ডয়চে ভেলে
সম্প্রতি বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা, যার প্রভাব পড়েছে নারীদের নিরাপত্তার ওপর। নারীরা বলছেন, তারা এমন সব পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন যা তাদের কাছে নতুন। পোশাক, পেশা ও চলাফেরা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। তবে পুলিশের দাবি, নারীদের নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কার কোনো কারণ ঘটেনি।
‘অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি’
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত এক নারী গত তিন বছর ধরে মিরপুরে সন্ধ্যায় একটি চা ও স্ন্যাকসের দোকান চালান। আগে সমস্যা না হলেও এখন মেয়েরা কেন চায়ের দোকান চালাবে, এমন কথা উঠছে বলে জানান সুমাইয়া আক্তার (ছদ্মনাম) নামের ওই নারী। তিনি বলেন, ‘সারাদিন অফিস করার পর বাড়তি আয়ের জন্য বাসার কাছেই আমি দোকানটি দিয়েছি। এখানে নানা ধরনের চা ও স্ন্যাকস বিক্রি করি। দোকানটি বেশ জমেও উঠছে। কিন্তু আমি ভয়ে আছি কোন দিন না আবার আমার দোকানটি বন্ধ করে দেয়।’
এমন কেন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন তো একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতি৷ সবাই মনে করছে তাদের মতোই চলতে হবে। তারা যা বলবেন তাই হবে। যে যেমন চিন্তা করেন সেইভাবেই সব কিছু নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। বিএনপি মনে করে তারা ক্ষমতায়, জামায়াত মনে করে তারা ক্ষমতায়। ফলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। কার কাছে প্রতিকার চাইব জানি না। পুলিশকে বললে কোনো কাজ হয় না। এক অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি।’
ঢাবি শিক্ষার্থীর অভিজ্ঞতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিলা ইয়াসমীন বলেন, ‘আগে কখনো এমন হয়নি৷ এখন রাত ৮টার দিকে কলাভবনের সামনে গেলে ছেলেরা প্রশ্ন করে রাতের বেলা এখানে কী করেন? আমি গত কয়েকদিনে কয়েকবার এই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি৷ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে তারা বলে সবাই যেভাবে বলছে সেভাবে চলো৷ আসলে তারাও এসবের বিরুদ্ধে যেতে চায় না’
‘আবার টি শার্ট, জিন্স পরলে নানা ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে৷ আগে ছিলো যে, এরকম ঘটলে আমরা জানতাম প্রতিকার পাওয়া যাবে৷ এখন তাও পাওয়া যায় না৷ এরফলে আমি মানসিকভাবে নাজুক হয়ে পড়েছি,’ বলেন তিনি।
তানজিলা ইয়াসমীন বলেন, ‘একটি নতুন পরিস্থিতির কারণেই হয়তো এরকম হচ্ছে৷ আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।’ আর একজন গৃহিণী বলেন, ‘এখন রাস্তায় চলতে ভয় পাই। আইন-শৃঙ্খলার অবনতির কারণে মনে হচ্ছে রিকশায় চললে কেউ এসে অস্ত্র ঠেকিয়ে আমার ব্যাগটি নিয়ে যাবে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এর প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেক নারী প্রশ্ন করছেন, দুইজন উপদেষ্টা নারী। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় তারা এখন আর আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছেন না।
এক নারী তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ধরলাম আপনারা বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন করেছেন, তো ভাই আপনাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে নারীর নিরাপত্তা কোথায়? এখন একদল বলবেন, পর্দা করে চললে মেয়েদের সাথে খারাপ কিছু হবে না। পর্দা করে চলার পরেও অনেক মেয়ের সাথে খারাপ ঘটনা ঘটেছে এমন উদাহরণ বাংলাদেশে অনেক রয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী পর্যন্ত বাদ পড়েনি৷ বড়দের কথা বাদই দিলাম, ছোট ফুলের মত শিশুরা পর্যন্ত এইসব অমানুষদের হাত থেকে রক্ষা পায় না৷ হাজারো ফুলের মতো শিশুর জীবন এদের জন্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে এবং যাচ্ছে৷ এখন কি এই ফুলের মতো শিশুদেরকে বলবেন যে তোমরা পর্দা করে চল না বলেই তোমাদের সাথে এমন হয়? দিতে পারবেন এই প্রশ্নগুলোর উত্তর?’
