ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
জুলাই হত্যাকাণ্ড, শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আমরা আজ এমন একটি পরিস্থিতির দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছি যেখান থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনের দিনের করণীয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শুধু শিক্ষকরাই নন, সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে নতুন সরকারের করণীয় নিয়ে।
শেখ হাসিনার পদত্যাগের আগেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের একটি রূপরেখা উপস্থাপন করেছিলো। পদত্যাগ কীভাবে হবে এবং নতুন সরকার কীভাবে গঠিত হবে এবং তার করণীয় কী - এই ছিল রূপরেখার সারবস্তু। এই রূপরেখা উপস্থাপনের মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বৈরাচারীর পতনের দ্বারপ্রান্তে এসে বহু মানুষের প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হবে তা যেন আবার একটি নতুন স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায়নের ক্ষেত্র প্রস্তুত না করে তা নিশ্চিত করা। এই রূপরেখা নিয়ে নানান তর্ক-বিতর্ক হয়েছে যা আমাদের ইতিবাচক মনে হয়েছে। রূপরেখাটি খুবই সংক্ষিপ্ত ছিল কারণ আলোচনাসাপেক্ষে, তর্ক-বিতর্ক ও মত-বিনিময়ের মাধ্যমে এই রূপরেখাটিকে আমরা আরও সম্প্রসারণ করতে চেয়েছি। আজকে আমরা আন্দোলনের বিভিন্ন অংশীজনের সাথে সে আলোচনার সূত্রপাত করতে যাচ্ছি।
সরকারের আশু করণীয়
১। জনগণের জান-মালের সুরক্ষায় অবিলম্বে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মাঠে নামতে হবে ও সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ, শ্রেণী নির্বিশেষে সকলের জন্য সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
২। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে। শিল্পস্থাপনা, উপাসনালয়, মাজার, ভাস্কর্যের উপর হামলা ঠেকাতে হবে ও হামলার বিচার করতে হবে।
৩। জুলাই হত্যাকাণ্ড এবং জনগণের ওপর নৃশংস জোর-জুলুমের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের জন্য জাতিসংঘের সহযোগিতায় তদন্ত কমিটি এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত তদন্ত ও বিচার কাজ শুরু করতে হবে।
৪। কোটা আন্দোলনে যারা আহত হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন, তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে ও আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে সাবলম্বী করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪। সাম্প্রতিক সময়ে করা মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক ও হয়রানিমূলক মামলা বাতিল করতে হবে এবং এসব মামলায় আটক সবাইকে মুক্তি দিতে হবে।
৫। অর্থনীতির চাকা সচল করতে শিল্প-কলকারখানা খুলে দিয়ে সকলের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদে সরকারের করণীয়
১। প্রথমেই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তারুণ্যের অংশগ্রহণের বিষয়টির দিকে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে শুধু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ, প্রতিরোধ, প্রাণ দিয়ে অধিকার আদায়ই নয়, সাবেক সরকারের পতনের পর আইনশৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়লে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ নিজেরাই দলে দলে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও সহিংসতা দমনে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। অথচ তাদের জন্য নেই কিছু।
পাড়ায় পাড়ায় খেলার মাঠ দখল করে ইমারত বানিয়েছেন ভূমি সন্ত্রাসীরা। ব্যায়ামাগার, মুক্ত উদ্যান, পাঠাগার নেই, শিশু পার্কটি বহু বছর ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে।
