ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
পেয়ারা এমন এক ফল, যা শহর থেকে গ্রাম—সবখানেই পাওয়া যায়। এর দাম তুলনামূলকভাবে কম, আবার খেতে টক-মিষ্টি স্বাদের কারণে ছোট-বড় সবার কাছেই জনপ্রিয়। কিন্তু এই সাধারণ ফলটির গুণাগুণ জানলে অবাক হতে হয়। ছোট্ট এই ফলে লুকিয়ে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ, যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজমে সহায়তা করে, এমনকি ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতেও ভূমিকা রাখে। ফলে পেয়ারা কেবল স্বাদের কারণে নয়, বরং স্বাস্থ্যসচেতনদের খাদ্যতালিকায় এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাওয়ার দাবি রাখে।
পেয়ারা মূলত ট্রপিক্যাল ফল। বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ব্রাজিল, মেক্সিকোসহ বহু দেশে এটি উৎপাদিত হয়। একেক দেশে এর রং, আকার ও স্বাদে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও সব জাতের পেয়ারাতেই থাকে প্রচুর ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ডায়েটারি ফাইবার। আমেরিকার ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচারের (USDA) তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় থাকে প্রায় ৬৮ ক্যালোরি শক্তি, ৮.৯ গ্রাম চিনি, ৫.৪ গ্রাম ফাইবার এবং প্রায় ২৮০% ডেইলি রিকমেন্ডেড ভিটামিন সি! এটা কমলা কিংবা লেবুর চেয়েও অনেক বেশি।
এ কারণেই হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের পুষ্টিবিদ ড. ফ্রাঙ্ক হু বলেন, ‘‘পেয়ারা হলো এমন এক ফল, যার ভিটামিন সি শরীরের কোষগুলিকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে নিয়মিত পেয়ারার মতো ফল খেলে ভাইরাল ইনফেকশন কমে যায়।’’ অর্থাৎ শীতকালে যখন ফ্লু কিংবা ঠান্ডা লাগা সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, তখন প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়া হতে পারে এক সহজ প্রতিকার।
পেয়ারার আরেকটি বড় গুণ হলো এর ফাইবার। ফাইবার হজম শক্তি বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ইউনিভার্সিটি অব সিডনির নিউট্রিশনাল বায়োকেমিস্ট ড. লুইস ব্যারেট বলছেন, ‘‘পেয়ারা এমন এক ফল যা জিআই (Glycemic Index) স্কোরে অনেক নিচে। এর মানে হলো এটি ধীরে ধীরে রক্তে গ্লুকোজ বাড়ায়, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী।’’
পেয়ারায় আছে লাইকোপিন, বিটা ক্যারোটিন ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। বিশেষ করে গোলাপি বা লালচে রঙের পেয়ারায় লাইকোপিন বেশি থাকে, যা প্রোস্টেট, স্তন এবং মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, ডেভিস-এর ক্যানসার গবেষক ড. এলেন টেইলর বলেন, ‘‘লাইকোপিন একটি প্রাকৃতিক রাসায়নিক যা কোষে অক্সিডেটিভ চাপ কমায়। পেয়ারা এবং টমেটো—এই দুই খাদ্যেই এর পরিমাণ বেশি থাকে।’’ ফলে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই ধরনের ফল রাখলে দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসার প্রতিরোধ করা সহজ হয়।
পেয়ারা হৃদযন্ত্রের জন্যও ভালো। এতে পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের ভারসাম্য থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়া ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সমন্বয়ে এটি কোলেস্টেরল কমায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের হার্ট অ্যান্ড ভাসকুলার মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. রবার্ট হিউম্যান বলেন, ‘‘ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য হৃদরোগের জন্য প্রাকৃতিক প্রতিষেধক। পেয়ারা সাশ্রয়ী হলেও হৃদয়বান্ধব ফল।’’
