
ফজলুল বারী

গত সপ্তাহে ধনাত্মক পুঁজিবাজারে অপ্রত্যাশিত ঋণাত্মক পরিবর্তন ঘটে। এতে বিনিয়োগকারীরা আশাহত হয়ে পড়েন, তাদের মধ্যে উদ্বেগ উঁকি দেয় এবং বাজারে বেশ খানিকটা অস্থিরতা দেখা দেয়।
বাজারসংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজার ব্যবস্থাপনায় মাফিয়া দোসরদের বহাল রেখে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো সম্ভব নয়। বিনিয়োগবান্ধব বাজার গঠনও অসম্ভব। এই কঠিন বাস্তবতা অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এক বছর আগে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলেও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এখনো বহাল আছে পলাতক স্বৈরশাসকের দোসররা। অভিযোগ আছে, বিএসইসিতে প্রায় পৌনে দুই শ’ আওয়ামী ক্যাডার এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
করোনাকালে রাতের অন্ধকারে এসব নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এরা এখনো পরিকল্পিতভাবে বাজারে অস্থিরতা ও মন্দা লালন করছে, বাজারকে মুনাফামুখী হতে দিচ্ছে না, বরং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে বাঁধা সৃষ্টি করছে। সূচক ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করলেই বিএসইসি প্রশাসনের খড়গ নেমে আসে।
অর্থনীতির কিছু ইতিবাচক সূচক, নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক স্রোত এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামানের কিছু বাজারবান্ধব সিদ্ধান্তের কারণে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছিল। কিন্তু মাফিয়া দোসররা তা সহ্য করতে না পেরে ফের অস্থিরতামূলক কর্মকাণ্ডে নামে। এতে ডিএসই প্রশাসনও সামিল হয় বলে অভিযোগ আছে।
বাজারের অন্যতম ক্যান্সার মার্জিন অ্যাকাউন্ট। দাবি আদায়ে ও অস্থিরতা সৃষ্টিতে এর অপব্যবহার অব্যাহত আছে। বাজার ফের ঊর্ধ্বমুখী হবার শুরুতেই বিএসইসি প্রশাসন ফের জরিমানার খড়গ হাতে নেয়। গত সপ্তাহে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে ৪৪ কোটি টাকা জরিমানা করে। অথচ এর আগে যে বিপুল পরিমাণ জরিমানা করা হয়েছিল, তার থেকে কত টাকা আদায় হয়েছে—সে প্রশ্ন রয়ে গেছে। পাশাপাশি ডিএসই প্রশাসন বিভিন্ন ব্রোকার হাউসে চিঠি পাঠিয়ে দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইছে, অথচ অস্বাভাবিক পতনের কারণ খোঁজে না কখনো।
সাম্প্রতিক একটি উদাহরণ হলো বিবিএস ক্যাবলস। শেয়ারের দাম ৮৩.৭০ টাকা থেকে ১৩.৫০ টাকায় নেমে গেলেও ডিএসই কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কিন্তু যখন দাম ১৩.৫০ থেকে ২১ টাকায় উঠলো, তখনই ব্রোকার হাউসগুলোকে চিঠি পাঠাল। একই ধরনের বৈষম্যমূলক চিঠি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেয়া হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠছে, এই চিঠিগুলো কোন আইনের ভিত্তিতে দেয়া হচ্ছে? ২০০২ সালের ফর্মুলায় ৫২ সপ্তাহের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন অবস্থানের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা আছে। কিন্তু সেটিও অনুসরণ করা হচ্ছে না। তাহলে কেন সময়োপযোগী সংস্কার আনা হয়নি?
প্রশ্ন আরো বড়—শেয়ারের দাম বাড়তে গেলেই কেন খড়গ হাতে নামেন বাজার ব্যবস্থাপকরা? দাম না বাড়লে বিনিয়োগকারীরা মুনাফা করবে কীভাবে? মুনাফা করতে না দিলে নতুন বিনিয়োগই বা আসবে কেন? এভাবে বাজারকে কি আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামে পরিণত করা হচ্ছে?