তাই সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে কমিউনিটি সেন্টার চালু করতে হবে যেখানে মুক্তিযুদ্ধসহ মানুষের মুক্তি সংগ্রামের বিভিন্ন অধ্যায়সহ জুলাই হত্যাকাণ্ডে নিহত শহিদদের তালিকা, স্মৃতিস্তম্ভ, এবং ছবি থাকবে, শিল্প-সংস্কৃতির নানা শাখায় কাজ হবে। প্রতি বছর জুলাই মাসে যেন দেশজুড়ে তাদের স্মরণ করা যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
২। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট, খেলাপি ঋণ, বারবার পানি ও বিদ্যুতের মতো অপরিহার্য জিনিসের দাম বৃদ্ধি জনজীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। এর পাশাপাশি স্বৈরাচারী সরকার থাকাকালীন আমাদের অধিকারের কথা বলতে গেলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে মানুষকে অন্যায়ভাবে ভয়-ভীতির মধ্যে রাখা হয়েছে। গণমাধ্যমগুলোও সরকারি বয়ান প্রচারে যত মনযোগী হয়েছে তত মনযোগী হয়নি মানুষের ভোগান্তি বা নিপীড়নের খবরগুলো প্রচার করতে। বাস্তবতাবর্জিত একটি উন্নয়নের ঘোরের মধ্যে মানুষকে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে।
গণমাধ্যমকে সরকারের এই প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে। জনগণের মত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করতে প্রথমেই সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। এই আইনে বা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক সকল নিরপরাধ ব্যাক্তিকে মুক্তি দিতে হবে।
৩। ৫ আগস্টের পর পুলিশের অনুপস্থিতিতে এবং চাঁদাবাজদের উৎপাত সাময়িক বন্ধ হবার সাথে সাথে সবজির দাম কমে গেছে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে পুলিশ ও সরকার দলীয় চাঁদাবাজদের সিন্ডিকেট সক্রিয় ছিল। সরকার গঠনের সাথে সাথে যদি আরেকটি সিন্ডিকেট আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে তা জনজীবনকে নতুন করে বিপর্যস্ত করবে।
৪। গত সপ্তাহ জুড়ে আমরা দেখছি, যাদের জনগণকে নিরাপত্তা দেবার কথা সেই পুলিশ নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে, অন্যান্য বাহিনীতেও নেই কোনো জবাবদিহিতা। এতদিন ধরে দুর্নীতি ও জবাবদিহিতার অভাবে পুলিশের অতিরিক্ত ক্ষমতায়ন হয়েছে ফলে এদের বিরুদ্ধে প্রচুর ক্ষোভ জমা হয়েছে। বিদ্যমান পক্ষপাতদুষ্ট বিচার ব্যবস্থার উপর অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আবার সরকার পতনের পর সংখ্যালঘু হত্যা নিপীড়ন, ভাস্কর্য-জাদুঘর-মাজার আক্রমণ, শিল্পীর বাড়ি ভাঙচুর, চুরি, ডাকাতি, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যাসহ ভয়ংকর নির্যাতন হয়েছে যার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনীগুলো নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
পুর্ববর্তী ভুলগুলো সংশোধন করতে আমলাতন্ত্র সংস্কার করে জনবান্ধব প্রশাসনিক ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে হবে। আজকের মতবিনিময়ের অন্যতম আলোচ্য বিষয় হতে পারে কীভাবে পুলিশ প্রশাসনের সংস্কার ও পুনর্গঠন করা যায়, এবং বিচার ব্যবস্থাকে নিরপেক্ষ করা যায়।
জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হলে যেই ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে তা যেন নিরপেক্ষ হয় তা নিশ্চিত করতে হবে এই সরকারকে।
ডিজিএফআই, র্যাব, বিজিবি ইত্যাদি বাহিনী জনগণের জন্য হুমকি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে যারা সাধারণ মানুষ এবং আদিবাসীদের উপর নানান অন্যায় অজুহাত দেখিয়ে নিপীড়ন, খুন অব্যহত রেখেছে। জুলাই মাসে সাধারণের উপর এ নিপীড়ন সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এগুলো কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় তার দিকনির্দেশনা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আমরা জানি নির্বাচিত সরকার গঠন ছাড়া কোনো নীতি-প্রণয়ন করার সাংবিধানিক অধিকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই। তবে সরকার একটি কাঠামো গঠন করে দিয়ে যেতে পারে যা নির্বাচিত সরকার অনুসরণ করতে পারে।
