন একটি দলের অঙ্গ সংগঠনের মতো আচরণ করছে। শেখ হাসিনা পেশাজীবীদের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছিল, বর্তমান সরকারও শেখ হাসিনার সেই ফর্মুলা গ্রহণ করেছে। কে কি করবে তা সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। এই নিয়ন্ত্রণ করার মাঝেই তারা প্রচুর টাকা কামাই করছে।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দেশে ব্যাপক চাঁদাবাজি চলছে। দেশের জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, নব্য ফ্যাসিবাদকে রুখতে হবে। নব্য ফ্যাসিবাদের দোসরদের সোজা করতে হবে, দেশকে বাঁচাতে হবে।

জিএম কাদের বলেন, রাস্তাঘাটে চাঁদাবাজি কি বন্ধ হয়েছে, নাকি বেড়েছে? অফিস আদালতে দুর্নীতি ছাড়া কাজ হচ্ছে? চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। ফ্যাসিবাদের চেয়ে ভালো কিছু করতে পেরেছে? ভালো কিছু করার ইচ্ছাও দেখছি না। মিছিল-মিটিং করতে দেওয়া হচ্ছে না। দোসরদের নিয়ে ফাইভ স্টারে মুরগির রান খাচ্ছেন আর আমাদের নেতাকর্মীদের ছোট্ট একটি হোটেলে ইফতার অনুষ্ঠানে হামলা করছেন।

তিনি বলেন, দেশের মানুষের কান্না শোনার কেউ নেই। ব্যবসায়ীদের কাছে বিশাল অঙ্কের চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। চাঁদা না দিলে তারা ব্যবসা করতে পারছে না। এর চেয়ে বড় ফ্যাসিবাদ আর কি হতে পারে? এর চেয়ে বড় অত্যাচার আর কি হতে পারে? রক্ত দিয়ে ফ্যাসিবাদকে রুখতে হবে। কাউকে আক্রমণ করতে বলছি না কিন্তু আক্রান্ত হলে তার প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করতে হবে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, শোক প্রস্তাব পাঠ করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

অসুস্থ ফরিদা পারভীনের খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ফরিদা পারভীনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

১৯ ঘণ্টা আগে

ছাত্রদলের মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

জুলাই-আগস্টের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্মরণে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

১৯ ঘণ্টা আগে

‘এনসিপিকে নির্বাচনবিরোধী দল হিসেবে ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে’

কোনো কোনো রাজনৈতিক দল এনসিপিকে ‘নির্বাচনবিরোধী দল’ হিসেবে ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এনসিপি কখনোই নির্বাচনবিরোধী দল নয়। আমরাও নির্বাচন চাই। তবে বিচার, সংস্কারসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দাবির প্যাকেজ বাস্তবায়ন না হও

১ দিন আগে

নির্বাচন হলে বোঝা যাবে কোন দল শক্তিশালী: দুদু

তিনি বলেন, কিছু কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ মনে করে তারাই ক্ষমতায় আসবে। বিএনপি এবারে প্রথম ক্ষমতায় যাবে তা নয়, এর আগেও একাধিকবার জনগণের সমর্থন নিয়ে ভোটে জিতে ক্ষমতায়

১ দিন আগে