আতিক মোহাম্মদ শরীফ
আগস্টের শেষে সন্ধ্যায় হঠাৎ বন্ধু মঞ্জিলের ফোন আসে। বলে, কোথায় আছিস? কাছেই, জানালাম আমি। দেখা হলো ওর সঙ্গে। তবে ও একা নয়। আরেক বন্ধু সাগরও আছে ওর সঙ্গে।
হঠাৎ জরুরি তলব? জানতে চাইলাম আমি।
প্ল্যান আছে ওদের। খুলে বলল, কোথাও বেড়াতে যেতে চায়। আমাকে নিয়ে।
কোথায়?
কিশোরগঞ্জেরর নিকলী।
দিনক্ষণ ঠিক হলো। যথসময়ে তিন বন্ধু বেরিয়ে পড়লাম, মাইক্রোবাসে। দিনটা ছিল শুক্রবার। সকাল সাতটায় ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু হলো আমাদের। একটানা দুঘণ্টা চলল আমাদের মাইক্রোবাস। সকাল নটার মধ্যে পৌঁছে গেলাম ভৈরবে। কিছুক্ষণের যাত্রাবিরতি সেখানে। সকালের নাস্তাটা সেখানেই সারলাম, জান্নাত হোটেলে। তারপর বাজিতপুর হয়ে আমাদের মাইক্রোবাস ছুটল নিকলীর পথে। হাওড়ের নৈসর্গিক সোন্দর্য দৃষ্টিসীমার মধ্যে আসা শুরু করে সাড়ে এগারোটার দিকে। মুগ্ধতার শুরু সেখানেই। এগোতে এগোতে একসময় সারি বাধা নৌকার ঘাটে পৌঁছাই। নীল দিগন্ত আর ফেনিল জলরাশি মিলেমিশে যেন একাকার। এরপর নির্দিষ্ট স্থানে গাড়ি পার্কিং করে নৌকা ঠিক করার পালা।
মাঝিরা নিজ নিজ নৌকার সুবিধা বোঝাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। দু হাজার টাকা চুক্তিতে উঠে পড়লাম একটা নৌকায়। গন্তব্য মিঠামইন। চারপাশে উন্মুক্ত প্রকৃতি। নীল আকাশ, ফেনিল জলরাশি সবকিছু যেনো মুগ্ধতা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল। খোলা আকাশের নিচে ছই ছাড়া নৌকায় বসে একদল সোন্দর্য্যপিয়াসী। শ্রাবণের মেঘমুক্ত আকাশ থেকে আসা রোদের তাপদাহ কম নয়। কিন্তু চারপাশের সৌন্দর্য, ছলকে ছলকে আসা হাওড়ের জলধোয়া বাতাস ক্লান্তি ভর করতে দেয়নি দেহমনে।
মিঠামইনের কাছাকাছি এসে দেখা পেলাম বেশিকিছু হিজল গাছের। পানিতে নামার জন্য আদর্শ জায়গা। অনেকেই ভিড় করেছে এখোনে, গোসলের জন্য। একদল কিশোর এসেছে এই সুযোগে ব্যবসা করতে। সাবান-শ্যাম্পু ফেরি করছে ওরা।
আমরাও সেখান থেকে গোসল সেরে নিলাম। দেহমন দুটো-ই এখন তরতাজা। তাই আর বিলম্ব নয়। শুরু হলো আমার নদী বেয়ে এগিয়ে চলা। মিঠাইন পৌঁছুতে সময় লাগল না বেশি। ঘাটে নামার পর একটবিষয় নজর কাড়ল। সবকিছুতেই মিশে আছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সত্ত্বা। সেটাই স্বাভাকি। তিনি যে এই এলাকার জলহাওয়াতেই বেড়ে উঠেছেন!
বেলা তখন মধ্য দুপুর। লাঞ্চটা সারতে হবে আগে। খুঁজেপেতে কাঁচা লংকা নামে মোটামুটি মানের একটি রেস্টুরেন্ট পেয়ে গেলাম। খাবারের মান বেশ ভালো, কিন্তু পাতলা ডালটা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল জীবনের স্মৃতি মনে করিয়ে দিল।
আমাদের পরবর্তী গন্তব্য অস্টগ্রাম। ছয় শ টাকার চুক্তি একটা অটো ভাড়া করে আবার শুরু হলো আমাদের পথচলা।
বাংলার প্রকৃতির অসম্ভব এক সৌন্দর্য আছে, ইট-পাথরে ঘেরা নগরীতে বসে সেটা অনুভব করা কঠিন। অস্টগ্রামের পথে চারপাশের সৌন্দর্য মনটাকে উতালা করে দিচ্ছিল। তবে দূরত্ব তো খুব কম। ৩৫-৪০ মিনিনের মধ্যে পৌঁছে গেলাম গন্তব্যে।
এখানেও সেই অবারিত আকাশ, নিচে অবাধ জলরাশি। জলের বুকে বুকে দিগন্ত, আকাশ সেখানে হাওড়ের সঙ্গে মিতালি করেছে। এ দৃশ্য দেখে মন বাঁধনহারা হতে বাধ্য। অষ্টগ্রামেই রাষ্ট্রপতির বাসভবন। সেখান থেকে ঘুরে আসার সুযোগটা হাতছাড়া করি কেন!
