৪৬তম বিসিএস: আবেদনের সময় না বাড়ালে ক্ষতিগ্রস্ত হবে অনেকেই

এম এ মামুন
ছবি: সংগৃহীত

গত ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এই বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর।

৪৬তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যেসব প্রার্থী আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখের মধ্যে তাদের গ্রাজুয়েশনের সর্বশেষ পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারবে, তারাই শুধু এই বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।

কিন্তু এ বছরের নভেম্বর মাসের শুরু থেকে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এসব পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হবে না।

যেসব ছাত্রছাত্রী বর্তমানে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার পর্যায়ে রয়েছে, কোভিড-১৯ এর কারণে তাদের পড়াশোনা এমনিতেই পিছিয়ে গেছে। এর মধ্যে আবার রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে একাডেমিক পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ না পেলে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে গত ২৭ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়ার আগেই ৪৫তম বিসিএসের সব লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করে পিএসসি। প্রায় ২ মাস পিছিয়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে।

একইভাবে যেহেতু একই রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর স্নাতক পরীক্ষা শেষ করতে অন্তত ২ মাস দেরি হচ্ছে, তাই ৪৬তম বিসিএস এর দরখাস্ত করার সময়সীমাও দুই মাস বৃদ্ধি করা যেতে পারে।

আর যদি একান্তভাবে তা সম্ভব না হয়, তাহলে অবতীর্ণ পরীক্ষার্থী হিসেবে যারা ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে, তাদের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়ার সর্বশেষ তারিখ দুই মাস বাড়িয়ে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ করা যেতে পারে।

উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয় অবতীর্ণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কড়াকড়িভাবে কাগজপত্র অনুসন্ধান করছে। সম্প্রতি যে বিসিএস পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে শুধুমাত্র অবতীর্ণ হওয়ার ত্রুটির কারণে চূড়ান্তভাবে মনোনীত পররাষ্ট্র ক্যাডারের ২ জন এবং প্রশাসন ক্যাডারের ২ জনসহ মোট ৪ জন কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন যেহেতু অবতীর্ণ হওয়ার তারিখের ব্যাপারে আইনানুগ কড়াকড়ি আরোপ করছে, সেহেতু ছাত্র ছাত্রীদের কোনো দোষ না থাকায় নির্বাচনের কারণে রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রেক্ষিতে তাদের দুই মাসের অতিরিক্ত সময় প্রদান করা একান্তভাবেই যৌক্তিক।

এখানে আরো উল্লেখ্য যে, এ বছরের নির্বাচনের কারণে যে বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, অন্যান্য বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে সে ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না।

এ কারণে ন্যায় বিচারের স্বার্থে এবারের ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা অথবা সর্বশেষ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়ার সময়সীমা ২ মাস বাড়িয়ে দেয়া যেতে পারে।

উল্লেখ্য, ৪৪তম বিসিএস এর দরখাস্ত করার সময়সীমা দুইবার বৃদ্ধি করা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তিতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ উল্লেখ ছিল। পরে প্রথমবার ৩১ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। দ্বিতীয়বার ২ মার্চ ২০২২ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তাই সরকারি কর্মকমিশনের উচিত ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখা।

ad
ad

মতামত থেকে আরও পড়ুন

বাংলাদেশে ভেজাল খাদ্য: মানবতার নীরব বিশ্বাসঘাতকতা

ক্ষুধা ধীরে হত্যা করে, ভেজাল নীরবে হত্যা করে। খাদ্যে ভেজাল কেবল বাংলাদেশের সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সংকট। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, প্রতি বছর ৬০ কোটি মানুষ খাদ্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে চার লাখ ২০ হাজার মানুষ মারাও যায়।

৬ দিন আগে

ইতিহাসের সাক্ষী আহমদ রফিক

এ জাতির মুক্তির মন্দিরের সোপানতলে কে হবেন কান্ডারী? আমরা কি সেই ইতিহাসের ভারবাহী নতুন প্রজন্ম তৈরি করতে পেরেছি? না পারার দায় কার? লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক

৮ দিন আগে

তিন শূন্যের পৃথিবী গড়া জাতিপুঞ্জের সকলের স্বপ্ন হোক

গত আট দশক ধরে জাতিসংঘ ধারাবাহিকভাবে তার কর্মপরিধি সম্প্রসারিত করেছে এবং নানা ক্ষেত্রে আরো গভীরভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে । বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা, মানবাধিকার, বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, ন্যায়বিচার, ন্যায্যতা ও সমতা প্রসারে জাতিসংঘ অনস্বীকার্য ভূমিকা রেখেছে। জাতিসংঘের কারণেই আজ বিশ্বের ১২০ টি দে

১৪ দিন আগে

‘রূপালী ক্যাশ’, ডিজিটাল জালিয়াতি ও গ্রাহকের অসহায়ত্ব

এসব গ্রাহকের কাজ ছিল টাকা ওঠানো থেকে শুরু করে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রভৃতি সংগ্রহ। কিন্তু সেজন্য কেন তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষমান ছিলেন? কারণ ব্যাংকের ‘সার্ভার ডাউন’, তাই কোনো কাজই করা যাচ্ছিল না!

১৫ দিন আগে