ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসে যদি সবচেয়ে পুরনো, সবচেয়ে রহস্যময় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের নাম বলা হয়, তবে সেটি নিঃসন্দেহে ‘চর্যাপদ’। এই গ্রন্থটি শুধু বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন নয়, বরং এটি পূর্বভারতের লোকজ সংস্কৃতি, ধর্মীয় ধ্যানধারণা ও ভাষার এক অনন্য দলিল। এই ফিচারে আমরা জানব চর্যাপদ কী, এর সৃষ্টি ও আবিষ্কারের ইতিহাস, এবং কীভাবে বিশ্বের বিভিন্ন গবেষক চর্যাপদকে মূল্যায়ন করেছেন।
‘চর্যাপদ’ শব্দটির অর্থই বলে দেয় এর পরিচয়। ‘চর্যা’ অর্থ গোপন সাধনা, আর ‘পদ’ মানে পদ্য বা কবিতা। অর্থাৎ ‘চর্যাপদ’ হলো এমন সব গানের সংগ্রহ, যেগুলো একধরনের গোপন ধর্মীয় সাধনার কথা বলে। এগুলো ছিল বৌদ্ধ সহজযান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় গান। একদিকে আধ্যাত্মিক ধ্যান, আবার অন্যদিকে জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছিল এই গানগুলো। আর এই পদগুলো রচিত হয়েছিল ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে।
এই পদগুলোর ভাষা ছিল এমন এক রূপ, যা এখনকার বাংলা ভাষার আদি রূপ হিসেবে ধরা হয়। তাই চর্যাপদ শুধু ধর্মীয় বা কাব্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, ভাষাতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দারুণ গুরুত্বপূর্ণ।
চর্যাপদের মোট ৫০টি পদ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ৪৬টি সংরক্ষিত রয়েছে। এগুলো রচনা করেছিলেন ২২ জন সাধক কবি। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন—লুইপা, সরহপা, ভুসুকুপা, টিলোপা, ডোম্বীপা, কুক্কুরীপা, শবরীপা প্রমুখ। তাঁদের জীবন অনেকটাই আধ্যাত্মিক চর্চায় ভরা ছিল। তাঁরা সমাজের প্রচলিত নিয়মকে অগ্রাহ্য করে, সহজিয়া চিন্তাধারায় বিশ্বাস করতেন। সাধারণ মানুষের ভাষায় এবং জীবনের কথায় তাঁরা ধর্ম ও তত্ত্বকে ব্যক্ত করতেন।
এই সাধকরা অনেকেই তখনকার ভারতের নানা প্রান্তে ছিলেন—উড়িষ্যা, আসাম, বঙ্গ ও বিহার অঞ্চলে। ফলে চর্যাপদের ভাষায় পাওয়া যায় স্থানীয় প্রভাব। কোথাও উড়িয়া শব্দ, কোথাও সংস্কৃত, কোথাও প্রাচীন বাংলার ছোঁয়া।
চর্যাপদ শতাব্দীর পর শতাব্দী লোকমুখে ছিল, কিন্তু কোনো লিখিত প্রমাণ ছিল না। ১৯০৭ সালে ইতিহাসের মোড় ঘুরে যায়। কলকাতার প্রখ্যাত পণ্ডিত ও সাহিত্য-সংগ্রাহক ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তখন নেপালের রাজদরবারের রাজপরিবারীয় পুঁথির সংগ্রহ দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে, কাঠমান্ডুর রাজবংশীয় গ্রন্থাগারে তিনি আবিষ্কার করেন একটি প্রাচীন পান্ডুলিপি, নাম ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’।