পেয়ারা ত্বকের জন্যও খুব উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে, যা ত্বককে টানটান, উজ্জ্বল ও বলিরেখাহীন রাখতে সহায়তা করে। আবার ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী, দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। পেয়ারা খেলে শরীরে জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম ও কপারও সরবরাহ হয়, যা হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত রাখে।
শুধু ফল নয়, পেয়ারা পাতাও স্বাস্থ্য উপকারে আসে। বহু গবেষণায় দেখা গেছে, পেয়ারা পাতার নির্যাস দাঁতের মাড়ি মজবুত করতে, গলা ব্যথা সারাতে এবং ডায়রিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। তাই গ্রামবাংলার প্রাচীন আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় পেয়ারা পাতা ছিল এক জরুরি উপাদান।
সবচেয়ে ভালো দিক হলো, পেয়ারা সহজলভ্য ও সংরক্ষণযোগ্য। ফ্রিজে রাখা হলে এটি কয়েক দিন ভালো থাকে। কাঁচা খাওয়া যায়, সালাদে ব্যবহার করা যায়, জুস বানানো যায়, এমনকি আচার বা জ্যাম হিসেবেও খাওয়া যায়। আবার অনেক দেশে পেয়ারার পাতা দিয়ে চা তৈরি হয়, যা ডায়াবেটিস ও হজমের জন্য উপকারী বলে বিশ্বাস করা হয়।
সবশেষে বলা যায়, পেয়ারা কেবল একটি সাধারণ দেশি ফল নয়, বরং এটি একটি ‘সুপারফুড’। এর পুষ্টিগুণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সহজলভ্যতা একে অন্য ফল থেকে আলাদা করে তোলে। আজ যখন আমাদের খাদ্যাভ্যাস প্রক্রিয়াজাত ও কেমিক্যালযুক্ত খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়ছে, তখন এমন প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর ফল খাদ্যতালিকায় রাখাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, প্রকৃতি আমাদের যা দিয়েছে, তা কখনও অবহেলার নয়। আর পেয়ারা সেই প্রকৃতির দেওয়া এক আশ্চর্য উপহার।
পেয়ারা এমন এক ফল, যা শহর থেকে গ্রাম—সবখানেই পাওয়া যায়। এর দাম তুলনামূলকভাবে কম, আবার খেতে টক-মিষ্টি স্বাদের কারণে ছোট-বড় সবার কাছেই জনপ্রিয়। কিন্তু এই সাধারণ ফলটির গুণাগুণ জানলে অবাক হতে হয়। ছোট্ট এই ফলে লুকিয়ে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ, যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজমে সহায়তা করে, এমনকি ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতেও ভূমিকা রাখে। ফলে পেয়ারা কেবল স্বাদের কারণে নয়, বরং স্বাস্থ্যসচেতনদের খাদ্যতালিকায় এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাওয়ার দাবি রাখে।
পেয়ারা মূলত ট্রপিক্যাল ফল। বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ব্রাজিল, মেক্সিকোসহ বহু দেশে এটি উৎপাদিত হয়। একেক দেশে এর রং, আকার ও স্বাদে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও সব জাতের পেয়ারাতেই থাকে প্রচুর ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ডায়েটারি ফাইবার। আমেরিকার ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচারের (USDA) তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় থাকে প্রায় ৬৮ ক্যালোরি শক্তি, ৮.৯ গ্রাম চিনি, ৫.৪ গ্রাম ফাইবার এবং প্রায় ২৮০% ডেইলি রিকমেন্ডেড ভিটামিন সি! এটা কমলা কিংবা লেবুর চেয়েও অনেক বেশি।
এ কারণেই হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের পুষ্টিবিদ ড. ফ্রাঙ্ক হু বলেন, ‘‘পেয়ারা হলো এমন এক ফল, যার ভিটামিন সি শরীরের কোষগুলিকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে নিয়মিত পেয়ারার মতো ফল খেলে ভাইরাল ইনফেকশন কমে যায়।’’ অর্থাৎ শীতকালে যখন ফ্লু কিংবা ঠান্ডা লাগা সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, তখন প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়া হতে পারে এক সহজ প্রতিকার।
পেয়ারার আরেকটি বড় গুণ হলো এর ফাইবার। ফাইবার হজম শক্তি বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ইউনিভার্সিটি অব সিডনির নিউট্রিশনাল বায়োকেমিস্ট ড. লুইস ব্যারেট বলছেন, ‘‘পেয়ারা এমন এক ফল যা জিআই (Glycemic Index) স্কোরে অনেক নিচে। এর মানে হলো এটি ধীরে ধীরে রক্তে গ্লুকোজ বাড়ায়, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী।’’