৬। আমরা শিক্ষা নীতি নিয়ে নতুন একটি টাস্কফোর্স গঠন করার প্রস্তাব দিতে চাই, যার উদ্দেশ্য হবে পরিবর্তিত বাস্তবতায় বাংলাদেশের পটভূমিতে যথাযোগ্য ও বাস্তবায়নযোগ্য একটি নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।
৭। বাংলাদেশ স্বাস্থ্যখাত বহু সঙ্কটে নিমজ্জিত। একদিকে প্রত্যন্ত এলাকায় চিকিৎসা কেন্দ্র নেই অন্যদিকে যা আছে সেগুলোর সক্ষমতা কম, চিকিৎসার মান খারাপ বলে চিকিৎসার জন্য মানুষ শহরে অথবা বিদেশে যাচ্ছে। মানহীন চিকিৎসাও কিনতে হচ্ছে চড়া দামে।
৮। প্রবাসীদের দেশে পাঠানো আয় আমাদের অর্থনীতির একটি মূল চালিকাশক্তি। বিদেশি মুদ্রা অর্জনের জন্য তাদেরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা, এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তার দিকে নজর না দিয়ে শুধু রেমিট্যান্সের উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রবাসীদেরকে আমরা নানাভাবে অসম্মানিত হতে দেখেছি।
৯। উন্নয়নের নামে রামপাল, রূপপুর, বাঁশখালীসহ পরিবেশবিধ্বংসী ও জনস্বার্থবিরোধী নানান অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। মেগাপ্রকল্পের ব্যয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন শীর্ষে রয়েছে। দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষি মহলের সাথে আঁতাত করে দেশবিরোধী ব্যায়বহুল উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় জেলায় প্রান্তিক মানুষের ভূমি দখল করে, অথবা অল্প দামে কিনে নিয়ে শিল্প কারখানা ও প্রকল্প নির্মানের নামে ফেলে রাখা হয়েছে। এছাড়া, গত এক দশকে অনেক নদী জলাশয় বেদখল হয়েছে। অপরিকল্পিত শিল্পায়নের ফলে নদী দূষণ, এবং নদী শাসনের নামে নদী সংকুচিত করা হয়েছে। বনরক্ষার নামে বনের আশেপাশে কল-কারখানা, হোটেল, রিসোর্ট বানানো হয়েছে। পাহাড়ে ভূমি দখল করে পাহাড়িদের বাসস্থান বসবাসঅযোগ্য করা হয়েছে।
১০। দেশীয় শিল্প যেমন পাট, চিনি, সার, কাগজ, চামড়া বিকশিত হতে পারতো সেগুলোকে দুর্বল করে দিয়ে আমদানিকৃত কাঁচামাল নির্ভর শিল্পের দিকে অধিক মনোযোগ দেয়া হয়েছে।
১১। একদিকে আমরা দেখেছি খেলাপি ঋণ বেড়েছে, ব্যবসায়ী-আমলা-মন্ত্রীরা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে, অন্যদিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়েনি; ১৫ বছরে পাচার হয়েছে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার। মানুষের আমানতের অর্থ সঠিক খাতে খরচ না হবার কারণে দেশে চাকরির সুযোগ তৈরি হচ্ছে না।
ব্যাংক থেকে ঋণগুলো কীসের ভিত্তিতে দেয়া হয়েছে, এবং তা কী কাজে লাগানো হচ্ছে– এ নিয়ে বিস্তর অনুসন্ধান জরুরি। এর ভিত্তিতে দুর্বৃত্ত চক্রকে এবং নিয়মভঙ্গ করে নেয়া ঋণগ্রহীতাদের সামনে এনে উপযুক্ত বিচার করতে হবে।
১২। বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, পেশার সংখ্যালঘু মানুষ জনবৈচিত্র্য দিয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করেছে। যেকোনো দেশের জন্য এই জনবৈচিত্র্য একটি দুর্লভ প্রাপ্তি। এই জনবৈচিত্র্যকে অবমূল্যায়ন করে, তাদের অধিকার বঞ্চিত করে, নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত করে এই দেশ নাগরিক পরিসরে একটি অসম ক্ষেত্র তৈরি করে রেখেছে। সংবিধানে স্বীকৃতি লাভ থেকে শুরু করে আইন প্রণয়ন ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণে তারা নানান বাধার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই বিষয়েও আজকে আপনাদের মতামত জানতে চাই।