এই পান্ডুলিপির ভাষা ছিল প্রাচীন বাংলা ও সংস্কৃতের সংমিশ্রণ। এতে ছিল ৫০টি পদ এবং এক বিদ্যাপতির সংস্কৃত ভাষ্যে লেখা টীকা। শাস্ত্রী প্রথমে বুঝতেই পারেননি এর ভাষা। পরে ধীরে ধীরে তিনি বুঝতে পারেন, এই পদগুলো বাংলার আদিম রূপে লেখা। ১৯১৬ সালে তিনি ‘বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস’ নামে এক বক্তৃতায় প্রথম এই আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন এবং বাংলা সাহিত্যের সূচনাবিন্দু হিসেবে চর্যাপদকে প্রতিষ্ঠা করেন।
চর্যাপদের ভাষা ছিল মিশ্র, যা ভাষাবিজ্ঞানীরা বলেন ‘আবহমান বাংলা’র আদিরূপ। এর মধ্যে আছে সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, উড়িয়া ও মাগধি ভাষার প্রভাব। এই মিশ্রতা থেকেই গড়ে উঠেছে আজকের বাংলা ভাষা। যেমন এক চর্যায় বলা হয়েছে— “চারি গবে সই, চরণত লোপি, অচরিয় গইয়া ভইলাম পাগল।” এই বাক্যটি আজকের বাংলা ভাষায় অনেকটাই ধরা পড়ে: "চারদিকে ঘুরে ঘুরে, চরণে লোপ পেয়ে, অচরিত পথে গিয়েই আমি পাগল হয়ে গেলাম।" অর্থাৎ, চর্যাপদের ভাষায় আজকের বাংলা ভাষার রূপ খুঁজে পাওয়া যায়।
চর্যাপদ কেবল ভাষার দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এর সাহিত্যিক গুণও অত্যন্ত উচ্চমানের। এতে মানবজীবনের দুঃখ, দরিদ্রতা, প্রেম, সমাজ-বিদ্রোহ, আধ্যাত্মিক অনুসন্ধান—সব কিছু পাওয়া যায়। এটা কোনো রাজার বা বড় পণ্ডিতের কথা নয়, বরং সমাজের সাধারণ মানুষের মুখের ভাষায় লেখা আত্মপ্রকাশ।
চর্যাপদ আবিষ্কারের পর শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বজুড়ে সাহিত্য ও ভাষাতত্ত্বের গবেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অনেক বিদেশি পণ্ডিত এর ওপর গবেষণা করেন এবং বাংলার সাহিত্যিক ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দেন।
আইরিশ ভাষাতাত্ত্বিক ড. জর্জ গ্রিয়ারসন তাঁর ‘লিঙ্গুয়িস্টিক সার্ভে অব ইন্ডিয়া’ বইয়ে চর্যাপদের ভাষাকে বাংলা ভাষার আদিরূপ হিসেবে চিহ্নিত করেন। গ্রিয়ারসনের মতে, “চর্যাপদের পদগুলো শুধু সাহিত্যের নিদর্শন নয়, বরং এশিয়ার প্রাচীন লোকভাষার আত্মপ্রকাশ।”
ভাষাগবেষক ও সাহিত্যিক ড. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর গবেষণার ব্যাপ্তি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের। তিনি চর্যাপদকে বাংলার সাহিত্যের উৎসধারা হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন, “চর্যাপদ বাংলা ভাষার মহাবৃক্ষের প্রথম অঙ্কুর।”
ফরাসি সংস্কৃতজ্ঞ ও প্রাচ্যতত্ত্ববিদ লুই রেনুর মতে, “চর্যাপদ বৌদ্ধ সাহিত্যের আধ্যাত্মিক গান হলেও, এদের ভাষা ভবিষ্যতের বাংলা ভাষার ভিত্তি। এই রচনা আমাদের দেখায় কিভাবে প্রাকৃত থেকে আঞ্চলিক ভাষাগুলো গড়ে উঠেছে।”
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত পণ্ডিত ড. দানিয়েল এইচ. এইচ. ইঙ্গলস। তিনি চর্যাপদের আধ্যাত্মিক গূঢ়তা নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁর মতে, “চর্যাপদ সহজিয়া বৌদ্ধদের অন্তর্জগতের প্রতিচ্ছবি। এতে ভাষার সাথে সাথে দর্শনের বিকাশও দেখা যায়।”
