অরুণ কুমার
১৯২১ সাল। ল্যাবরেটরিতে বসে জীবাণু কালচার নিয়ে কাজ করছেন আলেকজান্ডার ফ্লেমিং। তাঁর সামনে জীবাণুভর্তি একটা প্লেট। বেশ কয়েক দিন যাবৎ তিনি সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন।
এ সময় হঠাৎ তার হাঁচি এসে গেল। প্লেটটা সরানোর সুযোগও পেলেন না, নাক থেকে কিছু সর্দি এসে পড়ল তাতে। ভাবলেন, পুরো প্লেটটাই নষ্ট হয়ে গেছে। তাই অবহেলাভরে সরিয়ে রাখলেন সেটা।
কাজ শুরু করলেন নতুন আরেকটা প্লেট নিয়ে। সন্ধ্যায় সেদিনের মতো কাজ শেষ করে ফিরে গেলেন বাড়ি।
পরদিন সকালে ল্যাবরেটরিতে ঢুকতেই আগের দিনের সরিয়ে রাখা প্লেটটার ওপর নজর পড়ল ফ্লেমিংয়ের। কিছুটা পরিবর্তন দেখে সেটাকে তুলে ধরলেন এবং চমকে উঠলেন।
আগের রাতে প্লেটে যে জীবাণুগুলো রেখে গিয়েছিলেন, সেগুলো আর নেই! খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখলেন ফ্লেমিং। জীবাণুগুলোর একটাও আর বেঁচে নেই। ভাবনায় পড়ে গেলেন ফ্লেমিং। ভোজবাজির মতো কীভাবে ধ্বংস হলো জীবাণুগুলো? তবে কি সর্দির মধ্যে এমন কোনো উপাদান আছে, যেগুলো জীবণুগুলোকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে?
ব্যাপারটা আরো ভালোভাবে পরীক্ষা করতে চাইলেন ফ্লেমিং।
জীবাণু কালচারের আরেকটা প্লেট নিয়ে তাতে নাক ঝাড়লেন। অনুমান ঠিক। কিছুক্ষণের মধ্যে নতুন প্লেটের জীবাণুগুলোও ধ্বংস হলো। শুধু তাই নয়, ফ্লেমিং লক্ষ করলেন চোখের পানি ও থুতুতেও জীবাণুনাশক উপাদান রয়েছে। তিনি শরীরের এই জবাণু প্রতিরোধী উপাদানের নাম দিলেন লাইসোজাইম। চিকিৎসাবিজ্ঞানে খুলে গেল নতুন দিগন্ত।
কিছুদিনের মধ্যেই ফ্লেমিং বুঝতে পারলেন লাইসোজাইম সাধারণ জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর হলেও শক্তিশালী জীবাণুর বিরুদ্ধে একেবারেই অচল।
তারপর কেটে যায় আট বছর। একদিন গবেষণাগারের জানালা খুলে রেখে জীবাণু কালচার নিয়ে কাজ করছিলেন ফ্লেমিং। হঠাৎ খোলা জানালা দিয়ে একটা দমকা বাতাস এসে এলোমেলো করে দিয়ে যায় জীবাণুর প্লেটগুলোকে। বাগান থেকে কিছু ঝরাপাতা এসে পড়ে প্লেটের ওপর। বেশ কিছুক্ষণ পর ফ্লেমিং দেখলেন অবাক কাণ্ড! জীবাণু কালচারের প্লেটে পরিবর্তন ঘটেছে। প্লেটগুলো নিয়ে পরীক্ষা করলেন। পরীক্ষা করলেন ঝরাপাতাগুলো নিয়েও। সেই পরীক্ষা থেকেই বেরিয়ে এলো দারুণ এক ফল! ঝরাপাতাগুলোর গায়ে এক ধরনের ছত্রাক জন্মায়। সেই ছত্রাকই আসলে জীবাণু ধ্বংস করে। উল্লাসে ফেটে পড়লেন ফ্লেমিং। তাঁর এত দিনের গবেষণা অবশেষে সফল হতে চলেছে। ওই ছত্রাকগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম পেনিসেলিয়াম নোটেটাম। তা থেকে যে জীবাণুনাশক তৈরি হয়েছিল তার নাম দেওয়া হয় পেনিসিলিন।
কাকতালীয়ভাবে পেনিসিলিন আবিষ্কার তো হলো। কিন্তু পর্যাপ্ত রসায়ন জ্ঞান ছিল না ফ্লেমিংয়ের। তাই সেটাকে ওষুধে রূপান্তরিত করতে পারছিলেন না। ১৩৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধাহত মানুষকে বাঁচানোর জন্য শক্তিশালী জীবাণুনাশকের প্রয়োজন পড়ে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাওয়ার্ড ওয়াল্টার ফ্লোরি ও রসায়নবিদ আর্নেস্ট বরিস চেইন মাসের চেষ্টায় তাঁরা সামান্য কিছু পেনিসিলিন তৈরি করতে সক্ষম হন।
