শানজীদা শারমিন
একটা সময় ছিল যখন সরকারি কোনো সেবা পেতে গেলে নাগরিকদের দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো। অফিসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কখনোবা মাসের পর মাস। একটা সনদ, একটি জমির খতিয়ান, কর জমা দেওয়া বা একটি ফর্ম পূরণের জন্য বহুবার যেতে হতো সরকারি দপ্তরে। সময়, খরচ, ভোগান্তি—সব মিলিয়ে নাগরিকদের ভোগান্তির যেন শেষ ছিল না। কিন্তু সময় বদলেছে, প্রযুক্তির হাত ধরে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ঢুকে পড়েছে এক নতুন যুগে—ই-গভর্নেন্সের যুগে। আর এই ই-গভর্নেন্সই বাংলাদেশে গড়ে তুলেছে এক অনন্য রূপান্তরের দশকল্প।
এই রূপান্তর শুরু হয়েছে নাগরিক সেবাকে কেন্দ্র করে। এখন অনেক সেবা অনলাইনে, সহজে ও দ্রুত সময়ে পাওয়া যায়। ই-পাসপোর্ট, ই-মিউটেশন, ই-ট্যাক্স রিটার্ন এবং শিক্ষা সনদ যাচাই—এই চারটি উদাহরণই যথেষ্ট বোঝাতে, কীভাবে একটা সময়সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়া আজ নাগরিকের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। ২০২০ সালে চালু হওয়া ই-পাসপোর্ট সেবার কারণে এখন পাসপোর্ট পেতে একজন নাগরিকের আর মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় না। মাত্র ২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই এটি হাতে এসে যায়। একইভাবে, ভূমিসেবায় ই-মিউটেশন চালু হওয়ার পর জমির নামজারি প্রক্রিয়া সপ্তাহ দুয়েকেই শেষ হচ্ছে, যেখানে আগে মাসের পর মাস সময় লাগত।
এই পরিবর্তন শুধু শহরেই সীমাবদ্ধ নয়। ডিজিটাল সেন্টারগুলো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, ইউনিয়ন পর্যায়েও সরকারি সেবাকে পৌঁছে দিচ্ছে। ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র এখন ‘ডিজিটাল সেন্টার’ হিসেবে পরিচিত। এখান থেকে এখন আর শুধু সনদ নয়, ব্যাংকিং, ঋণ, বিনিয়োগ, প্রশিক্ষণ, এমনকি বিদেশগমনেচ্ছু নাগরিকদের জন্য ‘প্রবাসী হেল্পডেস্ক’-এর সেবাও মিলছে। আর এই সেবার মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তাও, যারা নিজেরা কাজ পাচ্ছে, আবার অন্যকেও কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে।
এর বাইরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে ১০০-রও বেশি সরকারি সেবা নিয়ে চালু হচ্ছে ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন আউটলেট। চলমান ডিজিটাল সেন্টারগুলোকেও এতে যুক্ত করা হবে। সেখানেও পাওয়া যাবে উল্লিখিত সেবাটি।
এখন শুধু সেবা গ্রহণই নয়, সেবা প্রদানেও এসেছে রূপান্তর। সরকারি দপ্তরগুলোতে আগের মতো আর অগোছালো ফাইলের স্তুপ নেই। এখন চালু হয়েছে ডি-নথি—একটি কাগজবিহীন অফিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, যা যেকোনো ফাইল দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তি করতে সাহায্য করছে। কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই, মাসের পর মাস একটি ফাইলে আটকে থাকার সময়ও নেই। এতে শুধু অফিসের কাজের গতি বাড়েনি, বেড়েছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও।
একইভাবে, তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রেও এক সময়ের ভোগান্তি অনেকটা কমে এসেছে। আগে সরকারি কোনো তথ্যের জন্য এক দপ্তর থেকে আরেক দপ্তরে ঘুরতে হতো। এখন জাতীয় তথ্য বাতায়নের মাধ্যমে সব সরকারি তথ্য এক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে এখানেও বড় চ্যালেঞ্জ হলো—প্রতিটি দপ্তরের তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করা। তা না হলে সাধারণ নাগরিক আবার বিভ্রান্তিতে পড়বেন।