কিন্তু ততক্ষণে আকাশের মুখ বেজার হয়েছে। ঘনেকালো মেঘে ঢেকে গেছে ইশান কোণ, যেকোনো মুহূর্তে আকাশ ভেঙেচুরে বৃষ্টি নামবে। সুতরাং এবার ফিরতে হবে। খেয়াঘাট কাছিই। নৌকায় উঠে পড়লাম তিন বন্ধু। তখনই আকাশের কান্না শুরু হলো। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি, সঙ্গে দমকা হাওয়া। ঝড়ো হাওয়ার মতো। কিন্তু ঝুঁকি যে বেশি নেই অবস্থায়, সেটা সবাই বুঝতে পারছিলাম। তাই ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়েই আমাদের চলা শুরু হলো। তখন তখন অন্য আরেক রূপে নিজে বদলে ফেলেছে হাওড়। সে তখন ভয়ংকর সুন্দরের কাণ্ডারি।
তবে এই সৌন্দর্য উপভোগের সৌভাগ্য বেশিক্ষণ হলো না। বৃষ্টির তীব্রতা বাড়ছে ক্রমেই। সঙ্গে বজ্রবিদ্যুতের চমক, কানফাটানো আওয়াজ। মাঝিকে কিছুটা উদ্বিগ্ন দেখালো। তবে নৌকায় ছই ছিল। আমরা সেই ছাউনির নিচে আশ্রয় নিলাম।
তবে ঝড়-বৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। অচিরেই আবার মেঘের অবগুন্ঠন সরিয়ে মুখ দেখালেন সুয্যিমামা। পুবদিকের আকাশ জুড়ে বসে আছে বিশাল এক রঙধনু; ভ্রমণান্দের ষোলকলা পূর্ণ করতে আর কী চাই!
সূর্য পাটে নেমেছে। আকাশ রক্তিম। সূর্যের মৃদু আলো হাওড়জুড়ে সোনালি আভা তৈরি করেছে। ঝলঝম করছে দূরের ঢৈউগুলো। সেই মায়াবী সোন্দর্যের বুকচিরে আমাদের নৌকা এগিয়ে চলেছে ফিরতি পথের দিখে। মাঝ হাওড়েই সুর্য পাটে নামল। চরাচর জুড়ে গোধুলির আভা। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নামছে, হাজার বছরের পুরো রাত নামার কড়া নাড়ছে দুয়ারে। তখনো চলছে টিপটিপ বৃষ্টির ছন্দ। আধার ঘনিয়ে আসাতে না আসতেই পৌঁছে গেলাম নিকলীতে। সাঝরাতে মাইক্রোবাসে আবার শুরু হলো ফিরতি যাত্রা।
পেছনে রেখে এলাম শ্রাবণের রোদ, মেঘ, বাতাস, ঝড়, বৃষ্টি, বিদ্যূতের ঝলকানি, বজ্রপাত, রংধনু, গোধুলির রক্তিম আভা, সবমিলিয়ে স্বপ্নময় একটা দিন। মনে হচ্ছিল, পুরো দিনটাই যেন পেন্সিলে আঁকা কোনো রঙিন ক্যানভাস।
আগস্টের শেষে সন্ধ্যায় হঠাৎ বন্ধু মঞ্জিলের ফোন আসে। বলে, কোথায় আছিস? কাছেই, জানালাম আমি। দেখা হলো ওর সঙ্গে। তবে ও একা নয়। আরেক বন্ধু সাগরও আছে ওর সঙ্গে।
হঠাৎ জরুরি তলব? জানতে চাইলাম আমি।
প্ল্যান আছে ওদের। খুলে বলল, কোথাও বেড়াতে যেতে চায়। আমাকে নিয়ে।
কোথায়?
