অরুণ কুমার
বছর বিশেকের এক তরুণ, জাহাজে চড়ে যাচ্ছেন বিলেতে। কারণ সেই তরুণ জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী হতে চায়। সে যুগে ভারতে জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানে পড়ার কোনো সুযোগই ছিল না। তাছাড়া যুক্তরাজ্যে বড় বড় সব বিজ্ঞানীরা বাস করেন। তাঁদের সান্নিধ্য পেলে নিশ্চয়ই অনেক কিছু শেখা যাবে। বিশেষ করে আর্থার এডিংটনের লেখা বই তাঁর ভীষণ পছন্দ। এডিংটন অবশ্য বিশ্বজুড়েই পরিচিত তখন, আলবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার পরীক্ষামূলক প্রমাণ তিনিই দিয়েছিলেন। বছর বিশেকের এক তরুণ, জাহাজে চড়ে যাচ্ছেন বিলেতে। কারণ সেই তরুণ জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী হতে চায়। সে যুগে ভারতে জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানে পড়ার কোনো সুযোগই ছিল না। তাছাড়া যুক্তরাজ্যে বড় বড় সব বিজ্ঞানীরা বাস করেন। তাঁদের সান্নিধ্য পেলে নিশ্চয়ই অনেক কিছু শেখা যাবে। বিশেষ করে আর্থার এডিংটনের লেখা বই তাঁর ভীষণ পছন্দ। এডিংটন অবশ্য বিশ্বজুড়েই পরিচিত তখন, আলবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার পরীক্ষামূলক প্রমাণ তিনিই দিয়েছিলেন।
সেই ভারতীয় তরুণের আরেকটি পরিচয় আছে। এশিয়ার প্রথম নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী সিভি রমনের ভাইপো তিনি। নাম সুব্রহ্মাণ্যন চন্দ্রশেখর। চাচার পদাঙ্ক অনুসরণ করেও তিনিও হেঁটেছিলেন পদার্থবিজ্ঞানের পথে।
১৯৩০ সালে তিনি চলেছেন বিলেতের পথে। তখন ভারত থেকে জাহাজে চেপে বিলেত যেতে কয়েক মাস লেগে যেত। বসে বসে আর কত দিন পার করা যায়৷ মহাকাশের রহস্যময় বস্তুগুলো তাঁকে দুর্নিবার আকর্ষণ করে। বিশেষ করে নক্ষত্র বা তারাদের জন্ম-মৃত্যু নিয়ে গবেষণা করা তাঁর বড্ড ইচ্ছা।
তাই জাহাজের অলস দিনগুলোতে খাতা কলম আর বই নিয়ে বসে গেলেন হিসাব-নিকাষ করতে। আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটিকে ভিত্তি করে হিসাব নিকাষে বসলেন চন্দ্রশেখর।
এটা নিয়ে বড় বড় সব বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেছেন। জাহাজে তো আর টেলিস্কোপ নেই, যে তারা দেখে দেখে গবেষণা করবেন, তাই খাতা কলমেই ভরসা।
সে সময় বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, সব নক্ষত্রই পুরোপুরি মৃত্যুর আগে শ্বেত বামনে পরিণত হবে। শ্বেত বামন হলো নক্ষত্র বা তারাদের অন্তিম দশা। মহাকাশের নক্ষত্রগুলো চিরকাল একইভাবে জ্বলবে না। এক সময় এর ভেতরের জ্বালানী ফুরিয়ে আসবে। তখন এর ভেতরের কণাগুলো অনেকটাই কাছাকাছি এসে পড়বে, ফলে প্রবল হবে তাদের মধ্যকার মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল। ফলে কণাগুলো পরস্পরের খুব কাছাকাছি আসতে চাইবে। তাই সংকুচিত হতে শুরু করবে নক্ষত্র। একটা সময় গিয়ে কণাগুলো একেবারে গায়ে গায়ে লেগে যাবে। তখন নক্ষত্রগুলো আর এতটা উজ্জ্বল দেখাবে না। আকারে বহুগুণ ছোট হয়ে যাবে। তখন সেটাকে দেখে মনে হবে সাদা রংয়ের একটা গোলক। নক্ষত্রের এই দশাকে বলে শ্বেত বামন।
জাহাজে বসে বসে অঙ্ক কষলেন চন্দ্রশেখর। তাঁর হিসাব থেকে বেরিয়ে এলো অন্য রকম ফল। যা অন্য কোনো বিজ্ঞানীই পাননি।
চন্দ্রশেখরের হিসাব বলছিল, সব নক্ষত্রই শ্বেত বামনে পরিণত হবে না। হবে তুলনামূলক হালকা নক্ষত্র। কোনো নক্ষত্রের একেবারে শেষ বয়সের ভর যদি সূর্যের ভরের ১.৫ গুণের কম হয় তাহলে সেটা শ্বেত বামন হয়ে মৃত্যুবরণ করবে। আমাদের সূর্যের অবস্থা এমনটাই হবে। কিন্তু কোনো নক্ষত্রের ভর যদি সূর্যের ভরের দেড়গুণ বা আরও বেশি হয় তখন কী হবে?