চর্যাপদ এখন জাতীয় সম্পদ। বাংলাদেশের জাতীয় পাঠ্যক্রমে এর উল্লেখ আছে, পশ্চিমবঙ্গেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। ইউনেস্কো ২০১৩ সালে চর্যাপদকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো এ নিয়ে গবেষণা চলছে। চর্যাপদের পদ গান আকারেও পরিবেশিত হয়, কেউ কেউ একে নাটক ও মঞ্চনাট্যের রূপ দিয়েছেন।
চর্যাপদ শুধু সাহিত্য নয়, এটি ইতিহাস, ধর্ম, সমাজ আর ভাষার সম্মিলন। এ যেন সময়ের গহ্বরে চাপা পড়া এক রত্ন, যেটি আবার আলোয় এসেছে ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতো গবেষকের হাত ধরে। আজ যখন আমরা আধুনিক বাংলা সাহিত্য নিয়ে গর্ব করি, তখন আমাদের ফিরে তাকাতে হয় সেই ‘চর্যা’র দিকে, যেখানে প্রথম শব্দ উচ্চারিত হয়েছিল বাংলায়, মাটির গন্ধ মাখানো এক গোপন সাধনায়।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসে যদি সবচেয়ে পুরনো, সবচেয়ে রহস্যময় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের নাম বলা হয়, তবে সেটি নিঃসন্দেহে ‘চর্যাপদ’। এই গ্রন্থটি শুধু বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন নয়, বরং এটি পূর্বভারতের লোকজ সংস্কৃতি, ধর্মীয় ধ্যানধারণা ও ভাষার এক অনন্য দলিল। এই ফিচারে আমরা জানব চর্যাপদ কী, এর সৃষ্টি ও আবিষ্কারের ইতিহাস, এবং কীভাবে বিশ্বের বিভিন্ন গবেষক চর্যাপদকে মূল্যায়ন করেছেন।
‘চর্যাপদ’ শব্দটির অর্থই বলে দেয় এর পরিচয়। ‘চর্যা’ অর্থ গোপন সাধনা, আর ‘পদ’ মানে পদ্য বা কবিতা। অর্থাৎ ‘চর্যাপদ’ হলো এমন সব গানের সংগ্রহ, যেগুলো একধরনের গোপন ধর্মীয় সাধনার কথা বলে। এগুলো ছিল বৌদ্ধ সহজযান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় গান। একদিকে আধ্যাত্মিক ধ্যান, আবার অন্যদিকে জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছিল এই গানগুলো। আর এই পদগুলো রচিত হয়েছিল ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে।
এই পদগুলোর ভাষা ছিল এমন এক রূপ, যা এখনকার বাংলা ভাষার আদি রূপ হিসেবে ধরা হয়। তাই চর্যাপদ শুধু ধর্মীয় বা কাব্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, ভাষাতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দারুণ গুরুত্বপূর্ণ।
চর্যাপদের মোট ৫০টি পদ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ৪৬টি সংরক্ষিত রয়েছে। এগুলো রচনা করেছিলেন ২২ জন সাধক কবি। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন—লুইপা, সরহপা, ভুসুকুপা, টিলোপা, ডোম্বীপা, কুক্কুরীপা, শবরীপা প্রমুখ। তাঁদের জীবন অনেকটাই আধ্যাত্মিক চর্চায় ভরা ছিল। তাঁরা সমাজের প্রচলিত নিয়মকে অগ্রাহ্য করে, সহজিয়া চিন্তাধারায় বিশ্বাস করতেন। সাধারণ মানুষের ভাষায় এবং জীবনের কথায় তাঁরা ধর্ম ও তত্ত্বকে ব্যক্ত করতেন।
এই সাধকরা অনেকেই তখনকার ভারতের নানা প্রান্তে ছিলেন—উড়িষ্যা, আসাম, বঙ্গ ও বিহার অঞ্চলে। ফলে চর্যাপদের ভাষায় পাওয়া যায় স্থানীয় প্রভাব। কোথাও উড়িয়া শব্দ, কোথাও সংস্কৃত, কোথাও প্রাচীন বাংলার ছোঁয়া।
