বিশেষ প্রতিনিধি, রাজনীতি ডটকম
রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে গত আট মাস ধরে কাজ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার পর বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত হয়েছে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’।
আজ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এই সনদে স্বাক্ষরের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে সরকার। এ দিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও সব সদস্য এবং রাজনৈতিক দলগুলোর দুজন করে প্রতিনিধি এই সনদে সই করবেন।
গত বছর আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে গঠন করা হয় ছয়টি সংস্কার কমিশন— সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। এই সংস্কার কমিশনগুলো যেসব প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে উঠে আসা সুপারিশ ও প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে পারে গঠন করা হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
গত ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান হিসেবে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সহসভাপতি হিসেবে রয়েছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সংস্কার প্রস্তাবের আলোচনার পুরো প্রক্রিয়া মূলত তার নেতৃত্বেই হয়েছে।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন— জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মো. আইয়ুব মিয়া, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
এই কমিশন প্রথম পর্বে ৩৩টি ও দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে অবশ্য কিছু কিছু প্রস্তাবনা নিয়ে কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত রয়েছে, সেগুলোকেও রাখা হয়েছে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ আকারে।
দুই ধাপের আলোচনার পর ‘নোট অব ডিসেন্ট’সহ ঐকমত্য হওয়া ৮৪ দফা প্রস্তাব নিয়ে গত ১৬ আগস্ট রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ওই খসড়ায় কিছু ত্রুটি থাকায়, তা সংশোধন করে ফের পাঠানো হয় দলগুলোকে। বলা হয়, দলগুলো ২২ আগস্ট পর্যন্ত এই খসড়া নিয়ে মতামত দিতে পারবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে পরে বিশেষজ্ঞসহ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে জুলাই সনদের খসড়ায় একাধিকবার সংশোধন করা হয়। সবশেষ এ সপ্তাহেই চূড়ান্ত করা হয়েছে জুলাই সনদ। গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সেই চূড়ান্ত কপি পাঠানো হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোকে।
আট মাসের প্রয়াসে প্রণীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। এর প্রথম অংশে রয়েছে এই সনদ প্রণয়নের পটভূমি থেকে শুরু করে ঐকমত্য হওয়া ৮৪টি প্রস্তাবনা। দ্বিতীয় অংশে রয়েছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সাত দফা অঙ্গীকারনামা। এর বাইরে অবশ্য পরিশিষ্ট অংশ রাখা হয়েছে, যেখানে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসা সব রাজনৈতিক দলগুলোর নাম তুলে ধরা হয়েছে।
পুরো জুলাই সনদটি পড়ুন এখানে—
জুলাই সনদের পটভূমিতে ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসানে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলনসহ নানা লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর থেকে জুলাই আন্দোলন পর্যন্ত সময়কার রাজনৈতিক ইতিহাস।
এর সূত্র ধরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন এবং রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ হিসেবে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন ও সবশেষে ঐকমত্য কমিশন গঠনের মাধ্যমে জুলাই সনদ প্রণয়ন পর্যন্ত প্রক্রিয়াটিও সংক্ষিপ্ত বিবরণও তুলে ধরা হয়েছে এর পটভূমি অংশে। বলা হয়েছে, প্রথম ধাপে ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে নিয়ে ৪৪টি বৈঠক এবং দ্বিতীয় ধাপে ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে নিয়ে ২৩টি বৈঠকের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয় জুলাই সনদের প্রস্তাবনা।
জুলাই সনদের প্রথম অংশেই ঐকমত্যে উপনীত হওয়া ৮৪টি বিষয়ের বিবরণ তুলে ধরার আগে রাখা হয়েছে ঐকমত্যের ঘোষণা। এতে বলা হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে, আমরা অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা নিজ নিজ দলের পক্ষ থেকে—
বিদ্যমান শাসনব্যবস্থা তথা সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশি ব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে নিম্নলিখিত কাঠামোগত, আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের ব্যাপারে ঐকমত্যে উপনীত হয়েছি;
এসব বিষয়কে এই জাতীয় সনদে (কিছু বিষয়ে ভিন্নমতসহ) সন্নিবেশিত করতে সম্মত হয়েছি; এবং