বাজার কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে মাত্রই গতি পেতে শুরু করেছিল। দেশি-বিদেশি নতুন বিনিয়োগও আসতে শুরু করেছিল। লেনদেন বেড়ে গেলেও সূচককে ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখা হচ্ছে। মার্জিন অ্যাকাউন্টের ফাঁদে ফেলে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি লুট করা হচ্ছে, যার লাভ পাচ্ছে ক্যাসিনো সংগঠকরা। নন-মার্জিন অ্যাকাউন্টের বিনিয়োগকারীরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ৯০.৫ পয়েন্ট, ডিএসই৩০ কমেছে ৩১.৬৮, শরিয়াহ সূচক ৩৩.৭৫ এবং এসএমই সূচক ২০.১৩ পয়েন্ট। লেনদেন কমেছে ৬.৫৬ শতাংশ। সপ্তাহের শুরুতে যেখানে দৈনিক লেনদেন ছিল এক হাজার ৪০০ কোটি টাকার বেশি, সপ্তাহ শেষে তা নেমে আসে ৭৭৮ কোটি টাকায়। ডিএসইএক্স সূচকও ৫৬১৪.২৮ থেকে কমে দাঁড়ায় ৫৫২৩.৭৮ পয়েন্টে।
এখনো ডিএসইএক্স সূচক সাত হাজার পয়েন্টে পৌঁছাতে পারেনি। তালিকাভুক্ত ২১ খাতের মধ্যে ১৫টির পিই অনুপাত ২০-এর নিচে। অর্থাৎ বাজার দারুণভাবে ক্রয়ানুকূল। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আশান্বিত হলেও মার্জিননির্ভর ক্যাসিনো সিন্ডিকেটের কারণে তাদের প্রত্যাশা ব্যর্থ হয়েছে। বাজার প্রশাসকরা বলছে, বড় বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেয়ার ফলে সূচক কমেছে। তারা আরও দাবি করছে, বড় পতন আরও বড় ক্রয়ের সুযোগ তৈরি করেছে।
লেখক : জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক

গত সপ্তাহে ধনাত্মক পুঁজিবাজারে অপ্রত্যাশিত ঋণাত্মক পরিবর্তন ঘটে। এতে বিনিয়োগকারীরা আশাহত হয়ে পড়েন, তাদের মধ্যে উদ্বেগ উঁকি দেয় এবং বাজারে বেশ খানিকটা অস্থিরতা দেখা দেয়।
বাজারসংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজার ব্যবস্থাপনায় মাফিয়া দোসরদের বহাল রেখে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো সম্ভব নয়। বিনিয়োগবান্ধব বাজার গঠনও অসম্ভব। এই কঠিন বাস্তবতা অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এক বছর আগে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলেও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এখনো বহাল আছে পলাতক স্বৈরশাসকের দোসররা। অভিযোগ আছে, বিএসইসিতে প্রায় পৌনে দুই শ’ আওয়ামী ক্যাডার এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
করোনাকালে রাতের অন্ধকারে এসব নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এরা এখনো পরিকল্পিতভাবে বাজারে অস্থিরতা ও মন্দা লালন করছে, বাজারকে মুনাফামুখী হতে দিচ্ছে না, বরং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে বাঁধা সৃষ্টি করছে। সূচক ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করলেই বিএসইসি প্রশাসনের খড়গ নেমে আসে।
অর্থনীতির কিছু ইতিবাচক সূচক, নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক স্রোত এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামানের কিছু বাজারবান্ধব সিদ্ধান্তের কারণে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছিল। কিন্তু মাফিয়া দোসররা তা সহ্য করতে না পেরে ফের অস্থিরতামূলক কর্মকাণ্ডে নামে। এতে ডিএসই প্রশাসনও সামিল হয় বলে অভিযোগ আছে।
বাজারের অন্যতম ক্যান্সার মার্জিন অ্যাকাউন্ট। দাবি আদায়ে ও অস্থিরতা সৃষ্টিতে এর অপব্যবহার অব্যাহত আছে। বাজার ফের ঊর্ধ্বমুখী হবার শুরুতেই বিএসইসি প্রশাসন ফের জরিমানার খড়গ হাতে নেয়। গত সপ্তাহে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে ৪৪ কোটি টাকা জরিমানা করে। অথচ এর আগে যে বিপুল পরিমাণ জরিমানা করা হয়েছিল, তার থেকে কত টাকা আদায় হয়েছে—সে প্রশ্ন রয়ে গেছে। পাশাপাশি ডিএসই প্রশাসন বিভিন্ন ব্রোকার হাউসে চিঠি পাঠিয়ে দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইছে, অথচ অস্বাভাবিক পতনের কারণ খোঁজে না কখনো।
সাম্প্রতিক একটি উদাহরণ হলো বিবিএস ক্যাবলস। শেয়ারের দাম ৮৩.৭০ টাকা থেকে ১৩.৫০ টাকায় নেমে গেলেও ডিএসই কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কিন্তু যখন দাম ১৩.৫০ থেকে ২১ টাকায় উঠলো, তখনই ব্রোকার হাউসগুলোকে চিঠি পাঠাল। একই ধরনের বৈষম্যমূলক চিঠি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেয়া হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠছে, এই চিঠিগুলো কোন আইনের ভিত্তিতে দেয়া হচ্ছে? ২০০২ সালের ফর্মুলায় ৫২ সপ্তাহের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন অবস্থানের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা আছে। কিন্তু সেটিও অনুসরণ করা হচ্ছে না। তাহলে কেন সময়োপযোগী সংস্কার আনা হয়নি?