এ নিয়ে অন্যেরা কেউ ভাবেনইনি। কিন্তু চন্দ্রশেখর হিসেব কষে দেখালেন, এ ধরনের নক্ষত্র শ্বেত বামনে পরিণত হবে না। এই হিসাব কষে, মনে মনে নিজের পিঠ নিজেই চাপড়ে দিয়ে চন্দ্রশেখর৷ এক সময় পৌঁছে গেলেন লন্ডনে। মনে বড় আশা ছিল, গুরু এডিংটনকে দেখাবেন এই হিসাব। তিনিও ‘শাবাস ব্যাটা’ বলে তাঁর পিঠ চাপড়ে দেবেন, জগৎজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে চন্দ্রশেখরের নাম। কিন্তু মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক। গুরু এডিংটনের রীতিমতো তুলোধুনা করলেন চন্দ্রশেখরে এই তত্ত্বের কথা জেনে। ক্ষোভে-দু:খে জ্যোতির্বিদ্যা চর্চা ছেড়ে, ব্রিটেন ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেলেন চন্দ্রশেখর। অথচ এই এডিংটনের লেখা বই পড়েই চন্দ্রশেখর বিজ্ঞানী হওয়ার পণ করেছিলেন।
এর অবশ্য কারণও ছিল। চন্দ্রশেখর বলতে পারেননি, সুর্যের ভরের দেড়গুণের চেয়ে বেশি হলে সেই নক্ষত্রের পরিণতি কী হবে।
তবে এডিংটন বিরোধিতা করলেও এক তরুণ জ্যোতির্বিদের মনে ধরেছিল চন্দশেখরের তত্ত্ব। তিনি আলফ্রেড উইলিয়াম ফাউলার। চন্দ্রশেখর জ্যোতির্পদাবিজ্ঞান চর্চা ছেড়ে দিলেও ফাউলার হাল ছাড়েননি। গবেষণা চালিয়ে যান তিনি।
প্রায় পঞ্চাশ বছর পর আশির দশকে ফাউলার চন্দ্রশেখর লিমিটের যথার্থতা প্রমাণ করেন। তখনো চন্দ্রশেখর বেঁচে ছিলেন। তাই ৮৯৮৩ ফাউলারের সাথে চন্দ্রশেখরকেও পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হলো ৫৩ বছর আগে আবিষ্কার করা এক তত্ত্বের জন্য।
সূত্র: নোবেল প্রাইজ ডট অর্গ
বছর বিশেকের এক তরুণ, জাহাজে চড়ে যাচ্ছেন বিলেতে। কারণ সেই তরুণ জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী হতে চায়। সে যুগে ভারতে জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানে পড়ার কোনো সুযোগই ছিল না। তাছাড়া যুক্তরাজ্যে বড় বড় সব বিজ্ঞানীরা বাস করেন। তাঁদের সান্নিধ্য পেলে নিশ্চয়ই অনেক কিছু শেখা যাবে। বিশেষ করে আর্থার এডিংটনের লেখা বই তাঁর ভীষণ পছন্দ। এডিংটন অবশ্য বিশ্বজুড়েই পরিচিত তখন, আলবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার পরীক্ষামূলক প্রমাণ তিনিই দিয়েছিলেন। বছর বিশেকের এক তরুণ, জাহাজে চড়ে যাচ্ছেন বিলেতে। কারণ সেই তরুণ জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী হতে চায়। সে যুগে ভারতে জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানে পড়ার কোনো সুযোগই ছিল না। তাছাড়া যুক্তরাজ্যে বড় বড় সব বিজ্ঞানীরা বাস করেন। তাঁদের সান্নিধ্য পেলে নিশ্চয়ই অনেক কিছু শেখা যাবে। বিশেষ করে আর্থার এডিংটনের লেখা বই তাঁর ভীষণ পছন্দ। এডিংটন অবশ্য বিশ্বজুড়েই পরিচিত তখন, আলবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার পরীক্ষামূলক প্রমাণ তিনিই দিয়েছিলেন।