‘একটা ধর্মান্ধ গ্রুপ ডেভেলপ করেছে’
নারী অধিকার কর্মী জিনাত আরা বলেন, ‘যে-কোনো পরিবর্তনে, দুর্যোগে, যুদ্ধে যে মানুষ প্রান্তিক তাদেরই হেনস্তা হতে হয়। বাংলাদেশে নারীরা প্রান্তিক, তাই তারা এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন।’
‘একটা রাজনৈতিক পরিবর্তন এসেছে৷ এই পরিবর্তনে নারীদের অনেক ভূমিকা থাকার পরও তারা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন৷ এর কারণ আমরা আগে থেকেই দেখেছি একটা ধর্মান্ধ গ্রুপ ডেভেলপ করেছে এবং তারা মানুষের আবেগ নিয়ে সফলভাবে কাজ করতে পেরেছে৷ বিশেষ করে নারীবিদ্বেষী ধারণা তারা ধর্মের মোড়কে ফোকাস করতে পেরেছে৷ সেটা আরো তীব্র হচ্ছে,’ বলেন তিনি।
সম্প্রতি ঢাকার লালমাটিয়ায় একটি চায়ের দোকানে দুই তরুণীর ধূমপান করায় কথা কাটাকাটির পর মব হেনস্তার মুখে পড়তে হয়। পরে পুলিশ ওই দুই তরুণীকে থানার হেফাজতে নিয়ে যায়৷ তারপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘পাবলিক প্লেসে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য অপরাধ৷ কেউ যেন ওপেন প্লেসে ধূমপান না করেন।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই কথার প্রতিবাদে নারীরা রাস্তায় নেমেছেন। তাদের কথা, দুই তরুণীকে যারা হেনস্তা করলো তাদের আটক করা হলো না। কিন্তু দুই তরুণীকে থানায় নেয়া হলো৷ আর ওই প্রতিবাদে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের কয়েকজনকে নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক ট্রল হচ্ছে। একজনের ছবি দিয়ে তাকে রীতিমতো হুমকি দেয়া হচ্ছে।
‘রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ভেঙে গেছে’
মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ওই বক্তব্য নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য সহায়ক৷ দায়িত্বশীল জায়গা থেকে যখন এই ধরনের স্কেপিস্ট বক্তব্য দেয়া হয় তখন পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যায়। শুধু নারী নয় এখন সমাজের সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ভেঙে গেছে। একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’
‘নারীরা নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘এখন যে নারীর জন্য নিরাত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে এটা একটা নতুন পরিস্থিতি৷ তারা প্যানিকড৷ তাদের চলাফেরা, পোশাক সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ নারীরা নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে৷ এটা সববয়সি নারীর জন্য। একটা অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পত্রিকা থেকে নারী নির্যাতনের যে তথ্য পাই তার বাইরে এখন প্রচুর ঘটনা ঘটছে৷ আবার ধরনও পরিবর্তন হচ্ছে।’
তার কথা, ‘একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন নারীরা। নারীরা যেহেতু প্রান্তিক, তাই তারা শিকার হচ্ছেন। কারুর ওপর নিয়ন্ত্রণ নাই। মনে হচ্ছে একটা নতুন দেশ। যে যেভাবে পারছে তার ইচ্ছা পূরণ করছে।’
‘নারীবিরোধী শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠছে৷ তারা নারীদের ওপর নানা ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চাইছে৷ তারা চলাফেরায়ও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চায়৷ ফলে নারী নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে৷ কিন্তু এটা দেখার কেউ নেই।’
‘সরকার তেমন কিছু করছে না’
আর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, ‘দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিই ভালো না৷ নারী যেহেতু ভালনারেবল তাই তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব বেশি পড়ছে৷ সরকারও তেমন কিছু করছে না।’
তবে পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘নারীর নিরাপত্তাহীনতার কোনো কারণ ঘটেনি। পুলিশ নারী-পুরুষ সবার নিরাপত্তার জন্যই কাজ করছে। তারপরও তারা অনিরাপদ বোধ করলে পুলিশকে জানালে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’