২০০৯ সাল পরবর্তী ১৬ বছরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের বীর শহিদ ও আহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ, গ্রেপ্তার ও কারাবরণকারীদের প্রতি সহমর্মিতা এবং গণঅভ্যুত্থানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতার স্মারক হিসেবে আমরা এই সনদকে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ হিসেবে ঘোষণা করছি।
ঐকমত্যের ঘোষণার পরই জুলাই সনদে সন্নিবেশিত করা হয়েছে ঐকমত্যে উপনীত হওয়া ৮৪টি বিষয়। এসব বিষয়কেও ভাগ করা হয়েছে দুটি ভাগে। এর মধ্যে প্রথম ভাগে রয়েছে সংবিধান সংশোধন সাপেক্ষে যেসব সংস্কার করতে হবে সেগুলো। এ ধরনের প্রস্তাবনা রয়েছে ৪৭টি। দ্বিতীয় অংশে রয়েছে আইন/অধ্যাদেশ, বিধি ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলো। এ অংশে প্রস্তাবনা রয়েছে ৩৭টি।
উভয় অংশেই প্রতিটি প্রস্তাবনা বা জুলাই সনদের ভাষ্যের সঙ্গে কোন কোন রাজনৈতিক দল একমত, সেটি উল্লেখ করা হয়েছে। এ ভাষ্যের সঙ্গে কোন কোন দলের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ রয়েছে, সেটিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিটি বিষয়ের সঙ্গে। এ ক্ষেত্রে বিকল্প প্রস্তাবনা থাকলে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোও।
দ্বিতীয় অংশে রয়েছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা। এ অংশে অঙ্গীকার রয়েছে সাতটি, যেগুলোর ওপর ভিত্তি করেই রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর এই সনদ বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা কার্যকর হবে। অঙ্গীকারনামাটি নিচে তুলে ধরা হলো।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রকাশিত জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীরা এ মর্মে অঙ্গীকার ও ঘোষণা করছি যে—
জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ প্রণয়নে যেসব রাজনৈতিক দল ও জোট অংশগ্রহণ করেছে তাদের তালিকা
রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে গত আট মাস ধরে কাজ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার পর বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত হয়েছে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’।
আজ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এই সনদে স্বাক্ষরের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে সরকার। এ দিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও সব সদস্য এবং রাজনৈতিক দলগুলোর দুজন করে প্রতিনিধি এই সনদে সই করবেন।
গত বছর আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে গঠন করা হয় ছয়টি সংস্কার কমিশন— সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। এই সংস্কার কমিশনগুলো যেসব প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে উঠে আসা সুপারিশ ও প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে পারে গঠন করা হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
গত ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান হিসেবে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সহসভাপতি হিসেবে রয়েছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সংস্কার প্রস্তাবের আলোচনার পুরো প্রক্রিয়া মূলত তার নেতৃত্বেই হয়েছে।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন— জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মো. আইয়ুব মিয়া, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
এই কমিশন প্রথম পর্বে ৩৩টি ও দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে অবশ্য কিছু কিছু প্রস্তাবনা নিয়ে কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত রয়েছে, সেগুলোকেও রাখা হয়েছে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ আকারে।
দুই ধাপের আলোচনার পর ‘নোট অব ডিসেন্ট’সহ ঐকমত্য হওয়া ৮৪ দফা প্রস্তাব নিয়ে গত ১৬ আগস্ট রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ওই খসড়ায় কিছু ত্রুটি থাকায়, তা সংশোধন করে ফের পাঠানো হয় দলগুলোকে। বলা হয়, দলগুলো ২২ আগস্ট পর্যন্ত এই খসড়া নিয়ে মতামত দিতে পারবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে পরে বিশেষজ্ঞসহ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে জুলাই সনদের খসড়ায় একাধিকবার সংশোধন করা হয়। সবশেষ এ সপ্তাহেই চূড়ান্ত করা হয়েছে জুলাই সনদ। গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সেই চূড়ান্ত কপি পাঠানো হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোকে।
আট মাসের প্রয়াসে প্রণীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। এর প্রথম অংশে রয়েছে এই সনদ প্রণয়নের পটভূমি থেকে শুরু করে ঐকমত্য হওয়া ৮৪টি প্রস্তাবনা। দ্বিতীয় অংশে রয়েছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সাত দফা অঙ্গীকারনামা। এর বাইরে অবশ্য পরিশিষ্ট অংশ রাখা হয়েছে, যেখানে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসা সব রাজনৈতিক দলগুলোর নাম তুলে ধরা হয়েছে।
পুরো জুলাই সনদটি পড়ুন এখানে—
