তিশার বাবাকে উদ্ধার করুন!

আফরোজা পারভীন
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১: ৫৯
ছবি: সংগৃহিত

শারীরিক নানা সমস্যায় জেরবার হয়ে আছি। এতদিন মনের জোরে চললেও এখন আর কুলিয়ে উঠতে পারছি না। লিখতে পারছি না এটা মানতে চাইছে না মন। তাই শরীর আরো ভেঙে পড়ছে! ফেসবুকে অনিয়মিত। কাজেই অনেক খবরই নজরে আসছে না। কিন্তু দেশে এখন এমন একটা ঘটনা চলছে, যার জন্য ফেসবুক, পত্রিকা কোনো কিছুরই দরকার হচ্ছে না। আকাশ বাতাসে ভাসছে তিশা-মুশতাক কেচ্ছা। অনেক দিন ধরে শুনছি।

ভেবেছিলাম কিছু লিখব না। কিন্তু পারলাম না । তিশার বাবার অসহায় মুখ আর কান্না আমাকে উদ্বেল করে তুলল! তারা বিয়ে করে যদি চুপ থাকত এক রকম ছিল । কিন্তু তারা মহৎ কাজ করেছে এমন একটা ধারণা সমাজকে দেবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। যেন হিরো হিরোইন বনে গেছে। বই লিখেই ক্ষ্যান্ত হয়নি। দিনের পর দিন সোস্যাল মিডিয়ায় আসছে, টিকটক করছে, রিল বানাচ্ছে। আর ওই মেয়ে তার বাবাকে মিথ্যাবাদী থেকে শুরু করে এমন কিছু নেই যে বলছে না। বাবা মা ও নিজ পরিবারকে মারাত্মকভাবে হেয় করছে । এমনকি বাবা-মার একান্ত নিজস্ব বিষয়াদিও তুলে ধরছে দেশবাসীর সামনে।

ভাবতে পারি না এটা কীভাবে সম্ভব! সন্তান কীভাবে তার বাবা-মাকে এমন অশ্লীল অভব্য ভাষায় বলতে পারে, উপস্থাপন করতে পারে! ভদ্রলোক কীভাবে সহ্য করছেন জানি না। তিনি সত্য বলছেন। কারণ মুশতাকের দ্বিতীয় স্ত্রী সত্যিই তার মেয়ের বান্ধবী। তিনি এ কথা বার বার বলেছেন। কাজেই তার অন্য কথাগুলোও সত্য হবে বলে বিশ্বাস করার কারণ আছে। মেয়ে যাচ্ছেতাইভাবে তাকে আপমান করছে তারপরও তিনি মেয়েকে কোনো দোষারোপ করেননি। বরং বলেছেন, মুশতাক তার মেয়েকে জিম্মি করে এসব বলাচ্ছে। পিতা বুঝি এমনই হয়! আসলে কী তাই! তিনিই ভালো জানেন। জিম্মি করলে কী এমন স্বতঃস্ফূর্তভাবে উচ্চকণ্ঠে দাপটের সাথে কথা বলা যায়?