১৩। আমরা দেখতে পেয়েছি, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এই আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ। এই শ্রমজীবি মানুষের একটা বিরাট অংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। এরাই বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। এদের উন্নয়ন ছাড়া, শিক্ষা-স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা ছাড়া, কোনো দেশে সত্যিকার উন্নয়ন সম্ভব নয়।
সবার জন্য জাতীয় নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ এখন অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের মজুরি নির্ধারণের প্রক্রিয়াটি শ্রমিকবান্ধব তো নয়ই, বরং এই প্রক্রিয়াটি মালিকদের পক্ষে কাজ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কীভাবে একটি কাঠামো নির্মাণ করতে পারে যেন নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ একটি স্বচ্ছ উপায়ে হয় তা নিয়ে মতামত দিতে পারেন আপনারা।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষে
গীতি আরা নাসরীন
[১০ আগস্ট শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের মতবিনিময় সভায় পঠিত লিখিত বক্তব্য]
জুলাই হত্যাকাণ্ড, শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আমরা আজ এমন একটি পরিস্থিতির দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছি যেখান থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনের দিনের করণীয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শুধু শিক্ষকরাই নন, সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে নতুন সরকারের করণীয় নিয়ে।
শেখ হাসিনার পদত্যাগের আগেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের একটি রূপরেখা উপস্থাপন করেছিলো। পদত্যাগ কীভাবে হবে এবং নতুন সরকার কীভাবে গঠিত হবে এবং তার করণীয় কী - এই ছিল রূপরেখার সারবস্তু। এই রূপরেখা উপস্থাপনের মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বৈরাচারীর পতনের দ্বারপ্রান্তে এসে বহু মানুষের প্রাণ ও ত্যাগের বিনিময়ে যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হবে তা যেন আবার একটি নতুন স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায়নের ক্ষেত্র প্রস্তুত না করে তা নিশ্চিত করা। এই রূপরেখা নিয়ে নানান তর্ক-বিতর্ক হয়েছে যা আমাদের ইতিবাচক মনে হয়েছে। রূপরেখাটি খুবই সংক্ষিপ্ত ছিল কারণ আলোচনাসাপেক্ষে, তর্ক-বিতর্ক ও মত-বিনিময়ের মাধ্যমে এই রূপরেখাটিকে আমরা আরও সম্প্রসারণ করতে চেয়েছি। আজকে আমরা আন্দোলনের বিভিন্ন অংশীজনের সাথে সে আলোচনার সূত্রপাত করতে যাচ্ছি।
সরকারের আশু করণীয়
১। জনগণের জান-মালের সুরক্ষায় অবিলম্বে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মাঠে নামতে হবে ও সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ, শ্রেণী নির্বিশেষে সকলের জন্য সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
২। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে। শিল্পস্থাপনা, উপাসনালয়, মাজার, ভাস্কর্যের উপর হামলা ঠেকাতে হবে ও হামলার বিচার করতে হবে।
৩। জুলাই হত্যাকাণ্ড এবং জনগণের ওপর নৃশংস জোর-জুলুমের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের জন্য জাতিসংঘের সহযোগিতায় তদন্ত কমিটি এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত তদন্ত ও বিচার কাজ শুরু করতে হবে।
৪। কোটা আন্দোলনে যারা আহত হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন, তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে ও আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে সাবলম্বী করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪। সাম্প্রতিক সময়ে করা মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক ও হয়রানিমূলক মামলা বাতিল করতে হবে এবং এসব মামলায় আটক সবাইকে মুক্তি দিতে হবে।
