ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। চিঠিতে তিনি দেশে ফেরার বিষয়ে কথা বলেছেন। লেখাটি রাজনীতি ডটকমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
শ্রদ্ধেয় প্রফেসর ইউনুস,
আপনার কি মনে আছে আমাদের দেখা হয়েছিল, একবার বা দু'বার, ইউরোপে? সম্ভবত ফ্রান্সের দোভিলে। উইমেন'স ফোরামের প্রোগ্রামে। সম্ভবত সাল ছিল ২০০৫। গালা ডিনারে অথবা লাঞ্চে এক টেবিলে আমাদের বসার ব্যবস্থা হয়েছিল, যে টেবিলে বড় বড় লোক ছিলেন। চেরি ব্লেয়ার ছিলেন, সে কথা মনে আছে। আমি সম্ভবত কী-নোট স্পিকার ছিলাম সেবার। আপনি খাবার টেবিলে বেশ কিছুক্ষণ আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন, খাবার শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও কিছুক্ষণ। আপনি বার বার বলছিলেন, ''দেশে চলে আসুন, দেশে চলে আসুন''।
আমি বলেছিলাম, ''কী করে যাবো? আমাকে তো দেশের সরকার যেতে দেয় না দেশে''। আপনি বলেছিলেন, ''যেতে দেয় না আবার কী? ওটা তো আপনার দেশ, আপনার দেশে আপনার যাওয়ার, থাকার অধিকার আপনার জন্মগত, আপনাকে বাধা দেওয়ার রাইট কোনও সরকারের নেই''। আমি দুঃখ করে বলেছি, ''আমি তো দূতাবাসে গেলাম কতবার, আমাকে ভিসাও দেয় না, আমার বাংলাদেশের পাসপোর্ট রিনিউও করে না''। আপনি বলেছিলেন, ''রিনিউ করবে না, বললেই হলো? দেশের মেয়ে দেশে চলে আসুন তো!'' আমি বলেছিলাম, ''আপনি তাহলে চেষ্টা করুন। সরকারকে বলুন। আপনি বললে নিশ্চয়ই হবে।'' আপনি কথা দিয়েছিলেন আপনি চেষ্টা করবেন।
আজ বহু বছর পর জানতে ইচ্ছে করছে, আপনি কি আমাকে দেশে ফেরাবার চেষ্টা করেছিলেন? সরকারকে বলেছিলেন আমার সম্পর্কে কিছু? হয়তো তখন, যে কোনও কারণেই হোক কিছু করা আপনার পক্ষে সম্ভব হয়নি।
কিন্তু এখন তো আপনি দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ধারণ করে আছেন। এখন কি আর আগের মতো বলবেন না, ''কী এত বাইরে বাইরে থাকছেন, দেশের মেয়ে দেশে চলে আসুন''? আগের মতো কি বলবেন না ''ও দেশ তো আপনার দেশ, আপনার দেশে আপনার যাওয়ার, থাকার অধিকার আপনার জন্মগত, আপনাকে বাধা দেওয়ার রাইট কোনও সরকারের নেই''? বলুন আবার আগের মতো। দেশে ফিরতে দিন। এখন তো আপনার হাতেই সব।
নাকি ভয় পাচ্ছেন.....?