এইসব রূপান্তরের মাঝে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হলো জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩। অনেক মানুষ আছেন যারা এখনো ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন না, বা জানেন না কীভাবে একটি অনলাইন ফর্ম পূরণ করতে হয়। তাদের জন্য ফোন করেই সেবা পাওয়ার সুযোগ রেখেছে এই হেল্পলাইন। শুধু সেবার তথ্যই নয়, সামাজিক সমস্যার প্রতিকার, দুর্যোগকালীন সাহায্য, এমনকি সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগও এখানে আছে। ভবিষ্যতে স্থানীয় ভাষায় এই সেবাকে আরও উন্নত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
সরকারি সেবায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো পেমেন্ট। বিভিন্ন সেবার বিল, ফি এসব দিতে গিয়ে আগে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হতো। এখন অনলাইনে নিরাপদে এবং সহজে ডিজিটাল পেমেন্ট করা যায় ‘একপে’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। এতে যেমন সময় বাঁচছে, তেমনি দুর্নীতির সুযোগও কমছে।
অন্যদিকে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল সেবার প্রভাবও বাড়ছে। সনদ যাচাই এখন অনলাইনে সহজে করা যায়। আগে যেখানে একেকটি সনদ যাচাইয়ে মাসের পর মাস সময় লাগত, এখন সেটা কয়েক মিনিটেই সম্ভব। স্বাস্থ্যসেবায়ও অনলাইন পরামর্শ, ডিজিটাল ডায়াগনোসিস, এমনকি ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশনের কাজগুলো ই-গভর্নেন্সের সফল দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রবাসীদের জন্যও তৈরি হয়েছে বিশেষ সেবা—প্রবাসী হেল্পডেস্ক। ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট, বিদেশি নিয়মনীতি, জরুরি সমস্যা, আইনি সহযোগিতা, বিমানবন্দর সহযোগিতা, পুলিশ সম্পর্কিত সমস্যা—সব মিলিয়ে একজন অভিবাসী তার প্রয়োজনীয় অধিকাংশ সেবা এক জায়গা থেকেই পেয়ে যাচ্ছেন। এতে শুধু সময় বাঁচছে না, বরং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও বাড়ছে।
আর এসব সেবার মূল উদ্দেশ্য প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি। উদাহারণ হিসেবে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে নারীদের জন্য ‘সাথী নেটওয়ার্ক’ এর কথা বলা যেতে পারে। অনেক প্রান্তিক নারী এখনো ব্যাংক বা এমএফএস- এর মতো আর্থিক খাতের সঙ্গে যুক্ত নন। তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে এই নেটওয়ার্ক কাজ করছে—প্রাথমিকভাবে ডিজিটাল সেন্টারের নারী উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে শুরু হলেও ভবিষ্যতে দেশের সব প্রান্তিক নারীকে এতে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এসব উদ্যোগ শুধু প্রযুক্তির ব্যবহার নয়, এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গির বদল—যেখানে নাগরিককে সেবা প্রাপ্তির কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। একে বলা যায় ‘সিটিজেন-সেন্ট্রিক গভার্নেন্স’। এভাবে সেবা দানকারী দপ্তরগুলো ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে জনগণের সহযোগী হিসেবে। প্রতিটি উদ্ভাবন যেন সুশাসনের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের চেষ্টা।
এই রূপান্তরের পথচলায় একটি বড় অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে এটুআই। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) -২০৩০ অর্জনে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় এটুআই-এর প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবন, জনসম্পৃক্ততা ও কার্যকর বাস্তবায়ন উদ্যোগগুলো এক বিশাল ভূমিকা পালন করছে।
