
রাজশাহী ব্যুরো
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজসমূহ বাস্তবায়ন করছে জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, বিভ্রান্তকরণ তথ্যে বিভ্রান্ত না হয়ে চলমান উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে নগরবাসীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় নগর ভবনের সিটি হল সভাকক্ষে নগরীর চলমান উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিতকরণের লক্ষ্যে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পবিবারের শহীদ সদস্যগণ, জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মারণ করেন রাসিক মেয়র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা‘র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে নগরীর বিভিন্ন রেল ক্রসিং এ ফ্লাইওভার নির্মাণ। ফ্লাইওভারসহ নগরীতে যখন নাগরিকগণের জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলমান রয়েছে, ঠিক সেই সময়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ নিয়ে কিছু বিভ্রান্তকর তথ্য প্রচারিত হচ্ছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। রাজশাহী মহানগরীর কেন্দ্রস্থলের বুক চিরে রেললাইন। রেলের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী শীঘ্রই ট্রেন চলাচলের জন্য রেলের ডাবল লাইন হতে যাচ্ছে। চালু হতে যাচ্ছে ডাবল ডেকার ট্রেন। কোর্ট স্টেশন সংলগ্ন নির্মিতব্য ইয়ার্ডে ভারত ও নেপাল থেকে আনিত পণ্য সামগ্রী নামানো ও ওঠানো হবে। আরডিএ এর মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী সিটি এলাকা উত্তর দিকে বৃদ্ধি পাবে। ফলে উত্তর-দক্ষিণে চলাচল বাড়বে। রাজশাহী সিটির আয়তন তিন থেকে চারগুণ বৃদ্ধির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। শহরের মধ্যে রেলক্রসিংগুলোতে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। আগামীতে মানুষ ও যানবাহন সংখ্যাধিক্যের কারণে শহরের উত্তর-দক্ষিণে চলাচল ক্রমবৃদ্ধিতে ভবিষ্যতে যানজটসহ দুর্ঘটনাও বাড়বে। সার্বিক দিক বিবেচনায় জনস্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে দুর্ঘটনারোধ ও নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত এবং ভবিষ্যতে উদ্ভূত যানজট নিরসনে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগামী ৫০/১০০ বছরের বাস্তবতায় রাজশাহী মহানগরীতে রেলক্রসিং-এ ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে।
সবুজায়ন ও বৃক্ষরোপণের ব্যাপারে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নগরীর প্রধান প্রধান গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ চারলেন থেকে ছয়লেনে উন্নীত করা হয়েছে। প্রশস্ত সড়ক নেটওয়ার্ক, দৃষ্টিনন্দন ফুটপাত ও আলোকায়নে নগরীর নান্দনিকতা ও সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পেয়েছে। রাস্তা প্রশস্ত করতে গিয়ে সড়কে কিছু গাছ কাটা পড়েছে। এক্ষেত্রে একটি গাছ কাটা পড়লে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক তার পরিবর্তে পরিকল্পনামতো ১০টির অধিক গাছ রোপণের পরিকল্পনা রয়েছে। গত ৫ বছরে দুই লক্ষ ৫০ হাজার এর অধিক স্থায়ী বড় গাছ, সড়কের আইল্যান্ড ও বিভিন্ন মোড়ে হেজ জাতীয় ১০ লক্ষাধিক গাছ এবং বিভিন্ন মৌসুমে ৭ লক্ষাধিক বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ লাগানো হয়েছে। পরিবেশ শাখার কর্মীরা রোপণকৃত গাছের নিবিড় পরিচর্যা করেন, পানির ট্যাংকার মাধ্যমে নিয়মিত পানি প্রদান করা হয়। আমাদের সম্মিলিত অব্যাহত আন্তরিক প্রচেষ্টায় নগরীর সবুজায়ন আগামীতে আরো বৃদ্ধি পাবে।
রাসিক মেয়র বলেন, জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নিজস্ব অর্থায়নে মুসরইল মৌজায় ১৫ বিঘা ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে জনস্বার্থে কবরস্থান ও ঈদগাহ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। কবরস্থান ও ঈদগাহ নির্মাণের প্রস্তাব ১০/০৪/২০২২ তারিখে সিটি কর্পোরেশনের ১১তম সাধারণ সভায় অনুমোদিত হয়।
নগরীর উন্নয়নের কার্যক্রম তুলে ধরে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন জানান, ২৯৩১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামোর উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় সর্বমোট ২২৯ টি প্যাকেজের ২০৫০ কোটি ৩ লাখ টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এরমধ্যে ১৯৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। সর্বমোট ২২৯টি প্যাকেজের মধ্যে ১৮৩টি প্যাকেজের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৪৬টি প্যাকেজের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৬০ শতাংশের অধিক। সম্মানিত নাগরিকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে রাস্তা পারাপার ও দুর্ঘটনা রোধে নগরীর ১০টি জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে দৃষ্টিনন্দন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৬টি নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে, যা শীঘ্রই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। ২৩৮.