কাদের নিয়ে শেষ বয়সে সংসার করছেন? অনুতাপ হয় না? আমার তো নির্বাসনেই কেটে গেল ৩০ বছর। বাকি ক'টা বছর, যতদিন আছি, কেটে যাবে। এই অহংকার নিয়ে অন্তত আমি মরতে পারবো যে, কোনও সুযোগ সুবিধের জন্য দেশের শত্রুদের সঙ্গে আপোস করিনি.....।
ইতি
তসলিমা
উল্লেখ্য, দিল্লিতে বসবাস করেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা। ১৯৯৪ সালে দেশ ছাড়তে হয়েছিল তাকে। ইসলামের বিরুদ্ধে লেখালেখির জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ইউরোপ-আমেরিকায় থাকার পর ভারতে ঠাঁই হয় তাঁর। ২০০৪ সাল থেকে টানা তিন বছর পশ্চিমবঙ্গে ছিলেন তসলিমা। এরপর ‘দ্বিখণ্ডিত’ নিষিদ্ধ হওয়ার পর হুমকির মুখে পড়ে কলকাতা ছাড়তে বাধ্য হন।
গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, "দেশছাড়া হয়েছেন আগেই। দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের ‘আশ্রিতা’ তিনি। এবার আর কি ভারতে থাকতে পারবেন? আশঙ্কায় ভুগছেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। গত জুলাই মাসেই তসলিমার ভারতে থাকার রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে। সেটি কবে রিনিউ হবে, আর আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে ধন্দে তসলিমা নাসরিন।
সাক্ষাৎকারে তসলিমা জানিয়েছেন, "আমি যদি পারমিট না পাই, নিশ্চিত ভাবেই মারা যাব। আমি এমন অবস্থায় রয়েছি যে কোথাও যাওয়ার জায়গাই নেই।"
অবশ্য অধ্যাপক ইউনুস এ ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আছেন। প্রেস উইংয়ের সদস্যসহ ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা তার সঙ্গে রয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। চিঠিতে তিনি দেশে ফেরার বিষয়ে কথা বলেছেন। লেখাটি রাজনীতি ডটকমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
শ্রদ্ধেয় প্রফেসর ইউনুস,
আপনার কি মনে আছে আমাদের দেখা হয়েছিল, একবার বা দু'বার, ইউরোপে? সম্ভবত ফ্রান্সের দোভিলে। উইমেন'স ফোরামের প্রোগ্রামে। সম্ভবত সাল ছিল ২০০৫। গালা ডিনারে অথবা লাঞ্চে এক টেবিলে আমাদের বসার ব্যবস্থা হয়েছিল, যে টেবিলে বড় বড় লোক ছিলেন। চেরি ব্লেয়ার ছিলেন, সে কথা মনে আছে। আমি সম্ভবত কী-নোট স্পিকার ছিলাম সেবার। আপনি খাবার টেবিলে বেশ কিছুক্ষণ আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন, খাবার শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও কিছুক্ষণ। আপনি বার বার বলছিলেন, ''দেশে চলে আসুন, দেশে চলে আসুন''।
আমি বলেছিলাম, ''কী করে যাবো? আমাকে তো দেশের সরকার যেতে দেয় না দেশে''। আপনি বলেছিলেন, ''যেতে দেয় না আবার কী? ওটা তো আপনার দেশ, আপনার দেশে আপনার যাওয়ার, থাকার অধিকার আপনার জন্মগত, আপনাকে বাধা দেওয়ার রাইট কোনও সরকারের নেই''। আমি দুঃখ করে বলেছি, ''আমি তো দূতাবাসে গেলাম কতবার, আমাকে ভিসাও দেয় না, আমার বাংলাদেশের পাসপোর্ট রিনিউও করে না''। আপনি বলেছিলেন, ''রিনিউ করবে না, বললেই হলো? দেশের মেয়ে দেশে চলে আসুন তো!'' আমি বলেছিলাম, ''আপনি তাহলে চেষ্টা করুন। সরকারকে বলুন। আপনি বললে নিশ্চয়ই হবে।'' আপনি কথা দিয়েছিলেন আপনি চেষ্টা করবেন।
আজ বহু বছর পর জানতে ইচ্ছে করছে, আপনি কি আমাকে দেশে ফেরাবার চেষ্টা করেছিলেন? সরকারকে বলেছিলেন আমার সম্পর্কে কিছু? হয়তো তখন, যে কোনও কারণেই হোক কিছু করা আপনার পক্ষে সম্ভব হয়নি।
কিন্তু এখন তো আপনি দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ধারণ করে আছেন। এখন কি আর আগের মতো বলবেন না, ''কী এত বাইরে বাইরে থাকছেন, দেশের মেয়ে দেশে চলে আসুন''? আগের মতো কি বলবেন না ''ও দেশ তো আপনার দেশ, আপনার দেশে আপনার যাওয়ার, থাকার অধিকার আপনার জন্মগত, আপনাকে বাধা দেওয়ার রাইট কোনও সরকারের নেই''? বলুন আবার আগের মতো। দেশে ফিরতে দিন। এখন তো আপনার হাতেই সব।
নাকি ভয় পাচ্ছেন.....?