তবে এই রূপান্তরের যাত্রাপথ এখনো শেষ হয়নি। বরং এখান থেকেই আরও উন্নত ভবিষ্যতের পথচলা শুরু। ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড স্টোরেজ, বিগ ডাটা অ্যানালিটিক্স যুক্ত হয়ে সেবাগুলো হবে আরও স্মার্ট, আরও দ্রুত এবং আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক। তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়—সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা সবার জন্য সমানভাবে সহজলভ্য করে তোলা।
এই রূপান্তরের দশক শুধু প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা নয়, এটি একটি সামাজিক পরিবর্তনের গল্প। এটি একটি মানুষের গল্প—যেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন নারীও এখন সরকারি সেবা পেতে পারেন নিজের মোবাইল ফোনে। এটি একটি রাষ্ট্রের গল্প—যেখানে প্রতিটি নাগরিকের সম্মান ও অধিকার নিশ্চিত করার প্রত্যয় প্রতিটি ডিজিটাল ক্লিকের মধ্যে নিহিত।
এই পরিবর্তন চলমান থাকুক। প্রযুক্তির এই সহযাত্রায় যেন কেউ পেছনে না পড়ে থাকে—এই হোক রূপান্তরের দৃশ্যকল্পের মূলমন্ত্র।
একটা সময় ছিল যখন সরকারি কোনো সেবা পেতে গেলে নাগরিকদের দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো। অফিসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কখনোবা মাসের পর মাস। একটা সনদ, একটি জমির খতিয়ান, কর জমা দেওয়া বা একটি ফর্ম পূরণের জন্য বহুবার যেতে হতো সরকারি দপ্তরে। সময়, খরচ, ভোগান্তি—সব মিলিয়ে নাগরিকদের ভোগান্তির যেন শেষ ছিল না। কিন্তু সময় বদলেছে, প্রযুক্তির হাত ধরে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ঢুকে পড়েছে এক নতুন যুগে—ই-গভর্নেন্সের যুগে। আর এই ই-গভর্নেন্সই বাংলাদেশে গড়ে তুলেছে এক অনন্য রূপান্তরের দশকল্প।
এই রূপান্তর শুরু হয়েছে নাগরিক সেবাকে কেন্দ্র করে। এখন অনেক সেবা অনলাইনে, সহজে ও দ্রুত সময়ে পাওয়া যায়। ই-পাসপোর্ট, ই-মিউটেশন, ই-ট্যাক্স রিটার্ন এবং শিক্ষা সনদ যাচাই—এই চারটি উদাহরণই যথেষ্ট বোঝাতে, কীভাবে একটা সময়সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়া আজ নাগরিকের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। ২০২০ সালে চালু হওয়া ই-পাসপোর্ট সেবার কারণে এখন পাসপোর্ট পেতে একজন নাগরিকের আর মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় না। মাত্র ২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই এটি হাতে এসে যায়। একইভাবে, ভূমিসেবায় ই-মিউটেশন চালু হওয়ার পর জমির নামজারি প্রক্রিয়া সপ্তাহ দুয়েকেই শেষ হচ্ছে, যেখানে আগে মাসের পর মাস সময় লাগত।
এই পরিবর্তন শুধু শহরেই সীমাবদ্ধ নয়। ডিজিটাল সেন্টারগুলো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, ইউনিয়ন পর্যায়েও সরকারি সেবাকে পৌঁছে দিচ্ছে। ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র এখন ‘ডিজিটাল সেন্টার’ হিসেবে পরিচিত। এখান থেকে এখন আর শুধু সনদ নয়, ব্যাংকিং, ঋণ, বিনিয়োগ, প্রশিক্ষণ, এমনকি বিদেশগমনেচ্ছু নাগরিকদের জন্য ‘প্রবাসী হেল্পডেস্ক’-এর সেবাও মিলছে। আর এই সেবার মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তাও, যারা নিজেরা কাজ পাচ্ছে, আবার অন্যকেও কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে।
এর বাইরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্যোগে ১০০-রও বেশি সরকারি সেবা নিয়ে চালু হচ্ছে ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন আউটলেট। চলমান ডিজিটাল সেন্টারগুলোকেও এতে যুক্ত করা হবে। সেখানেও পাওয়া যাবে উল্লিখিত সেবাটি।
