বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও বেনাপোল-খুলনা-মোংলা (যশোর হয়ে) রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বেতনা কমিউটার ট্রেন বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, বর্তমান আয়ের তুলনায় বেশি অর্থ পেলে নীতিমালা অনুযায়ী লিজ দেওয়া যেতে পারে। যদিও এই উদ্যোগ ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
রেলওয়ের একাধিক সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল ট্রেনটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং ১৯ মে দরপত্র খোলা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে তিন বছরের জন্য ট্রেনটি লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, ‘এইচ অ্যান্ড এম কোং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে কার্যাদেশ পেয়ে গেছে।
রেল সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সাল থেকে দীর্ঘদিন এই রুটে রেল চলাচল বন্ধ থাকার পর ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সরকার ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি যাত্রীবাহী কমিউটার ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৯ সালের ২৩ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে বেনাপোল-খুলনা-মোংলা রুটের কমিউটার ট্রেন। ২০১০ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত (প্রায় ১১ বছর) সেটি সরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এরপর ট্রেনটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রথমে ‘মেসার্স বান্না এন্টারপ্রাইজ’ ও পরে ‘ইসলাম শিপ বিল্ডার্স’ চুক্তিবদ্ধ হয়ে ট্রেনটি পরিচালনা করে।
তবে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাত্রীসেবার মান খারাপ ও ট্রেনে চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০১৩ সালে তা আবার সরকারি ব্যবস্থায় ফিরে আসে। লাভজনক ও যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ২০১৭ সালের ১ মার্চ থেকে এ রুটে দিনে দুইবার যাত্রীবাহী কমিউটার ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রতিদিন সকাল ৬টায় খুলনা থেকে কমিউটার ট্রেন যাত্রী নিয়ে বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা হয়ে দৌলতপুর, নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া, যশোর, ঝিকরগাছা ও নাভারণ স্টেশন পার হয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় বেনাপোল পৌঁছায়। এসব স্টেশন থেকে ওঠা বেশির ভাগ যাত্রী ভারতে যান।
কমিউটার বেতনা ট্রেনটি সকাল ৯:১৫টায় বেনাপোল স্টেশন ত্যাগ করে বেলা ১১:৪৫টায় খুলনার পাশে মোহাম্মদনগর পৌঁছায়। এরপর মোংলা হয়ে বেনাপোল পৌঁছায় বিকেল সাড়ে ৪টায়। সেখান থেকে বিকেল ৫টায় খুলনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে।
স্থলপথে ভারত যাতায়াতের জন্য দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোল। খুলনা-যশোর ছাড়াও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক যাত্রী এই পথে ভারতে আসা-যাওয়া করেন। অনেক সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী আবার মোংলা, খুলনা ও যশোরসহ মধ্যবর্তী শহরগুলোতে যাতায়াত করেন এই ট্রেনে চড়ে।
তাড়াহুড়ো করে বেতনা কমিউটার ট্রেনে উঠছেন যাত্রীরা। ছবি : রাজনীতি ডটকম
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, দিন দিন ট্রেনে যাত্রী বাড়ছে। প্রতিদিন শতাধিক যাত্রী ভারতের উদ্দেশ্যে বেতনা ট্রেনে করে যাতায়াত করে থাকেন। তবে অনেক যাত্রী টিকিট না কেটেই ট্রেনে ওঠেন। পরে চেক-আপের সময় তারা অর্ধেক ভাড়া দিয়ে পার পেয়ে যান। আবার অনেকে সুযোগ পেলে টিকেটের পুরো টাকাই ফাঁকি দেন।
