রাজশাহীতে দেশের প্রথম সর্বজনীন পেনশন মেলা অনুষ্ঠিত

রাজশাহী ব্যুরো

দেশের প্রথম পেনশন মেলা আজ শুক্রবার দিনব্যাপী রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজশাহী শহরের হাজী মুহাম্মদ মুহসিন সরকারি উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় বেলুন উড়িয়ে এই মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

পেনশন কর্মসূচির প্রতি জনগণকে আগ্রহী করে তুলতে সারা দেশে সর্বজনীন পেনশন মেলার অংশ হিসেবে দেশের মধ্যে রাজশাহী থেকে প্রথম এই মেলা শুরু হলো। ‘সুখে ভরবে আগামী দিন, পেনশন এখন সর্বজনীন’ এই স্লোগানে মেলায় মোট ১২৫টি স্টল অংশ নেয়।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর। এ সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান, রাজশাহী ডিআইজি মো. আনিসুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, ‘আমাদের সবার একসময় বয়স হয়ে যাবে। তখন আমরা কীভাবে চলব? যে মা এত কষ্ট করে সংসার চালায়, তার কী অবস্থা হবে? এ রকম কেউ চিন্তা করেছেন বাংলাদেশে? ৬০-৬৫ বছর হওয়ার পর আপনি কীভাবে বাঁচবেন, তখন তো নিজের স্বাস্থ্য, নিজের বেঁচে থাকা দরকার। ওই বয়সীদের কেউ গুরুত্ব দেয় না। বঙ্গবন্ধুকন্যা এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাংলাদেশে যাঁরা বয়স্ক, অসহায়, সাধারণ মানুষ, তাঁরা যখন অবসর গ্রহণ করবেন, বয়স হয়ে যাবে, তাঁরা যেন নিরাপদে থাকে।’

এই পেনশন নিয়ে অনেকের অনেক প্রশ্ন আছে জানিয়ে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, ‘প্রথম প্রশ্ন আমার টাকা কী আমি পাব? আপনার টাকা আপনি সরকারকে দিচ্ছেন। আচ্ছা, সরকারি ব্যাংকে টাকা রাখলে কী মানুষ ফেরত পায়? আপনি টাকা ফেরত পেলে আপনার টাকা নিরাপদ। আপনার টাকাও পেনশন কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপদ। সরকারের কাছে এই টাকা থাকবে। এই টাকা নিরাপদ বিনিয়োগ করে যে লাভ হবে, সেই টাকা দিয়ে আপনাদেরকে পেনশন দেবে।’

তোফাজ্জল হোসেন মিয়া আরও বলেন, ‘এই মেলা রাজশাহীতে শুরু হল। ধীরে ধীরে সারা দেশে মেলা হবে। আমরা খুব প্রচার করিনি, তাতেই ৭০ হাজারের বেশি মানুষ টাকা দিয়ে ফেলেছেন। রাজশাহী বিভাগ থেকে আগামী ৭-১৫ দিনের মধ্যে ৫-৭ লাখ মানুষ টাকা জমা দিয়ে দেবেন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১৭ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। চার শ্রেণির জনগোষ্ঠীর জন্য চার ধরনের পেনশন স্কিম রয়েছে। এগুলো হলো প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাসী। এর মধ্যে বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা’, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাসী’ এবং নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ‘সমতা’।

উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথিসহ অন্যরা মেলার স্টল পরিদর্শন করেন। মেলার মঞ্চে সর্বজনীন পেনশন নিয়ে গম্ভীরাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রজাশাহী কেন্দ্রীয় কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মিলনায়তনে সর্বজনীন পেনশন স্কিম শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা। এ ছাড়া সর্বজনীন পেনশন স্কিমের প্রচারকৌশল বিষয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম সাফল্যমণ্ডিত করার কৌশল নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা করেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ্ এবং এনজিও–বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক (গ্রেড-১) সাইদুর রহমান। কর্মশালায় শুরুতে ও সমাপনী বক্তব্য দেন প্রধানন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

এদিকে অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই পেনশন স্কিম নিবন্ধন কর্মসূচিতে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী জেলা।www.upension.gov.bd ওয়েবসাইটের পাওয়া সর্বশেষ তথ্য মতে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৬ হাজার ১২৩ জনের নিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়েছে।

এছাড়াও রাজশাহী বিভাগের আট জেলার মধ্যে বগুড়া জেলায় নিবন্ধন করেছে- ২ হাজার ৯৪ জন, পাবনায়- ১ হাজার ৫৫, সিরাজগঞ্জে- ৬৭৮, নাটোরে- ৬০৮, জয়পুরহাটে- ৬১৩, নওগাঁয়- ৪২৬ জন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে- ৩৪১ জন। এই তথ্যের আলোকে বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিবন্ধন কর্মসূচিতে রাজশাহী জেলা অবস্থানে রয়েছে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ভালো সাড়া মিলছে। বঙ্গবন্ধুর বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনয়নে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতির প্রবর্তন করেছেন। এ উদ্যোগ একটি যুগান্তকারী জনকল্যাণমুখী পদক্ষেপ, যা সকল নাগরিকের অবসরকালীন আর্থিক মুক্তির সনদ হিসেবে বিবেচিত হবে।

এর আগে গত বছরের ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। সেদিন থেকেই ১৮ বছরের বেশি বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকরা www.upension.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করছেন। চার শ্রেণির জনগোষ্ঠীর জন্য চার ধরনের পেনশন স্কিম রয়েছে। এগুলো হলো প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাসী। এর মধ্যে বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা’, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাসী’ ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ‘সমতা’।

ad
ad

মাঠের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

৩৬শে জুলাইয়ে টেবিলের নিচের রাজনীতির কবর রচনা হয়েছে: শিবির সভাপতি

রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রশিবির আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাদের কর্মকাণ্ড ও আদর্শিক অবস্থান কাছ থেকে দেখে সেই বিভ্রান্তি কাটিয়ে উঠছেন।

৩ ঘণ্টা আগে

মৎস্য রপ্তানি নীতিমালা গ্রহণে সাহায্য করবে সরকার: মৎস্য উপদেষ্টা

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, রাজশাহীর চাষীরা বাংলাদেশের মৎস্য চাষে যুগান্তকারী পরিবর্তন করেছেন। বিদেশনির্ভর বড় আকারের রুই থেকে রাজশাহীর জীবন্ত রুইজাতীয় মাছ আজ দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়েছে। আজ সময় এসেছে বিদেশে রপ্তানি উপযোগী করার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি, নীতিমালা গ্রহণ করা। সর

৪ ঘণ্টা আগে

দিনাজপুরে বাসচাপায় একই পরিবারের ৪ জন নিহত

দিনাজপুর সদর উপজেলায় ইজিবাইক ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার দশমাইল সড়কের গম গবেষণা কেন্দ্রের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা সবাই ইজিবাইকের যাত্রী ছিলেন।

৪ ঘণ্টা আগে

কিশোরগঞ্জে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ ভাইয়ের মৃত্যু

ভোর সকালে বাড়ির পাশে গরুর জন্য খড় আনতে গিয়ে আগে থেকে পড়ে থাকা চিড়া বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয় বড় ভাই নুরু খান। তাকে বাঁচাতে দৌড়ে গেলে ছোট ভাই ফজলু খানও একই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে ঘটনাস্থলেই তাদের দুইজনের মৃত্যু হয়।

৭ ঘণ্টা আগে