কিশোরগঞ্জেরর নিকলী।
দিনক্ষণ ঠিক হলো। যথসময়ে তিন বন্ধু বেরিয়ে পড়লাম, মাইক্রোবাসে। দিনটা ছিল শুক্রবার। সকাল সাতটায় ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু হলো আমাদের। একটানা দুঘণ্টা চলল আমাদের মাইক্রোবাস। সকাল নটার মধ্যে পৌঁছে গেলাম ভৈরবে। কিছুক্ষণের যাত্রাবিরতি সেখানে। সকালের নাস্তাটা সেখানেই সারলাম, জান্নাত হোটেলে। তারপর বাজিতপুর হয়ে আমাদের মাইক্রোবাস ছুটল নিকলীর পথে। হাওড়ের নৈসর্গিক সোন্দর্য দৃষ্টিসীমার মধ্যে আসা শুরু করে সাড়ে এগারোটার দিকে। মুগ্ধতার শুরু সেখানেই। এগোতে এগোতে একসময় সারি বাধা নৌকার ঘাটে পৌঁছাই। নীল দিগন্ত আর ফেনিল জলরাশি মিলেমিশে যেন একাকার। এরপর নির্দিষ্ট স্থানে গাড়ি পার্কিং করে নৌকা ঠিক করার পালা।
মাঝিরা নিজ নিজ নৌকার সুবিধা বোঝাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। দু হাজার টাকা চুক্তিতে উঠে পড়লাম একটা নৌকায়। গন্তব্য মিঠামইন। চারপাশে উন্মুক্ত প্রকৃতি। নীল আকাশ, ফেনিল জলরাশি সবকিছু যেনো মুগ্ধতা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল। খোলা আকাশের নিচে ছই ছাড়া নৌকায় বসে একদল সোন্দর্য্যপিয়াসী। শ্রাবণের মেঘমুক্ত আকাশ থেকে আসা রোদের তাপদাহ কম নয়। কিন্তু চারপাশের সৌন্দর্য, ছলকে ছলকে আসা হাওড়ের জলধোয়া বাতাস ক্লান্তি ভর করতে দেয়নি দেহমনে।
মিঠামইনের কাছাকাছি এসে দেখা পেলাম বেশিকিছু হিজল গাছের। পানিতে নামার জন্য আদর্শ জায়গা। অনেকেই ভিড় করেছে এখোনে, গোসলের জন্য। একদল কিশোর এসেছে এই সুযোগে ব্যবসা করতে। সাবান-শ্যাম্পু ফেরি করছে ওরা।
আমরাও সেখান থেকে গোসল সেরে নিলাম। দেহমন দুটো-ই এখন তরতাজা। তাই আর বিলম্ব নয়। শুরু হলো আমার নদী বেয়ে এগিয়ে চলা। মিঠাইন পৌঁছুতে সময় লাগল না বেশি। ঘাটে নামার পর একটবিষয় নজর কাড়ল। সবকিছুতেই মিশে আছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সত্ত্বা। সেটাই স্বাভাকি। তিনি যে এই এলাকার জলহাওয়াতেই বেড়ে উঠেছেন!
বেলা তখন মধ্য দুপুর। লাঞ্চটা সারতে হবে আগে। খুঁজেপেতে কাঁচা লংকা নামে মোটামুটি মানের একটি রেস্টুরেন্ট পেয়ে গেলাম। খাবারের মান বেশ ভালো, কিন্তু পাতলা ডালটা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল জীবনের স্মৃতি মনে করিয়ে দিল।
আমাদের পরবর্তী গন্তব্য অস্টগ্রাম। ছয় শ টাকার চুক্তি একটা অটো ভাড়া করে আবার শুরু হলো আমাদের পথচলা।
বাংলার প্রকৃতির অসম্ভব এক সৌন্দর্য আছে, ইট-পাথরে ঘেরা নগরীতে বসে সেটা অনুভব করা কঠিন। অস্টগ্রামের পথে চারপাশের সৌন্দর্য মনটাকে উতালা করে দিচ্ছিল। তবে দূরত্ব তো খুব কম। ৩৫-৪০ মিনিনের মধ্যে পৌঁছে গেলাম গন্তব্যে।
এখানেও সেই অবারিত আকাশ, নিচে অবাধ জলরাশি। জলের বুকে বুকে দিগন্ত, আকাশ সেখানে হাওড়ের সঙ্গে মিতালি করেছে। এ দৃশ্য দেখে মন বাঁধনহারা হতে বাধ্য। অষ্টগ্রামেই রাষ্ট্রপতির বাসভবন। সেখান থেকে ঘুরে আসার সুযোগটা হাতছাড়া করি কেন!