সেই ভারতীয় তরুণের আরেকটি পরিচয় আছে। এশিয়ার প্রথম নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী সিভি রমনের ভাইপো তিনি। নাম সুব্রহ্মাণ্যন চন্দ্রশেখর। চাচার পদাঙ্ক অনুসরণ করেও তিনিও হেঁটেছিলেন পদার্থবিজ্ঞানের পথে।
১৯৩০ সালে তিনি চলেছেন বিলেতের পথে। তখন ভারত থেকে জাহাজে চেপে বিলেত যেতে কয়েক মাস লেগে যেত। বসে বসে আর কত দিন পার করা যায়৷ মহাকাশের রহস্যময় বস্তুগুলো তাঁকে দুর্নিবার আকর্ষণ করে। বিশেষ করে নক্ষত্র বা তারাদের জন্ম-মৃত্যু নিয়ে গবেষণা করা তাঁর বড্ড ইচ্ছা।
তাই জাহাজের অলস দিনগুলোতে খাতা কলম আর বই নিয়ে বসে গেলেন হিসাব-নিকাষ করতে। আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটিকে ভিত্তি করে হিসাব নিকাষে বসলেন চন্দ্রশেখর।
এটা নিয়ে বড় বড় সব বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেছেন। জাহাজে তো আর টেলিস্কোপ নেই, যে তারা দেখে দেখে গবেষণা করবেন, তাই খাতা কলমেই ভরসা।
সে সময় বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, সব নক্ষত্রই পুরোপুরি মৃত্যুর আগে শ্বেত বামনে পরিণত হবে। শ্বেত বামন হলো নক্ষত্র বা তারাদের অন্তিম দশা। মহাকাশের নক্ষত্রগুলো চিরকাল একইভাবে জ্বলবে না। এক সময় এর ভেতরের জ্বালানী ফুরিয়ে আসবে। তখন এর ভেতরের কণাগুলো অনেকটাই কাছাকাছি এসে পড়বে, ফলে প্রবল হবে তাদের মধ্যকার মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল। ফলে কণাগুলো পরস্পরের খুব কাছাকাছি আসতে চাইবে। তাই সংকুচিত হতে শুরু করবে নক্ষত্র। একটা সময় গিয়ে কণাগুলো একেবারে গায়ে গায়ে লেগে যাবে। তখন নক্ষত্রগুলো আর এতটা উজ্জ্বল দেখাবে না। আকারে বহুগুণ ছোট হয়ে যাবে। তখন সেটাকে দেখে মনে হবে সাদা রংয়ের একটা গোলক। নক্ষত্রের এই দশাকে বলে শ্বেত বামন।
জাহাজে বসে বসে অঙ্ক কষলেন চন্দ্রশেখর। তাঁর হিসাব থেকে বেরিয়ে এলো অন্য রকম ফল। যা অন্য কোনো বিজ্ঞানীই পাননি।
চন্দ্রশেখরের হিসাব বলছিল, সব নক্ষত্রই শ্বেত বামনে পরিণত হবে না। হবে তুলনামূলক হালকা নক্ষত্র। কোনো নক্ষত্রের একেবারে শেষ বয়সের ভর যদি সূর্যের ভরের ১.৫ গুণের কম হয় তাহলে সেটা শ্বেত বামন হয়ে মৃত্যুবরণ করবে। আমাদের সূর্যের অবস্থা এমনটাই হবে। কিন্তু কোনো নক্ষত্রের ভর যদি সূর্যের ভরের দেড়গুণ বা আরও বেশি হয় তখন কী হবে?