বর্তমানে ট্রেনটি মাসে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা আয় করছে, যা পূর্বের তুলনায় বেশি। তবে ট্রেনটিতে টিকিটহীন যাত্রীদের আধিক্য, চোরাচালানীদের দৌরাত্ম্য, এবং নিরাপত্তা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় রেলওয়ে বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, লাভজনক ট্রেনটির প্রতি নজর পড়েছে সুযোগ সন্ধানীদের। তারা এটিকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়।
সূত্র জানায়, এই ট্রেনে চড়ে প্রতিদিন কয়েকশ' নারী চোরাচালানী খুলনা, দৌলতপুর, নোয়াপাড়া, যশোর থেকে বেনাপোল আসে। এরপর ভারত থেকে অবৈধ পথে আসা বিভিন্ন মালামাল নিয়ে তারা আবার একই ট্রেনে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যায়। যাতায়াতের সময় তারা কখনওই টিকেট কাটে না। রেলওয়ের টিটি, জিআরপি পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীও (আরএনবি) তাদের কিছুই বলে না।
ট্রেনের যাত্রীরা জানান, টিকেট কেটেও অনেক সময় তাদের দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে হয়। অথচ নারী চোরাচালানী চক্র দলবদ্ধভাবে সিট দখল করে বসে খোশগল্প করে থাকে। আবার ফিরতি পথে রেলের কামরায় মালামাল রাখার ব্যাংকার এবং সিটের উপর-নিচে মালামাল রেখে সাধারণ যাত্রীদের ভ্রমণকে কষ্টকর করে তোলে তারা। কেউ কিছু বললেই, ট্রেনটি নিজেদের বলে দাবি করেন তারা।
এমন এক সময় যখন রুটটি লাভজনকভাবে চলছে, তখন হঠাৎ করে এটি বেসরকারি খাতে লিজ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ যাত্রী ও স্থানীয়দের মাঝে। তারা আশঙ্কা করছেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেলে আবারও যাত্রীসেবার মান অবনতি, ভাড়া বৃদ্ধি, ও চোরাচালানীদের আধিপত্য ফিরে আসবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রীর অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় সম্পদ হওয়ায় লোকসান দেখিয়ে, ট্রেনটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেওয়ার যুক্তি তৈরি করছে সংশ্লিষ্টরা। তিনি জানান, খুলনা থেকে বাসযোগে বেনাপোল আসতে সময় লাগে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। এতে ভাড়া পড়ে ২০০ টাকা। আর কমিউটার ট্রেনে খুলনা থেকে বেনাপোল আসতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা, ভাড়া মাত্র ৪৫-৫০ টাকা। এ কারণে খুলনা থেকে যশোরসহ অন্য জেলা শহর থেকে ভারতে যাতায়াতকারীরা বাসের চেয়ে কম খরচে ট্রেনে চলাচল করেন। এতে আগের তুলনায় কমিউটার ট্রেন থেকে সরকারি কোষাগারে বেশি টাকা জমা হচ্ছে।
একটি স্টেশনে থেমে আছে বেনাপোল-খুলনা-মোংলা রুটে চলাচলকারী বেতনা কমিউটার ট্রেন। ছবি : রাজনীতি ডটকম
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাকশীতে কর্মরত রেলওয়ের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মিহির কুমার গুহ বলেন, লোকসানের কারণে অনেক সময় নীতিমালা মেনেই ট্রেন বেসরকারি খাতে লিজ দেওয়া হয়। কোনো কোম্পানি যদি পূর্বের ছয় মাসের আয়ের চেয়ে বেশি টাকা দিতে চায়, তাহলে তাদের অনুকূলে লিজ দেওয়া যেতে পারে।
বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, 'আপনারা (সাংবাদিকরা) যেভাবে জেনেছেন, আমিও ওইভাবে জেনেছি। তবে লিজ দেওয়া হয়েছে কি-না, আমি জানি না। এ সংক্রান্ত কোনো কাগজ আমি হাতে পাইনি।
অন্যদিকে, টেন্ডারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ‘এইচ অ্যান্ড এম কোং’-এর মালিক হুমায়ুন আহমেদ জানিয়েছেন, আগস্টের শুরুতেই ট্রেনটি তাদের দায়িত্বে চলবে। তিনি বলেন, 'আমরা কাজ পেয়েছি। জুলাই মাসের প্রথমার্ধে আমাদের দায়িত্বে এ রুটটি চলার কথা ছিল। তবে বাজেটসহ অন্যান্য কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। এ মাসের মধ্যে না হলেও আগামী আগস্ট মাসের প্রথম দিকে বেসরকারিভাবে আমাদের দায়িত্বে এ রুটে ট্রেন চলাচল করবে।'