চর্যাপদ শতাব্দীর পর শতাব্দী লোকমুখে ছিল, কিন্তু কোনো লিখিত প্রমাণ ছিল না। ১৯০৭ সালে ইতিহাসের মোড় ঘুরে যায়। কলকাতার প্রখ্যাত পণ্ডিত ও সাহিত্য-সংগ্রাহক ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তখন নেপালের রাজদরবারের রাজপরিবারীয় পুঁথির সংগ্রহ দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে, কাঠমান্ডুর রাজবংশীয় গ্রন্থাগারে তিনি আবিষ্কার করেন একটি প্রাচীন পান্ডুলিপি, নাম ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’।
এই পান্ডুলিপির ভাষা ছিল প্রাচীন বাংলা ও সংস্কৃতের সংমিশ্রণ। এতে ছিল ৫০টি পদ এবং এক বিদ্যাপতির সংস্কৃত ভাষ্যে লেখা টীকা। শাস্ত্রী প্রথমে বুঝতেই পারেননি এর ভাষা। পরে ধীরে ধীরে তিনি বুঝতে পারেন, এই পদগুলো বাংলার আদিম রূপে লেখা। ১৯১৬ সালে তিনি ‘বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস’ নামে এক বক্তৃতায় প্রথম এই আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন এবং বাংলা সাহিত্যের সূচনাবিন্দু হিসেবে চর্যাপদকে প্রতিষ্ঠা করেন।
চর্যাপদের ভাষা ছিল মিশ্র, যা ভাষাবিজ্ঞানীরা বলেন ‘আবহমান বাংলা’র আদিরূপ। এর মধ্যে আছে সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, উড়িয়া ও মাগধি ভাষার প্রভাব। এই মিশ্রতা থেকেই গড়ে উঠেছে আজকের বাংলা ভাষা। যেমন এক চর্যায় বলা হয়েছে— “চারি গবে সই, চরণত লোপি, অচরিয় গইয়া ভইলাম পাগল।” এই বাক্যটি আজকের বাংলা ভাষায় অনেকটাই ধরা পড়ে: "চারদিকে ঘুরে ঘুরে, চরণে লোপ পেয়ে, অচরিত পথে গিয়েই আমি পাগল হয়ে গেলাম।" অর্থাৎ, চর্যাপদের ভাষায় আজকের বাংলা ভাষার রূপ খুঁজে পাওয়া যায়।
চর্যাপদ কেবল ভাষার দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এর সাহিত্যিক গুণও অত্যন্ত উচ্চমানের। এতে মানবজীবনের দুঃখ, দরিদ্রতা, প্রেম, সমাজ-বিদ্রোহ, আধ্যাত্মিক অনুসন্ধান—সব কিছু পাওয়া যায়। এটা কোনো রাজার বা বড় পণ্ডিতের কথা নয়, বরং সমাজের সাধারণ মানুষের মুখের ভাষায় লেখা আত্মপ্রকাশ।
চর্যাপদ আবিষ্কারের পর শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বজুড়ে সাহিত্য ও ভাষাতত্ত্বের গবেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অনেক বিদেশি পণ্ডিত এর ওপর গবেষণা করেন এবং বাংলার সাহিত্যিক ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দেন।
আইরিশ ভাষাতাত্ত্বিক ড. জর্জ গ্রিয়ারসন তাঁর ‘লিঙ্গুয়িস্টিক সার্ভে অব ইন্ডিয়া’ বইয়ে চর্যাপদের ভাষাকে বাংলা ভাষার আদিরূপ হিসেবে চিহ্নিত করেন। গ্রিয়ারসনের মতে, “চর্যাপদের পদগুলো শুধু সাহিত্যের নিদর্শন নয়, বরং এশিয়ার প্রাচীন লোকভাষার আত্মপ্রকাশ।”
ভাষাগবেষক ও সাহিত্যিক ড. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর গবেষণার ব্যাপ্তি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের। তিনি চর্যাপদকে বাংলার সাহিত্যের উৎসধারা হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন, “চর্যাপদ বাংলা ভাষার মহাবৃক্ষের প্রথম অঙ্কুর।”