জুলাই সনদের পটভূমিতে ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসানে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলনসহ নানা লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর থেকে জুলাই আন্দোলন পর্যন্ত সময়কার রাজনৈতিক ইতিহাস।
এর সূত্র ধরে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন এবং রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ হিসেবে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন ও সবশেষে ঐকমত্য কমিশন গঠনের মাধ্যমে জুলাই সনদ প্রণয়ন পর্যন্ত প্রক্রিয়াটিও সংক্ষিপ্ত বিবরণও তুলে ধরা হয়েছে এর পটভূমি অংশে। বলা হয়েছে, প্রথম ধাপে ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে নিয়ে ৪৪টি বৈঠক এবং দ্বিতীয় ধাপে ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে নিয়ে ২৩টি বৈঠকের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয় জুলাই সনদের প্রস্তাবনা।
জুলাই সনদের প্রথম অংশেই ঐকমত্যে উপনীত হওয়া ৮৪টি বিষয়ের বিবরণ তুলে ধরার আগে রাখা হয়েছে ঐকমত্যের ঘোষণা। এতে বলা হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে, আমরা অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা নিজ নিজ দলের পক্ষ থেকে—
বিদ্যমান শাসনব্যবস্থা তথা সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশি ব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে নিম্নলিখিত কাঠামোগত, আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের ব্যাপারে ঐকমত্যে উপনীত হয়েছি;
এসব বিষয়কে এই জাতীয় সনদে (কিছু বিষয়ে ভিন্নমতসহ) সন্নিবেশিত করতে সম্মত হয়েছি; এবং
২০০৯ সাল পরবর্তী ১৬ বছরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের বীর শহিদ ও আহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ, গ্রেপ্তার ও কারাবরণকারীদের প্রতি সহমর্মিতা এবং গণঅভ্যুত্থানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতার স্মারক হিসেবে আমরা এই সনদকে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ হিসেবে ঘোষণা করছি।
ঐকমত্যের ঘোষণার পরই জুলাই সনদে সন্নিবেশিত করা হয়েছে ঐকমত্যে উপনীত হওয়া ৮৪টি বিষয়। এসব বিষয়কেও ভাগ করা হয়েছে দুটি ভাগে। এর মধ্যে প্রথম ভাগে রয়েছে সংবিধান সংশোধন সাপেক্ষে যেসব সংস্কার করতে হবে সেগুলো। এ ধরনের প্রস্তাবনা রয়েছে ৪৭টি। দ্বিতীয় অংশে রয়েছে আইন/অধ্যাদেশ, বিধি ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলো। এ অংশে প্রস্তাবনা রয়েছে ৩৭টি।
উভয় অংশেই প্রতিটি প্রস্তাবনা বা জুলাই সনদের ভাষ্যের সঙ্গে কোন কোন রাজনৈতিক দল একমত, সেটি উল্লেখ করা হয়েছে। এ ভাষ্যের সঙ্গে কোন কোন দলের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ রয়েছে, সেটিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিটি বিষয়ের সঙ্গে। এ ক্ষেত্রে বিকল্প প্রস্তাবনা থাকলে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোও।
দ্বিতীয় অংশে রয়েছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা। এ অংশে অঙ্গীকার রয়েছে সাতটি, যেগুলোর ওপর ভিত্তি করেই রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর এই সনদ বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা কার্যকর হবে। অঙ্গীকারনামাটি নিচে তুলে ধরা হলো।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রকাশিত জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীরা এ মর্মে অঙ্গীকার ও ঘোষণা করছি যে—
জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ প্রণয়নে যেসব রাজনৈতিক দল ও জোট অংশগ্রহণ করেছে তাদের তালিকা
সঠিক রাস্তায় এগিয়ে নিতে পারলে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করা সম্ভব জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বঙ্গোপসাগরকে ব্যবহার করার জন্য যে পথ লাগবে এই জুলাই সনদই সেই পথ দেখাবে। কক্সবাজার, মাতারবাড়িসহ সব এলাকা যদি আমরা বন্দর হিসেবে পূর্ণাঙ্গভাবে গড়ে তুলতে পারি তাহলে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হয়ে যাবে।
১২ ঘণ্টা আগেএতে উপস্থিত রয়েছেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ। যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা।
১২ ঘণ্টা আগেআলী রীয়াজ বলেন, রাজনীতিতে মতপার্থক্য না থাকলে তা গণতান্ত্রিক হয় না। কিন্তু ঐক্যের জায়গাও থাকতে হবে। আমাদের অনেক স্রোত, মোহনা একটি— একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ তৈরি করা। আমাদের বহু স্রোত, কিন্তু সবাই এক জায়গায়— আমরা যেকোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই দাঁড়িয়ে থাকব।
১২ ঘণ্টা আগেদীর্ঘ আলোচনা শেষে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ প্রণয়ন করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। শেষ মুহূর্তেও কিছু রাজনৈতিক দলের মতভিন্নতা থাকলেও শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এই সনদ স্বাক্ষরের অনুষ্ঠান আয়োজন করে সরকার। অনুষ্ঠানের ঘটনাপ্রবাহ সরাসরি তুলে ধরা হচ্ছে রাজনীতি ডটকমের পাঠকদের জন্য...
১৪ ঘণ্টা আগে