বিজ্ঞান

মশার কামড় কেন আমরা টের পাই না?

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
মশা যখন কামড়ায় বা রক্ত খায়, তখন তা সঙ্গে সঙ্গে আমরা বুঝতে পারি না।

মশা পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাণী। মশার কামড়ে যত মানুষ মারা যায়, সাপ বা হিংস্র পশুর আক্রমণে এত মানুষ মারা পড়ে না।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, মশা মানুষের এত বড় ক্ষতি করতে পারে কেন? এর পেছনে অনেক কারণ আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হলো, মশারা খুব প্রতিকূল পরিবেশেও বেঁচে থাকতে পারে এবং মশা মারার ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলে।

আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো—মশার কামড় টের না পাওয়া। খেয়াল করে দেখুন, যখন মশা কামড়ায় বা রক্ত খায়, তখন তা সঙ্গে সঙ্গে আমরা বুঝতে পারি না। মশা রক্ত খেয়ে উড়ে যাওয়ার পরই সাধারণত চুলকানি বা ব্যথা অনুভব হয়।

কিন্তু কেন এমন হয়?

এর কারণ হলো, মশার লালায় (মুখের রস) একধরনের বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এই পদার্থ ত্বকের কিছু অংশ অবশ করে দেয়। তাই মশা যখন আমাদের শরীরে হুল ফুটিয়ে রক্ত চুষে নেয়, তখন আমরা ব্যথা বা অস্বস্তি টের পাই না।

মশার মুখে একটা সূচের মতো সরু অংশ থাকে, যাকে বলা হয় ‘প্রবোসিস’। এই প্রবোসিস দিয়ে মশা আমাদের ত্বকে ফুটিয়ে রক্ত টেনে নেয়। কামড়ানোর সময় মশা তার লালা ত্বকে ফেলে দেয়। মশার লালায় থাকে অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট (রক্ত জমাট বাঁধা ঠেকায় এমন পদার্থ) আর কিছু প্রোটিন।

এই উপাদানগুলো রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না, ফলে রক্ত তরল থাকে এবং মশা সহজেই রক্ত শুষে নিতে পারে। একই সঙ্গে এই উপাদানগুলো আমাদের ত্বকের স্নায়ুগুলোকেও কিছুটা অসাড় করে দেয়। ফলে মশার কামড়ানোর সময় আমরা ব্যথা অনুভব করি না।

নিউ ইয়র্কের রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী লেসলি ভোশাল বলেছেন, "মশার লালার প্রোটিনগুলো ত্বকের স্নায়ুকে অবশ করে দেয়, তাই কামড়ানোর সময় ব্যথা অনুভূত হয় না।"

তাই দেখা যায়, মশার কামড়ের আসল সময় আমরা কিছু টের পাই না। মশার এই কৌশলের জন্যই তারা আমাদের এত সহজে ক্ষতি করতে পারে।

তাই মশার কামড় থেকে বাঁচতে অবশ্যই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। মশার হাত থেকে বাঁচতে মশারির ব্যবহার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা আর মশা তাড়ানোর ওষুধ ব্যবহার খুবই দরকার।

সূত্র: হাউ ইটস ওয়ার্কস

ad
ad

সাত-পাঁচ থেকে আরও পড়ুন

উত্তরে কাদেরিয়া ঝড়, দক্ষিণে সপ্তম নৌ বহর: নিয়াজির চোখে সর্ষে ফুল!

কাদেরিয়া বাহিনীর সদস্যরা প্যারাট্রুপারদের পথ দেখিয়ে পুংলি ব্রিজের দিকে নিয়ে যায় এবং ব্রিজটি দখল করে নেয়। এর ফলে ময়মনসিংহ ও জামালপুর থেকে পিছু হটা পাকিস্তানি ৯৩ ব্রিগেডের সৈন্যরা ঢাকার দিকে যাওয়ার পথে আটকা পড়ে।

৩ দিন আগে

উত্তরে চীন, দক্ষিণে আমেরিকা— ইয়াহিয়ার ‘গালগপ্পো’ আর রূপসায় স্বজনের গোলা!

ঢাকার চারপাশের বৃত্ত বা ‘লুপ’ ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি সম্পন্ন হয়ে যায়। উত্তরে ময়মনসিংহ মুক্ত হওয়ার পর মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা ঢাকার দিকে ছুটছে, পূর্বে মেঘনা পাড় হয়ে নরসিংদীর দিকে অগ্রসর হচ্ছে বিশাল বহর, আর পশ্চিমে পদ্মার পাড়ে চলছে তুমুল প্রস্তুতি।

৪ দিন আগে

আকাশ থেকে নামল ‘উড়ন্ত যম’— পালিয়েও শেষ রক্ষা হলো না পাকিস্তানি বাহিনীর

পাকিস্তানি জেনারেলরা তাদের তথাকথিত ‘ফোর্ট্রেস ডিফেন্স’ বা দুর্গ রক্ষা কৌশলের ওপর যে অন্ধ বিশ্বাস রেখেছিল, তা তখন অন্ধের মতোই তাদের হোঁচট খাওয়াচ্ছিল। একদিকে বিশ্বরাজনীতির দাবার বোর্ডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌ বহর পাঠানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে স্নায়ুযুদ্ধের উত্তাপ ছড়াচ্ছিল, অন্যদিকে বাংলার

৫ দিন আগে

বিনয়-বাদল-দীনেশ— অগ্নিযুগের ৩ বিপ্লবী

তিন যুবকের হাতে মোটেও সময় নেই। বেচারা সিম্পসন! আজীবন নিরীহ-নিরপরাধ ভারতীয়দের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে এসেছেন। এ জন্য কতকিছু চিন্তা করে নির্যাতনের উপায় বের করতে হয়েছে। সেই মানুষটি নিজের শেষ সময়ে বিন্দুমাত্র ভাবনার সময়ও পেলেন না। তার দিকে তাক করা তিনটি রিভলবার থেকে ছয়টি বুলেট সিম্পসনের শরীর ভেদ করে

৬ দিন আগে