সম্প্রতি বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা, যার প্রভাব পড়েছে নারীদের নিরাপত্তার ওপর। নারীরা বলছেন, তারা এমন সব পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন যা তাদের কাছে নতুন। পোশাক, পেশা ও চলাফেরা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। তবে পুলিশের দাবি, নারীদের নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কার কোনো কারণ ঘটেনি।
‘অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি’
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত এক নারী গত তিন বছর ধরে মিরপুরে সন্ধ্যায় একটি চা ও স্ন্যাকসের দোকান চালান। আগে সমস্যা না হলেও এখন মেয়েরা কেন চায়ের দোকান চালাবে, এমন কথা উঠছে বলে জানান সুমাইয়া আক্তার (ছদ্মনাম) নামের ওই নারী। তিনি বলেন, ‘সারাদিন অফিস করার পর বাড়তি আয়ের জন্য বাসার কাছেই আমি দোকানটি দিয়েছি। এখানে নানা ধরনের চা ও স্ন্যাকস বিক্রি করি। দোকানটি বেশ জমেও উঠছে। কিন্তু আমি ভয়ে আছি কোন দিন না আবার আমার দোকানটি বন্ধ করে দেয়।’
এমন কেন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন তো একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতি৷ সবাই মনে করছে তাদের মতোই চলতে হবে। তারা যা বলবেন তাই হবে। যে যেমন চিন্তা করেন সেইভাবেই সব কিছু নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। বিএনপি মনে করে তারা ক্ষমতায়, জামায়াত মনে করে তারা ক্ষমতায়। ফলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। কার কাছে প্রতিকার চাইব জানি না। পুলিশকে বললে কোনো কাজ হয় না। এক অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি।’
ঢাবি শিক্ষার্থীর অভিজ্ঞতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিলা ইয়াসমীন বলেন, ‘আগে কখনো এমন হয়নি৷ এখন রাত ৮টার দিকে কলাভবনের সামনে গেলে ছেলেরা প্রশ্ন করে রাতের বেলা এখানে কী করেন? আমি গত কয়েকদিনে কয়েকবার এই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি৷ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে তারা বলে সবাই যেভাবে বলছে সেভাবে চলো৷ আসলে তারাও এসবের বিরুদ্ধে যেতে চায় না’
‘আবার টি শার্ট, জিন্স পরলে নানা ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে৷ আগে ছিলো যে, এরকম ঘটলে আমরা জানতাম প্রতিকার পাওয়া যাবে৷ এখন তাও পাওয়া যায় না৷ এরফলে আমি মানসিকভাবে নাজুক হয়ে পড়েছি,’ বলেন তিনি।
তানজিলা ইয়াসমীন বলেন, ‘একটি নতুন পরিস্থিতির কারণেই হয়তো এরকম হচ্ছে৷ আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।’ আর একজন গৃহিণী বলেন, ‘এখন রাস্তায় চলতে ভয় পাই। আইন-শৃঙ্খলার অবনতির কারণে মনে হচ্ছে রিকশায় চললে কেউ এসে অস্ত্র ঠেকিয়ে আমার ব্যাগটি নিয়ে যাবে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এর প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেক নারী প্রশ্ন করছেন, দুইজন উপদেষ্টা নারী। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় তারা এখন আর আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছেন না।
এক নারী তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ধরলাম আপনারা বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন করেছেন, তো ভাই আপনাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে নারীর নিরাপত্তা কোথায়? এখন একদল বলবেন, পর্দা করে চললে মেয়েদের সাথে খারাপ কিছু হবে না। পর্দা করে চলার পরেও অনেক মেয়ের সাথে খারাপ ঘটনা ঘটেছে এমন উদাহরণ বাংলাদেশে অনেক রয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী পর্যন্ত বাদ পড়েনি৷ বড়দের কথা বাদই দিলাম, ছোট ফুলের মত শিশুরা পর্যন্ত এইসব অমানুষদের হাত থেকে রক্ষা পায় না৷ হাজারো ফুলের মতো শিশুর জীবন এদের জন্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে এবং যাচ্ছে৷ এখন কি এই ফুলের মতো শিশুদেরকে বলবেন যে তোমরা পর্দা করে চল না বলেই তোমাদের সাথে এমন হয়? দিতে পারবেন এই প্রশ্নগুলোর উত্তর?’