এ নিয়ে অন্যেরা কেউ ভাবেনইনি। কিন্তু চন্দ্রশেখর হিসেব কষে দেখালেন, এ ধরনের নক্ষত্র শ্বেত বামনে পরিণত হবে না। এই হিসাব কষে, মনে মনে নিজের পিঠ নিজেই চাপড়ে দিয়ে চন্দ্রশেখর৷ এক সময় পৌঁছে গেলেন লন্ডনে। মনে বড় আশা ছিল, গুরু এডিংটনকে দেখাবেন এই হিসাব। তিনিও ‘শাবাস ব্যাটা’ বলে তাঁর পিঠ চাপড়ে দেবেন, জগৎজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে চন্দ্রশেখরের নাম। কিন্তু মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক। গুরু এডিংটনের রীতিমতো তুলোধুনা করলেন চন্দ্রশেখরে এই তত্ত্বের কথা জেনে। ক্ষোভে-দু:খে জ্যোতির্বিদ্যা চর্চা ছেড়ে, ব্রিটেন ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেলেন চন্দ্রশেখর। অথচ এই এডিংটনের লেখা বই পড়েই চন্দ্রশেখর বিজ্ঞানী হওয়ার পণ করেছিলেন।
এর অবশ্য কারণও ছিল। চন্দ্রশেখর বলতে পারেননি, সুর্যের ভরের দেড়গুণের চেয়ে বেশি হলে সেই নক্ষত্রের পরিণতি কী হবে।
তবে এডিংটন বিরোধিতা করলেও এক তরুণ জ্যোতির্বিদের মনে ধরেছিল চন্দশেখরের তত্ত্ব। তিনি আলফ্রেড উইলিয়াম ফাউলার। চন্দ্রশেখর জ্যোতির্পদাবিজ্ঞান চর্চা ছেড়ে দিলেও ফাউলার হাল ছাড়েননি। গবেষণা চালিয়ে যান তিনি।
প্রায় পঞ্চাশ বছর পর আশির দশকে ফাউলার চন্দ্রশেখর লিমিটের যথার্থতা প্রমাণ করেন। তখনো চন্দ্রশেখর বেঁচে ছিলেন। তাই ৮৯৮৩ ফাউলারের সাথে চন্দ্রশেখরকেও পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হলো ৫৩ বছর আগে আবিষ্কার করা এক তত্ত্বের জন্য।
সূত্র: নোবেল প্রাইজ ডট অর্গ
যেদিকেই তাকান না কেন, কেবল দূরেই মনে হবে আকাশ আর মাটি মিশেছে। কিন্তু কাছাকাছি কোথাও তা খুঁজে পাবেন না। এমনটা কেন হয়?
২ দিন আগেবিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে চুলের গঠন, তার প্রাকৃতিক বৃদ্ধি এবং ক্ষতির কারণ নিয়ে গবেষণা করে আসছেন। চুল মূলত প্রোটিন দ্বারা গঠিত, বিশেষ করে কেরাটিন নামের একটি প্রোটিন চুলের মূল উপাদান। যখন চুল পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না কিংবা বাইরে থেকে সঠিক যত্ন পায় না, তখন তা রুক্ষ হয়ে যায়, ভেঙে যায় এবং ঝরে পড়ে। তেল মূলত চ
২ দিন আগেলাল লতিকা হট্টিটি মাঝারি আকারের হয়ে থাকে। এই পাখিটি খুবেই চটপটে ও চঞ্চল প্রকৃতির হয়ে থাকে। তার সতর্ক ভঙ্গি ও জলশয়ের পাতার ওপর দ্রুত দৌড়ানোর ক্ষমতার জন্য সুপরিচিত। লাল লতিকা হট্টিটি লম্বায় ৩৪-৩৭ সেন্টিমিটার। এদের চোখের সামনে টকটকে লাল চামড়া। সেটিই লতিকা।
৩ দিন আগেঅচ্যুত পোতদারের অভিনয়জীবন ছিল চার দশকেরও বেশি। তিনি ১২৫টির বেশি হিন্দি ও মারাঠি ছবিতে কাজ করেছেন। হিন্দি ও মারাঠি চলচ্চিত্র অঙ্গনে তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহকর্মী, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। বাস্তব জীবনেও তিনি ছিলেন নম্র, অমায়িক এবং বহুমুখী প্রতিভ
৩ দিন আগে