৭৫কি.মি. কার্পেটিং সড়ক, ২৬০.৩০কি.মি. সিমেন্ট-কংক্রিট সড়ক, ৩৫০.০৫কি.মি. নর্দমা, ৪০.২২কি.মি. ফুটপাথ ও ২৪০৯৯.৫০মি. সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। ১৬টি জলাশয়ের উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২৯টি ঈদগাহ, ৫২টি গোরস্থান ও ১টি শ্মশান ঘাটের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। শালবাগান কাঁচাবাজার, নওদাপাড়া কাঁচাবাজার ও ৬ নং ওয়ার্ড কার্যালয় নির্মাণ কাজ চলছে। প্রকল্পের আওতায় শেখ রাসেল পার্ক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও ভুবন মোহনপার্কের উন্নয়ন কাজ চলমান। হযরত শাহ মখদুম রূপোশ (র.) দরগাহ শরীফের উন্নয়ন প্রকল্প’ কাজ চলছে। প্রকল্পের আওতায় ৪তলা মাজার কমপ্লেক্স-এর প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, ৪ তলা মিনারসহ মসজিদ,মাজার, সীমানা প্রাচীর ও প্রবেশ গেইট নির্মাণসহ ল্যান্ড স্কেপিং করা হবে। জাতীয় চার নেতার অন্যতম নেতা শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এঁর সমাধিসৌধ নির্মাণ প্রকল্পটি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ ও জাতীয় চার নেতার অবদান নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হবে। দীর্ঘ মেয়াদে রাজশাহী এলাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষিত হবে। দেশের মানুষ শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এঁর জীবনাদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবে। লোকাল গভর্নমেন্ট কোভিড-১৯ রেসপনস এ্যান্ড রিকভারি শীর্ষক প্রকল্প এর আওতায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ চলমান।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীর উন্নয়নে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন রাসিক মেয়র। তিনি জানান, ৫ বছর স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব হ্রাস ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি। নদী ও বরেন্দ্র অঞ্চলভিত্তিক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা। সিটি কর্পোরেশন এলাকা সম্প্রসারণ। রাজশাহী মহানগরীর প্রাকৃতিক জলাশয় সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনার আধুনিক প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণার্থে নর্দমা নির্মাণ প্রকল্প (৪র্থ পর্যায়) শুরু করা। মহানগরীর কুমারপাড়া গুলগোফুর পেট্রোল পাম্প হতে সাহেব বাজার বড় মসজিদ, বড়কুঠি, পাঠানপাড়া, শিমুলতলা ক্লাব হয়ে ফায়ারব্রিগেড মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর চকপাড়া এলাকায় স্যাটেলাইট টাউন উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর ওয়ার্ড পর্যায়ে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী সড়কবাতিতে আলোকায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প। রিজিলিয়েন্ট আরবান এ্যান্ড টেরিটরিয়্যাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট। আন্তর্জাতিক নৌবন্দর স্থাপন। রাজশাহীতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। রাজশাহী-কলকাতা ট্রেন ও বাস চলাচল চালু করা। বঙ্গবন্ধু রিভারসিটি‘র কার্যক্রম শুরু করা। দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, ১৫০ শয্যা রাজশাহী সিটি হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর সম্প্রসারিত এলাকায় সড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপনার অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়া এলাকায় পরিচ্ছন্ন কর্মনিবাস নির্মাণ কাজ প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীতে শেখ রাসেল সায়েন্স সিটি ও সাফারি পার্ক নির্মাণ প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর ফ্লাইওভার/ওভারপাস/ আন্ডার পাস নির্মাণ প্রকল্প।
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিয়াউল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর রুহুল আমিন প্রামাণিক, প্যানেল মেয়র-১ ও ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিযাম উল আযীম, প্যানেল মেয়র-২ ও ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোমিন, ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজব আলী, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল আহম্মেদ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজসমূহ বাস্তবায়ন করছে জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, বিভ্রান্তকরণ তথ্যে বিভ্রান্ত না হয়ে চলমান উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে নগরবাসীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় নগর ভবনের সিটি হল সভাকক্ষে নগরীর চলমান উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিতকরণের লক্ষ্যে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পবিবারের শহীদ সদস্যগণ, জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মারণ করেন রাসিক