পেয়ারায় আছে লাইকোপিন, বিটা ক্যারোটিন ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। বিশেষ করে গোলাপি বা লালচে রঙের পেয়ারায় লাইকোপিন বেশি থাকে, যা প্রোস্টেট, স্তন এবং মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, ডেভিস-এর ক্যানসার গবেষক ড. এলেন টেইলর বলেন, ‘‘লাইকোপিন একটি প্রাকৃতিক রাসায়নিক যা কোষে অক্সিডেটিভ চাপ কমায়। পেয়ারা এবং টমেটো—এই দুই খাদ্যেই এর পরিমাণ বেশি থাকে।’’ ফলে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই ধরনের ফল রাখলে দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসার প্রতিরোধ করা সহজ হয়।
পেয়ারা হৃদযন্ত্রের জন্যও ভালো। এতে পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের ভারসাম্য থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়া ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সমন্বয়ে এটি কোলেস্টেরল কমায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের হার্ট অ্যান্ড ভাসকুলার মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. রবার্ট হিউম্যান বলেন, ‘‘ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য হৃদরোগের জন্য প্রাকৃতিক প্রতিষেধক। পেয়ারা সাশ্রয়ী হলেও হৃদয়বান্ধব ফল।’’
পেয়ারা ত্বকের জন্যও খুব উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে, যা ত্বককে টানটান, উজ্জ্বল ও বলিরেখাহীন রাখতে সহায়তা করে। আবার ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী, দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। পেয়ারা খেলে শরীরে জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম ও কপারও সরবরাহ হয়, যা হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত রাখে।
শুধু ফল নয়, পেয়ারা পাতাও স্বাস্থ্য উপকারে আসে। বহু গবেষণায় দেখা গেছে, পেয়ারা পাতার নির্যাস দাঁতের মাড়ি মজবুত করতে, গলা ব্যথা সারাতে এবং ডায়রিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। তাই গ্রামবাংলার প্রাচীন আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় পেয়ারা পাতা ছিল এক জরুরি উপাদান।
সবচেয়ে ভালো দিক হলো, পেয়ারা সহজলভ্য ও সংরক্ষণযোগ্য। ফ্রিজে রাখা হলে এটি কয়েক দিন ভালো থাকে। কাঁচা খাওয়া যায়, সালাদে ব্যবহার করা যায়, জুস বানানো যায়, এমনকি আচার বা জ্যাম হিসেবেও খাওয়া যায়। আবার অনেক দেশে পেয়ারার পাতা দিয়ে চা তৈরি হয়, যা ডায়াবেটিস ও হজমের জন্য উপকারী বলে বিশ্বাস করা হয়।
সবশেষে বলা যায়, পেয়ারা কেবল একটি সাধারণ দেশি ফল নয়, বরং এটি একটি ‘সুপারফুড’। এর পুষ্টিগুণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সহজলভ্যতা একে অন্য ফল থেকে আলাদা করে তোলে। আজ যখন আমাদের খাদ্যাভ্যাস প্রক্রিয়াজাত ও কেমিক্যালযুক্ত খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়ছে, তখন এমন প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর ফল খাদ্যতালিকায় রাখাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, প্রকৃতি আমাদের যা দিয়েছে, তা কখনও অবহেলার নয়। আর পেয়ারা সেই প্রকৃতির দেওয়া এক আশ্চর্য উপহার।
আমাদের নাকের ভেতরে রয়েছে এক ধরনের শ্লেষ্মা নিঃসরণকারী ঝিল্লি বা মিউকাস মেমব্রেন, যা সারাক্ষণ বাতাসে থাকা ধুলো, জীবাণু, পরাগরেণু ইত্যাদি আটকানোর কাজ করে।
১ দিন আগেশাহ আধুনিকতা ও উন্নয়নের পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি চান ইরান যেন একটি পশ্চিমা ধাঁচের উন্নত ও শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়। এ উদ্দেশ্যে তিনি চালু করেন "হোয়াইট রেভল্যুশন" নামে এক সিরিজ সংস্কার কর্মসূচি।
১ দিন আগে২০১৮ সালের পর থেকে পরিস্থিতি বদলেছে। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস যেমন বিকাশ, নগদ, উপায়—এসব ছড়িয়ে পড়েছে।
২ দিন আগে