রাজশাহী রেলওয়ে ভবনের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক সুজিত কুমার বিশ্বাস জানান, বেনাপোল-খুলনা-মোংলা রুটের কমিউটার বেতনা ট্রেনটি বেসরকারি খাতে দেয়ার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছিল। দরপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করে মূল্যায়ন শাখায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রশাসনিক শাখায় এখনো আসেনি। এরপর কাগজপত্র ঢাকা পাঠানো হবে। সেখান থেকে সর্বোচ্চ দরপত্রদাতাকে কাজ দেয়া হবে।
স্থানীয় সাধারণ মানুষ ও নিয়মিত যাত্রীরা আশঙ্কা করছেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে আবারও পূর্বের মত যাত্রীদের দুর্ভোগ ও নিরাপত্তাহীনতা বাড়বে। এ বিষয়ে দ্রুত রেল কর্তৃপক্ষের সুস্পষ্ট অবস্থান ও লাভজনক ট্রেনটি সরকারি তত্ত্বাবধানে রাখার দাবি জানিয়েছেন দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সাধারণ মানুষ।
লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও বেনাপোল-খুলনা-মোংলা (যশোর হয়ে) রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বেতনা কমিউটার ট্রেন বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, বর্তমান আয়ের তুলনায় বেশি অর্থ পেলে নীতিমালা অনুযায়ী লিজ দেওয়া যেতে পারে। যদিও এই উদ্যোগ ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
রেলওয়ের একাধিক সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল ট্রেনটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং ১৯ মে দরপত্র খোলা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে তিন বছরের জন্য ট্রেনটি লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, ‘এইচ অ্যান্ড এম কোং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে কার্যাদেশ পেয়ে গেছে।
রেল সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সাল থেকে দীর্ঘদিন এই রুটে রেল চলাচল বন্ধ থাকার পর ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সরকার ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি যাত্রীবাহী কমিউটার ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৯ সালের ২৩ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে বেনাপোল-খুলনা-মোংলা রুটের কমিউটার ট্রেন। ২০১০ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত (প্রায় ১১ বছর) সেটি সরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এরপর ট্রেনটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রথমে ‘মেসার্স বান্না এন্টারপ্রাইজ’ ও পরে ‘ইসলাম শিপ বিল্ডার্স’ চুক্তিবদ্ধ হয়ে ট্রেনটি পরিচালনা করে।
তবে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাত্রীসেবার মান খারাপ ও ট্রেনে চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০১৩ সালে তা আবার সরকারি ব্যবস্থায় ফিরে আসে। লাভজনক ও যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ২০১৭ সালের ১ মার্চ থেকে এ রুটে দিনে দুইবার যাত্রীবাহী কমিউটার ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রতিদিন সকাল ৬টায় খুলনা থেকে কমিউটার ট্রেন যাত্রী নিয়ে বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা হয়ে দৌলতপুর, নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া, যশোর, ঝিকরগাছা ও নাভারণ স্টেশন পার হয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় বেনাপোল পৌঁছায়। এসব স্টেশন থেকে ওঠা বেশির ভাগ যাত্রী ভারতে যান।