কাদের নিয়ে শেষ বয়সে সংসার করছেন? অনুতাপ হয় না? আমার তো নির্বাসনেই কেটে গেল ৩০ বছর। বাকি ক'টা বছর, যতদিন আছি, কেটে যাবে। এই অহংকার নিয়ে অন্তত আমি মরতে পারবো যে, কোনও সুযোগ সুবিধের জন্য দেশের শত্রুদের সঙ্গে আপোস করিনি.....।
ইতি
তসলিমা
উল্লেখ্য, দিল্লিতে বসবাস করেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা। ১৯৯৪ সালে দেশ ছাড়তে হয়েছিল তাকে। ইসলামের বিরুদ্ধে লেখালেখির জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ইউরোপ-আমেরিকায় থাকার পর ভারতে ঠাঁই হয় তাঁর। ২০০৪ সাল থেকে টানা তিন বছর পশ্চিমবঙ্গে ছিলেন তসলিমা। এরপর ‘দ্বিখণ্ডিত’ নিষিদ্ধ হওয়ার পর হুমকির মুখে পড়ে কলকাতা ছাড়তে বাধ্য হন।
গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, "দেশছাড়া হয়েছেন আগেই। দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের ‘আশ্রিতা’ তিনি। এবার আর কি ভারতে থাকতে পারবেন? আশঙ্কায় ভুগছেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। গত জুলাই মাসেই তসলিমার ভারতে থাকার রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে। সেটি কবে রিনিউ হবে, আর আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে ধন্দে তসলিমা নাসরিন।
সাক্ষাৎকারে তসলিমা জানিয়েছেন, "আমি যদি পারমিট না পাই, নিশ্চিত ভাবেই মারা যাব। আমি এমন অবস্থায় রয়েছি যে কোথাও যাওয়ার জায়গাই নেই।"
অবশ্য অধ্যাপক ইউনুস এ ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আছেন। প্রেস উইংয়ের সদস্যসহ ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা তার সঙ্গে রয়েছেন।
এ জাতির মুক্তির মন্দিরের সোপানতলে কে হবেন কান্ডারী? আমরা কি সেই ইতিহাসের ভারবাহী নতুন প্রজন্ম তৈরি করতে পেরেছি? না পারার দায় কার? লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক
৭ দিন আগেগত আট দশক ধরে জাতিসংঘ ধারাবাহিকভাবে তার কর্মপরিধি সম্প্রসারিত করেছে এবং নানা ক্ষেত্রে আরো গভীরভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে । বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা, মানবাধিকার, বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, ন্যায়বিচার, ন্যায্যতা ও সমতা প্রসারে জাতিসংঘ অনস্বীকার্য ভূমিকা রেখেছে। জাতিসংঘের কারণেই আজ বিশ্বের ১২০ টি দে
১৪ দিন আগেএসব গ্রাহকের কাজ ছিল টাকা ওঠানো থেকে শুরু করে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রভৃতি সংগ্রহ। কিন্তু সেজন্য কেন তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষমান ছিলেন? কারণ ব্যাংকের ‘সার্ভার ডাউন’, তাই কোনো কাজই করা যাচ্ছিল না!
১৪ দিন আগেআন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মতে, নিরাপদ কর্মপরিবেশ মানে শুধু শারীরিক নিরাপত্তা নয়, বরং রাজনৈতিক ও মানসিক চাপমুক্ত একটি পেশাগত পরিবেশও নিশ্চিত করা। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে বেসরকারি খাতেও দক্ষ জনবল টিকে থাকতে পারে না, উৎপাদনশীলতা কমে যায় এবং প্রতিষ্ঠান ক্ষতির মুখে পড়ে।
১৪ দিন আগে