কিন্তু ততক্ষণে আকাশের মুখ বেজার হয়েছে। ঘনেকালো মেঘে ঢেকে গেছে ইশান কোণ, যেকোনো মুহূর্তে আকাশ ভেঙেচুরে বৃষ্টি নামবে। সুতরাং এবার ফিরতে হবে। খেয়াঘাট কাছিই। নৌকায় উঠে পড়লাম তিন বন্ধু। তখনই আকাশের কান্না শুরু হলো। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি, সঙ্গে দমকা হাওয়া। ঝড়ো হাওয়ার মতো। কিন্তু ঝুঁকি যে বেশি নেই অবস্থায়, সেটা সবাই বুঝতে পারছিলাম। তাই ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়েই আমাদের চলা শুরু হলো। তখন তখন অন্য আরেক রূপে নিজে বদলে ফেলেছে হাওড়। সে তখন ভয়ংকর সুন্দরের কাণ্ডারি।
তবে এই সৌন্দর্য উপভোগের সৌভাগ্য বেশিক্ষণ হলো না। বৃষ্টির তীব্রতা বাড়ছে ক্রমেই। সঙ্গে বজ্রবিদ্যুতের চমক, কানফাটানো আওয়াজ। মাঝিকে কিছুটা উদ্বিগ্ন দেখালো। তবে নৌকায় ছই ছিল। আমরা সেই ছাউনির নিচে আশ্রয় নিলাম।
তবে ঝড়-বৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। অচিরেই আবার মেঘের অবগুন্ঠন সরিয়ে মুখ দেখালেন সুয্যিমামা। পুবদিকের আকাশ জুড়ে বসে আছে বিশাল এক রঙধনু; ভ্রমণান্দের ষোলকলা পূর্ণ করতে আর কী চাই!
সূর্য পাটে নেমেছে। আকাশ রক্তিম। সূর্যের মৃদু আলো হাওড়জুড়ে সোনালি আভা তৈরি করেছে। ঝলঝম করছে দূরের ঢৈউগুলো। সেই মায়াবী সোন্দর্যের বুকচিরে আমাদের নৌকা এগিয়ে চলেছে ফিরতি পথের দিখে। মাঝ হাওড়েই সুর্য পাটে নামল। চরাচর জুড়ে গোধুলির আভা। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নামছে, হাজার বছরের পুরো রাত নামার কড়া নাড়ছে দুয়ারে। তখনো চলছে টিপটিপ বৃষ্টির ছন্দ। আধার ঘনিয়ে আসাতে না আসতেই পৌঁছে গেলাম নিকলীতে। সাঝরাতে মাইক্রোবাসে আবার শুরু হলো ফিরতি যাত্রা।
পেছনে রেখে এলাম শ্রাবণের রোদ, মেঘ, বাতাস, ঝড়, বৃষ্টি, বিদ্যূতের ঝলকানি, বজ্রপাত, রংধনু, গোধুলির রক্তিম আভা, সবমিলিয়ে স্বপ্নময় একটা দিন। মনে হচ্ছিল, পুরো দিনটাই যেন পেন্সিলে আঁকা কোনো রঙিন ক্যানভাস।
তবে সেই ব্যক্তির নাম বা কোন পরিচয় প্রকাশ করেননি জয়া। শুধু এটুকু জানিয়েছেন যে, তার সেই বিশেষ মানুষ শোবিজ অঙ্গনের নন। এমনকি তারা দু’জন বহু বছর ধরে একসঙ্গে আছেন বলেও জানান এ অভিনেত্রী।
৭ ঘণ্টা আগেএই অ্যাপ মূলত একটি ‘লাইভ ফ্লাইট ট্র্যাকিং’ প্ল্যাটফর্ম। পৃথিবীর হাজার হাজার বিমান যখন আকাশে উড়ছে, তখন এই অ্যাপ সেই সব বিমানের রিয়েল-টাইম অবস্থান, গন্তব্য, উচ্চতা, গতি এবং এমনকি কোন ধরনের বিমান সেটি—সব তথ্য সরাসরি দেখায়।
৭ ঘণ্টা আগেগবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর প্রায় ৫০ শতাংশ প্রজননক্ষম নারী কোনো না কোনো মাত্রায় পিরিয়ডের ব্যথায় ভোগেন। তবে এই ব্যথা কমানোর কিছু উপায় রয়েছে, যা চিকিৎসা, জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্ভব।
১ দিন আগে