১৯৪১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ফ্লোরি আর চেইন একজন মৃত্যুপথযাত্রী পুলিশের ওপর প্রথম পেনিসিলিন প্রয়োগ করেন। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসেন সেই পুলিশ। পেনিসিলিনের হাত ধরেই মানবসভ্যতায় জায়গা করে নেয় শক্তিশালী জীবাণুপ্রতিরোধী ওষুধ। আজকের দুনিয়া অ্যান্টিবায়োটিক বলে চেনে।
১৪৪৫ সালে ফ্লোরি আর চেইনের সঙ্গে ফ্লেমিংকেও নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় সেই আবিষ্কারের জন্য।
পরে একদিন ফ্লেমিং কৌতুক করে বলেছিলেন, এ পুরস্কার তাঁর নয়, আসলে পাওয়া উচিত ছিল ঈশ্বরের। তিনিই আকস্মিক যোগাযোগটা ঘটিয়েছিলেন বলেই না পেনিসিলিনের খোঁজ ফ্লেমিং পেয়েছিলেন।
সূত্র : ব্রিটানিকা
১৯২১ সাল। ল্যাবরেটরিতে বসে জীবাণু কালচার নিয়ে কাজ করছেন আলেকজান্ডার ফ্লেমিং। তাঁর সামনে জীবাণুভর্তি একটা প্লেট। বেশ কয়েক দিন যাবৎ তিনি সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন।
এ সময় হঠাৎ তার হাঁচি এসে গেল। প্লেটটা সরানোর সুযোগও পেলেন না, নাক থেকে কিছু সর্দি এসে পড়ল তাতে। ভাবলেন, পুরো প্লেটটাই নষ্ট হয়ে গেছে। তাই অবহেলাভরে সরিয়ে রাখলেন সেটা।
কাজ শুরু করলেন নতুন আরেকটা প্লেট নিয়ে। সন্ধ্যায় সেদিনের মতো কাজ শেষ করে ফিরে গেলেন বাড়ি।
পরদিন সকালে ল্যাবরেটরিতে ঢুকতেই আগের দিনের সরিয়ে রাখা প্লেটটার ওপর নজর পড়ল ফ্লেমিংয়ের। কিছুটা পরিবর্তন দেখে সেটাকে তুলে ধরলেন এবং চমকে উঠলেন।
আগের রাতে প্লেটে যে জীবাণুগুলো রেখে গিয়েছিলেন, সেগুলো আর নেই! খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখলেন ফ্লেমিং। জীবাণুগুলোর একটাও আর বেঁচে নেই। ভাবনায় পড়ে গেলেন ফ্লেমিং। ভোজবাজির মতো কীভাবে ধ্বংস হলো জীবাণুগুলো? তবে কি সর্দির মধ্যে এমন কোনো উপাদান আছে, যেগুলো জীবণুগুলোকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে?
ব্যাপারটা আরো ভালোভাবে পরীক্ষা করতে চাইলেন ফ্লেমিং।
জীবাণু কালচারের আরেকটা প্লেট নিয়ে তাতে নাক ঝাড়লেন। অনুমান ঠিক। কিছুক্ষণের মধ্যে নতুন প্লেটের জীবাণুগুলোও ধ্বংস হলো। শুধু তাই নয়, ফ্লেমিং লক্ষ করলেন চোখের পানি ও থুতুতেও জীবাণুনাশক উপাদান রয়েছে। তিনি শরীরের এই জবাণু প্রতিরোধী উপাদানের নাম দিলেন লাইসোজাইম। চিকিৎসাবিজ্ঞানে খুলে গেল নতুন দিগন্ত।
কিছুদিনের মধ্যেই ফ্লেমিং বুঝতে পারলেন লাইসোজাইম সাধারণ জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর হলেও শক্তিশালী জীবাণুর বিরুদ্ধে একেবারেই অচল।
তারপর কেটে যায় আট বছর। একদিন গবেষণাগারের জানালা খুলে রেখে জীবাণু কালচার নিয়ে কাজ করছিলেন ফ্লেমিং। হঠাৎ খোলা জানালা দিয়ে একটা দমকা বাতাস এসে এলোমেলো করে দিয়ে যায় জীবাণুর প্লেটগুলোকে। বাগান থেকে কিছু ঝরাপাতা এসে পড়ে প্লেটের ওপর। বেশ কিছুক্ষণ পর ফ্লেমিং দেখলেন অবাক কাণ্ড! জীবাণু কালচারের প্লেটে পরিবর্তন ঘটেছে। প্লেটগুলো নিয়ে পরীক্ষা করলেন। পরীক্ষা করলেন ঝরাপাতাগুলো নিয়েও। সেই পরীক্ষা থেকেই বেরিয়ে এলো দারুণ এক ফল! ঝরাপাতাগুলোর গায়ে এক ধরনের ছত্রাক জন্মায়। সেই ছত্রাকই আসলে জীবাণু ধ্বংস করে। উল্লাসে ফেটে পড়লেন ফ্লেমিং। তাঁর এত দিনের গবেষণা অবশেষে সফল হতে চলেছে। ওই ছত্রাকগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম পেনিসেলিয়াম নোটেটাম। তা থেকে যে জীবাণুনাশক তৈরি হয়েছিল তার নাম দেওয়া হয় পেনিসিলিন।