মেয়র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা‘র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে নগরীর বিভিন্ন রেল ক্রসিং এ ফ্লাইওভার নির্মাণ। ফ্লাইওভারসহ নগরীতে যখন নাগরিকগণের জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলমান রয়েছে, ঠিক সেই সময়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ নিয়ে কিছু বিভ্রান্তকর তথ্য প্রচারিত হচ্ছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। রাজশাহী মহানগরীর কেন্দ্রস্থলের বুক চিরে রেললাইন। রেলের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী শীঘ্রই ট্রেন চলাচলের জন্য রেলের ডাবল লাইন হতে যাচ্ছে। চালু হতে যাচ্ছে ডাবল ডেকার ট্রেন। কোর্ট স্টেশন সংলগ্ন নির্মিতব্য ইয়ার্ডে ভারত ও নেপাল থেকে আনিত পণ্য সামগ্রী নামানো ও ওঠানো হবে। আরডিএ এর মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী সিটি এলাকা উত্তর দিকে বৃদ্ধি পাবে। ফলে উত্তর-দক্ষিণে চলাচল বাড়বে। রাজশাহী সিটির আয়তন তিন থেকে চারগুণ বৃদ্ধির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। শহরের মধ্যে রেলক্রসিংগুলোতে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। আগামীতে মানুষ ও যানবাহন সংখ্যাধিক্যের কারণে শহরের উত্তর-দক্ষিণে চলাচল ক্রমবৃদ্ধিতে ভবিষ্যতে যানজটসহ দুর্ঘটনাও বাড়বে। সার্বিক দিক বিবেচনায় জনস্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে দুর্ঘটনারোধ ও নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত এবং ভবিষ্যতে উদ্ভূত যানজট নিরসনে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগামী ৫০/১০০ বছরের বাস্তবতায় রাজশাহী মহানগরীতে রেলক্রসিং-এ ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে।
সবুজায়ন ও বৃক্ষরোপণের ব্যাপারে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নগরীর প্রধান প্রধান গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ চারলেন থেকে ছয়লেনে উন্নীত করা হয়েছে। প্রশস্ত সড়ক নেটওয়ার্ক, দৃষ্টিনন্দন ফুটপাত ও আলোকায়নে নগরীর নান্দনিকতা ও সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পেয়েছে। রাস্তা প্রশস্ত করতে গিয়ে সড়কে কিছু গাছ কাটা পড়েছে। এক্ষেত্রে একটি গাছ কাটা পড়লে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক তার পরিবর্তে পরিকল্পনামতো ১০টির অধিক গাছ রোপণের পরিকল্পনা রয়েছে। গত ৫ বছরে দুই লক্ষ ৫০ হাজার এর অধিক স্থায়ী বড় গাছ, সড়কের আইল্যান্ড ও বিভিন্ন মোড়ে হেজ জাতীয় ১০ লক্ষাধিক গাছ এবং বিভিন্ন মৌসুমে ৭ লক্ষাধিক বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ লাগানো হয়েছে। পরিবেশ শাখার কর্মীরা রোপণকৃত গাছের নিবিড় পরিচর্যা করেন, পানির ট্যাংকার মাধ্যমে নিয়মিত পানি প্রদান করা হয়। আমাদের সম্মিলিত অব্যাহত আন্তরিক প্রচেষ্টায় নগরীর সবুজায়ন আগামীতে আরো বৃদ্ধি পাবে।
রাসিক মেয়র বলেন, জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নিজস্ব অর্থায়নে মুসরইল মৌজায় ১৫ বিঘা ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে জনস্বার্থে কবরস্থান ও ঈদগাহ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। কবরস্থান ও ঈদগাহ নির্মাণের প্রস্তাব ১০/০৪/২০২২ তারিখে সিটি কর্পোরেশনের ১১তম সাধারণ সভায় অনুমোদিত হয়।
নগরীর উন্নয়নের কার্যক্রম তুলে ধরে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন জানান, ২৯৩১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামোর উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় সর্বমোট ২২৯ টি প্যাকেজের ২০৫০ কোটি ৩ লাখ টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এরমধ্যে ১৯৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। সর্বমোট ২২৯টি প্যাকেজের মধ্যে ১৮৩টি প্যাকেজের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৪৬টি প্যাকেজের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৬০ শতাংশের অধিক। সম্মানিত নাগরিকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে রাস্তা পারাপার ও দুর্ঘটনা রোধে নগরীর ১০টি জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে দৃষ্টিনন্দন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৬টি নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে, যা শীঘ্রই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। ২৩৮.৭৫কি.মি. কার্পেটিং সড়ক, ২৬০.৩০কি.মি. সিমেন্ট-কংক্রিট সড়ক, ৩৫০.০৫কি.মি. নর্দমা, ৪০.২২কি.মি. ফুটপাথ ও ২৪০৯৯.