প্রশ্ন আরো বড়—শেয়ারের দাম বাড়তে গেলেই কেন খড়গ হাতে নামেন বাজার ব্যবস্থাপকরা? দাম না বাড়লে বিনিয়োগকারীরা মুনাফা করবে কীভাবে? মুনাফা করতে না দিলে নতুন বিনিয়োগই বা আসবে কেন? এভাবে বাজারকে কি আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামে পরিণত করা হচ্ছে?
বাজার কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে মাত্রই গতি পেতে শুরু করেছিল। দেশি-বিদেশি নতুন বিনিয়োগও আসতে শুরু করেছিল। লেনদেন বেড়ে গেলেও সূচককে ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখা হচ্ছে। মার্জিন অ্যাকাউন্টের ফাঁদে ফেলে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি লুট করা হচ্ছে, যার লাভ পাচ্ছে ক্যাসিনো সংগঠকরা। নন-মার্জিন অ্যাকাউন্টের বিনিয়োগকারীরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ৯০.৫ পয়েন্ট, ডিএসই৩০ কমেছে ৩১.৬৮, শরিয়াহ সূচক ৩৩.৭৫ এবং এসএমই সূচক ২০.১৩ পয়েন্ট। লেনদেন কমেছে ৬.৫৬ শতাংশ। সপ্তাহের শুরুতে যেখানে দৈনিক লেনদেন ছিল এক হাজার ৪০০ কোটি টাকার বেশি, সপ্তাহ শেষে তা নেমে আসে ৭৭৮ কোটি টাকায়। ডিএসইএক্স সূচকও ৫৬১৪.২৮ থেকে কমে দাঁড়ায় ৫৫২৩.৭৮ পয়েন্টে।
এখনো ডিএসইএক্স সূচক সাত হাজার পয়েন্টে পৌঁছাতে পারেনি। তালিকাভুক্ত ২১ খাতের মধ্যে ১৫টির পিই অনুপাত ২০-এর নিচে। অর্থাৎ বাজার দারুণভাবে ক্রয়ানুকূল। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আশান্বিত হলেও মার্জিননির্ভর ক্যাসিনো সিন্ডিকেটের কারণে তাদের প্রত্যাশা ব্যর্থ হয়েছে। বাজার প্রশাসকরা বলছে, বড় বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেয়ার ফলে সূচক কমেছে। তারা আরও দাবি করছে, বড় পতন আরও বড় ক্রয়ের সুযোগ তৈরি করেছে।
লেখক : জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক

এটি আমদানিকৃত গমের চতুর্থ চালান। চুক্তি মোতাবেক ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গমের মধ্যে আমেরিকা থেকে চারটি চালানে মোট ২ লাখ ৩৯ হাজার ৫৮৬ মেট্রিক টন গম দেশে পৌঁছেছে।
৯ দিন আগে
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’ শীর্ষক নতুন সিরিজে সব মূল্যমানের নোট মুদ্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এক হাজার, একশ, পঞ্চাশ ও কুড়ি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো পাঁচশ টাকার নোট বাজারে আসছে।
১০ দিন আগে
তিনি বলেন, ওনারা যে দামে বাজারে (তেল) বিক্রি করছে, সেখান থেকে প্রায় ২০ টাকা কমে আমাদেরকেই তেল দিয়েছে। সুতরাং বাজারে ২০ টাকা বেশি দামে তেল দেওয়ার যৌক্তিক কোনো কারণ আমি খুঁজে পাচ্ছি না। গতকালই তো কিনেছি উনাদের কাছ থেকে...তাহলে বাজারে কেন এত বেশি দামে বিক্রি হবে?
১১ দিন আগে
গভর্নর বলেন, 'শুধু উদ্যোক্তা বাড়ালেই হবে না, তাদের জন্য বাজার তৈরি করতে হবে। চাহিদা সৃষ্টি না হলে উৎপাদন টিকবে না। উদ্যোক্তারা এজন্য ঝুঁকির মুখে পড়ছেন।'
১১ দিন আগে