এখন শুধু সেবা গ্রহণই নয়, সেবা প্রদানেও এসেছে রূপান্তর। সরকারি দপ্তরগুলোতে আগের মতো আর অগোছালো ফাইলের স্তুপ নেই। এখন চালু হয়েছে ডি-নথি—একটি কাগজবিহীন অফিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, যা যেকোনো ফাইল দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তি করতে সাহায্য করছে। কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই, মাসের পর মাস একটি ফাইলে আটকে থাকার সময়ও নেই। এতে শুধু অফিসের কাজের গতি বাড়েনি, বেড়েছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও।
একইভাবে, তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রেও এক সময়ের ভোগান্তি অনেকটা কমে এসেছে। আগে সরকারি কোনো তথ্যের জন্য এক দপ্তর থেকে আরেক দপ্তরে ঘুরতে হতো। এখন জাতীয় তথ্য বাতায়নের মাধ্যমে সব সরকারি তথ্য এক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে এখানেও বড় চ্যালেঞ্জ হলো—প্রতিটি দপ্তরের তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করা। তা না হলে সাধারণ নাগরিক আবার বিভ্রান্তিতে পড়বেন।
এইসব রূপান্তরের মাঝে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হলো জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩। অনেক মানুষ আছেন যারা এখনো ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন না, বা জানেন না কীভাবে একটি অনলাইন ফর্ম পূরণ করতে হয়। তাদের জন্য ফোন করেই সেবা পাওয়ার সুযোগ রেখেছে এই হেল্পলাইন। শুধু সেবার তথ্যই নয়, সামাজিক সমস্যার প্রতিকার, দুর্যোগকালীন সাহায্য, এমনকি সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগও এখানে আছে। ভবিষ্যতে স্থানীয় ভাষায় এই সেবাকে আরও উন্নত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
সরকারি সেবায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো পেমেন্ট। বিভিন্ন সেবার বিল, ফি এসব দিতে গিয়ে আগে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হতো। এখন অনলাইনে নিরাপদে এবং সহজে ডিজিটাল পেমেন্ট করা যায় ‘একপে’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। এতে যেমন সময় বাঁচছে, তেমনি দুর্নীতির সুযোগও কমছে।
অন্যদিকে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল সেবার প্রভাবও বাড়ছে। সনদ যাচাই এখন অনলাইনে সহজে করা যায়। আগে যেখানে একেকটি সনদ যাচাইয়ে মাসের পর মাস সময় লাগত, এখন সেটা কয়েক মিনিটেই সম্ভব। স্বাস্থ্যসেবায়ও অনলাইন পরামর্শ, ডিজিটাল ডায়াগনোসিস, এমনকি ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশনের কাজগুলো ই-গভর্নেন্সের সফল দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রবাসীদের জন্যও তৈরি হয়েছে বিশেষ সেবা—প্রবাসী হেল্পডেস্ক। ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট, বিদেশি নিয়মনীতি, জরুরি সমস্যা, আইনি সহযোগিতা, বিমানবন্দর সহযোগিতা, পুলিশ সম্পর্কিত সমস্যা—সব মিলিয়ে একজন অভিবাসী তার প্রয়োজনীয় অধিকাংশ সেবা এক জায়গা থেকেই পেয়ে যাচ্ছেন। এতে শুধু সময় বাঁচছে না, বরং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও বাড়ছে।