‘একটা ধর্মান্ধ গ্রুপ ডেভেলপ করেছে’
নারী অধিকার কর্মী জিনাত আরা বলেন, ‘যে-কোনো পরিবর্তনে, দুর্যোগে, যুদ্ধে যে মানুষ প্রান্তিক তাদেরই হেনস্তা হতে হয়। বাংলাদেশে নারীরা প্রান্তিক, তাই তারা এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন।’
‘একটা রাজনৈতিক পরিবর্তন এসেছে৷ এই পরিবর্তনে নারীদের অনেক ভূমিকা থাকার পরও তারা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন৷ এর কারণ আমরা আগে থেকেই দেখেছি একটা ধর্মান্ধ গ্রুপ ডেভেলপ করেছে এবং তারা মানুষের আবেগ নিয়ে সফলভাবে কাজ করতে পেরেছে৷ বিশেষ করে নারীবিদ্বেষী ধারণা তারা ধর্মের মোড়কে ফোকাস করতে পেরেছে৷ সেটা আরো তীব্র হচ্ছে,’ বলেন তিনি।
সম্প্রতি ঢাকার লালমাটিয়ায় একটি চায়ের দোকানে দুই তরুণীর ধূমপান করায় কথা কাটাকাটির পর মব হেনস্তার মুখে পড়তে হয়। পরে পুলিশ ওই দুই তরুণীকে থানার হেফাজতে নিয়ে যায়৷ তারপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘পাবলিক প্লেসে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য অপরাধ৷ কেউ যেন ওপেন প্লেসে ধূমপান না করেন।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই কথার প্রতিবাদে নারীরা রাস্তায় নেমেছেন। তাদের কথা, দুই তরুণীকে যারা হেনস্তা করলো তাদের আটক করা হলো না। কিন্তু দুই তরুণীকে থানায় নেয়া হলো৷ আর ওই প্রতিবাদে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের কয়েকজনকে নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক ট্রল হচ্ছে। একজনের ছবি দিয়ে তাকে রীতিমতো হুমকি দেয়া হচ্ছে।
‘রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ভেঙে গেছে’
মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ওই বক্তব্য নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য সহায়ক৷ দায়িত্বশীল জায়গা থেকে যখন এই ধরনের স্কেপিস্ট বক্তব্য দেয়া হয় তখন পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যায়। শুধু নারী নয় এখন সমাজের সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ভেঙে গেছে। একটা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’
‘নারীরা নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘এখন যে নারীর জন্য নিরাত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে এটা একটা নতুন পরিস্থিতি৷ তারা প্যানিকড৷ তাদের চলাফেরা, পোশাক সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ নারীরা নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে৷ এটা সববয়সি নারীর জন্য। একটা অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। পত্রিকা থেকে নারী নির্যাতনের যে তথ্য পাই তার বাইরে এখন প্রচুর ঘটনা ঘটছে৷ আবার ধরনও পরিবর্তন হচ্ছে।’
তার কথা, ‘একটা পরিবর্তিত পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন নারীরা। নারীরা যেহেতু প্রান্তিক, তাই তারা শিকার হচ্ছেন। কারুর ওপর নিয়ন্ত্রণ নাই। মনে হচ্ছে একটা নতুন দেশ। যে যেভাবে পারছে তার ইচ্ছা পূরণ করছে।’
‘নারীবিরোধী শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠছে৷ তারা নারীদের ওপর নানা ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চাইছে৷ তারা চলাফেরায়ও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চায়৷ ফলে নারী নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে৷ কিন্তু এটা দেখার কেউ নেই।’
‘সরকার তেমন কিছু করছে না’
আর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, ‘দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিই ভালো না৷ নারী যেহেতু ভালনারেবল তাই তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব বেশি পড়ছে৷ সরকারও তেমন কিছু করছে না।’
তবে পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘নারীর নিরাপত্তাহীনতার কোনো কারণ ঘটেনি। পুলিশ নারী-পুরুষ সবার নিরাপত্তার জন্যই কাজ করছে। তারপরও তারা অনিরাপদ বোধ করলে পুলিশকে জানালে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’
স্লোগান বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অবিছ্ছেদ্য অংশ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে স্লোগানের ব্যবহার ছিল। “ব্রিটিশ হটাও, দেশ বাঁচাও”; “বিদেশি পণ্য বর্জন করো, দেশি পণ্য ব্যবহার করো”; “তুমি আমি স্বদেশি, স্বদেশি স্বদেশি” “আমরা লড়ব, আমরা জিতব” ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে এরূপ অনেক স্লোগানই রাজনৈতিক সচেতন
৪ দিন আগে২২ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ নিয়ে একটি প্রস্তাবনা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে । তাতে প্রধান শিক্ষকরা আগে কত টাকা বেতন ও ভাতা পেতেন, আর দশম গ্রেড বাস্তবায়ন হলে কত পাবেন—তা নিয়ে পরিপূর্ণ হিসাব রয়েছে ।
৫ দিন আগেভিওজিএসএস হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদ্বেগ, স্বার্থ ও অগ্রাধিকারসমূহের বিষয়ে আলোচনা করা, ধারণা ও সমাধান বিনিময় করা, এবং উন্নয়ন সমাধান বিনির্মাণে কণ্ঠ ও উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য একটি অভিন্ন মঞ্চ প্রদানের লক্ষ্যে ভারতের প্রচেষ্টা।
৬ দিন আগেবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকেই খাজা সলিমুল্লাহ, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, আল্লামা ইকবাল, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ অনুধাবন করেন যে, ভারতবর্ষ স্বাধীন হলে মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমির প্রয়োজন হবে। অন্যথায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির মধ্যে গৃহযুদ্ধ লেগেই থাকবে। রা
৯ দিন আগে