৫। অর্থনীতির চাকা সচল করতে শিল্প-কলকারখানা খুলে দিয়ে সকলের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদে সরকারের করণীয়
১। প্রথমেই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তারুণ্যের অংশগ্রহণের বিষয়টির দিকে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে শুধু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ, প্রতিরোধ, প্রাণ দিয়ে অধিকার আদায়ই নয়, সাবেক সরকারের পতনের পর আইনশৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়লে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ নিজেরাই দলে দলে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও সহিংসতা দমনে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। অথচ তাদের জন্য নেই কিছু।
পাড়ায় পাড়ায় খেলার মাঠ দখল করে ইমারত বানিয়েছেন ভূমি সন্ত্রাসীরা। ব্যায়ামাগার, মুক্ত উদ্যান, পাঠাগার নেই, শিশু পার্কটি বহু বছর ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে।
তাই সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে কমিউনিটি সেন্টার চালু করতে হবে যেখানে মুক্তিযুদ্ধসহ মানুষের মুক্তি সংগ্রামের বিভিন্ন অধ্যায়সহ জুলাই হত্যাকাণ্ডে নিহত শহিদদের তালিকা, স্মৃতিস্তম্ভ, এবং ছবি থাকবে, শিল্প-সংস্কৃতির নানা শাখায় কাজ হবে। প্রতি বছর জুলাই মাসে যেন দেশজুড়ে তাদের স্মরণ করা যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
২। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট, খেলাপি ঋণ, বারবার পানি ও বিদ্যুতের মতো অপরিহার্য জিনিসের দাম বৃদ্ধি জনজীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। এর পাশাপাশি স্বৈরাচারী সরকার থাকাকালীন আমাদের অধিকারের কথা বলতে গেলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে মানুষকে অন্যায়ভাবে ভয়-ভীতির মধ্যে রাখা হয়েছে। গণমাধ্যমগুলোও সরকারি বয়ান প্রচারে যত মনযোগী হয়েছে তত মনযোগী হয়নি মানুষের ভোগান্তি বা নিপীড়নের খবরগুলো প্রচার করতে। বাস্তবতাবর্জিত একটি উন্নয়নের ঘোরের মধ্যে মানুষকে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে।
গণমাধ্যমকে সরকারের এই প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে। জনগণের মত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করতে প্রথমেই সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। এই আইনে বা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক সকল নিরপরাধ ব্যাক্তিকে মুক্তি দিতে হবে।
৩। ৫ আগস্টের পর পুলিশের অনুপস্থিতিতে এবং চাঁদাবাজদের উৎপাত সাময়িক বন্ধ হবার সাথে সাথে সবজির দাম কমে গেছে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে পুলিশ ও সরকার দলীয় চাঁদাবাজদের সিন্ডিকেট সক্রিয় ছিল। সরকার গঠনের সাথে সাথে যদি আরেকটি সিন্ডিকেট আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে তা জনজীবনকে নতুন করে বিপর্যস্ত করবে।
৪। গত সপ্তাহ জুড়ে আমরা দেখছি, যাদের জনগণকে নিরাপত্তা দেবার কথা সেই পুলিশ নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে, অন্যান্য বাহিনীতেও নেই কোনো জবাবদিহিতা। এতদিন ধরে দুর্নীতি ও জবাবদিহিতার অভাবে পুলিশের অতিরিক্ত ক্ষমতায়ন হয়েছে ফলে এদের বিরুদ্ধে প্রচুর ক্ষোভ জমা হয়েছে। বিদ্যমান পক্ষপাতদুষ্ট বিচার ব্যবস্থার উপর অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আবার সরকার পতনের পর সংখ্যালঘু হত্যা নিপীড়ন, ভাস্কর্য-জাদুঘর-মাজার আক্রমণ, শিল্পীর বাড়ি ভাঙচুর, চুরি, ডাকাতি, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যাসহ ভয়ংকর নির্যাতন হয়েছে যার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনীগুলো নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