আর এসব সেবার মূল উদ্দেশ্য প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি। উদাহারণ হিসেবে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে নারীদের জন্য ‘সাথী নেটওয়ার্ক’ এর কথা বলা যেতে পারে। অনেক প্রান্তিক নারী এখনো ব্যাংক বা এমএফএস- এর মতো আর্থিক খাতের সঙ্গে যুক্ত নন। তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে এই নেটওয়ার্ক কাজ করছে—প্রাথমিকভাবে ডিজিটাল সেন্টারের নারী উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে শুরু হলেও ভবিষ্যতে দেশের সব প্রান্তিক নারীকে এতে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এসব উদ্যোগ শুধু প্রযুক্তির ব্যবহার নয়, এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গির বদল—যেখানে নাগরিককে সেবা প্রাপ্তির কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। একে বলা যায় ‘সিটিজেন-সেন্ট্রিক গভার্নেন্স’। এভাবে সেবা দানকারী দপ্তরগুলো ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে জনগণের সহযোগী হিসেবে। প্রতিটি উদ্ভাবন যেন সুশাসনের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের চেষ্টা।
এই রূপান্তরের পথচলায় একটি বড় অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে এটুআই। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) -২০৩০ অর্জনে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় এটুআই-এর প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবন, জনসম্পৃক্ততা ও কার্যকর বাস্তবায়ন উদ্যোগগুলো এক বিশাল ভূমিকা পালন করছে।
তবে এই রূপান্তরের যাত্রাপথ এখনো শেষ হয়নি। বরং এখান থেকেই আরও উন্নত ভবিষ্যতের পথচলা শুরু। ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড স্টোরেজ, বিগ ডাটা অ্যানালিটিক্স যুক্ত হয়ে সেবাগুলো হবে আরও স্মার্ট, আরও দ্রুত এবং আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক। তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়—সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা সবার জন্য সমানভাবে সহজলভ্য করে তোলা।
এই রূপান্তরের দশক শুধু প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা নয়, এটি একটি সামাজিক পরিবর্তনের গল্প। এটি একটি মানুষের গল্প—যেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন নারীও এখন সরকারি সেবা পেতে পারেন নিজের মোবাইল ফোনে। এটি একটি রাষ্ট্রের গল্প—যেখানে প্রতিটি নাগরিকের সম্মান ও অধিকার নিশ্চিত করার প্রত্যয় প্রতিটি ডিজিটাল ক্লিকের মধ্যে নিহিত।
এই পরিবর্তন চলমান থাকুক। প্রযুক্তির এই সহযাত্রায় যেন কেউ পেছনে না পড়ে থাকে—এই হোক রূপান্তরের দৃশ্যকল্পের মূলমন্ত্র।
বাংলা সাহিত্যের ভিত্তিতে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্মরণীয় নাম হল সত্যজিৎ রায়। তিনি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’ অবলম্বনে ১৯৫৫ সালে যে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন, তা কেবল বাংলা বা ভারতীয় চলচ্চিত্রের নয়, বিশ্ব চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক মাইলফলক হয়ে দাঁড়ায়।
৫ দিন আগেমীর জাফর, নবাবের সেনাপতি, ব্রিটিশদের সঙ্গে গোপনে চুক্তি করেন এবং যুদ্ধের সময় তার বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় রাখেন। এই বিশ্বাসঘাতকতা নবাবের পরাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫ দিন আগেগ্যাস্ট্রিকের মূল কারণ হলো পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি হওয়া। এই অ্যাসিড আমাদের খাবার হজমে সাহায্য করে ঠিকই, কিন্তু যখন এটি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি তৈরি হয় বা পাকস্থলীর দেওয়াল দুর্বল হয়ে পড়ে, তখনই শুরু হয় সমস্যা।
৫ দিন আগেনারীদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের হার এখনও পুরুষদের তুলনায় অনেক কম, এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে তাঁদের সামাজিক প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে।
৫ দিন আগে