কমিউটার বেতনা ট্রেনটি সকাল ৯:১৫টায় বেনাপোল স্টেশন ত্যাগ করে বেলা ১১:৪৫টায় খুলনার পাশে মোহাম্মদনগর পৌঁছায়। এরপর মোংলা হয়ে বেনাপোল পৌঁছায় বিকেল সাড়ে ৪টায়। সেখান থেকে বিকেল ৫টায় খুলনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে।
স্থলপথে ভারত যাতায়াতের জন্য দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোল। খুলনা-যশোর ছাড়াও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক যাত্রী এই পথে ভারতে আসা-যাওয়া করেন। অনেক সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী আবার মোংলা, খুলনা ও যশোরসহ মধ্যবর্তী শহরগুলোতে যাতায়াত করেন এই ট্রেনে চড়ে।
তাড়াহুড়ো করে বেতনা কমিউটার ট্রেনে উঠছেন যাত্রীরা। ছবি : রাজনীতি ডটকম
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, দিন দিন ট্রেনে যাত্রী বাড়ছে। প্রতিদিন শতাধিক যাত্রী ভারতের উদ্দেশ্যে বেতনা ট্রেনে করে যাতায়াত করে থাকেন। তবে অনেক যাত্রী টিকিট না কেটেই ট্রেনে ওঠেন। পরে চেক-আপের সময় তারা অর্ধেক ভাড়া দিয়ে পার পেয়ে যান। আবার অনেকে সুযোগ পেলে টিকেটের পুরো টাকাই ফাঁকি দেন।
বর্তমানে ট্রেনটি মাসে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা আয় করছে, যা পূর্বের তুলনায় বেশি। তবে ট্রেনটিতে টিকিটহীন যাত্রীদের আধিক্য, চোরাচালানীদের দৌরাত্ম্য, এবং নিরাপত্তা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় রেলওয়ে বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, লাভজনক ট্রেনটির প্রতি নজর পড়েছে সুযোগ সন্ধানীদের। তারা এটিকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়।
সূত্র জানায়, এই ট্রেনে চড়ে প্রতিদিন কয়েকশ' নারী চোরাচালানী খুলনা, দৌলতপুর, নোয়াপাড়া, যশোর থেকে বেনাপোল আসে। এরপর ভারত থেকে অবৈধ পথে আসা বিভিন্ন মালামাল নিয়ে তারা আবার একই ট্রেনে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যায়। যাতায়াতের সময় তারা কখনওই টিকেট কাটে না। রেলওয়ের টিটি, জিআরপি পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীও (আরএনবি) তাদের কিছুই বলে না।
ট্রেনের যাত্রীরা জানান, টিকেট কেটেও অনেক সময় তাদের দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে হয়। অথচ নারী চোরাচালানী চক্র দলবদ্ধভাবে সিট দখল করে বসে খোশগল্প করে থাকে। আবার ফিরতি পথে রেলের কামরায় মালামাল রাখার ব্যাংকার এবং সিটের উপর-নিচে মালামাল রেখে সাধারণ যাত্রীদের ভ্রমণকে কষ্টকর করে তোলে তারা। কেউ কিছু বললেই, ট্রেনটি নিজেদের বলে দাবি করেন তারা।
এমন এক সময় যখন রুটটি লাভজনকভাবে চলছে, তখন হঠাৎ করে এটি বেসরকারি খাতে লিজ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ যাত্রী ও স্থানীয়দের মাঝে। তারা আশঙ্কা করছেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেলে আবারও যাত্রীসেবার মান অবনতি, ভাড়া বৃদ্ধি, ও চোরাচালানীদের আধিপত্য ফিরে আসবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রীর অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় সম্পদ হওয়ায় লোকসান দেখিয়ে, ট্রেনটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেওয়ার যুক্তি তৈরি করছে সংশ্লিষ্টরা। তিনি জানান, খুলনা থেকে বাসযোগে বেনাপোল আসতে সময় লাগে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। এতে ভাড়া পড়ে ২০০ টাকা। আর কমিউটার ট্রেনে খুলনা থেকে বেনাপোল আসতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা, ভাড়া মাত্র ৪৫-৫০ টাকা। এ কারণে খুলনা থেকে যশোরসহ অন্য জেলা শহর থেকে ভারতে যাতায়াতকারীরা বাসের চেয়ে কম খরচে ট্রেনে চলাচল করেন। এতে আগের তুলনায় কমিউটার ট্রেন থেকে সরকারি কোষাগারে বেশি টাকা জমা হচ্ছে।