পুর্ববর্তী ভুলগুলো সংশোধন করতে আমলাতন্ত্র সংস্কার করে জনবান্ধব প্রশাসনিক ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে হবে। আজকের মতবিনিময়ের অন্যতম আলোচ্য বিষয় হতে পারে কীভাবে পুলিশ প্রশাসনের সংস্কার ও পুনর্গঠন করা যায়, এবং বিচার ব্যবস্থাকে নিরপেক্ষ করা যায়।
জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হলে যেই ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে তা যেন নিরপেক্ষ হয় তা নিশ্চিত করতে হবে এই সরকারকে।
ডিজিএফআই, র্যাব, বিজিবি ইত্যাদি বাহিনী জনগণের জন্য হুমকি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে যারা সাধারণ মানুষ এবং আদিবাসীদের উপর নানান অন্যায় অজুহাত দেখিয়ে নিপীড়ন, খুন অব্যহত রেখেছে। জুলাই মাসে সাধারণের উপর এ নিপীড়ন সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এগুলো কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় তার দিকনির্দেশনা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আমরা জানি নির্বাচিত সরকার গঠন ছাড়া কোনো নীতি-প্রণয়ন করার সাংবিধানিক অধিকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই। তবে সরকার একটি কাঠামো গঠন করে দিয়ে যেতে পারে যা নির্বাচিত সরকার অনুসরণ করতে পারে।
৬। আমরা শিক্ষা নীতি নিয়ে নতুন একটি টাস্কফোর্স গঠন করার প্রস্তাব দিতে চাই, যার উদ্দেশ্য হবে পরিবর্তিত বাস্তবতায় বাংলাদেশের পটভূমিতে যথাযোগ্য ও বাস্তবায়নযোগ্য একটি নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।
৭। বাংলাদেশ স্বাস্থ্যখাত বহু সঙ্কটে নিমজ্জিত। একদিকে প্রত্যন্ত এলাকায় চিকিৎসা কেন্দ্র নেই অন্যদিকে যা আছে সেগুলোর সক্ষমতা কম, চিকিৎসার মান খারাপ বলে চিকিৎসার জন্য মানুষ শহরে অথবা বিদেশে যাচ্ছে। মানহীন চিকিৎসাও কিনতে হচ্ছে চড়া দামে।
৮। প্রবাসীদের দেশে পাঠানো আয় আমাদের অর্থনীতির একটি মূল চালিকাশক্তি। বিদেশি মুদ্রা অর্জনের জন্য তাদেরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা, এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তার দিকে নজর না দিয়ে শুধু রেমিট্যান্সের উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রবাসীদেরকে আমরা নানাভাবে অসম্মানিত হতে দেখেছি।
৯। উন্নয়নের নামে রামপাল, রূপপুর, বাঁশখালীসহ পরিবেশবিধ্বংসী ও জনস্বার্থবিরোধী নানান অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। মেগাপ্রকল্পের ব্যয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন শীর্ষে রয়েছে। দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষি মহলের সাথে আঁতাত করে দেশবিরোধী ব্যায়বহুল উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় জেলায় প্রান্তিক মানুষের ভূমি দখল করে, অথবা অল্প দামে কিনে নিয়ে শিল্প কারখানা ও প্রকল্প নির্মানের নামে ফেলে রাখা হয়েছে। এছাড়া, গত এক দশকে অনেক নদী জলাশয় বেদখল হয়েছে। অপরিকল্পিত শিল্পায়নের ফলে নদী দূষণ, এবং নদী শাসনের নামে নদী সংকুচিত করা হয়েছে। বনরক্ষার নামে বনের আশেপাশে কল-কারখানা, হোটেল, রিসোর্ট বানানো হয়েছে। পাহাড়ে ভূমি দখল করে পাহাড়িদের বাসস্থান বসবাসঅযোগ্য করা হয়েছে।
১০। দেশীয় শিল্প যেমন পাট, চিনি, সার, কাগজ, চামড়া বিকশিত হতে পারতো সেগুলোকে দুর্বল করে দিয়ে আমদানিকৃত কাঁচামাল নির্ভর শিল্পের দিকে অধিক মনোযোগ দেয়া হয়েছে।
১১। একদিকে আমরা দেখেছি খেলাপি ঋণ বেড়েছে, ব্যবসায়ী-আমলা-মন্ত্রীরা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে, অন্যদিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়েনি; ১৫ বছরে পাচার হয়েছে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার। মানুষের আমানতের অর্থ সঠিক খাতে খরচ না হবার কারণে দেশে চাকরির সুযোগ তৈরি হচ্ছে না।