ফরাসি সংস্কৃতজ্ঞ ও প্রাচ্যতত্ত্ববিদ লুই রেনুর মতে, “চর্যাপদ বৌদ্ধ সাহিত্যের আধ্যাত্মিক গান হলেও, এদের ভাষা ভবিষ্যতের বাংলা ভাষার ভিত্তি। এই রচনা আমাদের দেখায় কিভাবে প্রাকৃত থেকে আঞ্চলিক ভাষাগুলো গড়ে উঠেছে।”
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত পণ্ডিত ড. দানিয়েল এইচ. এইচ. ইঙ্গলস। তিনি চর্যাপদের আধ্যাত্মিক গূঢ়তা নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁর মতে, “চর্যাপদ সহজিয়া বৌদ্ধদের অন্তর্জগতের প্রতিচ্ছবি। এতে ভাষার সাথে সাথে দর্শনের বিকাশও দেখা যায়।”
চর্যাপদ এখন জাতীয় সম্পদ। বাংলাদেশের জাতীয় পাঠ্যক্রমে এর উল্লেখ আছে, পশ্চিমবঙ্গেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। ইউনেস্কো ২০১৩ সালে চর্যাপদকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো এ নিয়ে গবেষণা চলছে। চর্যাপদের পদ গান আকারেও পরিবেশিত হয়, কেউ কেউ একে নাটক ও মঞ্চনাট্যের রূপ দিয়েছেন।
চর্যাপদ শুধু সাহিত্য নয়, এটি ইতিহাস, ধর্ম, সমাজ আর ভাষার সম্মিলন। এ যেন সময়ের গহ্বরে চাপা পড়া এক রত্ন, যেটি আবার আলোয় এসেছে ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতো গবেষকের হাত ধরে। আজ যখন আমরা আধুনিক বাংলা সাহিত্য নিয়ে গর্ব করি, তখন আমাদের ফিরে তাকাতে হয় সেই ‘চর্যা’র দিকে, যেখানে প্রথম শব্দ উচ্চারিত হয়েছিল বাংলায়, মাটির গন্ধ মাখানো এক গোপন সাধনায়।
বাংলা সাহিত্যের ভিত্তিতে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্মরণীয় নাম হল সত্যজিৎ রায়। তিনি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’ অবলম্বনে ১৯৫৫ সালে যে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন, তা কেবল বাংলা বা ভারতীয় চলচ্চিত্রের নয়, বিশ্ব চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক মাইলফলক হয়ে দাঁড়ায়।
৫ দিন আগেমীর জাফর, নবাবের সেনাপতি, ব্রিটিশদের সঙ্গে গোপনে চুক্তি করেন এবং যুদ্ধের সময় তার বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় রাখেন। এই বিশ্বাসঘাতকতা নবাবের পরাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫ দিন আগেগ্যাস্ট্রিকের মূল কারণ হলো পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি হওয়া। এই অ্যাসিড আমাদের খাবার হজমে সাহায্য করে ঠিকই, কিন্তু যখন এটি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি তৈরি হয় বা পাকস্থলীর দেওয়াল দুর্বল হয়ে পড়ে, তখনই শুরু হয় সমস্যা।
৫ দিন আগেনারীদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার এখনও পুরুষদের তুলনায় অনেক কম, এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে তাঁদের সামাজিক প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে।
৫ দিন আগে