যদি যায় বুঝতে হবে মেয়েটি পাকা অভিনেত্রী। যদি ধরেও নিই তিশার বাবা সত্য বলছেন না, তাহলেও কী একজন মেয়ে তার পিতা মাতাকে নিয়ে এভাবে বলতে পারে? পিতা মাতা জন্ম না দিলে সে কোথায় পেত এই বীরপুরুষ মুশতাককে, কোথায় থাকত তার উচ্চকণ্ঠ! অন্যদিকে মুশতাক হেন অপমান নেই যা তিশার বাবাকে করছে না। শ্বশুরের টাকায় হানিমুন করা দিয়ে শুরু হয়েছে। এখন প্রতিদিন শ্বশুরকে বিদ্রুপ করে বেসুরো গলায় গান গাইছে। আর পাশে বসে তিশা খিলখিল করে হাসছে! ভাবতে পারি না! গা গুলোয়। আমি বুঝতে পারছি না, মিডিয়া কেন এদের এতোটা গুরুত্ব দিচ্ছে। মুখরোচক কোন খবর পেলেই কী তা রসিয়ে রসিয়ে পরিবেশন করতে হবে সমাজের কথা না ভেবে! লোকজনের ইন্টারভিউ নিচ্ছে। এক একজন এসে তিশার বাবাকে গালাগাল করছে। অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলছে। তার কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিঁটে দিচ্ছে। সব মিডিয়ার এদের বয়কট করা উচিত। তা না করে এদের ‍উপজীব্য করে বিভিন্নজন বিভিন্ন ভিডিও বানিয়ে দেদার পয়সা কামাচ্ছে। এদিকে সমাজের সচেতন মহল, বুদ্ধিজীবী সমাজ নিশ্চুপ। তারা হয়ত ভাবছেন, এটা ওদের পারিবারিক ব্যাপার। কিন্তু বুঝতে হবে, বিষয়টা অনেক আগেই পরিবারের পরিধি ছাড়িয়ে শুধু দেশে নয়, গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে। এই অবস্থায় একজন অসহায় পিতার পাশে দাঁড়ানো সচেতন মহলের দায়িত্ব বলে মনে করি। রক্ষক ভক্ষক হবার পর সেটা কী আর পারিবারিক থাকে! শুনেছিলাম আদালতে আদেশ হয়েছে মুশতাক তিশার সমস্ত ভিডিও/ ছবি ফেসবুক থেকে নামিয়ে দিতে। কিন্তু কোথায়? প্রতিদিন ভিডিও, রিলের সংখ্যা বাড়ছে। আর নিত্য নতুন কায়দায় তিশার বাবাকে অপমান করা হচ্ছে। এর শেষ কোথায় জানি না। আপনারা তিশার বাবার পাশে দাঁড়বেন কী দাঁড়াবেন না সেটা আপনাদের বিবেচনা। তবে এই মারাত্মক অপমান আর ট্রমা থেকে তাকে উদ্ধার করার জন্য সচেতন দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। (লেখকের ফেসবুক থেকে)

ad
ad

মতামত থেকে আরও পড়ুন

বাংলাদেশে ভেজাল খাদ্য: মানবতার নীরব বিশ্বাসঘাতকতা

ক্ষুধা ধীরে হত্যা করে, ভেজাল নীরবে হত্যা করে। খাদ্যে ভেজাল কেবল বাংলাদেশের সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সংকট। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, প্রতি বছর ৬০ কোটি মানুষ খাদ্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে চার লাখ ২০ হাজার মানুষ মারাও যায়।

৬ দিন আগে

ইতিহাসের সাক্ষী আহমদ রফিক

এ জাতির মুক্তির মন্দিরের সোপানতলে কে হবেন কান্ডারী? আমরা কি সেই ইতিহাসের ভারবাহী নতুন প্রজন্ম তৈরি করতে পেরেছি? না পারার দায় কার? লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও লেখক

৮ দিন আগে

তিন শূন্যের পৃথিবী গড়া জাতিপুঞ্জের সকলের স্বপ্ন হোক

গত আট দশক ধরে জাতিসংঘ ধারাবাহিকভাবে তার কর্মপরিধি সম্প্রসারিত করেছে এবং নানা ক্ষেত্রে আরো গভীরভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে । বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা, মানবাধিকার, বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, ন্যায়বিচার, ন্যায্যতা ও সমতা প্রসারে জাতিসংঘ অনস্বীকার্য ভূমিকা রেখেছে। জাতিসংঘের কারণেই আজ বিশ্বের ১২০ টি দে

১৪ দিন আগে

‘রূপালী ক্যাশ’, ডিজিটাল জালিয়াতি ও গ্রাহকের অসহায়ত্ব

এসব গ্রাহকের কাজ ছিল টাকা ওঠানো থেকে শুরু করে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রভৃতি সংগ্রহ। কিন্তু সেজন্য কেন তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষমান ছিলেন? কারণ ব্যাংকের ‘সার্ভার ডাউন’, তাই কোনো কাজই করা যাচ্ছিল না!

১৫ দিন আগে