একটি স্টেশনে থেমে আছে বেনাপোল-খুলনা-মোংলা রুটে চলাচলকারী বেতনা কমিউটার ট্রেন। ছবি : রাজনীতি ডটকম
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাকশীতে কর্মরত রেলওয়ের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মিহির কুমার গুহ বলেন, লোকসানের কারণে অনেক সময় নীতিমালা মেনেই ট্রেন বেসরকারি খাতে লিজ দেওয়া হয়। কোনো কোম্পানি যদি পূর্বের ছয় মাসের আয়ের চেয়ে বেশি টাকা দিতে চায়, তাহলে তাদের অনুকূলে লিজ দেওয়া যেতে পারে।
বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, 'আপনারা (সাংবাদিকরা) যেভাবে জেনেছেন, আমিও ওইভাবে জেনেছি। তবে লিজ দেওয়া হয়েছে কি-না, আমি জানি না। এ সংক্রান্ত কোনো কাগজ আমি হাতে পাইনি।
অন্যদিকে, টেন্ডারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ‘এইচ অ্যান্ড এম কোং’-এর মালিক হুমায়ুন আহমেদ জানিয়েছেন, আগস্টের শুরুতেই ট্রেনটি তাদের দায়িত্বে চলবে। তিনি বলেন, 'আমরা কাজ পেয়েছি। জুলাই মাসের প্রথমার্ধে আমাদের দায়িত্বে এ রুটটি চলার কথা ছিল। তবে বাজেটসহ অন্যান্য কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। এ মাসের মধ্যে না হলেও আগামী আগস্ট মাসের প্রথম দিকে বেসরকারিভাবে আমাদের দায়িত্বে এ রুটে ট্রেন চলাচল করবে।'
রাজশাহী রেলওয়ে ভবনের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক সুজিত কুমার বিশ্বাস জানান, বেনাপোল-খুলনা-মোংলা রুটের কমিউটার বেতনা ট্রেনটি বেসরকারি খাতে দেয়ার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছিল। দরপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করে মূল্যায়ন শাখায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রশাসনিক শাখায় এখনো আসেনি। এরপর কাগজপত্র ঢাকা পাঠানো হবে। সেখান থেকে সর্বোচ্চ দরপত্রদাতাকে কাজ দেয়া হবে।
স্থানীয় সাধারণ মানুষ ও নিয়মিত যাত্রীরা আশঙ্কা করছেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে আবারও পূর্বের মত যাত্রীদের দুর্ভোগ ও নিরাপত্তাহীনতা বাড়বে। এ বিষয়ে দ্রুত রেল কর্তৃপক্ষের সুস্পষ্ট অবস্থান ও লাভজনক ট্রেনটি সরকারি তত্ত্বাবধানে রাখার দাবি জানিয়েছেন দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সাধারণ মানুষ।
পিরিয়ড মানেই নারীর শরীরে নানা ধরনের হরমোনের ওঠানামা। ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন ইত্যাদি হরমোনের তারতম্যের ফলে শারীরিক ও মানসিক নানা পরিবর্তন ঘটে। পেটব্যথা, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, হজমের সমস্যা—এই সবই পিরিয়ডের সময় অনেক নারীর নিত্যসঙ্গী।
৫ ঘণ্টা আগেআগে অনেকেই এমন করতেন—ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে যাওয়া কোনো ভিডিও বা ক্লিপ নিয়ে সেটি নিজের চ্যানেলে দিয়ে দিতেন, যাতে প্রচুর ভিউ হয় এবং সহজেই অর্থ আয় করা যায়। ইউটিউব এবার এটিকে বলছে ‘ইনঅথেন্টিকেটেড কন্টেন্ট’ বা ‘অসত্য কনটেন্ট’। এর মানে, যা নিজের নয় এবং তাতে নতুন কিছু যোগ করা হয়নি—সেই কনটেন্ট আর মানিটাইজ হবে না
১ দিন আগেসমস্যার শুরু যখন পারস্যের অধীনে থাকা আয়োনীয় (বর্তমান তুরস্কের উপকূলীয় অঞ্চল) কিছু গ্রিক নগররাষ্ট্র বিদ্রোহ করে এবং অ্যাথেন্স তাদের সাহায্য করে। দরিয়ুস এটাকে নিজের সাম্রাজ্যের জন্য হুমকি হিসেবে দেখেন এবং অ্যাথেন্সকে শিক্ষা দিতে একটি সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করেন।
১ দিন আগেপুদিনা পাতা হজমে সহায়ক। প্রাচীন আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় পুদিনা পাতাকে পেট ঠাণ্ডা রাখা, গ্যাস-অম্বল কমানো এবং হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১ দিন আগে