ব্যাংক থেকে ঋণগুলো কীসের ভিত্তিতে দেয়া হয়েছে, এবং তা কী কাজে লাগানো হচ্ছে– এ নিয়ে বিস্তর অনুসন্ধান জরুরি। এর ভিত্তিতে দুর্বৃত্ত চক্রকে এবং নিয়মভঙ্গ করে নেয়া ঋণগ্রহীতাদের সামনে এনে উপযুক্ত বিচার করতে হবে।
১২। বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, পেশার সংখ্যালঘু মানুষ জনবৈচিত্র্য দিয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করেছে। যেকোনো দেশের জন্য এই জনবৈচিত্র্য একটি দুর্লভ প্রাপ্তি। এই জনবৈচিত্র্যকে অবমূল্যায়ন করে, তাদের অধিকার বঞ্চিত করে, নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত করে এই দেশ নাগরিক পরিসরে একটি অসম ক্ষেত্র তৈরি করে রেখেছে। সংবিধানে স্বীকৃতি লাভ থেকে শুরু করে আইন প্রণয়ন ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণে তারা নানান বাধার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই বিষয়েও আজকে আপনাদের মতামত জানতে চাই।
১৩। আমরা দেখতে পেয়েছি, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এই আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ। এই শ্রমজীবি মানুষের একটা বিরাট অংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। এরাই বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। এদের উন্নয়ন ছাড়া, শিক্ষা-স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা ছাড়া, কোনো দেশে সত্যিকার উন্নয়ন সম্ভব নয়।
সবার জন্য জাতীয় নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ এখন অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের মজুরি নির্ধারণের প্রক্রিয়াটি শ্রমিকবান্ধব তো নয়ই, বরং এই প্রক্রিয়াটি মালিকদের পক্ষে কাজ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কীভাবে একটি কাঠামো নির্মাণ করতে পারে যেন নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ একটি স্বচ্ছ উপায়ে হয় তা নিয়ে মতামত দিতে পারেন আপনারা।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষে
গীতি আরা নাসরীন
[১০ আগস্ট শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের মতবিনিময় সভায় পঠিত লিখিত বক্তব্য]
স্লোগান বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অবিছ্ছেদ্য অংশ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে স্লোগানের ব্যবহার ছিল। “ব্রিটিশ হটাও, দেশ বাঁচাও”; “বিদেশি পণ্য বর্জন করো, দেশি পণ্য ব্যবহার করো”; “তুমি আমি স্বদেশি, স্বদেশি স্বদেশি” “আমরা লড়ব, আমরা জিতব” ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে এরূপ অনেক স্লোগানই রাজনৈতিক সচেতন
৬ দিন আগে২২ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ নিয়ে একটি প্রস্তাবনা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে । তাতে প্রধান শিক্ষকরা আগে কত টাকা বেতন ও ভাতা পেতেন, আর দশম গ্রেড বাস্তবায়ন হলে কত পাবেন—তা নিয়ে পরিপূর্ণ হিসাব রয়েছে ।
৬ দিন আগেভিওজিএসএস হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদ্বেগ, স্বার্থ ও অগ্রাধিকারসমূহের বিষয়ে আলোচনা করা, ধারণা ও সমাধান বিনিময় করা, এবং উন্নয়ন সমাধান বিনির্মাণে কণ্ঠ ও উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য একটি অভিন্ন মঞ্চ প্রদানের লক্ষ্যে ভারতের প্রচেষ্টা।
৭ দিন আগেবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকেই খাজা সলিমুল্লাহ, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, আল্লামা ইকবাল, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ অনুধাবন করেন যে, ভারতবর্ষ স্বাধীন হলে মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমির প্রয়োজন হবে। অন্যথায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির মধ্যে গৃহযুদ্ধ লেগেই থাকবে। রা
১১ দিন আগে