কাকতালীয়ভাবে পেনিসিলিন আবিষ্কার তো হলো। কিন্তু পর্যাপ্ত রসায়ন জ্ঞান ছিল না ফ্লেমিংয়ের। তাই সেটাকে ওষুধে রূপান্তরিত করতে পারছিলেন না। ১৩৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধাহত মানুষকে বাঁচানোর জন্য শক্তিশালী জীবাণুনাশকের প্রয়োজন পড়ে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাওয়ার্ড ওয়াল্টার ফ্লোরি ও রসায়নবিদ আর্নেস্ট বরিস চেইন মাসের চেষ্টায় তাঁরা সামান্য কিছু পেনিসিলিন তৈরি করতে সক্ষম হন।
১৯৪১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ফ্লোরি আর চেইন একজন মৃত্যুপথযাত্রী পুলিশের ওপর প্রথম পেনিসিলিন প্রয়োগ করেন। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসেন সেই পুলিশ। পেনিসিলিনের হাত ধরেই মানবসভ্যতায় জায়গা করে নেয় শক্তিশালী জীবাণুপ্রতিরোধী ওষুধ। আজকের দুনিয়া অ্যান্টিবায়োটিক বলে চেনে।
১৪৪৫ সালে ফ্লোরি আর চেইনের সঙ্গে ফ্লেমিংকেও নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় সেই আবিষ্কারের জন্য।
পরে একদিন ফ্লেমিং কৌতুক করে বলেছিলেন, এ পুরস্কার তাঁর নয়, আসলে পাওয়া উচিত ছিল ঈশ্বরের। তিনিই আকস্মিক যোগাযোগটা ঘটিয়েছিলেন বলেই না পেনিসিলিনের খোঁজ ফ্লেমিং পেয়েছিলেন।
সূত্র : ব্রিটানিকা
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে চুলের গঠন, তার প্রাকৃতিক বৃদ্ধি এবং ক্ষতির কারণ নিয়ে গবেষণা করে আসছেন। চুল মূলত প্রোটিন দ্বারা গঠিত, বিশেষ করে কেরাটিন নামের একটি প্রোটিন চুলের মূল উপাদান। যখন চুল পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না কিংবা বাইরে থেকে সঠিক যত্ন পায় না, তখন তা রুক্ষ হয়ে যায়, ভেঙে যায় এবং ঝরে পড়ে। তেল মূলত চ
১ দিন আগেলাল লতিকা হট্টিটি মাঝারি আকারের হয়ে থাকে। এই পাখিটি খুবেই চটপটে ও চঞ্চল প্রকৃতির হয়ে থাকে। তার সতর্ক ভঙ্গি ও জলশয়ের পাতার ওপর দ্রুত দৌড়ানোর ক্ষমতার জন্য সুপরিচিত। লাল লতিকা হট্টিটি লম্বায় ৩৪-৩৭ সেন্টিমিটার। এদের চোখের সামনে টকটকে লাল চামড়া। সেটিই লতিকা।
২ দিন আগেঅচ্যুত পোতদারের অভিনয়জীবন ছিল চার দশকেরও বেশি। তিনি ১২৫টির বেশি হিন্দি ও মারাঠি ছবিতে কাজ করেছেন। হিন্দি ও মারাঠি চলচ্চিত্র অঙ্গনে তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহকর্মী, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। বাস্তব জীবনেও তিনি ছিলেন নম্র, অমায়িক এবং বহুমুখী প্রতিভ
২ দিন আগেথাইরয়েড সমস্যায় ওষুধের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসেরও বড় ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে কিছু ফল আছে যেগুলো থাইরয়েড রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। এসব ফলে থাকে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা থাইরয়েড গ্রন্থির কাজকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, শুধুমাত্র ফল খেয়েই থাইরয়েড সারানো
২ দিন আগে