৫০মি. সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। ১৬টি জলাশয়ের উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২৯টি ঈদগাহ, ৫২টি গোরস্থান ও ১টি শ্মশান ঘাটের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। শালবাগান কাঁচাবাজার, নওদাপাড়া কাঁচাবাজার ও ৬ নং ওয়ার্ড কার্যালয় নির্মাণ কাজ চলছে। প্রকল্পের আওতায় শেখ রাসেল পার্ক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও ভুবন মোহনপার্কের উন্নয়ন কাজ চলমান। হযরত শাহ মখদুম রূপোশ (র.) দরগাহ শরীফের উন্নয়ন প্রকল্প’ কাজ চলছে। প্রকল্পের আওতায় ৪তলা মাজার কমপ্লেক্স-এর প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, ৪ তলা মিনারসহ মসজিদ,মাজার, সীমানা প্রাচীর ও প্রবেশ গেইট নির্মাণসহ ল্যান্ড স্কেপিং করা হবে। জাতীয় চার নেতার অন্যতম নেতা শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এঁর সমাধিসৌধ নির্মাণ প্রকল্পটি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ ও জাতীয় চার নেতার অবদান নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হবে। দীর্ঘ মেয়াদে রাজশাহী এলাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষিত হবে। দেশের মানুষ শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এঁর জীবনাদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবে। লোকাল গভর্নমেন্ট কোভিড-১৯ রেসপনস এ্যান্ড রিকভারি শীর্ষক প্রকল্প এর আওতায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ চলমান।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীর উন্নয়নে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন রাসিক মেয়র। তিনি জানান, ৫ বছর স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব হ্রাস ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি। নদী ও বরেন্দ্র অঞ্চলভিত্তিক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা। সিটি কর্পোরেশন এলাকা সম্প্রসারণ। রাজশাহী মহানগরীর প্রাকৃতিক জলাশয় সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনার আধুনিক প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণার্থে নর্দমা নির্মাণ প্রকল্প (৪র্থ পর্যায়) শুরু করা। মহানগরীর কুমারপাড়া গুলগোফুর পেট্রোল পাম্প হতে সাহেব বাজার বড় মসজিদ, বড়কুঠি, পাঠানপাড়া, শিমুলতলা ক্লাব হয়ে ফায়ারব্রিগেড মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর চকপাড়া এলাকায় স্যাটেলাইট টাউন উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর ওয়ার্ড পর্যায়ে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী সড়কবাতিতে আলোকায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প। রিজিলিয়েন্ট আরবান এ্যান্ড টেরিটরিয়্যাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট। আন্তর্জাতিক নৌবন্দর স্থাপন। রাজশাহীতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। রাজশাহী-কলকাতা ট্রেন ও বাস চলাচল চালু করা। বঙ্গবন্ধু রিভারসিটি‘র কার্যক্রম শুরু করা। দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, ১৫০ শয্যা রাজশাহী সিটি হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর সম্প্রসারিত এলাকায় সড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপনার অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়া এলাকায় পরিচ্ছন্ন কর্মনিবাস নির্মাণ কাজ প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীতে শেখ রাসেল সায়েন্স সিটি ও সাফারি পার্ক নির্মাণ প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর ফ্লাইওভার/ওভারপাস/ আন্ডার পাস নির্মাণ প্রকল্প।
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিয়াউল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর রুহুল আমিন প্রামাণিক, প্যানেল মেয়র-১ ও ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিযাম উল আযীম, প্যানেল মেয়র-২ ও ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোমিন, ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজব আলী, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল আহম্মেদ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন।

রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রশিবির আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাদের কর্মকাণ্ড ও আদর্শিক অবস্থান কাছ থেকে দেখে সেই বিভ্রান্তি কাটিয়ে উঠছেন।
২ ঘণ্টা আগে
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, রাজশাহীর চাষীরা বাংলাদেশের মৎস্য চাষে যুগান্তকারী পরিবর্তন করেছেন। বিদেশনির্ভর বড় আকারের রুই থেকে রাজশাহীর জীবন্ত রুইজাতীয় মাছ আজ দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়েছে। আজ সময় এসেছে বিদেশে রপ্তানি উপযোগী করার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি, নীতিমালা গ্রহণ করা। সর
৩ ঘণ্টা আগে
দিনাজপুর সদর উপজেলায় ইজিবাইক ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার দশমাইল সড়কের গম গবেষণা কেন্দ্রের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা সবাই ইজিবাইকের যাত্রী ছিলেন।
৩ ঘণ্টা আগে
ভোর সকালে বাড়ির পাশে গরুর জন্য খড় আনতে গিয়ে আগে থেকে পড়ে থাকা চিড়া বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয় বড় ভাই নুরু খান। তাকে বাঁচাতে দৌড়ে গেলে ছোট ভাই ফজলু খানও একই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে ঘটনাস্থলেই তাদের দুইজনের মৃত্যু হয়।
৬ ঘণ্টা আগে